• Latest post

    পরনিন্দা কি কাকে বলে, পরনিন্দা চুগলী করার পরিনতি, চুগলখোর জান্নাতে যেতে পআরবে না,

    মানুষের মাঝে ফ্যাসাদ ও শত্রুতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বলা কথা লাগিয়ে দেওয়াকে ‘চুগলি করা’ বলে।

    মহান আল্লাহ বলেন,  ﴿ هَمَّازٖ مَّشَّآءِۢ بِنَمِيمٖ ١١ ﴾ [القلم: ١١] 

    অর্থাৎ [অনুসরণ করো না তার যে --- পশ্চাতে নিন্দাকারী, যে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়। (সূরা নূন ১১ আয়াত)

    ﴿ مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨ ﴾ [ق: ١٨] 

    অর্থাৎ মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে [তা লিপিবদ্ধ করার জন্য] তৎপর প্রহরী তার নিকটেই রয়েছে। (সূরা ক্বা-ফ ১৮ আয়াত)

    হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘চুগলখোর জান্নাতে যাবে না।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
    [1] সহীহুল বুখারী ৬০৫৬, মুসলিম ১০৫, তিরমিযী ২০২৬, আবূ দাউদ ৪৮৭১, আহমাদ ২২৭৩৬, ২২৭৯৪, ২২৮১৪, ২২৮৫০, ২২৮৫৯, ২২৮৭৮, ২২৯১১, ২২৯২৪, ২২৯৪০ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
    وَقَوْلِهِ: {هَمَّازٍ مَشَّاءٍ بِنَمِيمٍ}، {وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ}. يَهْمِزُ وَيَلْمِزُ يَعِيبُ.

    আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যে বেশি বেশি কসম খায় আর যে বার বার মিথ্যা কসম খাওয়ার কারণে মানুষের কাছে) লাঞ্ছিত- যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের কাছে লাগিয়ে ফিরে।’’ সূরাহ আল-কলাম ৬৮:১০-১১)‘‘দুর্ভোগ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে সামনাসামনি) মানুষের নিন্দা করে আর অসাক্ষাতে) দুর্নাম করে।’’ (সূরাহ আল-হুমাযাহ ১০৪ঃ ১)

    ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটো কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় বললেন, ‘‘ঐ দুই কবর-বাসীর আযাব হচ্ছে। অবশ্য ওদেরকে কোন বড় ধরনের অপরাধ [বা কোন কঠিন কাজের] জন্য আযাব দেওয়া হচ্ছে না।’’ [তারপর বললেন,] ‘‘হ্যাঁ, অপরাধ তো বড়ই ছিল। ওদের একজন [লোকের] চুগলী করে বেড়াত। আর অপরজন পেশাবের ছিটা থেকে বাঁচত না।’’ (বুখারী) [1]

    ‘ওদেরকে কোন বড় ধরনের অপরাধের জন্য আযাব দেওয়া হচ্ছে না’-এর ব্যাখ্যায় উলামাগণ বলেন, এর মানে তাদের দু’জনের ধারণা অনুপাতে তা বড় অপরাধ ছিল না। কারো মতে, এমন অপরাধ ছিল না, যা ত্যাগ করা তাদের জন্য খুব কঠিন ছিল।
    [1] সহীহুল বুখারী ২১৬, ২১৮, ১৩৬১, ১৩৭৮, ৬০৫২, ৬০৫৫, মুসলিম ২৯২, তিরমিযী ৭০, নাসায়ী ৩১, ২০৬৮, আবূ দাউদ ২০, ইবনু মাজাহ ৩৪৭, আহমাদ ১৯৮১, দারেমী ৭৩৯ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

    ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মিথ্যা ও অপবাদ’ কি জিনিস আমি কি তোমাদেরকে বলে দেব না? তা হচ্ছে চুগলী করা, লোকালয়ে কারো সমালোচনা করা।’’ (মুসলিম) [1]
    [1] সহীহুল বুখারী ৬১৩৪, মুসলিম ২৬০৬, তিরমিযী ১৯৭১, আবূ দাউদ ৪৯৮৯, আহমাদ ৩৬৩১, ৩৭১৯, ৩৮৮৬, ৪০৮৪, ৪০৯৭, ৪১৭৬, ২৭৮৩৯ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

    মহান আল্লাহ বলেছেন, ﴿ وَإِذَا سَمِعُواْ ٱللَّغۡوَ أَعۡرَضُواْ عَنۡهُ ٥٥ ﴾ [القصص: ٥٥]  

     “ওরা যখন অসার বাক্য শ্রবণ করে তখন ওরা তা পরিহার করে চলে।” (সূরা কাসাস ৫৫ আয়াত)

    তিনি আরও বলেন, ﴿ وَٱلَّذِينَ هُمۡ عَنِ ٱللَّغۡوِ مُعۡرِضُونَ ٣ ﴾ [المؤمنون : ٣]   

    অর্থাৎ যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে। (সূরা মু’মিনূন ৩ আয়াত)

    তিনি অন্যত্র বলেছেন, ﴿إِنَّ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡبَصَرَ وَٱلۡفُؤَادَ كُلُّ أُوْلَٰٓئِكَ كَانَ عَنۡهُ مَسۡ‍ُٔولٗا ٣٦ ﴾ [الاسراء: ٣٦]

      অর্থাৎ নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে। (সূরা বনী ইসরাঈল ৩৬ আয়াত)

    তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,

    ﴿ وَإِذَا رَأَيۡتَ ٱلَّذِينَ يَخُوضُونَ فِيٓ ءَايَٰتِنَا فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ حَتَّىٰ يَخُوضُواْ فِي حَدِيثٍ غَيۡرِهِۦۚ وَإِمَّا يُنسِيَنَّكَ ٱلشَّيۡطَٰنُ فَلَا تَقۡعُدۡ بَعۡدَ ٱلذِّكۡرَىٰ مَعَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّٰلِمِينَ ٦٨ ﴾ [الانعام: ٦٨] 

    অর্থাৎ তুমি যখন দেখ, তারা আমার নিদর্শন সম্বন্ধে ব্যঙ্গ আলোচনায় মগ্ন হয়, তখন তুমি দূরে সরে পড়; যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসঙ্গে আলোচনায় প্রবৃত্ত হয় এবং শয়তান যদি তোমাকে ভ্রমে ফেলে, তাহলে স্মরণ হওয়ার পরে তুমি অত্যাচারী সম্প্রদায়ের সাথে বসবে না। (সূরা আন‘আম ৬৮ আয়াত)

    আবূ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করবে, কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তা'আলা জাহান্নামের আগুন থেকে তার চেহারাকে রক্ষা করবেন।’’ (তিরমিযী- হাসান) [1]
    [1] তিরমিযী ১৯৩১, আহমাদ ২৬৯৮৮, ২৬৯৯৫ হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)

    আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    ﴿ وَمَا يَنطِقُ عَنِ ٱلۡهَوَىٰٓ ٣ إِنۡ هُوَ إِلَّا وَحۡيٞ يُوحَىٰ ٤ ﴾ (النجم : ٣،  ٤) 

    অর্থাৎ (আমার নবী) মনগড়া কথা বলে না, (সে যা কিছু বলে) তা প্রত্যাদেশ-কৃত ওহী ব্যতীত আর কিছুই নয়। (সূরা নাজ্ম ৩-৪ আয়াত)
    [