• Latest post

    আযান দেওয়ার ফযিলতসমূহ কি কি ?

    আযানের ফযিলতসমূহঃ
    আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “লোকেরা যদি জানত যে, আযান দেওয়া ও নামাজের প্রথম সারিতে দাঁড়াবার কি মাহাত্ম্য আছে, অতঃপর (তাতে অংশগ্রহণের জন্য) যদি লটারি ছাড়া অন্য কোন উপায় না পেত, তবে তারা অবশ্যই সে ক্ষেত্রে লটারির সাহায্য নিত।” (বুখারী, মুসলিম) [1]
    [1] সহীহুল বুখারী ৬১৫, ৬৫৪, ৭২১, ২৪৭২, ২৬৮৯, ২৮২৯, ৫৭৩৩, মুসলিম ৪৩৭, ৪৩৯, ১৯১৪, তিরমিযী ২২৫, ১০৬৩, ১৯৫৮, নাসায়ী ৫৪০, ৬৭১, আহমাদ ৫২৪৫, ইবনু মাজাহ ৭৯৭,

    ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি বারো বছর আযান দেয় তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। আর প্রতি দিনের আযানের বিনিময়ে তার জন্য ষাট নেকী এবং প্রতি ইকামতের জন্য তিরিশ নেকী লেখা হয়।
    মিশকাত ৬৭৮, সহীহাহ ৪২, সহীহ তারগীব ২৪২।

    আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে স্বা‘স্বা‘আহ হতে বর্ণিত, একদা আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে দেখছি যে, তুমি ছাগল ও মরুভূমি ভালোবাসো। সুতরাং তুমি যখন তোমার ছাগলে বা মরুভূমিতে থাকবে আর নামাযের জন্য আযান দেবে, তখন উচ্চ স্বরে আযান দিয়ো। কারণ মুয়াজ্জিনের আযান ধ্বনি যতদূর পর্যন্ত মানব-দানব ও অন্যান্য বস্তু শুনতে পাবে, কিয়ামতের দিন তারা তার জন্য সাক্ষ্য দেবে।’ আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি এটি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট শুনেছি।’ (বুখারী) [1]
    [1] সহীহুল বুখারী ৬০৮, ১২২২, ১২৩১, ১২৩২, ৩২৮৫, মুসলিম ৩৮৯, তিরমিযী ৩৯৭, নাসায়ী ৬৭০, ১২৫৩,

    আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিজ মুখে বলতে শুনেছি: মুয়ায্যিনের আযান ধ্বনি যত দূর পর্যন্ত পৌঁছবে, তত দূর তাকে ক্ষমা করা হবে এবং জীবিত ও নির্জীব সকলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। সালাতে উপস্থিত লোকেদের পঁচিশ নেকী লেখা হয় এবং তার দু সালাতের মধ্যবর্তী কালের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।
    নাসায়ী ৬৪৫, আবূ দাঊদ ৫১৫, আহমাদ ৭৫৫৬, ৯০৭৩, ৯২৫৭। তাহক্বীক্ব আলবানী: হাসান সহীহ

    #আযানের_জবাবঃ

    আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমরা আযান ধ্বনি শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুয়াজ্জিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলো” (বুখারী, মুসলিম) [1]

    [1] সহীহুল বুখারী ৬১৪, ৪৭১৯, তিরমিযী ২১১, নাসায়ী ৬৮০, আবূ দাউদ ৫২৯

    উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুয়ায্যিন যখন ‘‘আল্লা-হু আকবার’’ বলে তখন তোমাদের কেউ যদি (উত্তরে) অন্তর থেকে বলে, ‘‘আল্লা-হু আকবার’’ ‘‘আল্লা-হু আকবার’’, এরপর মুয়ায্যিন যখন বলেন, ‘‘আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ,’’ সেও বলে, ‘‘আশ্হাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’’। অতঃপর মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার্ রসূলুল্ল-হ’’, সেও বলে ‘‘আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ’’, তারপর মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘হাইয়্যা ‘আলাস্ সলা-হ্’’, সে তখন বলে, ‘‘লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ’’; পরে মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘আল্লা-হু আকবার ‘আল্লা-হু আকবার’’, সেও বলে, ‘‘আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার’’ এরপর মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ,’’ সেও বলে ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম)[1]
    1]
    [1] সহীহ : মুসলিম ৩৮৫, আবূ দাঊদ ৫২৭, সহীহ আল জামি‘ ৭১৪।

    আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুয়াজ্জিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলবে। তারপর আযান শেষে আমার উপর দরুদ পাঠ করবে। কেননা, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে, তার বিনিময়ে তার প্রতি আল্লাহ দশটি রহমত নাযিল করবেন। অতঃপর তোমরা আল্লাহর নিকট আমার জন্য ‘অসীলা’ প্রার্থনা করবে। কারণ, ‘অসীলা’ হচ্ছে জান্নাতের এমন একটি স্থান, যা সমস্ত বান্দার মধ্যে কেবল আল্লাহর একটি বান্দা (তার উপযুক্ত) হবে। আর আশা করি, আমিই সেই বান্দা হব। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার জন্য অসীলা প্রার্থনা করবে, সে (আমার) সুপারিশ প্রাপ্ত হবে।” (মুসলিম) [1]

    [1] সহীহুল বুখারী ৬১১, মুসলিম ৩৮৩, তিরমিযী ২০৮, নাসায়ী ৬৭৩, আবূ দাউদ ৫২২, ইবনু মাজাহ ৭২০

    উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি মুয়াজ্জিনের আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার-এর জওয়াবে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে এবং আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর জওয়াবে আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে এবং আশহাদু আন্না মুাহম্মাদার রাসূলুল্লাহ এর জওয়াবে আশহাদু আন্না মুাহম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলে। অতঃপর হাইয়্যা ‘আলাস্-সলাহ-এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলে। তারপর হাইয়্যা ‘আলাল-ফালাহ-এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলে। তারপর যদি আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার জওয়াবে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর জওয়াবে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।[1]
    সহীহ : মুসলিম
    ইবনু খুযাইমাহ (৪১৭), ‘আসিম ইবনু ‘আমর সূত্রে।

    #আযানের দোয়াঃ

    জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আযান শুনে (আযানের শেষে) এই দো‘আ বলবে,

    ‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-যিহিদ দা‘অতিত্ তা-ম্মাহ, অসস্বালা-তিল ক্বা-য়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল অসীলাতা অলফাযীলাহ, অবআষহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী অ‘আত্তাহ।’

    অর্থাৎ হে আল্লাহ এই পূর্ণাঙ্গ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠা লাভকারী নামাযের প্রভু! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তুমি অসীলা (জান্নাতের এক উচ্চ স্থান) ও মর্যাদা দান কর এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ।

    সে ব্যক্তির জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ অনিবার্য হয়ে যাবে।” (বুখারী) [1]
    [1] মুসলিম ৩৮৬, তিরমিযী ২১০, নাসায়ী ৬৭৯, আবূ দাউদ ৫২৫, ইবনু মাজাহ ৭২১, আহমাদ ১৫৬৮

    সা‘দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “আযান শুনে যে ব্যক্তি এই দো‘আ পড়বে,

    ‘আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, অ আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু অরাসূলুহ, রাদ্বীতু বিল্লা-হি রাববাঁউ অ বিমুহাম্মাদির রাসূলাঁউ অ বিলইসলা-মি দ্বীনা।’

    অর্থাৎ আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দাস ও প্রেরিত রাসূল। আল্লাহকে প্রতিপালক বলে মেনে নিয়ে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবীরূপে স্বীকার করে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে আমি সম্মত ও তুষ্ট হয়েছি।

    সে ব্যক্তির (ছোট ছোট) গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (মুসলিম) [1]

    [1] সহীহুল বুখারী ৫২৮, মুসলিম ৬৬৭, তিরমিযী ২৮৬৮, নাসায়ী ৪৬২, আহমাদ ৮৭০৫, ৯২২১, ৯৩৯৯, দারেমী ১১৮৩

    আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আযান ও ইকামতের মধ্য সময়ে কৃত প্রার্থনা রদ করা হয় না।” (অর্থাৎ এ সময়ের দো‘আ কবুল হয়)। (আবূ দাউদ, তিরমিযী, হাসান) [1]
    [1] মুসলিম ৬৬৮, আহমাদ ১৩৮৬৩, ১৩৯৯৯, ১৪৪৩৯, দারেমী ১১৮২
    আযানের ফযিলত,
    আযানের ফযিলত,