tag:blogger.com,1999:blog-58398157862619736902024-03-06T05:46:51.309+06:00ইসলামকে জানুনআসসালামু আলাইকুম, আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে সাগতম ৷Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comBlogger475125tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-71311703811407587862020-03-02T09:16:00.000+06:002020-03-02T09:22:54.277+06:00বাসর রাতে কি যৌন মিলন আবশ্যক ? বাসর রাতে করনীয়সমূহ ৷<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
প্রশ্ন: বাসর রাতে কি যৌনমিলন আবশ্যক? যদি তাই হয় তাহলে একজন অপরিচিতার সাথে তা কীভাবে সম্ভব?<br />
▬▬▬◖❤❤◗▬▬▬<br />
<br />
উত্তর:<br />
বাসর রাতে যৌনমিলন করতেই হবে ইসলামে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়ে সম্মত ও আগ্রহী হয় তাহলে সহবাস করবে, অন্যথায় বিরত থাকবে।<br />
<br />
❤ বাসর রাতে করণীয়:<br />
<br />
বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী একসাথে আগে পিছে দাঁড়িয়ে দু রাকআত নফল সালাত আদায় করবে, স্বামী নব বধূর কপালে হাত রেখে দুআ পাঠ করবে, তাকে দুধ বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে দিবে। তাপর পরস্পরে কথাবার্তা বলবে, পরিচিত হবে, স্ত্রীর মন থেকে ভয়ভীতি দূর করে একটা আন্তরিকতা ও ভালবাসা পূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করবে।<br />
অত:পর যদি তারা উভয়ের মধ্যে যৌন মিলনে আগ্রহ সৃষ্টি হয় তাহলে দুআ পড়ে সহবাসে লিপ্ত হবে।<br />
<br />
--------------------------------------<br />
<br />
❤ বাসর রাতে স্বামী স্ত্রীর কপালে হাত রেখে এই দোয়াটি পাঠ করা সুন্নত:<br />
<br />
«اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ، وَإِذَا اشْتَرَى بَعِيراً فَلْيَأْخُذْ بِذِرْوَةِ سَنَامِهِ وَلْيَقُلْ مِثْلَ ذَلِكَ».<br />
(আল্লা-হুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা জাবালতাহা ‘আলাইহি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা জাবালতাহা ‘আলাইহি)<br />
<br />
“হে আল্লাহ, আমি এর যত কল্যাণ রয়েছে এবং যত কল্যাণ তার স্বভাবে আপনি দিয়েছেন তা চাই। আর এর যত অকল্যাণ রয়েছে এবং যত অকল্যাণ ওর স্বভাব-চরিত্রে আপনি রেখেছেন তা থেকে আপনার আশ্রয় চাই।”<br />
(আবু দাঊদ-২/২৪৮, নং ২১৬০; ইবন মাজাহ্ ১/৬১৭, নং ১৯১৮। আরও দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ, ১/৩২৪)<br />
<br />
❤ সহবাসের পূর্বে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ের জন্য নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়া সুন্নত :<br />
<br />
” ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺟَﻨِّﺒْﻨَﺎ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ، ﻭَﺟَﻨِّﺐْ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻣَﺎ ﺭَﺯَﻗْﺘَﻨَﺎ ”<br />
<br />
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ্। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাক্বতানা।<br />
<br />
অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তান হতে বাঁচান এবং আমাদেরকে যদি কোন সন্তান দেন তাকেও শয়তান হতে বাঁচান। [বুখারী হা/ ৬৩৮৮ ও মুসলিম হা/ ১৪৩৪)]<br />
<br />
➧<br />
<br />
উত্তর প্রদানে:<br />
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল<br />
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব<br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhvYzc5Wf6AWSHChMGl-QbjlGV3jNmu0QN_SHG0T2wYNj7IFKiUL-KDwagacfRk1BzKySFa51V0TbAqngdlf6c_pFqOCmUWr7R3yARoMrEqG9-jCzVRmRw17aAjxpun3xOy1Sfb3O-E6eU/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="বাসর রাতে করনীয় আমল" border="0" data-original-height="180" data-original-width="335" height="171" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhvYzc5Wf6AWSHChMGl-QbjlGV3jNmu0QN_SHG0T2wYNj7IFKiUL-KDwagacfRk1BzKySFa51V0TbAqngdlf6c_pFqOCmUWr7R3yARoMrEqG9-jCzVRmRw17aAjxpun3xOy1Sfb3O-E6eU/s320/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4.jpg" title="" width="320" /></a></div>
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
বাসর রাতে করনীয় আমল,</div>
<br />
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3745146 88.60416599999999224.258812600000002 88.4428045 24.4902166 88.76552749999999tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-87402046774502607612020-03-02T09:10:00.000+06:002020-03-02T09:10:13.776+06:00বিপদ থেকে বাঁচার জন্য ১০ টি গুরুত্বপূর্ন দোয়া<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
বিপদ ও কঠিন সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য মুমিনের রয়েছে দশটি অস্ত্র।<br />
যা কুরআন ও হাদীস থেকে জানা যায়।<br />
<br />
১- সূরা আল-ফাতিহাঃ আর এজন্যই এ সূরার অন্য নাম হচ্ছে আল-কাফিয়া বা যথেষ্টকারী, আশ-শাফিয়া বা আরোগ্যকারী। এটি আল্লাহর গুণ হওয়ার কারণে এর দ্বারা ঝাড়ফুক করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।<br />
<br />
২- “আল্লাহ আল্লাহ রাব্বী, লা উশরিকু বিহী শাইয়ান” আল্লাহ ,আল্লাহ, তিনি আমার রব্ব, আমি তার সাথে কাউকে শরীক করি না। আবু দাঊদ, হাদীস নং ১৫২৫।<br />
<br />
৩- “লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায যোয়ালেমীন” হে আল্লাহ আপনি ব্যতীত সত্য কোনো ইলাহ নেই, আপনি কতই না পবিত্র! আমি তো অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছি। তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫০৫।<br />
<br />
৪- “হাসবুনাল্লাহু ওয়ানি‘মাল ওয়াকীল”। ‘আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, আর তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক। এটা বলেছিলেন সাহাবায়ে কিরাম, তখন তারা কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। সূরা আলে ইমরান, ১৭৩-১৭৪।<br />
<br />
৫- “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”। আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোনো উপায় নেই, কোনো ক্ষমতাও নেই। এটি জান্নাতের গোপন ভাণ্ডারসমূহের একটি ।<br />
<br />
৬- “আস্তাগফিরুল্লাহ” বা আস্তাগফিরুল্লাহিল্লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আল-হাইয়্যুল কাইয়্যূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি”।<br />
<br />
৭- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আযীম আল-হালীম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল ‘আরশিল আযীম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদ্বি, রাব্বিল আরশিল কারীম”। (বুখারী, হাদীস নং ৬৩৪৬, মুসলিম, ২৭৩০)<br />
<br />
৮- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী ‘আউযু বিকাল মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আউযু বিকা মিনাল ‘আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউযু বিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউযুবিকা মিন দ্বাল‘য়িদ দাইনি ওয়া ক্বাহরির রিজাল’। (তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪৮৪)<br />
<br />
৯- “ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু, বিরাহমাতিকা আসতাগীসু, (ইবনুস সুন্নী, ‘আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ” হাদীস নং ৩৩৭।)<br />
<br />
১০- আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরজূ, ফালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা ‘আইন”, ওয়া আসলিহ লী শা‘নী কুল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লা আনতা।” (আবু দাঊদ, হাদীস নং ৫০৯০।)<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhHrgvtHtC9Gu_zCL8zHZxWVbx5wSq36YQH1gdhv9Z3EIwGPfrzQ169Rr_B050A2Pod92tqLQiZOaj9J2gY87ygG9Yp2yhiBBeIv2kuV5jL7xX8q9b_rIM7hwi9uxeo0oFS9Nb9Y0CZdhQ/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25A6+%25E0%25A6%25A5%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2581%25E0%25A6%259A%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="বিপদ থেকে বাঁচার দোয়া," border="0" data-original-height="348" data-original-width="536" height="207" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhHrgvtHtC9Gu_zCL8zHZxWVbx5wSq36YQH1gdhv9Z3EIwGPfrzQ169Rr_B050A2Pod92tqLQiZOaj9J2gY87ygG9Yp2yhiBBeIv2kuV5jL7xX8q9b_rIM7hwi9uxeo0oFS9Nb9Y0CZdhQ/s320/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25A6+%25E0%25A6%25A5%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2581%25E0%25A6%259A%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE.jpg" title="" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">বিপদ থেকে বাঁচার দোয়া,</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3745146 88.60416599999999224.258812600000002 88.4428045 24.4902166 88.76552749999999tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-51497854051971998012020-02-04T22:52:00.000+06:002020-02-12T21:46:51.358+06:00সূরা নাস বাংলা অর্থসহ উচ্চারন ও শানে নূযুল, সূরালনাস এর ফযীলত,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
সূরা নাস (মানব জাতি) সূরা-১১৪, মাদানী :</h3>
<br />
بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ<br />
<br />
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ (1) مَلِكِ النَّاسِ (2) إِلَهِ النَّاسِ (3) مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ (4) الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ (5) مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ (6)<br />
<br />
উচ্চারণ : (১) ক্বুল আ‘ঊযু বি রব্বিন্না-স (২) মালিকিন্না-স (৩) ইলা-হিন্না-স (৪) মিন শার্রিল ওয়াস্ওয়া-সিল খান্না-স (৫) আল্লাযী ইয়ুওয়াসভিসু ফী ছুদূরিন্না-স (৬) মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।<br />
<br />
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)<br />
<br />
অনুবাদ : (১) বলুন! আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালনকর্তার (২) মানুষের অধিপতির (৩) মানুষের উপাস্যের (৪) গোপন কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হ’তে (৫) যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তর সমূহে (৬) জিনের মধ্য হ’তে ও মানুষের মধ্য হতে।<br />
<br />
<u><b>নামকরণ:</b></u><br />
<br />
সূরা ফালাক ও সূরা নাস উভয় সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকে। ফালাক (الفلق) শব্দের অর্থ : প্রভাতকাল। আর নাস (النَّاس) অর্থ : মানুষ। এ দুই সূরাকে একত্রে معوذتان বা আশ্রয় প্রার্থনা করার দুই সূরা বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জাদুগ্রস্থ হওয়ার পর এ সূরাদ্বয় দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা হলে আল্লাহ তা‘আলার রহমতে তিনি সুস্থ হন, তাই এ নামেও এ সূরাদ্বয় পরিচিত।<br />
<br />
<u><b> শানে নুযূল:</b></u><br />
<br />
মা আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, মদীনার ইয়াহূদী গোত্র বনু যুরাইকের মিত্র লাবীদ বিন আসাম নামক জনৈক মুনাফিক তার মেয়েকে দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মাথার ছিন্নচুল ও চিরুনীর ছিন্ন দাঁত চুরি করে এনে তাতে জাদু করে এবং মন্ত্র পাঠ করে চুলে ১১টি গিরা দেয়। এর প্রভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কোন কাজ করলে ভুলে যেতেন ও ভাবতেন যে করেননি। অন্য বর্ণনা মতে ৪০ দিন বা ৬ মাস এভাবে থাকেন। এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বপ্নে দেখেন যে, দু’জন লোক এসে একজন তাঁর মাথার কাছে অন্যজন পায়ের কাছে বসে। অতঃপর তারা বলে যে, বনু যুরাইকের খেজুর বাগানে যারওয়ান কূয়ার তলদেশে পাথরের নীচে চাপা দেয়া খেজুরের কাঁদির শুকনো খোসার মধ্যে ঐ জাদু করা চুল ও চিরুনীর দাঁত রয়েছে। ওটা তুলে এনে গিরা খুলে ফেলতে হবে। রাসূল (সাঃ) সকালে আলী (রাঃ)-কে সেখানে পাঠান এবং যথারীতি তা তুলে আনা হয়। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (সাঃ) সূরাদ্বয় পড়ে ফুঁ দিয়ে গিরাগুলো খুলে ফেলেন এবং তিনি সুস্থ হয়ে যান। <br />
<h4>
<span style="font-weight: normal;">(সহীহ বুখারী হা. ৫৭৬৫, ৫৭৬৬)</span></h4>
<h4>
<br />
</h4>
<div style="text-align: left;">
আয়িশাহ (রাঃ) হতে অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (সাঃ)-এর যাদুকৃত চুল ও চিরুনীর দাঁত উদ্ধার হওয়ার পর সূরা ফালাক ও নাস নাযিল হয়। যার ১১টি আয়াতের প্রতিটি আয়াত পাঠের সাথে সাথে জাদুকৃত ১১টি চুলের গিরা পরপর খুলে যায় এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হালকা বোধ করেন ও সুস্থ হয়ে যান। (ইবনু কাসীর)</div>
<h4 style="text-align: left;">
</h4>
<div style="text-align: left;">
<br />
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে প্রতিশোধ নিতে বলা হলে তিনি বলেন : আল্লহ আমাকে আরোগ্য দান করেছেন। আমি অপছন্দ করি যে, মানুষের মাঝে খারাপ কিছু ছড়িয়ে দেওয়া হোক। </div>
<div style="text-align: left;">
<span style="font-weight: normal;">(সহীহ বুখারী হা. ৬৩৯১)</span></div>
<br />
<br />
গুরুত্ব:<br />
<br />
ওকবা বিন আমের আল যুহানী (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : আমার কাছে এমন কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যার অনুরূপ আর দেখা যায়নি। তাহলো সূরা ফালাক ও সূরা নাস। (সহীহ মুসলিম হা. ৮১৪) অন্য বর্ণনাতে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : তুমি কি জান আজ রাতে এমন কিছু আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যার সদৃশ ইতোপূর্বে কখনই দেখা যায়নি। তাহলো সূরা ফালাক ও নাস। (সহীহ মুসলিম হা. ৮১৪)<br />
<br />
ফযীলত:<br />
<br />
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবী (সাঃ) প্রত্যেক রাতে যখন বিছানায় যেতেন তখন দু হাত একত্রিত করে ফুঁ দিতেন, অতঃপর সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করতেন। তারপর যথাসম্ভব দু হাত দিয়ে শরীর মাসাহ করতেন। তিনি প্রথমে মাথা, মুখমন্ডল ও শরীরের সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করতেন। (সহীহ বুখারী হা. ৫০১৭)<br />
<br />
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জিন ও মানুষের চোখ লাগা হতে আশ্রয় চাইতেন কিন্তু যখন সূরা ফালাক ও নাস অবতীর্ণ হলো তখন তিনি সব বাদ দিয়ে এ দু’টিই পড়তে থাকেন। (সূরা কালামের তাফসীর দ্রষ্ট্যব্য)<br />
<br />
উকবা বিন আমের (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে প্রতি সালাতের শেষে সূরা ফালাক ও নাস পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন। (তিরমিযী হা. ২৯০৩ আবূ দাঊদ হা. ১৫২, মিশকাত হা. ৯৬৯)<br />
<br />
আয়িশাহ (রাঃ) বলেন : যখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অসুখে পড়তেন, তখন সূরা ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁক দিয়ে নিজের দেহে হাত বুলাতেন। কিন্তু যখন ব্যাথা-যন্ত্রণা অসহনীয় হয়ে যেত তখন বরকতের আশায় আমি তাঁর দেহে হাত বুলিয়ে দিতাম। মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে : পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে সূরা ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁক দিতেন। (সহীহ বুখারী হা. ৫০৯২, সহীহ মুসলিম হা. ২১৯২)<br />
<br />
একদা ওকবা বিন আমির (রাঃ)-কে নাবী (সাঃ) বলেন : হে ওকবা! আমি কি তোমাকে শ্রেষ্ঠ দুটি সূরা শিক্ষা দেব না? অতঃপর তিনি আমাকে সূরা ফালাক ও নাস শিক্ষা দিলেন। তারপর তিনি সালাতের ইমামতি করেন এবং সূরাদ্বয় পাঠ করলেন। সালাত শেষে আমাকে বললেন : হে ওকবা! তুমি এ দুটি সূরা পাঠ করবেÑযখন ঘুমাবে এবং যখন ঘুম থেকে জাগবে। (আহমাদ হা. ১৭৩৩৫, নাসায়ী হা. ৫৪৩৭, সহীহুল জামে হা. ৭৯৪৮)<br />
<br />
এ ছাড়াও সূরাদ্বয়ের ফযীলত সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস পাওয়া যায়।<br />
<br />
জাদু টোনা, ঝাড়ফুঁক ও তাবীজ কবচ : ইসলামে জাদু হারাম। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে দূরে থাক। তার মধ্যে অন্যতম হলো জাদু। (সহীহ বুখারী হা. ২৭৬৬, সহীহ মুসলিম হা. ৮৯)<br />
<br />
ইসলামে ঝাড়-ফুঁক সিদ্ধ তবে অবশ্যই সে ঝাড়-ফুঁক কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ অনুপাতে হতে হবে। যেমন সূরা ফালাক, নাস ও ইখলাস ইত্যাদি এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে যে সকল দু‘আ প্রমাণিত। যেমন<br />
<br />
بِاسْمِ اللّٰهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللّٰهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللّٰهِ أَرْقِيكَ<br />
<br />
আমি আল্লাহ তা‘আলার নামে আপনাকে ঝেড়ে দিচ্ছি এমন সব বিষয় হতে যা আপনাকে কষ্ট দেয়। প্রত্যেক হিংসুক ব্যক্তির বা হিংসুক চোখের অনিষ্ট হতে আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে নিরাময় করুন। আল্লাহ তা‘আলার নামে আপনাকে ঝেড়ে দিচ্ছি। (সহীহ মুসলিম হা. ২১৮৬)<br />
<br />
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাসান ও হুসাইন (রাঃ)-কে নিম্নোক্ত দু‘আর মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক করেছেন।<br />
<br />
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ<br />
<br />
আমি আল্লাহ তা‘আলার পূর্ণ বাক্যসমূহের আশ্রয়ে নিচ্ছি প্রত্যেক শয়তান হতে, বিষাক্ত কীট পতঙ্গ ও প্রত্যেক অনিষ্টকারীর চক্ষু হতে। (সহীহ বুখারী হা. ৩৩৭১)। এ ছাড়াও ঝাড়-ফুঁকের অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে।<br />
<br />
কিন্তু যদি ঝাড় ফুঁক কুরআন বা সহীহ সুন্নাহ অনুপাতে না হয়ে অন্য কোন বানোয়াট শির্কী কথা দ্বারা হয় তাহলে তা সম্পূর্ণ হারাম। বিভিন্ন বালা-মসিবত থেকে বাঁচার জন্য বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে তাবিজ ঝুলানো বা তাবিজ বাঁধা চাই তা কুরআন দ্বারা হোক আর অন্য কিছু হোক তা সম্পূর্ণ নিষেধ। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : যে ব্যক্তি তাবিজ ঝুলালো সে শিরক করল। (আহমাদ হা. ১৭৪৫৮, সিলসিলা সহীহাহ হা. ৪৯২)<br />
<br />
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : ><br />
<br />
مَنْ تَعَلَّقَ شَيْئًا وُكِلَ إِلَيْهِ<br />
<br />
যে ব্যক্তি কোন কিছু লটকায় তাকে তার দিকেই সোপর্দ করে দেয়া হবে। (তিরমিযী হা. ২০৭২, মিশকাত হা. ৪৫৫৬, সনদ হাসান।)<br />
<br />
তাই ঝাড়-ফুঁেকর প্রয়োজন হলে একমাত্র কুরআন ও স্ন্নুাহ দ্বারাই করতে হবে।<br />
<br />
তাফসীর:<br />
<br />
(قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ) - الْفَلَقِ অর্থ الصبح<br />
<br />
বা প্রভাত কাল, উষা। আবার ফালাক অর্থ বিদীর্ণ করা, ফেটে বের হওয়া। যেমন বলা হয় فلقت<br />
<br />
الشئ أي شققته<br />
<br />
আমি জিনিসটিকে ফালাক করেছি অর্থাৎ বিদীর্ণ করেছি। কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন :<br />
<br />
(إِنَّ اللّٰهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوٰي)<br />
<br />
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ শস্য-বীজ ও আঁটি অঙ্কুরিত করেন’ (সূরা আন‘আম ৫: ৯৫)<br />
<br />
যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা রাতের অন্ধকার ভেদ করে প্রভাতের আলো বিকশিত করেন, তাই তাকে ফালাক বলা হয়। আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে প্রভাতের প্রতিপালকের কাছে, নিজের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার নির্দেশ দিচ্ছেন। অর্থাৎ এতে ইঙ্গিত রয়েছে সকল অনিষ্টের মূল হলো অন্ধকার। অনিষ্ট দূর হওয়ার পর আসে খুশির প্রভাত। মানুষ যখন বিপদে পতিত হয় তখন চেহারা মলিন ও অন্ধকার হয়ে যায়। আবার যখন বিপদ থেকে মুক্তি পায় তখন চেহারা খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।<br />
<br />
(شَرِّ مَا خَلَق)<br />
<br />
অর্থাৎ সকল মাখলুকের অনিষ্ট হতে। হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন: জাহান্নাম, শয়তান ও তার সঙ্গী সাথী যা আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টি করেছেন।<br />
<br />
(وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ) - غَاسِق<br />
<br />
অর্থ: রাত। যেমন হাসান বাসরী ও কাতাদাহ (রহঃ) বলেন :<br />
<br />
انه الليل اذا اقبل بظلامه<br />
<br />
এটা (গাসাক) হলো রাত যখন তা অন্ধকারসহ আগমন করে। (ই্বনু কাসীর)<br />
<br />
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন :<br />
<br />
الغسق اول ظلمة الليل<br />
<br />
গসাক হলো রাতের প্রথম অন্ধকার। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন :<br />
<br />
(أَقِمِ الصَّلٰوةَ لِدُلُوْكِ الشَّمْسِ إِلٰي غَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْاٰنَ الْفَجْرِ)<br />
<br />
‘সূর্য ঢলে পড়ার পর হতে রাত্রির ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম কর এবং কায়েম কর ফজরের সালাত।’ (সূরা ইসরা ১৭ : ৭৮)<br />
<br />
আবার হাদীসে চাঁদকে غَاسِقٍ বলা হয়েছে। যেমন একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রাতে আয়িশাহ (রাঃ)-এর হাত ধরে চাঁদ দেখিয়ে বলেন : হে আয়িশাহ! এর অনিষ্ট হতে আল্লাহ তা‘আলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর। কেননা এটা হলো গাসেক যখন সে সমাগত হয়। (তিরমিযী হা. ৩৩৬৬, মিশকাত হা. ২৪৭৫ সনদ সহীহ।)<br />
<br />
যারা গাসেক বলে রাতকে বুঝিয়েছেন আর যারা চাঁদকে বুঝিয়েছেন উভয়ের মাঝে কোন প্রার্থক্য নেই। কেননা চাঁদ রাতের একটি নিদর্শন।<br />
<br />
وَقَبَ অর্থ : প্রবেশ করা, চলে যাওয়া ইত্যাদি। অর্থাৎ আমি আশ্রয় চাচ্ছি রাতের অনিষ্ট হতে যখন তা অন্ধকারে প্রবেশ করে। রাতের অন্ধকারেই হিংস্র জন্তু, ক্ষতিকর প্রাণী ও পোকা মাকড় অনুরূপভাবে অপরাধপ্রবণ হিংস্র মানুষ নিজ নিজ জঘন্য ইচ্ছা পূরণের আশা নিয়ে বাসা হতে বের হয়। এ বাক্য দ্বারা সে সকল অনিষ্টকর জীব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করার কথা বলা হচ্ছে।<br />
<br />
(وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثٰتِ فِي الْعُقَدِ)<br />
<br />
হাসান বাসরী, যহহাক ও কাতাদাহ (রহঃ) বলেন :<br />
<br />
النفاثات هن السواحر<br />
<br />
নাফফাসাত হলো জাদুকারীগণ। আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন : গিরাতে ফুঁৎকারদানকারী আত্মার অনিষ্ট হতে অথবা গিরাতে ফুঁৎকারদানকারিণী মহিলাদের থেকে। (ফাতহুল কাদীর)<br />
<br />
এ থেকে উদ্দেশ্য হলো : গিরাতে ফুঁক দানকারী প্রত্যেক জাদুকারিণী ও জাদুকর যারা মানুষের ক্ষতি করে থাকে।<br />
<br />
حَسَدَ বলা হয় ‘যে ব্যক্তির সাথে হিংসা করা হচ্ছে তাকে আল্লাহ তা‘আলা যে নেয়ামত দান করেছেন তা দূরীভূত হয়ে যাওয়ার আকাক্সক্ষা করা।’ (ফাতহুল কাদীর)<br />
<br />
এরূপ হিংসা করা কবীরাহ গুনাহ ও মারাত্মক ব্যাধি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন :<br />
<br />
إِيَّاكُمْ وَالْحَسَدَ، فَإِنَّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ<br />
<br />
তোমরা হিংসা থেকে বেঁেচ থাকে। কেননা হিংসা মানুষের সৎ আমল এমনভাবে খেয়ে ফেলে যেমন আগুন কাঠ খেয়ে ফেলে। (আবূ দাঊদ হা. ৪৯০৩, সহীহ)<br />
<br />
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন : হিংসা হলো প্রথম পাপ, যা আসমানে করা হয় এবং প্রথম পাপ যা পৃথিবীতে করা হয়। যা আসমানে ইবলীস আদমের সাথে করেছিল। আর পৃথিবীতে কাবীল তার ছোট ভাই হাবীলের সাথে করেছিল। অতএব হিংসুক ব্যক্তি অভিশপ্ত, বহিস্কৃত ও প্রত্যাখ্যাত। (তাফসীর কুরতুবী)<br />
<br />
<br />
তাই হিংসাকারীর অনিষ্ট থেকেও আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে আশ্রয় প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। হিংসা থেকে বাঁচার উপায় হল বেশি বেশি শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় চাওয়া। এজন্য নিম্নোক্ত দু‘আটি বেশি বেশি পাঠ করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :<br />
<br />
(رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْإِيْمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِيْ قُلُوْبِنَا غِلًّا لِّلَّذِيْنَ اٰمَنُوْا رَبَّنَآ إِنَّكَ رَؤُوْفٌ رَّحِيْم)<br />
<br />
<div style="text-align: left;">
“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং আমাদের সে-সব ভাইদের ক্ষমা কর যারা আমাদের পূর্বে ঈমান এনেছে এবং মু’মিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তো দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।” (সূরা হাশর ৫৯ : ১০)</div>
<br />
<br />
<h4 style="text-align: left;">
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:</h4>
১. সূরা ফালাক ও নাসের অন্যান্য নাম জানলাম।<br />
২. এ দুটি সূরার গুরুত্ব ও ফযীলত জানলাম।<br />
৩. জাদুটোনা ও তাবীজ-কবচ শরীয়তে সম্পূর্ণ নিষেধ।<br />
৪. কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ দ্বারা ঝাড়-ফুঁক হলে বৈধ, অন্যথায় তা অবৈধ।<br />
৫. জাদুর প্রভাব রয়েছে যার প্রমাণ নাবী (সাঃ) স্বয়ং নিজে।<br />
৬. ইয়াহূদীরা ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন চক্রান্ত ও অপকৌশল অবলম্বন করে আসছে যা আজও বিদ্যামান।<br />
৭. হিংসা একটি বড় গুনাহ এবং মারাত্মক ব্যাধি যা মানুষের সৎ আমল বিনষ্ট করে দেয়।<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgD0fiLv3Ds51DLuHkYwQWpl6AJqnDxkHvVRA4kTpDfGQtN7TQKu2llJOstXn6dwDAHCAPHQH-tFl6e_Z12d0wNWBUPKfQLDbJXg8wL1i277dcbMj0P71G87gzLAskRGU3dCRaKBcvE2OI/s1600/%25E0%25A6%25B8%25E0%25A7%2582%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8+%25E0%25A6%258F%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AB%25E0%25A6%25AF%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25A4.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="290" data-original-width="387" height="239" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgD0fiLv3Ds51DLuHkYwQWpl6AJqnDxkHvVRA4kTpDfGQtN7TQKu2llJOstXn6dwDAHCAPHQH-tFl6e_Z12d0wNWBUPKfQLDbJXg8wL1i277dcbMj0P71G87gzLAskRGU3dCRaKBcvE2OI/s320/%25E0%25A6%25B8%25E0%25A7%2582%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8+%25E0%25A6%258F%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AB%25E0%25A6%25AF%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25A4.jpg" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><span style="font-size: 12.8px;">সূরা নাস বাংলা অর্থসহ উচ্চারন,</span></td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-6981939006679831252020-01-28T21:08:00.000+06:002020-01-28T21:08:18.005+06:00আল্লাহ কি নিরাকার, আল্লাহর আকার আছে কি?<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div dir="ltr">
আল্লাহ কি নিরাকার, আল্লাহর আকার আছে কিঃ<br />
সূরা ছোয়াদ:66 - তিনি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, পরাক্রমশালী, মার্জনাকারী।<br />
সূরা নাহল:74 - অতএব, আল্লাহর কোন সদৃশ সাব্যস্ত করো না, নিশ্চয় আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহর আকার আছেঃ</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহর হাত আছেঃ</div>
<div dir="ltr">
সূরা ছোয়াদ:75 - আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?</div>
<div dir="ltr">
সূরা ছোয়াদ:76 - সে বললঃ আমি তার চেয়ে উত্তম আপনি আমাকে আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল-যুমার:67 - তারা আল্লাহকে যথার্থরূপে বোঝেনি। কেয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোতে এবং আসমান সমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে।</div>
<div dir="ltr">
সূরা ছোয়াদ:71 - যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করব।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল ফাতহ:10 - যারা আপনার কাছে আনুগত্যের শপথ করে, তারা তো আল্লাহর কাছে আনুগত্যের শপথ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর রয়েছে। অতএব, যে শপথ ভঙ্গ করে; অতি অবশ্যই সে তা নিজের ক্ষতির জন্যেই করে এবং যে আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করে; আল্লাহ সত্ত্বরই তাকে মহাপুরস্কার দান করবেন।<br />
সূরা আল ইমরান:73 - যারা তোমাদের ধর্মমতে চলবে, তাদের ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করবে না। বলে দিন নিঃসন্দেহে হেদায়েত সেটাই, যে হেদায়েত আল্লাহ করেন। আর এসব কিছু এ জন্যে যে, তোমরা যা লাভ করেছিলে তা অন্য কেউ কেন প্রাপ্ত হবে, কিংবা তোমাদের পালনকর্তার সামনে তোমাদের উপর তারা কেন প্রবল হয়ে যাবে! বলে দিন, মর্যাদা আল্লাহরই হাতে; তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল ইমরান:26 - বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল মায়েদাহ:64 - আর ইহুদীরা বলেঃ আল্লাহর হাত বন্ধ হয়ে গেছে। তাদেরই হাত বন্ধ হোক। একথা বলার জন্যে তাদের প্রতি অভিসম্পাত। বরং তাঁর উভয় হস্ত উম্মুক্ত। তিনি যেরূপ ইচ্ছা ব্যয় করেন। আপনার প্রতি পলনকর্তার পক্ষ থেকে যে কালাম অবর্তীণ হয়েছে, তার কারণে তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর পরিবর্ধিত হবে। আমি তাদের পরস্পরের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিয়েছি। তারা যখনই যুদ্ধের আগুন প্রজ্জòলিত করে, আল্লাহ তা নির্বাপিত করে দেন। তারা দেশে অশান্তি উৎপাদন করে বেড়ায়। আল্লাহ অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না।</div>
<div dir="ltr">
ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ ক্বিয়ামাতের দিন পৃথিবীটা তাঁর মুঠোতে নিয়ে নেবেন। আসমানকে তাঁর ডান হাতে গুটিয়ে নিয়ে বলবেন; বাদশাহ্ একমাত্র আমিই। সহীহুল বুখারী ৭৪১২</div>
<div dir="ltr">
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহূদী আলিমদের থেকে এক আলিম রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমরা (তাওরাতে দেখতে) পাই যে, আল্লাহ্ তা‘আলা আকাশসমূহকে এক আঙ্গুলের উপর স্থাপন করবেন। যমীনকে এক আঙ্গুলের উপর, বৃক্ষসমূহকে এক আঙ্গুলের উপর, পানি এক আঙ্গুলের উপর, মাটি এক আঙ্গুলের উপর এবং অন্যান্য সৃষ্টি জগত এক আঙ্গুলের উপর স্থাপন করবেন। তারপর বলবেন, আমিই বাদশাহ। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থনে হেসে ফেললেন; এমনকি তাঁর সামনের দাঁত প্রকাশ হয়ে পড়ে। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করলেন, তারা আল্লাহ্কে যথোচিত মর্যাদা দান করে না।[1][৭৪১৪, ৭৪১৫, ৭৪৫১, ৭৫১৩; মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৮৬, আহমাদ ৪৩৬৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৪৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৪৮)</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহর পা আছেঃ</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল কলম:42 - গোছা পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, সেদিন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না।</div>
<div dir="ltr">
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হলে জাহান্নাম বলবে, আরো আছে কি? শেষে আল্লাহ্ তাঁর পা সেখানে রাখবেন, তখন সে বলবে, আর না, আর না। <br />
[সহিহ বুখারি তাওহীদ ৪৮৪৮, ৬৬৬১, ৭৩৮৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৮৪)</div>
<div dir="ltr">
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আমাদের প্রতিপালক যখন তাঁর পায়ের গোড়ালির জ্যোতি বিকীর্ণ করবেন, তখন ঈমানদার নারী ও পুরুষ সবাই তাকে সাজ্দাহ করবে। কিন্তু যারা দুনিয়াতে লোক দেখানো ও প্রচারের জন্য সাজ্দাহ করত, তারা কেবল বাকী থাকবে। তারা সাজদাহ করতে ইচ্ছে করলে তাদের পিঠ একখন্ড কাঠের ন্যায় শক্ত হয়ে যাবে। <br />
[সহিহ বুখারি ৪৯১৯, ২২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৫৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৫৫৪)</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহর কান ও চোঁখ আছেঃ</div>
<div dir="ltr">
সূরা আলাক:14 - সে কি জানে না যে, আল্লাহ দেখেন?</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল মুজাদালাহ:1 - যে নারী তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে এবং অভিযোগ পেশ করছে আল্লাহর দরবারে, আল্লাহ তার কথা শুনেছেন। আল্লাহ আপনাদের উভয়ের কথাবার্তা শুনেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আশ-শো’আরা:218 - যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি নামাযে দন্ডায়মান হন,</div>
<div dir="ltr">
সূরা আশ-শো’আরা:219 - এবং নামাযীদের সাথে উঠাবসা করেন।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আশ-শুরা:11 - তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুস্পদ জন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আত্ব তূর:48 - আপনি আপনার পালনকর্তার নির্দেশের অপেক্ষায় সবর করুন। আপনি আমার দৃষ্টির সামনে আছেন এবং আপনি আপনার পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করুন যখন আপনি গাত্রোত্থান করেন।<br />
সূরা ত্বোয়া-হা:39 - যে, তুমি (মূসাকে) সিন্দুকে রাখ, অতঃপর তা দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও, অতঃপর দরিয়া তাকে তীরে ঠেলে দেবে। তাকে আমার শক্র ও তার শক্র উঠিয়ে নেবে। আমি তোমার প্রতি মহব্বত সঞ্চারিত করেছিলাম আমার নিজের পক্ষ থেকে, যাতে তুমি আমার দৃষ্টির সামনে প্রতি পালিত হও।</div>
<div dir="ltr">
সূরা হাজ্জ্ব:61 - এটা এ জন্যে যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাত্রির মধ্য দাখিল করে দেন এবং আল্লাহ সবকিছু শোনেন, দেখেন।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আন নিসা:58 - নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের কোন বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ কর, তখন মীমাংসা কর ন্যায় ভিত্তিক। আল্লাহ তোমাদিগকে সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী।</div>
<div dir="ltr">
সূরা কাহফ:26 - বলুনঃ তারা কতকাল অবস্থান করেছে, তা আল্লাহই ভাল জানেন। নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই কাছে রয়েছে। তিনি কত চমৎকার দেখেন ও শোনেন। তিনি ব্যতীত তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরীক করেন না।<br />
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজনের সামনে মাসীহ দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, আল্লাহ্ টেঁড়া নন। সাবধান! মাসীহ দাজ্জালের ডান চক্ষু টেঁড়া। তার চক্ষু যেন ফুলে যাওয়া আঙ্গুরের মত। <br />
সহিহ বুখারি (৩৪৩৯,৩০৫৭) (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১৯৪ প্রথমাংশ)</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহ কথা বলেন, আল্লাহর মুখ আছেঃ</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল কাসাস:30 - যখন সে তার কাছে পৌছল, তখন পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত উপত্যকার ডান প্রান্তের বৃক্ষ থেকে তাকে আওয়াজ দেয়া হল, হে মূসা! আমি আল্লাহ, বিশ্ব পালনকর্তা।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল আ’রাফ:143 - তারপর মূসা যখন আমার প্রতিশ্রুত সময় অনুযায়ী এসে হাযির হলেন এবং তাঁর সাথে তার পরওয়ারদেগার কথা বললেন, তখন তিনি বললেন, হে আমার প্রভু, তোমার দীদার আমাকে দাও, যেন আমি তোমাকে দেখতে পাই। তিনি বললেন, তুমি আমাকে কস্মিনকালেও দেখতে পাবে না, তবে তুমি পাহাড়ের দিকে দেখতে থাক, সেটি যদি স্বস্থানে দঁড়িয়ে থাকে তবে তুমিও আমাকে দেখতে পাবে। তারপর যখন তার পরওয়ারদগার পাহাড়ের উপর আপন জ্যোতির বিকিরণ ঘটালেন, সেটিকে বিধ্বস্ত করে দিলেন এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। অতঃপর যখন তাঁর জ্ঞান ফিরে এল; বললেন, হে প্রভু! তোমার সত্তা পবিত্র, তোমার দরবারে আমি তওবা করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আশ-শুরা:51 - কোন মানুষের জন্য এমন হওয়ার নয় যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়</div>
<div dir="ltr">
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ ডাকবেন, হে আদাম (আঃ)! তখন তিনি জবাব দিবেন, আমি হাযির,<br />
সহিহ বুখারি ৩৩৪৮ (৪৭৪১, ৬৫৩০, ৭৪৮৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১০৮)</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহর চেহারাঃ</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল বাক্বারাহ:115 - পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।</div>
<div dir="ltr">
সূরা আর রহমান:26 - ভূপৃষ্টের সবকিছুই ধ্বংসশীল।<br />
সূরা আর রহমান:27 - একমাত্র আপনার মহিমায় ও মহানুভব পালনকর্তার সত্তা ছাড়া।</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহকে দেখা যাবেঃ</div>
<div dir="ltr">
সূরা আল ক্বেয়ামাহ:23 - তারা তার পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।</div>
<div dir="ltr">
বাকারাহ ১১৫- পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।</div>
<div dir="ltr">
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অবশ্যই তোমরা তোমাদের রববকে দিব্যচক্ষে দেখতে পাবে।<br />
সহিহ বুখারি[ ৭৪৩৫, ৫৫৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯২৯)</div>
<div dir="ltr">
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, সহাবীগণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি ক্বিয়ামাতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেনঃ মেঘমুক্ত পুর্ণিমার রাতের চাঁদকে দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দেহ পোষণ কর? তাঁরা বললেন, না, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে কি তোমাদের কোন সন্দেহ আছে? সবাই বললেন, না। তখন তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে তোমরাও আল্লাহ্কে তেমনিভাবে দেখতে পাবে।<br />
(বুখারি ৮০৬)</div>
<div dir="ltr">
আল্লাহর আকার আছেঃ এই সম্পর্কিত কিছু হাদিস</div>
<div dir="ltr">
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [একদা] আমার হাত ধরে বললেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা শনিবার জমিন সৃষ্টি করেছেন, রবিবার তার মধ্যে পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন। সোমবার সৃষ্টি করেছেন গাছ-পালা। মঙ্গলবার মন্দ বস্তু সৃষ্টি করেছেন। বুধবার আলো সৃষ্টি করেছেন। তাতে [জমিনে] জীবজন্তু ছড়িয়েছেন বৃহস্পতিবার। আর সমস্ত জিনিস সৃষ্টি করার পর পরিশেষে জুমার দিন আসরের পর দিনের শেষভাগে আসর ও রাতের মাঝামাঝি সময়ে [আদি পিতা] আদম-কে সৃষ্টি করেছেন।’’ (মুসলিম) [1]</div>
<div dir="ltr">
[1] মুসলিম ২৭৮৯, আহমাদ ৮১৪১ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)</div>
<div dir="ltr">
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘জান্নাত ও জাহান্নামের বিবাদ হল। জাহান্নাম বলল, ‘আমার মধ্যে উদ্ধত ও অহংকারী লোকেরা।’ আর জান্নাত বলল, ‘আমার ভিতরে দুর্বল ও দরিদ্র ব্যক্তিদের বসবাস।’ অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের মধ্যে ফায়সালা করলেন যে, ‘তুমি জান্নাত আমার রহমত, তোমার দ্বারা আমি যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করব। আর তুমি জাহান্নাম আমার শাস্তি, তোমার দ্বারা আমি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেব। আর তোমাদের উভয়কেই পরিপূর্ণ করা আমার দায়িত্ব।’’ (মুসলিম) [1]</div>
<div dir="ltr">
[1] সহীহুল বুখারী <a href="tel:4849">৪৮৪৯</a>, <a href="tel:4850">৪৮৫০</a>, <a href="tel:7449">৭৪৪৯</a>, মুসলিম <a href="tel:2846">২৮৪৬</a>,<a href="tel:2847">২৮৪৭</a>, তিরমিযী <a href="tel:2557">২৫৫৭</a>, <a href="tel:2561">২৫৬১</a>,</div>
<div dir="ltr">
ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ ক্বিয়ামাতের দিন পৃথিবীটা তাঁর মুঠোতে নিয়ে নেবেন। আসমানকে তাঁর ডান হাতে গুটিয়ে নিয়ে বলবেন; বাদশাহ্ একমাত্র আমিই। সহীহুল বুখারী ৭৪১২</div>
<div dir="ltr">
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি হালাল কামাই থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদাকাহ করবে, (আল্লাহ তা কবূল করবেন) এবং আল্লাহ কেবল পবিত্র মাল কবূল করেন আর আল্লাহ তাঁর ডান হাত [1] দিয়ে তা কবূল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে তা প্রতিপালন করেন যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সদাকাহ পাহাড় বরাবর হয়ে যায়। <br />
সহিহ বুখারি ১৪১০ (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩১৮)</div>
<div dir="ltr">
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ ডাকবেন, হে আদাম (আঃ)! তখন তিনি জবাব দিবেন, আমি হাযির, আমি সৌভাগ্যবান এবং সকল কল্যাণ আপনার হতেই। তখন আল্লাহ বলবেন, জাহান্নামীদেরকে বের করে দাও। আদাম (আঃ) বলবেন, জাহান্নামী কারা? আল্লাহ বলবেন, প্রতি হাজারে নয়শত নিরানববই জন। এ সময় ছোটরা বুড়ো হয়ে যাবে। প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখবে নেশাগ্রস্তের মত যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুতঃ আল্লাহর শাস্তি কঠিন- (হাজ্জঃ ২)। সহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে সেই একজন কে? তিনি বললেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা তোমাদের মধ্য হতে একজন আর এক হাজারের অবশিষ্ট ইয়াজুজ-মাজুজ হবে। অতঃপর তিনি বললেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম। আমি আশা করি, তোমরা সমস্ত জান্নাতবাসীর এক তৃতীয়াংশ হবে। [আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) বলেন] আমরা এ সংবাদ শুনে আবার আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সমস্ত জান্নাতীদের অর্ধেক হবে। এ কথা শুনে আমরা আবারও আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। তিনি বললেন, তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কাল পশম অথবা কালো ষাঁড়ের শরীরে কয়েকটি সাদা পশম। <br />
সহিহ বুখারি ৩৩৪৮ (৪৭৪১, ৬৫৩০, ৭৪৮৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩১০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩১০৮)</div>
<div dir="ltr">
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, দু’ব্যক্তিও ক্ষেত্রে আল্লাহ্ হাসেন। যারা একে অপরকে হত্যা করে উভয়েই জান্নাতবাসী হবে। একজন তো এ কারণে জান্নাতবাসী হবে যে, সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা হত্যাকারীর তাওবাহ কবুল করেছেন। ফলে সেও আল্লাহর রাস্তায় শহীদ বলে গণ্য হয়েছে। <br />
সহিহ বুখারি ২৮২৬, (মুসলিম ৩৩/৩৫ হাঃ ১৮৯০, আহমাদ ৯৯৮৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬২৭)</div>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-72940577073205519842020-01-27T23:49:00.000+06:002020-01-27T23:55:36.057+06:00করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার দোয়া, কঠিন রোগমুক্তির দোয়া ৷<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
আল্লাহর আযাব ও গযবকে ভয় করো এবং তাঁর নিকট প্রার্থনা করো।<br />
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفوَ وَالعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَة।<br />
<br />
🌺উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল-আ-ফিয়াতা ফিদ্দুনয়্যা ওয়াল-আ-খিরাহ।<br />
<br />
অর্থঃ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি।” (তিরমিযী ৩৫৫৮নং)<br />
<br />
اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَالْجُنُوْنِ وَالْجُذَامِ وَمِنْ سَيِّءِ الأَسْقَامِ।<br />
🌺উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিনাল বারাস্বি অলজুনূনি অলজুযা-মি অমিন সাইয়্যিইল আসক্বা-ম।<br />
<br />
অর্থঃ- হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট ধবল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (আঃদাঃ ২/৯৩, সঃতিঃ ৩/১৮৪, সঃনাঃ ৩/১১১৬)<br />
<br />
اَللّهُمَّ إِنِّيْ َأَعُوْذُ بِكَ مِنَ الصَّمَمِ وَالْبَكَمِ وَالْجُنُوْنِ وَالْجُذَامِ وَالْبَرَصِ وَسَيِّءِ الأِسْقَامِ।<br />
🌺উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিনাল আজযি অলকাসালি অলজুবনি অলবুখলি অলহারামি অলক্বাসওয়াতি অলগাফলাতি অলআইলাতি অযযিল্লাতি অলমাস্কানাহ। অ আঊযু বিকা মিনাল ফাক্বরি অলকুফরি অলফুসূক্বি অশশিক্বা-ক্বি অননিফা-ক্বি অসসুমআতি অররিয়া-'। অ আঊযু বিকা মিনাস স্বামামি অলবাকামি অলজুনূনি অলজুযা-মি অলবারাস্বি অসাইয়্যিইল আসক্বা-ম।<br />
<br />
অর্থঃ- হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কার্পণ্য, স্থবিরতা, কঠোরতা, ৗদাস্য, দারিদ্র্য, লাঞ্ছনা এবং দীনতা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। তোমার নিকট অভাব-অনটন, কুফরী, ফাসেকী, বিরোধিতা, কপটতা এবং (আমলে) সুনাম ও লোক প্রদর্শনের উদ্দেশ্য থেকে পানাহ চাচ্ছি। আর আমি তোমার নিকট বধিরতা, মূকতা, উন্মাদনা, কুষ্ঠরোগ, ধবল এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (সঃ জামে'১/৪০৬)<br />
<br />
اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَالأَدْوَاءِ।<br />
🌺উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিকা মিন মুনকারা-তিল আখলা-ক্বি অলআ'মা-লি অলআহওয়া-ই অলআদওয়া-'।<br />
<br />
অর্থঃ- হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট দুশ্চরিত্র, অসৎ কর্ম, কুপ্রবৃত্তি এবং কঠিন রোগসমূহ থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। (সঃ তিঃ ৩/১৮৪, সঃ জামে' ১২৯৮নং)<br />
<br />
---আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjQ3YF9Mbbhicw75g-VP3EQH2qGXSJo6jFaAm0RrNH_nASN1r9LwkjxhoPy_T3AijXKL0DOEHbMZxPyUBYRXT8DQTWww_uQGxmSDTPGU8qD0N_eZHuU-2exZjrM4xT7S43_wdw0yjjqK1w/s1600/%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE+%25E0%25A6%25AD%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2587%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8+%25E0%25A6%25A5%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2581%25E0%25A6%259A%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="করোনা ভাইরা থেকে বাঁচার উপায়," border="0" data-original-height="317" data-original-width="423" height="239" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjQ3YF9Mbbhicw75g-VP3EQH2qGXSJo6jFaAm0RrNH_nASN1r9LwkjxhoPy_T3AijXKL0DOEHbMZxPyUBYRXT8DQTWww_uQGxmSDTPGU8qD0N_eZHuU-2exZjrM4xT7S43_wdw0yjjqK1w/s320/%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE+%25E0%25A6%25AD%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2587%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8+%25E0%25A6%25A5%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2581%25E0%25A6%259A%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE.jpg" title="করোনা ভাইরাস," width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">করোনা ভাইরাস,</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3745146 88.60416599999996424.258812600000002 88.442804499999966 24.4902166 88.765527499999962tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-36275153475314496302020-01-27T23:02:00.000+06:002020-03-02T09:35:00.211+06:00মৃতপ্রায় ব্যক্তির কাছে উপস্থিত ব্যক্তির করণীয় কি?<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
মরনাপন্ন ব্যক্তির কাছে উপস্থিত ব্যাক্তির করনীয় কাজসমূহঃ<br />
<a name='more'></a><br />
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। সমস্ত প্রশংসা মহান রব্বুল আলামীনের জন্য, দরূদ এবং সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবীর প্রতি, তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি এবং সকল ছাহাবীর প্রতি। রোগী দেখতে যাওয়া মুসলিমদের পারস্পরিক অধিকার। আর যে রোগী দেখতে যাবে, তার জন্য উচিৎ হবে রোগীকে তওবা, যরূরী অছিয়ত এবং সর্বদা আল্লাহ্র যিক্র করার কথা স্বরণ করিয়ে দেওয়া। কেননা রোগী এ সময় এ জাতীয় বিষয়ের খুব বেশী মুখাপেক্ষী থাকে। অনুরূপভাবে রোগী যদি মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং তার কাছে উপস্থিত ব্যক্তি যদি নিশ্চিত হয় যে, তার মৃত্যু এসে গেছে, তাহলে তার উচিৎ তাকে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পড়ার কথা স্বরণ করিয়ে দেওয়া, যেমনটি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন।[1]<br />
<br />
সে শুনতে পায় এমন শব্দে তার নিকট আল্লাহ্র যিকর করবে। ফলে সে স্মরণ করবে এবং আল্লাহ্র যিকর করবে। বিদ্বানগণ বলেন, মুমূর্ষু ব্যক্তিকে লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ পড়ার জন্য আদেশ করা উচিৎ নয়। কেননা তার মনটা ছোট হয়ে যাওয়া এবং তার এই কঠিন অবস্থার কারণে সে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলতে অস্বীকার করে বসতে পারে। আর অস্বীকার করে বসলেই তার শেষ ভাল হবে না। সেজন্য তার শয্যাপাশে লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ পড়ে তাকে এই কালিমা স্বরণ করাবে। [অর্থাৎ তাকে বলবেনা যে, হে অমুক! লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ পড়]।<br />
<br />
এমনকি বিদ্বানগণ বলেছেন, যদি তাকে স্বরণ করিয়ে দেওয়ার পর সে স্বরণ করে এবং ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পড়ে, তাহলে তখন চুপ হয়ে যাবে এবং তার সাথে আর কোনো কথা বলবে না- যাতে দুনিয়াতে তার সর্বশেষ কথাটি হয় ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’। কিন্তু মুমূর্ষু ব্যক্তি যদি তারপর আবার অন্য কোন কথা বলে ফেলে, তাহলে আবার তাকে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ স্বরণ করাবে- যাতে তার শেষ কালেমাটি হয় ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’।<br />
<br />
আর মরণাপন্ন ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসীন তেলাওয়াতকে অনেক বিদ্বান সুন্নাত বলেছেন। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা মরণাপন্ন ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসীন পড়’।[2] তবে কেউ কেউ হাদীছটি যঈফ বলেছেন। সুতরাং যার দৃষ্টিতে হাদীছটি ছহীহ, তার নিকট সুরা ইয়াসীন পড়া সুন্নাত। পক্ষান্তরে যার দৃষ্টিতে হাদীছটি যঈফ, তার নিকট সূরাটি পড়া সুন্নাত নয়।[3]<br />
<br />
<br />
[1]. ইমাম মুসলিম আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের মুমূর্ষু রোগীদেরকে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ স্বরণ করাও’ (‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/৯১৬)। [2]. আবু দাঊদ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/৩১২১; ইবনু মাজাহ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/১৪৪৮; আহমাদ, ৫/২৬, ২৭। [3]. হাদীছটিকে ইমাম আলবানী ‘যঈফ’ বলেছেন (আলবানী, সুনানে আবূ দাঊদ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/৩১২১)। তিনি ‘ইরওয়াউল গালীল’-এ বলেছেন, হাদীছটিতে তিনটি ত্রুটি রয়েছে: ১. (হাদীছটির একজন বর্ণনাকরী) আবূ উছমান ‘মাজহূল’ বা অপরিচিত, ২. তার পিতাও ‘মাজহূল এবং ৩. হাদীছটিতে ‘ইযত্বিরাব’ রয়েছে (৩/১৫১, হা/৬৮৮)। সেজন্য শায়খ ইবনে বায (রহেমাহুল্লাহ)কে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, হাদীছটিতে যেহেতু একজন ‘মাজহূল’ বা অপরিচিত বর্ণনাকারী রয়েছে, সেহেতু মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসীন তেলাওয়াত করা উত্তম নয়। অবশ্য তার নিকট পবিত্র ক্বুরআন পড়া ভাল। কিন্তু সূরা ইয়াসীনকে নির্দিষ্ট করে নেওয়ার কোন যুক্তি নেই (মাজমূউ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৩/৯৫)।–অনুবাদক।<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj1HirH_d83OXiJqtRhQz6Ozlw0No7ARrG_phbw21bODKCty1YgSbmpVeJfSTGdeGzMMHakRLC-FgVkeIM8kZzwBWOlvAB9-c-OBM_4L2PYjYpNCcMWYAMYXtSGCGub_y7mleSNRR8kHxY/s1600/%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2583%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A7%2581+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%2582%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AC+%25E0%25A6%259B%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="মৃত্যু পূর্ব ব্যাক্তির কাছে করনীয় আমল," border="0" data-original-height="252" data-original-width="448" height="180" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj1HirH_d83OXiJqtRhQz6Ozlw0No7ARrG_phbw21bODKCty1YgSbmpVeJfSTGdeGzMMHakRLC-FgVkeIM8kZzwBWOlvAB9-c-OBM_4L2PYjYpNCcMWYAMYXtSGCGub_y7mleSNRR8kHxY/s320/%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2583%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A7%2581+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%2582%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AC+%25E0%25A6%259B%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF.jpg" title="" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">মৃতপ্রায় ব্যাকির কাছে করনীয়,</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-18405088543017271842019-11-05T11:43:00.000+06:002019-11-05T11:43:02.168+06:00বেপর্দা বা পর্দাহীন নারীর পরিনতি, বেপর্দায় চলাফেরা করা নারীর ভয়াবহতা ৷<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
বেপর্দায় চলাফেরা করা নারীর পরিনতিঃ</h3>
যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সরাসরি জাহান্নামের উল্লেখ করেছেন, বেপর্দা নারী তাদের অন্যতম। যা মানুষের জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। মানুষের ঈমান ধ্বংসেরও কারণ বটে।<br />
<br />
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,<br />
<br />
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُوْنَ.<br />
<br />
‘এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হ’তে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে যাতে তোমরা তাদের নিকট শামিত্ম পাও এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। চিমত্মাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে এতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে’ (রূম ২১)।<br />
<br />
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلاَ تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الأُولَى- ‘তোমরা স্বগৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন জাহেলী যুগের নারীদের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করো না’ (আহযাব ৩৩)।<br />
<br />
জাহেলী যুগে নারীরা নগ্ন, অর্ধনগ্ন হয়ে নিজেদেরকে প্রদর্শন করত যাকে বর্বরতা ও অসভ্য বলা হয়েছে। আমাদের নারীদেরকে এ নির্লজ্জতা, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা পথ অবলম্বন করতে আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,<br />
<br />
يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلاَبِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلاَ يُؤْذَيْنَ-<br />
<br />
‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিন নারীদেরকে বলে দিন যে, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না’ (আহযাব ৫৯)।<br />
<br />
এ আয়াতে স্বাধীন নারীদেরকে এক বিশেষ ধরনের পর্দার আদেশ দেয়া হয়েছে। তারা যেন মাথার উপর দিক থেকে চাদর ঝুলিয়ে মুখ ঢেকে রাখে। যাতে সাধারণ দাসীদের থেকে তাদের স্বাতন্ত্র্য ফুটে উঠে এবং দুষ্টদের কবল থেকে নিরাপদ থাকে। আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,<br />
<br />
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلاَ يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلاَّ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ-<br />
<br />
‘হে নবী! আপনি ঈমানদার নারীদের বলে দিন। তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান থাকে তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তাদের গ্রীবা ও হবদেশ চাদর দ্বারা ঢেকে রাখে’ (নূর ৩১)।<br />
<br />
অত্র আয়াতে আল্লাহ্ তা‘আলা নারীদেরকে দৃষ্টি নত রাখার জন্য আদেশ করেছেন। কারণ যেসব দৃশ্য পুরুষের জন্য ক্ষতিকর, সেসব দৃশ্য নারীর জন্যও ক্ষতিকর। আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,<br />
<br />
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ-<br />
<br />
‘তোমরা তাদের নিকট কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাও। এটা তোমাদের এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ’ (আহযাব ৫৩)।<br />
<br />
অত্র আয়াতের সারমর্ম এই যে, নারীদের কাছ থেকে অন্য কোন পুরুষ কোন ব্যবহারিক পাত্র, বস্ত্র ইত্যাদি নেয়া যরুরী হ’লে সামনে এসে নিবে না; বরং পর্দার অন্তরাল থেকে চাইবে। দেয়াল, দরজা ও পোশাক অন্তরাল হ’তে পারে। অত্র আয়াতে আরও বলা হয়েছে যে, পর্দার এই বিধান পুরুষ ও নারী উভয়ের অন্তরকে মানসিক কুমন্ত্রণা থেকে পবিত্র রাখে।<br />
<br />
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,<br />
<br />
وَالْقَوَاعِدُ مِنْ النِّسَاءِ اللاَّتِي لاَ يَرْجُونَ نِكَاحًا فَلَيْسَ عَلَيْهِنَّ جُنَاحٌ أَنْ يَضَعْنَ ثِيَابَهُنَّ غَيْرَ مُتَبَرِّجَاتٍ بِزِينَةٍ وَأَنْ يَسْتَعْفِفْنَ خَيْرٌ لَهُنَّ وَاللهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ-<br />
<br />
‘বৃদ্ধ নারী যারা বিবাহের আশা রাখে না, তাদের বহির্বাস পোষাক (চাদর, বোরকা ইত্যাদি) খুলে রাখলে কোন অপরাধ হবে না। তবে এটা হতে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’ (নূর ৬০)<br />
<br />
অত্র আয়াতে পর্দার বিশেষ পোষাক পরা ভাল বলা হয়েছে। যদিও সমাজে এ আয়াতের সরাসরি বিরোধিতা করা হয়। অর্থাৎ বয়ঃপ্রাপ্তা মা বোরকা পরিধান করেন অথচ সাথে পূর্ণ যুবতী মেয়ে নগ্ন-অর্ধনগ্ন হয়ে থাকে।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اطَّلَعْتُ فِي الْجَنَّةِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا الْفُقَرَاءَ وَاطَّلَعْتُ فِي النَّارِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ.<br />
<br />
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘আমি জান্নাতের প্রতি লক্ষ্য করলাম দেখলাম জান্নাতের অধিকাংশ অধিবাসী দরিদ্র। অতঃপর জাহান্নামের প্রতি লক্ষ্য করলাম এবং দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী নারী’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৩৪; বাংলা ৯ম খন্ড, হা/৫০০৫ ‘মন ভোলানো’ অধ্যায়)।<br />
<br />
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لاَ يَنْظُرُ الرَّجُلُ إِلَى عَوْرَةِ الرَّجُلِ وَلاَ الْمَرْأَةُ إِلَى عَوْرَةِ الْمَرْأَةِ وَلاَ يُفْضِي الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ وَلاَ تُفْضِي الْمَرْأَةُ إِلَى الْمَرْأَةِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ.<br />
<br />
আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক পুরুষ অপর পুরুষের গুপ্তাঙ্গের প্রতি লক্ষ্য করতে পারে না। তেমনি এক নারী অপর নারীর গুপ্তাঙ্গের প্রতি লক্ষ্য করতে পারে না। দু’জন পুরুষ একটি কাপড়ের নীচে শয্যা গ্রহণ করতে পারে না। তেমনি দু’জন নারী একটি কাপড়ের নীচে শয্যা গ্রহণ করতে পারে না’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩১০০; বাংলা ৬ষ্ঠ খন্ড, হা/২৯৬৬ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)।<br />
<br />
অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) অনেক বিষয়ে পুরুষকে পুরুষ থেকে এবং নারীকে নারী থেকে পর্দা করতে বলেছেন। বিশেষ করে হাতের কব্জি ও মুখমন্ডল ব্যতীত একজন নারী অপর নারীর বাকী অঙ্গের প্রতি লক্ষ্য করতে পারে না’।<br />
<br />
عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ تُبَاشِرُ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ فَتَنْعَتْهَا لِزَوْجِهَا كَأَنَّهُ يَنْظُرُ إِلَيْهاَ.<br />
<br />
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক নারী অপর নারীর অঙ্গের সাথে অঙ্গ লাগাতে পারে না বা স্পর্শ করতে পারে না। কারণ সে তার স্বামীকে ঐ নারীর অঙ্গের বিবরণ দিতে পারে তখন তার স্বামী ঐ নারীকে অন্তরের চোখে লক্ষ্য করবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪০৯৯; বাংলা ৮ম খন্ড, হা/৩৯২১ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়)।<br />
<br />
অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) নারীকে নারী থেকে পর্দা করতে বলেছেন। সুতরাং আমাদের দেশে বিবাহের অনুষ্ঠানে হলুদ মাখানো প্রথা নিতান্তই জঘন্য।<br />
<br />
عَنْ جَرِيرِبْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ نَظْرَةِ الْفَجْأَةِ فَأَمَرَنِي أَنْ أَصْرِفَ بَصَرِى.<br />
<br />
জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল(ছাঃ)-কে নারীদের প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি আমাকে আমার চোখ ফিরিয়ে নিতে আদেশ করলেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৩১০৪; বাংলা ৬ষ্ঠ খন্ড, হা/২৯৭০ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) নারীদের প্রতি স্বেচ্ছায় লক্ষ্য করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।<br />
<br />
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ الْمَرْأَةَ تُقْبِلُ فِي صُوْرَةِ شَيْطَانٍ وَتُدْبِرُ فِي صُوْرَةِ شَيْطَانٍ إِذَا أَحَدُكُمْ أَعْجَبَتْهُ الْمَرْأَةُ فَوَقَعَتْ فِي قَلْبِهِ فَلْيَعْمِدْ إِلَى إِمْرَأَتِهِ فَلْيُوَاقِعْهَا فَإِنَّ ذَلِكَ يَرُدُّ ماَ فِي نَفْسِهِ.<br />
<br />
জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মহিলারা শয়তানের আকৃতিতে আসে আর শয়তানের আকৃতিতে যায়। যদি কোন নারীকে তোমাদের কাউকে ভাল লাগে এবং সে অন্তরে গেঁথে যায়, তাহ’লে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট চলে যায় এবং তার সাথে মিলনে লিপ্ত হয়। নিশ্চয়ই এ মিলন অন্তরের মন্দ পরিকল্পনা দূর করে দিবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩১০৫)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বেহায়া নগ্ন নারীদেরকে শয়তানের সাথে তুলনা করেছেন। তাদের ক্ষতি অন্তরে জাগতে পারে বলে সতর্ক করেছেন।<br />
<br />
عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَرأَةُ عَوْرَةٌ فَإِذَا خَرَجَتْ إِسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ.<br />
<br />
ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘নারী হচ্ছে গোপন বস্তু। যখন সে বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তাকে নগ্নতার প্রতি ক্ষিপ্ত করে তুলে’ (তিরমিযী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৩১০৯)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নারী পর্দাবিহীন অবস্থায় বের হ’লে শয়তান তাকে পাপের উপর ক্ষিপ্ত করে’।<br />
<br />
عِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ تُسَافِرُمَرْأَةٌ مَسِيْرَةَ يَوْمٍ وَ لَيْلَةٍ إِلاَّ وَمَعَهَا ذُومَحْرَمٍ.<br />
<br />
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘মাহরাম ব্যতীত কোন মহিলা একদিন এক রাতের সফর করতে পারে না’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫১৫; বাংলা ৫ম খন্ড, হা/২৪০১ ‘হজ্জ’ অধ্যায়)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) নারীদেরকে একা সফর করতে নিষেধ করেছেন।<br />
<br />
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلاَتٌ مَائِلاَتٌ رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ لاَ يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلاَ يَجِدْنَ رِيحَهَا وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا.<br />
<br />
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘দুই শ্রেণীর লোক জাহান্নামী রয়েছে যাদেরকে এখনও আমি দেখিনি (প্রথম শ্রেণী) এমন সম্প্রদায় যাদের হাতে গরু পরিচালনা করা লাঠি থাকবে যা দ্বারা তারা মানুষকে প্রহার করবে। (দ্বিতীয় শ্রেণী) নগ্ন পোষাক পরিধানকারী নারী যারা পুরুষদেরকে নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা বক্র উঁচু কাঁধ বিশিষ্ট উটের ন্যায় হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি তারা জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সেই সুগন্ধি এত বহুদূর হতে পাওয়া যায়। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, এক মাসের পথের দূরত্ব হতে পাওয়া যায়’ (মুসলিম, মিশকত হা/৩৫২৪; বাংলা ৭ম খন্ড, হা/৩৩৬৯)।<br />
<br />
অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) নগ্ন পোষাক পরিহিতা বেহায়া ঈমান ধ্বংসকারিণী নারীদের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি তাদেরকে জাহান্নামী বলেছেন। বিশেষ করে তাদের নগ্ন মাথার তীব্র সমালোচনা করেছেন।<br />
<br />
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْحَيَاءُ مِنَ الِإيْمَانِ وَالْإِيْمَانُ فِي الْجَنَّةِ.<br />
<br />
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘লজ্জাই হচ্ছে ঈমান। ঈমান হচ্ছে জান্নাত লাভের মাধ্যম’ (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫০৭৭; বাংলা ৯ম খন্ড, হা/৪৮৫৫ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) লজ্জাকে ঈমান বলেছেন। অন্য হাদীছে বলা হয়েছে, ‘লজ্জা বিহীন নারী-পুরুষ সবকিছুই করতে পারে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫০৭২; বাংলা ৯ম খন্ড, হা/৪৮৫১)। এ হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, যে নারী নগ্ন হয়ে চলে তার লজ্জা নেই।<br />
<br />
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ... فَاتَّقُوا الدُّنْيَا واتَّقوا النِّسَاءَ فَإِنَّ أَوَّلَ فِتْنَةِ بَنِي إِسْرَائِيْلَ كَانَتْ فِي النِّسَاءِ.<br />
<br />
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘.... তোমরা দুনিয়া এবং নারীদের থেকে সাবধান থাক। কারণ নিশ্চয়ই বনী ইসরাঈলের প্রথম দুর্ঘটনা নারীদের মধ্যেই ঘটে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮৬; বাংলা ৬ষ্ঠ খন্ড, হা/২৯৫২ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)।<br />
<br />
عَنْ أًسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا تَرَكْتُ بَعْدِيْ فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ.<br />
<br />
উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমি আমার পরে এমন কোন জটিল সমস্যা ত্যাগ করিনি, পুরুষদের জন্য বেশী ক্ষতিকারক হতে পারে নারীদের চেয়ে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮৫)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) নারীদেরকে পুরুষদের জন্য সবচেয়ে বেশী ধ্বংসাত্মক বলে ঘোষণা করেছেন। কাজেই পুরুষদের সাবধান থাকা যরূরী।<br />
<br />
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِيَّاكُمْ وَالدُّخُولَ عَلَى النِّسَاءِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ يَا رَسُولَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ قَالَ الْحَمْوُ الْمَوْتُ.<br />
<br />
উক্ববা ইবনু আমের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা নারীদের নিকট যাওয়া থেকে সাবধান থাক। একজন ছাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! দেবর সম্পর্কে কি বলছেন? রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘দেবর মরণ সমতুল্য’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩১০২; বাংলা ৬ষ্ঠ খন্ড, হা/২৯৬৯ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)।<br />
<br />
অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) পুরুষদেরকে নারী থেকে সাবধান থাকতে বলেছেন। আর ভাবীদেরকে দেবর থেকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।<br />
<br />
عَنْ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِإِمْرَأَةٍ إِلاَّ كَانَ ثَالِثُهُمَا الشَّيْطانُ.<br />
<br />
ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘অবশ্যই কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হ’লে তৃতীয় জন হবে শয়তান’ (তিরমিযী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১৩১৮; বাংলা হা/২৯৮৪)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) পুরুষদেরকে অপর কোন নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন এবং শয়তান তাদেরকে বিপদগামী করবে বলে সাবধান করেছেন।<br />
<br />
قَالَ رَسُولُ ا للهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِيْنٍ أَذْهَبَ لِلُبِّ الرَّجُلِ الْحَازِمِ مِنْ إِحْدَيْ كُنَّ.<br />
<br />
একদা রাসূল (ছাঃ) মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘বুদ্ধি ও ধর্মের ব্যাপারে অপূর্ণতা থাকা সত্ত্বেও বুদ্ধিমান এবং জ্ঞানী পুরুষদের জ্ঞান তোমাদের অপেক্ষা আর কেউ অধিক বিনষ্ট করতে পারে এমন কাউকে আমি দেখিনি’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯)। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘জ্ঞানী ব্যক্তিও নারীদের চক্রান্ত থেকে রেহায় পায় না। নারীদের চক্রান্ত অত্যন্ত শক্তিশালী। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,إِنَّ كَيْدَكُنَّ عَظِيمٌ ‘নিশ্চয়ই তোমাদের (নারীদের) চক্রান্ত শক্তিশালী’ (ইউসুফ ২৮)।<br />
<br />
আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيْفًا নিঃসন্দেহে শয়তানের ষড়যন্ত্র অত্যন্ত দুর্বল (নিসা ৭৬)।<br />
<br />
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَعَنَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لُبْسَةَ الْمَرْأَةِ وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لُبْسَةَ الرَّجُلِ-<br />
<br />
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) সেই পুরুষের ওপর অভিশাপ করেছেন যে, মহিলার পোষাক পরিধান করে এবং সে মহিলার উপর অভিশাপ করেছেন যে পুরুষের পোষাক পরিধান করে (আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৬৯, বাংলা ৮ম খন্ড, হা/৪২৭০, হাদীছ ছহীহ)।<br />
<br />
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَعَنَ الْمُخَنَّثِينَ مِنْ الرِّجَالِ وَالْمُتَرَجِّلاَتِ مِنْ النِّسَاءِ .<br />
<br />
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী (ছাঃ) হিজড়ার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী নারীর উপর অভিশাপ করেছেন (বুখারী, মিশকাত হা/৪৪২৮)।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بِنْ عَمْرٍوعنِ النَبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلاَثَةٌ لاَ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ الْعَاقُّ لِوَالِدَيْهِ وَالدَّيُّوثُ وَرَّجْلَةُ النِّسَاءِ.<br />
<br />
ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন- রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না- (১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান (২) বাড়ীতে বেহায়াপনার সুযোগ প্রদানকারী (৩) পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী’ (নাসাঈ, হাদীছ ছহীহ্, ছহীহ তারগীব হা/২০৭০)।<br />
<br />
عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ قَالَ قِيلَ لِعَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا إِنَّ امْرَأَةً تَلْبَسُ النَّعْلَ فَقَالَتْ لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَةَ مِنْ النِّسَاءِ<br />
<br />
আবূ মুলায়কা (রাঃ) বলেন, একদা আয়েশা (রাযিঃ)-কে বলা হল- একটি মেয়ে পুরুষের জুতা পরে। তখন আয়েশা (রাঃ) বললেন, রাসূল (ছাঃ) পুরুষের বেশধারী নারীর প্রতি অভিশাপ করেছেন (আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৪৪৭০, হাদীছ ছহীহ)।<br />
<br />
হাদীছসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হল যে, যেসব পোষাক পুরুষের পোষাক বলে পরিচিত সে সব পোষাক নারীরা পরিধান করলে তাদের উপর আল্লাহর অভিশাপ হবে। উল্লেখ্য নারীদের মাথার চুল ছোট করা পুরুষের বেশ ধারণ করার অমতর্ভুক্ত।<br />
<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhALZAiDN8TsukdqhbnUZogacUl_DCEBzJFSqru1-CLN482jIVJNtnWCdd4mTjzrbnE27xmfOPxW-2ZHyglZZ_bQk-toogJfgSDp0EqxwLdJWXpoVxm9hF2XsPl3wk-q_H7ZJ4B2F2qB3o/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25BE+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BF.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="বেপর্দা নারীর পরিনতি ও শাস্তি," border="0" data-original-height="391" data-original-width="783" height="159" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhALZAiDN8TsukdqhbnUZogacUl_DCEBzJFSqru1-CLN482jIVJNtnWCdd4mTjzrbnE27xmfOPxW-2ZHyglZZ_bQk-toogJfgSDp0EqxwLdJWXpoVxm9hF2XsPl3wk-q_H7ZJ4B2F2qB3o/s320/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25BE+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BF.jpeg" title="বেপর্দা নারীর পরিনতি," width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">পর্দাহীন নারীর পরিনতি,</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-44628107182115164512019-11-05T11:27:00.004+06:002019-11-05T11:27:41.617+06:00ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা ও অধিকার ৷ ইসলামের নারীর নিরাপত্তা ও সন্মান ৷<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
একমাত্র ইসলাম ধর্মই দিয়েছে নারীদের উওম মর্যাদা, ও সঠিক অধিকারঃ</h3>
জাহেলিয়াতের যুগে নারীদের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। ইয়াহুদী খৃষ্টানরা নারীদের মর্যাদা দেয় নি। অমুসলিমরাও নারীদের মূল্যায়ন করেনি। বরং ইসলামই নারীদের যথাযথ মূল্যায়ন করেছে।<br />
<br />
জাহেলিয়াতের যুগে নারীদের ব্যাপারে মূল্যায়ন করা হয়নি, এব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,<br />
<br />
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِالْأُنْثَى ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ- يَتَوَارَى مِنَ الْقَوْمِ مِنْ سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ أَيُمْسِكُهُ عَلَى هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ فِي التُّرَابِ أَلَا سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ.<br />
<br />
তাদের কাউকেও যখন কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয় তখন তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়, তার গ্লানী হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হ’তে আত্মগোপন করে; সে চিন্তা করে যে, হীনতা সত্ত্বেও সে তাকে রেখে দিবে, না মাটিতে পুঁতে দিবে। সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত করে তা কতই না নিকৃষ্ট! (নাহল ৫৮-৫৯)।<br />
<br />
وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ- بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ.<br />
<br />
যখন জীবমত্ম-প্রথিত (জীবমত্ম কবর) কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে। কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল? (তাকবীর ৮-৯)।<br />
<br />
عَن الْمُغِيرَةِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمْ عُقُوقَ الْأُمَّهَاتِ.<br />
<br />
মুগীরাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর তোমাদের মাতাদের অবাধ্যতাকে হারাম করেছেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৫)। বাংলা মিশকাত হা/৪৬৯৮, পূর্ণ হাদীছ দিতে হবে<br />
<br />
عَنْ سَلَمَةَ بْنِ يَزِيْدَ الْجُعْفِيِّ قَالَ انْطَلَقْتُ أَنَا وَأَخِيْ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ أُمَّنَا مُلَيْكَةَ كَانَتْ تَصِلُ الرَّحِمَ وَتَقْرِي الضَّيْفَ وَتَفْعَلُ وَتَفْعَلُ هَلَكَتْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَهَلْ ذَلِكَ نَافِعُهَا شَيْئًا قَالَ لَا قَالَ قُلْنَا فَإِنَّهَا كَانَتْ وَأَدَتْ أُخْتًا لَنَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَهَلْ ذَلِكَ نَافِعُهَا شَيْئًا قَالَ الْوَائِدَةُ وَالْمَوْءُودَةُ فِي النَّارِ إِلَّا أَنْ تُدْرِكَ الْوَائِدَةُ الْإِسْلَامَ فَيَعْفُوَ اللهُ عَنْهَا-<br />
<br />
সালামা ইবনু ইয়াযীদ আল-জু‘ফী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং আমার ভাই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট গেলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আমাদের মাতা মুলাইকা আত্মীয়তার সম্পর্ক রাখতেন, অতিথি সেবা করতেন। এছাড়া অন্যান্য ভাল আমল করতেন। তিনি জাহেলিয়াতের যুগে মারা গেছেন। এসব সৎ আমল তার কোন কাজে আসবে কি? তিনি উত্তরে বললেন, না। আমরা বললাম, তিনি জাহিলিয়াতের যুগে আমাদের এক বোনকে জীবন্ত পুঁতে দিয়েছিলেন, এতে তার কোন ক্ষতি হবে কি? নবী কারীম(সা.) বললেন, যাকে জীবন্ত দাফন করা হয়েছে এবং যে দাফন করেছে উভয়েই জাহান্নামে যাবে। তবে পরে ইসলাম গ্রহণ করলে ক্ষমা হবে’ (আহমাদ হা/১৫৮৬৬; ইবনু কাছীর হ/৭১৬৭)।<br />
<br />
عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْوَائِدَةُ وَالْمَوْءُودَةُ فِي النَّارِ-<br />
<br />
ইবনু মাস‘ঊদ (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, ‘যাকে জীবন্ত দাফন করা হয়েছে এবং যে দাফন করেছে উভয়েই জাহান্নামী’ (ত্বাবারানী, ইবনু কাছীর হা/৭১৬৮)।<br />
<br />
عَنْ عُمَرَ قَالَ جَاءَ قَيْسُ بْنُ عَاصِمٍ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ قَالَ: إِنِّيْ وَأَدْتُ ثَمَانِيَ بَنَاتٍ لِيْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ، قَالَ: أَعْتِقْ عَنْ كُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهَا رَقَبَةً، قُلْتُ: إِنِّيْ صَاحِبُ إِبِلٍ، قَالَ: اِهْدِ إِنْ شِئْتَ عَنْ كُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُنَّ بَدَنَةً-<br />
<br />
ওমর (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, কায়েস ইবনু আছিম রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আমি জাহিলিয়াতের যুগে আমার ৮ জন কন্যাকে জীবিত প্রোথিত করেছি, এখন আমার করণীয় কি? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি প্রত্যেকটি কন্যার বিনিময়ে একটি করে গোলাম আযাদ করে দাও। তখন কায়েস (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আমি তো উটের মালিক। আমি গোলামের মালিক নই। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাহলে তুমি প্রত্যেকের জন্য একটি করে উট আল্লাহর নামে কুরবানী করে দাও’ (বাযযার, তাবারানী, ইবনু কাছীর হা/৭১৭১)।<br />
<br />
وَفِى رِوَايَةٍ قَالَ قَيْسُ بْنُ عَاصِمٍ وَأَدَتُ ثَمَانِيَ بَنَاتٍ لِيْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَقَالَ فِى اَخِرِهِ فَاهْدِ إِنْ شِئْتَ عَنْ كُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُنَّ بَدَنَةً-<br />
<br />
অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, কায়েস ইবনু আছিম বলেন, আমি জাহিলিয়াতের যুগে আমার ৮টি মেয়েকে জীবন্ত প্রোথিত করেছি। নবী করীম(সা.) বললেন, ‘তুমি প্রত্যেকটি মেয়ের বিনিময়ে একটি করে উট কুরবানী কর’ (ত্বাবারানী, ইবনু কাছীর হা/৭১৭২)।<br />
<br />
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ حَتَّى تَبْلُغَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنَا وَهُوَ هَكَذَا وَضَمَّ أَصَابِعَهُ-<br />
<br />
আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন করবে তাদের পূর্ণ বয়স্কা হওয়া পর্যন্ত, ক্বিয়ামতের দিন সে আমার সাথে এভাবে আসবে। এ বলে তিনি নিজের আঙ্গুলিসমূহ একত্রিত করে দেখালেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৫০)।<br />
<br />
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَقُوْلُ مَنْ كَانَ لَهُ ثَلَاثُ بَنَاتٍ فَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ وَأَطْعَمَهُنَّ وَسَقَاهُنَّ وَكَسَاهُنَّ مِنْ جِدَتِهِ كُنَّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ-<br />
<br />
ওকবা ইবনু আমের (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যার তিনটি কন্যা সন্তান থাকবে সে যদি তাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করে এবং নিজের সামর্থ্যানুযায়ী তাদের খাদ্য প্রদান করে, পান করার ব্যবস্থা করে এবং তাদের পোশাক পরিধান করায়, তাহলে তারা ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য জাহান্নাম হতে অন্তরাল হবে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৬৬৯, ছহীহাহ হা/২৯৪)।<br />
<br />
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْ رَجُلٍ تُدْرِكُ لَهُ ابْنَتَانِ فَيُحْسِنُ إِلَيْهِمَا مَا صَحِبَتَاهُ أَوْ صَحِبَهُمَا إِلَّا أَدْخَلَتَاهُ الْجَنَّةَ-<br />
<br />
ইবনু আববাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, ‘যে কোন মুসলমান ব্যক্তির দু’জন কন্যা হবে, সে তাদের ভালভাবে রক্ষণাহেবণ করবে যতদিন তারা দু’জন তার কাছে থাকবে, তাহলে তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৬৭০)।<br />
<br />
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ عَالَ ثَلَاثَ بَنَاتٍ فَأَدَّبَهُنَّ وَزَوَّجَهُنَّ وَأَحْسَنَ إِلَيْهِنَّ فَلَهُ الْجَنَّةُ-<br />
<br />
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তিন জন মেয়েকে লালন-পালন করবে, তাদেরকে শিষ্টাচার শিক্ষা দিবে এবং তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করবে, অতঃপর তাদের সাথে ভাল ব্যবহার বজায় রাখবে, তার জন্য জান্নাত রয়েছে’ (আহমাদ হা/১১৮৬৩)।<br />
<br />
অত্র আয়াতসমূহ এবং হাদীছগুলি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জাহেলিয়াতের যুগে মেয়েদেরকে জীবিত মাটিতে পুঁতে দেওয়া হত। মুফাসসিরগণ তার বাসত্মবরূপের এভাবে বিবরণ দেন।<br />
<br />
ইহুদী-খৃষ্টান নারীদেরকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে এবং উপভোগের বস্ত্ত হিসাবে ব্যবহার করে। নারীরা ঋতুবতী হলে তারা তাদেরকে ঘৃণা করে।<br />
<br />
عَنْ أَنَسٍ إِنَّ الْيَهُودَ كَانُوا إِذَا حَاضَتِ الْمَرْأَةُ فِيهِمْ لَمْ يُؤَاكِلُوهَا وَلَمْ يُجَامِعُوهُنَّ فِي الْبُيُوتِ فَسَأَلَ أَصْحَاب النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى (وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِى الْمَحِيضِ).<br />
<br />
আনাস ইবনু মালেক (রা.) বলেন, ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের মধ্যে যখন কোন স্ত্রীলোক হায়েযগ্রস্তা হত তখন তাদের সাথে একত্রে খেত না এবং তাদেরকে এক সঙ্গে রাখত না। একবার নবী করীম(সা.) -কে তারা (এ ব্যাপারে) জিজ্ঞেস করল। তখন আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করলেন, আর তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে হায়েয সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৫)। অত্র হাদীছে নারীদের সাথে ইহুদী-নাছারাদের আচরণ প্রমাণিত হয়, যা খুব দুঃখজনক।<br />
<br />
পক্ষামত্মরে নবী কারীম (ছাঃ) ঋতুবতী নারীদের সাথে যে আচরণ করেন।<br />
<br />
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَالنَّبِيُّ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ كِلاَنَا جُنُبٌ وَكَانَ يَأْمُرُنِي فَأَتَّزِرُ فَيُبَاشِرُنِي وَأَنَا حَائِضٌ وَكَانَ يُخْرِجُ رَأْسَهُ إِلَيَّ وَهُوَ مُعْتَكِفٌ فَأَغْسِلُهُ وَأَنَا حَائِضٌ.<br />
<br />
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘আমি আর নবী একই পাত্র হতে গোসল করতাম, অথচ তখন আমরা উভয়ে নাপাক। আমি তাঁর আদেশক্রমে লজ্জাস্থানের উপর লুঙ্গী বা কাপড় বাঁধতাম, তারপর তিনি তাঁর শরীর আমার শরীরের সাথে লাগাতেন অথবা আমার সাথে শুইতেন। অথচ তখন আমি ঋতুবতী। তিনি ই‘তেকাফ অবস্থায় আমার দিকে মাথা বের করে দিতেন। আমি মাথা ধুয়ে দিতাম, অথচ আমি ঋতুবতী (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৬)।<br />
<br />
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كُنْتُ أَشْرَبُ وَأَنَا حَائِضٌ ثُمَّ أُنَاوِلُهُ النَّبِيَّ فَيَضَعُ فَاهُ عَلَى مَوْضِعِ فِيَّ فَيَشْرَبُ وَأَتَعَرَّقُ الْعَرْقَ وَأَنَا حَائِضٌ ثُمَّ أُنَاوِلُهُ النَّبِيَّ فَيَضَعُ فَاهُ عَلَى مَوْضِعِ فِيَّ.<br />
<br />
আয়েশাgবলেন, ‘আমি ঋতু অবস্থায় পানি পান করতাম, অতঃপর রাসূল(সা.) -কে দিতাম। তিনি আমার মুখ লাগানো স্থানে মুখ রেখে পানি পান করতেন। আর কখনও আমি ঋতু অবস্থায় হাড়ের গোশত খেতাম। অতঃপর তা আমি তাকে দিতাম। তিনি আমার মুখ লাগানো স্থানে মুখ লাগিয়ে খেতেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭)।<br />
<br />
عَنْ عَائِشَةَ حَدَّثَتْهَا أَنَّ النَّبِيَّ كَانَ يَتَّكِئُ فِي حَجْرِي وَأَنَا حَائِضٌ ثُمَّ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ.<br />
<br />
আয়েশাgবলেন, ‘নবী(সা.) আমার কোলে হেলান দিয়ে কুরআন পড়তেন, অথচ আমি ঋতুবতী (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৮)।<br />
<br />
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَاوِلِينِي الْخُمْرَةَ مِنَ الْمَسْجِدِ قَالَتْ فَقُلْتُ إِنِّي حَائِضٌ فَقَالَ إِنَّ حَيْضَتَكِ لَيْسَتْ فِي يَدِكِ.<br />
<br />
আয়েশাgবলেন, নবী(সা.) একদা আমাকে বললেন, ‘মসজিদ হ’তে মাদুরটি দাও! আমি বললাম, আমি ঋতুবতী। রাসূল(সা.) বললেন, তোমার ঋতু তোমার হাতে লেগে নেই (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৯)।<br />
<br />
عَنْ مَيْمُونَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِي مِرْطٍ بَعْضُهُ عَلَيَّ وَبَعْضُهُ عَلَيْهِ وَأَنا حَائِض.<br />
<br />
মায়মুনাgবলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)ছালাত পড়তেন একটি চাদরে, যার একাংশ আমার গায়ের উপর থাকত আর অপরাংশ তাঁর গায়ের উপর, অথচ তখন আমি ঋতুবতী (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫০)।<br />
<br />
অত্র বিবরণে বুঝা যায় আল্লাহর নবী নারীদের কেমন মর্যাদা দিতেন। ঋতু অবস্থায় ইহুদীরা নারীদের ঘৃণা করে। আর এসময় আল্লাহর নবী স্ত্রীর উরুর উপর মাথা রেখে কুরআন তেলাওয়াত করেন।<br />
<br />
প্রত্যেকটি জিনিসের ভাল ও মন্দ গুণাগুণ রয়েছে। এই গুণাগুণগুলিকে সে জিনিসের বৈশিষ্ট্য বলা হয়। বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু উত্তম আদর্শ রয়েছে। সেগুলিই হচ্ছে ভাল নারীর বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্যগুলি যে নারীর মধ্যে থাকবে সে-ই ইসলামের দৃষ্টিতে ভাল নারী বলে বিবেচিত হবে। অতএব বিশ্বের মুসলিম নারীদের শিক্ষার লক্ষ্যে ভাল নারীর কিছু বৈশিষ্ট্য নিম্নে আলোকপাত করা হল।<br />
<br />
আল্লাহ তা‘আলা ভাল নারীর গুণাবলী উল্লেখ করে বলেন,<br />
<br />
فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللهَ<br />
<br />
‘অতএব যারা সতী-সাধ্বী স্ত্রীলোক তারা তাদের স্বামীদের ব্যাপারে আল্লাহর হুকুম পালনকারীণী এবং স্বামীদের অনুপস্থিতিতে গোপনীয় বিষয়গুলির হেফাযতকারীণী হয়ে থাকে। কেননা আল্লাহ নিজেই তার হেফাযত করেন’ (নিসা ৩৪)। অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ভাল নারীর পরিচয় দিতে গিয়ে তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন-<br />
<br />
(১) সতী-সাধবীঃ ঐ স্ত্রী লোককে সতী-সাধবী বলা হয় যার মধ্যে ইসলামের দৃষ্টিতে অসাধু ও দৃষ্টিকটু কোন আচরণ পরিলক্ষিত হয় না।<br />
<br />
(২) আল্লাহর হুকুম পালনকারীণী অর্থাৎ আল্লাহর আইন-বিধান স্বতঃস্ফূর্ত ও সার্বিকভাবে মেনে চলা। (৩) স্বামীর অনুপস্থিতিতে গোপনীয়তা রক্ষা করা। এগুলি হচ্ছে ভাল নারীর বিশেষ গুণাবলী, যা অর্জনের জন্য প্রত্যেক মুসলিম রমনীর সচেষ্ট হওয়া আবশ্যক। এক্ষেত্রে যত বাধা আসুক না কেন তা উপেক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে। আর আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। কেননা তিনি নিজেই তাদের হেফাযতের অঙ্গীকার করেছেন।<br />
<br />
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, عَسَى رَبُّهُ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُبْدِلَهُ أَزْوَاجًا خَيْرًا مِنْكُنَّ مُسْلِمَاتٍ مُؤْمِنَاتٍ قَانِتَاتٍ تَائِبَاتٍ عَابِدَاتٍ سَائِحَاتٍ ثَيِّبَاتٍ وَأَبْكَارًا ‘নবী যদি আপনাদের সবাইকে তালাক দেন তাহলে অসম্ভব নয় যে, আল্লাহ নবীকে তোমাদের পরিবর্তে এমনসব স্ত্রী দিবেন যারা তোমাদের চেয়ে উত্তম হবে। যারা হবে সত্যিকার মুসলিম অনুগত, তওবাকারী, ইবাদতকারী, ছিয়াম পালনকারী কুমারী কিংবা অকুমারী’ (তাহরীম ৫)।<br />
<br />
এ আয়াতে আল্লাহ ভাল নারীর ছয়টি গুণ উল্লেখ করেছেন। যথা-<br />
<br />
(১) মুসলিম- এমন স্ত্রী লোক যারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করতে সর্বদা প্রস্ত্তত থাকবে।<br />
<br />
(২) মুমিন- যে অকৃত্রিম নিষ্ঠা সহকারে ঈমান এনেছে। অর্থাৎ যাবতীয় বাধা-বিঘ্ন উপেক্ষা করে আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁর দ্বীনের প্রতি ঈমান আনয়ন করেছে।<br />
<br />
(৩) আনুগত্যশীল- আনুগত্য বলতে কোন পীর-দরবেশের আনুগত্য নয় বরং আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং স্বামীর আনুগত্যকে বুঝানো হয়েছে।<br />
<br />
(৪) তওবাকারী- এমন স্ত্রী লোক যারা সর্বক্ষণ আল্লাহর নিকট নিজের কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমা চায়। নিজের পাপ কর্মের জন্য সদা-সর্বদা লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়। এ ধরনের স্ত্রীদের মধ্যে কোন সময়ই অহংকার, গৌরব ও আত্মম্ভরিতার ভাবধারা জাগ্রত হ’তে পারে না। এমন রমণীগণ হয় নরম প্রকৃতির।<br />
<br />
(৫) ইবাদতকারীণী- একজন নারীকে সর্বোত্তম হওয়ার জন্য ইবাদতগুযার হওয়া একান্তই যরূরী।<br />
<br />
(৬) ছিয়াম পালনকারী- ফরয বা নফল ছিয়াম পালন করা অতীতের নবী ও সৎলোকদের কাজ। ছিয়াম পালন করলে প্রবৃত্তি দমন হয়। তাই ছিয়াম পালন করা ভাল নারীদের এক বিশেষ গুণ।<br />
<br />
ভাল মহিলাদের ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে এমন নারী যে, বন্ধুভাবাপন্ন, ঘন ঘন সন্তান প্রসবকারিণী, সমব্যথী, সান্ত্বনা প্রদানকারিণী, সহযোগিনী’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮৪৯, ১৯৫২)। এ হাদীছে ভাল নারীর চারটি বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে। যথা-<br />
<br />
(১) স্বামীর প্রতি গভীর অনুরাগী ও বন্ধুভাবাপন্ন হওয়া।<br />
<br />
(২) অধিক সন্তান প্রসব করা। দারিদ্রের ভয়ে সন্তান নেয়া বন্ধ করা যাবে না। কেননা রিযিকের মালিক আল্লাহ। তিনি সবার রিযিক দান করেন।<br />
<br />
(৩) স্বামীর কাজে সহযোগিতা করা। অর্থাৎ স্বামীর ইবাদত-বন্দেগী হ’তে শুরু করে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক সব কাজে তাকে সহযোগিতা করা।<br />
<br />
(৪) স্বামীর দুঃখে দুঃখী হওয়া ও তার ব্যথায় সমব্যথী হওয়া। উপরোক্ত চারটি গুণ লাভ করার জন্য প্রত্যেক মুসলিম মহিলাকে যত্নবান হওয়া অতীব যরূরী।<br />
<br />
অন্য এক বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেন,<br />
<br />
عَلَيْكُمْ بِالْإَبْكَارِ فَإِنَّهُنَّ أَعْذَبُ أَفْوَاهًا وَأَنْتَقُ أَرْحَامًا وَأَرْضَى بِالْيَسِيْرِ<br />
<br />
‘তোমরা কুমারীদের বিবাহ কর। কেননা তাদের মুখ বেশি মিষ্টি, তারা অধিক গর্ভধারিণী এবং অল্পে তুষ্ট’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৬২৩, ১৯৫৭)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, (১) তালাকপ্রাপ্তা নারীর চেয়ে কুমারী নারীকে বিবাহ করা ভাল। স্বামীর নিকট কুমারী স্ত্রী হিসাবে থাকা যরূরী। এ বাণী দ্বারা আরো প্রতীয়মান হয় যে, ‘চুন থেকে পান খসলেই’ অর্থাৎ একটু অসুবিধা হ’লেই প্রথম স্বামীর ঘর-সংসার ছেড়ে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা শোভনীয় নয়। যদিও তা শরী‘আতে জায়েয। (২) অধিক সন্তান প্রসব করতে হবে। (৩) স্বামীর সামর্থ অনুসারে সামান্য কোন জিনিসে তুষ্ট থেকে স্বামীর মন জয় করার চেষ্টা করতে হবে। আর এগুলি ভাল নারীরা ছাড়া অন্যের পক্ষে অসম্ভব।<br />
<br />
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ.<br />
<br />
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য করে নারীকে বিবাহ করা হয় : (১) তার সম্পদ (২) বংশ (৩) সৌন্দর্য ও (৪) ধার্মিকতা। তুমি শুধুমাত্র ধার্মিকতার প্রতি লক্ষ্য কর’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮২; বাংলা ৬ষ্ঠ খন্ড, হা/২৯৪৮ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)।<br />
<br />
অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) শুধুমাত্র ধার্মিক পর্দানশীল মেয়েকে বিবাহ করতে বলেছেন। বাকী গুণগুলি থাকলে ভাল, না থাকলে কোন দোষ নেই।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ الدُّنْيَا كُلَّهَا مَتَاعٌ وَخَيْرُ مَتَاعِ الدُّنْيَا الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ.<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ পৃথিবী সম্পদ। আর পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হচ্ছে সৎ চরিত্রবান নারী’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮৩)।<br />
<br />
ভাল নারীর একটি বিশেষ গুণের কথা উল্লেখ করে রাসূল (ছাঃ) বলেন,<br />
<br />
لَيْسَ لِلنِّسَاءِ وَسْطُ الطَّرِيْقِ<br />
<br />
‘নারীরা রাস্তার মধ্য দিয়ে চলাচল করবে না’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮৫৬)। অত্র হাদীছে ভাল নারীদের রাস্তায় চলার আদর্শ বর্ণিত হয়েছে। রাস্তায় চলার ব্যাপারে ভাল নারীর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা রাস্তার মধ্যস্থল দিয়ে এদিক সেদিক তাকিয়ে চলবে না। দৃষ্টি নত করে রাস্তার এক পাশ দিয়ে চলাই হচ্ছে ভাল নারীর বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,<br />
<br />
وَقُلْ لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ اَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ وَلاَيُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ اِلاَّمَاظَهَرَمِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوْبِهِنَّ وَلاَ يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ اِلاَّلِبُعُوْلَتِهِنَّ اَوْابَآءِ بُعْوْلَتِهِنَّ اَوْ اَبْنَائِهِنَّ اَوْاَبْنَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ اَوْاِخَوَانِهِنَّ اَوْبَنِىْ اِخْوَانِهِنَّ اَوْبَنِىْ اَخَوَتِهِنَّ اَوْنِسَائِهِنَّ اَوْمَامَلَكَتْ اَيْمَانُهُنَّ اَوِالتَّبِعِيْنَا غَيْرِاُولِى الْاِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِالطِّفْلِ الَّذِيْنَ لَمْ يَظْهَرُوْا عَلَى عَوْرَتِ النَّسَاءِ وَلاَ يَضْرِبْنَ بِاَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَايُخْفِيْنَ مِنْ زِيْنَتِهِنَّط وَتُوْبُوْآاِلَى اللهِ جَمِيْعًا اَيُّهَ الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ-<br />
<br />
‘আপনি মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে, যা প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্যকে প্রকাশ না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়নাকে তাদের বুকের উপর দিয়ে পেচিয়ে রাখে’ তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা-রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো নিকট তাদের আবরণ প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন আবরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (নূর ৩১)।<br />
<br />
মহান আল্লাহ আরো বলেন, وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى ‘তোমরা স্বগৃহে অবস্থান কর। প্রাচীন জাহেলী যুগের নারীদের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন কর না’ (আহযাব ৩৩)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, اَلْحَيَاءُ مِنَ الِإيْمَانِ وَالْإِيْمَانُ فِي الْجَنَّةِ ‘লজ্জা হচ্ছে ঈমান। আর ঈমান হচ্ছে জান্নাত লাভের মাধ্যম’ (মিশকাত হা/৫০৭৭)।<br />
<br />
উপরোক্ত আয়াত ও হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, মহিলাদেরকে নিজ গৃহেই অবস্থান করতে হবে। প্রয়োজন বশত যদি তাদেরকে বাইরে যেতেই হয় তাহ’লে তাদেরকে পূর্ণ পর্দা করে যেতে হবে। মূলতঃ পর্দাই হচ্ছে মহিলাদের জন্য এক শ্রেষ্ঠ গুণ। কারণ যাদের পর্দা নেই তাদের লজ্জা-শরম নেই। আর যাদের লজ্জা নেই ইবাদত-বন্দেগীর প্রতি ভালবাসা তাদের নিকট হ’তে দূরে সরে যায়। তাই প্রত্যেক মুমিনা মহিলার জন্য কুরআন-হাদীছ অনুসারে পর্দা করা যরূরী এবং লোক দেখানো পর্দা পরিহার করা আবশ্যক।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَنْظُرُ اللهُ إِلى اِمْرَأةٍ لاَ تَشْكُرُ لِزَوْجِهَا وَهِيَ لاَ تَسْتَغْنيِ عَنْهُ.<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ সে মহিলার দিকে করুণার দৃষ্টি দেন না, যে স্বামীর শুকরিয়া আদায় করে না, আর সে স্বামীকে নিজের জন্য পরিপূর্ণ মনে করে না’ (ত্বাবারাণী, কাবায়ির পৃঃ ২৯৩)।<br />
<br />
অত্র হাদীছে মহিলাদের দু’টি দোষের কথা বলা হয়েছে। (১) স্বামীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন না করা (২) স্বামীকে নিজের জন্য যথেষ্ট মনে না করা। মুসলিম মহিলাদের জন্য উক্ত দোষ দু’টি থেকে বেঁচে থাকা অতীব যরূরী। কেননা যে কারণে মহিলারা বেশি বেশি জাহান্নামে যাবে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বামীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৪৮২)।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ اللهِ بنِ مَسْعُوْدٍ لَعَنَ اللهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْمُسْتَوْشِمَاتِ وَالْمُتَنَمِّصَاتِ وَالْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ تَعَالَى.<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ্ তা‘আলা ঐসব নারীদের প্রতি অভিশাপ করেছেন, যারা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে দেহে উল্কি (সুচিবিদ্ধ করে চিত্র অংকন) করে বা অন্যের মাধ্যমে করিয়ে নেয়। যারা ভ্রূ উপড়িয়ে চিকন করে, যারা দাঁত সমূহকে শানিত ও সরু বানায়। কারণ তারা আল্লাহর স্বাভাবিক সৃষ্টির বিকৃতি ঘটায়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৩১)।<br />
<br />
<br />
রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, لَعَنَ اللهُ الْوَاصِلَةَ وَالْمُسْتَوْصِلَةَ وَالْوَاشِمَةَ وَالْمُسْتَوْشِمَةَ ‘যারা চুলে জোড়া লাগায় অথবা অন্যের দ্বারা লাগিয়ে নেয়, যে নারী দেহে কিছু অংকন করে অথবা অন্যের দ্বারা করিয়ে নেয় তাদের উভয়ের প্রতি অভিশাপ করেছেন’ (বুখারী,মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৩০)।<br />
<br />
উপরোক্ত হাদীছ দু’টিতে রাসূল কতিপয় কাজ করতে মহিলাদের বারণ করেছেন। আদর্শনারীর জন্য উক্ত কাজগুলি থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক। রাসূল (ছাঃ) বলেন,<br />
<br />
لَعَنَ اللهُ الْمُتَشَبِّهِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ<br />
<br />
‘আল্লাহ তা‘আলা সেই সব পুরুষের প্রতি অভিশাপ করেছেন, যারা মহিলার বেশ ধারণ করে। আর ঐসব মহিলাদের প্রতিও অভিশাপ করেন, যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৪২৯, বাংলা মিশকাত হা/৪২৩২)।<br />
<br />
অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, কোন পুরুষ মহিলার পোশাক পরিধান করতে পারে না। তেমনি কোন মহিলাও পুরুষের পোশাক পরিধান করতে পারে না। তদ্রূপ যে সমস্ত পোশাকে মাহিলাদের সাথে পুরুষের সাদৃশ্য করা হয় কিংবা পুরুষদের সাথে মহিলাদের সাদৃশ্য হয়, সেসব পরিহার করতে হবে। আদর্শ নারীর জন্য ঐসব কাজ থেকে বিরত থাকা একান্ত আবশ্যক। প্রকৃতপক্ষে একজন আদর্শ মুসলিম মহিলা কখনো পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করতে পারে না।<br />
<br />
কোন এক বৈঠকে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আমি জাহান্নামের প্রতি লক্ষ্য করলাম দেখলাম সেখানকার অধিকাংশই নারী। ছাহাবীগণ বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এর কারণ কি? তিনি বললেন, তাদের কুফরীর কারণে। জিজ্ঞেস করা হ’ল, তারা কি আল্লাহর সাথে কুফরী করে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, না, তারা স্বামীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না এবং অনুগ্রহের শুকরিয়া আদায় করে না। তুমি যদি সারা জীবন তাদের সাথে অনুগ্রহ কর, অতঃপর তোমার মধ্যে কোন ত্রুটি লক্ষ্য করে, তখন বলে ফেলে আমি তোমার মধ্যে কোন কল্যাণই পাইনি’ (বুখারী, মুসলিম, বাংলা মিশকাত হা/১৩৯৭)।<br />
<br />
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ لَوْ كُنْتُ آمِراً أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لاَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا-<br />
<br />
আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যদি আমি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করার নির্দেশ দিতাম তবে স্ত্রীর প্রতি তার স্বামীকে সেজদা করার নির্দেশ দিতাম (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩২৫৫; বাংলা মিশকাত হা/৩১১৬, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছে স্ত্রীর উপর স্বামীর হক্ব কতটুকু তা স্পষ্ট হয়েছে।<br />
<br />
অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, ‘স্বামী হচ্ছে মহিলাদের জন্য জাহান্নাম এবং জান্নাতের মাধ্যম’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬১২, ১৯৩৪)। অত্র হাদীছগুলি দ্বারা বুঝা যায় যে, আদর্শ মহিলার জন্য তার স্বামীকে রাযী-খুশি করা, আদেশ-নিষেধ মেনে চলা, তার খিদমতে সর্বদা নিয়োজিত থাকা অত্যন্ত যরূরী।<br />
<br />
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, একজন মহিলাকে ভাল হতে হলে নিম্নোক্ত গুণাবলী অর্জন করতে হবে। ঈমানদার, পরহেযগার, নেককার, আল্লাহভীরু, লজ্জাস্থানের হিফাযতকারিণী, সতী-সাধবী, উত্তম চরিত্রের অধিকারিণী, অনুগত, পর্দাশীলা, দানশীলা, ছালাত আদায়কারিণী, ছিয়াম পালনকারিণী ইত্যাদি। এক কথায় যার মধ্যে রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শ রয়েছে সেই হচ্ছে প্রকৃত ভাল নারী। কেননা আল্লাহ বলেন,<br />
<br />
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللهَ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَذَكَرَ اللهَ كَثِيْرًا.<br />
<br />
‘প্রকৃত পক্ষে তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের জীবনে রয়েছে এক সর্বোত্তম আদর্শ। এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে, আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি আশাবাদী এবং খুব বেশি বেশি আললাহকে স্মরণ করে’ (আহযাব ২১)।<br />
<br />
স্ত্রীর জন্য স্বামীর আনুগত্য করা যরূরী। স্ত্রীর ন্যায় সঙ্গতভাবে স্বামীর খিদমত করবে। রান্না বান্না থেকে শুরু করে বাড়ির যাবতীয় কাজ যথাযথভাবে সম্পাদন করবে। যদি স্ত্রী স্বামীর খিদমত না করে তাহ’লে স্বামী তার স্ত্রীকে খিদমতে বাধ্য করবে। আর এটাই হ’ল তার কর্তৃত্ব।<br />
<br />
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন,<br />
<br />
وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ وَاللهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ<br />
<br />
‘আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও পুরুষদের উপর ন্যায় সঙ্গত অধিকার রয়েছে । আর নারীদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়’ (বাক্বারাহ ২২৮)। অত্র আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি অধিকার রাখে। যা পরস্পরকে আদায় করা কর্তব্য। তবে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,<br />
<br />
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللهُ وَاللاَّتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلاً إِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيّاً كَبِيرا.<br />
<br />
‘পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল। এজন্য যে, আল্লাহ্ একের উপর অন্যের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এজন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সেমতে সৎস্ত্রীগণ হয় আনুগত্যশীল এবং আল্লাহ্ তা‘আলা যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন তা হেফাযত করেন। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশংকা রয়েছে তাদের সদুপদেশ দাও। তাদের শয্যা ত্যাগ করো এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায় তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান কর না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবার শ্রেষ্ঠ’ (নিসা ৩৪)।<br />
<br />
অত্র আয়াত দু’টিতে স্বামী-স্ত্রীর পার্থক্য এবং তাদের পারস্পরিক অধিকার যথাযথভাবে উল্লেখ হয়েছে। তাদের কর্তব্য এবং সেগুলির স্তর নির্ণয় সম্পর্কে একটি শারঈ মূলনীতি হিসাবে গণ্য। নারীদের উপর যেমন পুরুষের অধিকার রয়েছে, যা প্রদান করা একান্ত যরূরী, তেমনিভাবে পুরুষদের উপরও নারীদের অধিকার রয়েছে, যা প্রদান করা যরূরী। তবে পুরুষের মর্যাদা নারীদের তুলনায় বেশি। দু’টি ন্যায়সঙ্গত ও তাৎপর্যের প্রেক্ষিতেই পুরুষদেরকে নারীদের উপর পরিচালক নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রথমতঃ পুরুষকে তার জ্ঞানৈশ্বর্য ও পরিপূর্ণ কর্মক্ষমতার কারণে নারী জাতির উপরে মর্যাদা দেয়া হয়েছে। যা অর্জন করা নারী জাতির পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। দ্বিতীয়তঃ নারীর যাবতীয় প্রয়োজন পুরুষেরা নিজের উপার্জন কিংবা স্বীয় সম্পদের দ্বারা মিটিয়ে থাকে। প্রথম কারণটি আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত ও মানুষের নিজস্ব ক্ষমতা বহির্ভূত। আর দ্বিতীয় কারণটি নিজের উপার্জিত ও ক্ষমতাভিত্তিক।<br />
<br />
পারিবারিক জীবনে যদি স্ত্রীর পক্ষ থেকে নাফরমানী সংঘটিত হয় কিংবা এমন আশংকা দেখা দেয়, তাহ’লে প্রথম পর্যায়ে তাদের সংশোধনের জন্য নরমভাবে তাদের বুঝাবে। যদি তাতে বিরত না হয়, তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে তাদের শয্যা পৃথক করে দিবে। যাতে এই বিচ্ছিন্নতার দরুন সে স্বামীর অসন্তুষ্টি উপলব্ধি করে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়। বিচ্ছিন্নতা শুধু শয্যাতেই হবে, বাড়ি ও থাকার ঘর পৃথক করতে হবে না। কারণ তাতে তার অনুতাপ বেশি হবে। এতে সংশোধন না হ’লে প্রহারের কথা আল্লাহ্ তা’আলা উল্লেখ করেছেন।<br />
<br />
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ قَالَ لاَ يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَصُومَ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ إِلاَّ بِإِذْنِهِ وَلاَ تَأْذَنَ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ بِإذْنِهِ-<br />
<br />
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল বলেছেন, ‘স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত স্ত্রীর ছিয়াম পালন করা জায়েয নয় এবং স্বামীর বাড়িতে তার অনুমতি ব্যতীত কাউকে প্রবেশ করতে দেয়াও জায়েয নয়’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৩১ ‘ছিয়াম’ অধ্যায়, ‘কাযা ছিয়াম পালন করা’ অনুচ্ছেদ)। উল্লেখ্য যে, ফরয ছিয়াম পালন করার জন্য স্বামীর অনুমতির প্রয়োজন হয় না। স্বামী যথাযথভাবে স্ত্রীর খিদমত উপভোগ করবে। নফল ইবাদত এই খিদমত বন্ধ করতে পারে না। কাজেই স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নফল ইবাদত করা যাবে না।<br />
<br />
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا الْمَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ وفي رواية وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا مِنْ رَجُلٍ يَدْعُو امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهَا فَتَأْبَى عَلَيْهِ إِلاَّ كَانَ الَّذِي فِي السَّمَاءِ سَاخِطًا عَلَيْهَا حَتَّى يَرْضَى عَنْهَا<br />
<br />
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল বলেছেন, ‘যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তার বিছানায় ডাকে, আর সে বিছানায় যেতে অস্বীকার করে এবং স্বামী অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, তখন ফেরেশতাগণ তার প্রতি সকাল পর্যন্ত অভিশাপ করতে থাকেন’। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল আল্লাহর কসম করে বললেন, ‘কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকলে এবং তার স্ত্রী তা অস্বীকার করলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তার উপর ততক্ষণ পর্যন্ত অসন্তুষ্ট থাকেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তার স্বামী তার উপর অসন্তুষ্ট থাকে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৪৬, বাংলা মিশকাত হা/৩১০৮ ‘বিবাহ’ অধ্যায়)।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ إِذَا صَلَّتْ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَحَفِظَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ زَوْجَهَا قِيلَ لَهَا ادْخُلِي الْجَنَّةَ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شِئْتِ-<br />
<br />
আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল বলেছেন, ‘যখন কোন স্ত্রীলোক পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করবে, রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করবে এবং নিজের লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে ও স্বামীর আনুগত্য করবে, তখন তাকে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে বলা হবে’ (আহমাদ, আবূ নু‘আইম, মিশকাত হা/৩২৫৪, বাংলা মিশকাত হা/৩১১৫, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছে নারীদের ইচ্ছামতো জান্নাতে যাওয়ার চারটি মাধ্যম উল্লেখ করা হয়েছে। তার একটি হচ্ছে স্বামীর অনুগত হওয়া। স্ত্রীদের জন্য স্বামীর সেবাই হচ্ছে প্রধান কাজ। স্বামীর সেবার বিনিময় হচ্ছে জান্নাত। স্ত্রীলোকের জন্য সাংসারিক দায়িত্ব খুবই কম।<br />
<br />
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ لاَ تُؤْذِي امْرَأَةٌ زَوْجَهَا فِي الدُّنْيَا إِلاَّ قَالَتْ زَوْجَتُهُ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ لاَ تُؤْذِيهِ قَاتَلَكِ اللهُ فَإِنَّمَا هُوَ عِنْدَكِ دَخِيلٌ يُوشِكُ أَنْ يُفَارِقَكِ إِلَيْنَا<br />
<br />
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, নবী (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন নারী তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দেয়, তখন জান্নাতের হূরদের মধ্যে যে তার স্ত্রী হবে সে বলে, হে (অভাগিনী)! তুমি তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন। তিনি তোমার কাছে পরবাসী। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবেন’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৩২৫৮, বাংলা মিশকাত হা/৩১১৯, হাদীছ ছহীহ, আলবানী, আদাবুয যিফাফ ২৮৪ পৃঃ)।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّي الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّيَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِيَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ نَفْسَهَا.<br />
<br />
‘আব্দুল্লাহ ইবনু আবী আওফা (রাঃ) বলেন, রাসূল বলেছেন, ‘স্ত্রী ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর হক্ব আদায় করতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার স্বামীর হক্ব আদায় না করবে। যদি স্বামী উটের গদির উপর থাকা অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সহবাসের ইচ্ছা প্রকাশ করে, তবুও স্ত্রীকে সম্মতি প্রকাশ করতে হবে’ (ইবনু মাজাহ, আলবানী, আদাবুয যিফাফ ২৮৪ পৃঃ, হাদীছ ছহীহ)।<br />
<br />
عَنِ الْحُصَيْنِ بْنِ مِحْصَنٍ أَنَّ عَمَّةً لَهُ أَتَتْ النَّبِيَّ فِي حَاجَةٍ فَفَرَغَتْ مِنْ حَاجَتِهَا فَقَالَ لَهَا النَّبِيُّ أَذَاتُ زَوْجٍ أَنْتِ قَالَتْ نَعَمْ قَالَ كَيْفَ أَنْتِ لَهُ قَالَتْ مَا آلُوهُ إِلاَّ مَا عَجَزْتُ عَنْهُ قَالَ فَانْظُرِي أَيْنَ أَنْتِ مِنْهُ فَإِنَّمَا هُوَ جَنَّتُكِ وَنَارُكِ.<br />
<br />
হুছাইন ইবনু মিহছান বলেন, আমার ফুফু আমার নিকট হাদীছ বর্ণনা করেন যে, কোন প্রয়োজনে আমি রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে আসলাম। অতঃপর নবী (ছাঃ) বললেন, ‘হে ওমুক মহিলা! তোমার স্বামী আছে কি? আমি বললাম, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন, তুমি তার জন্য কেমন? সে বলল, আমি তার অনুগত ও খিদমতে কমতি করি না। তবে আমি তার পক্ষ থেকে কমতি পাই। রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি অপেক্ষা কর, তুমি তার মাধ্যমে কোথায় যাবে? কেননা সে তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম’ (আহমাদ, আবী শায়বাহ, আলবানী, আদাবুয যিফাফ ২৮৫ পৃঃ)। হাদীছ সমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, স্ত্রীদের জন্য কর্তব্য হচ্ছে স্বামীদের সেবায় নিয়োজিত থাকা। কেননা স্বামী হচ্ছে তার জান্নাত ও জাহান্নামের কারণ।<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjYKQX3SBzV-KyNWoy_6moX_gvBltcw9Gt4YVXhaV1j_2SWc-XtxNwjMlShxDqIyqXF7Gq1HGszY0ibkrCMmsbwrMv2q-Q_xONYAUiYnv9SSJ_frSAbxW3bUNA2yEEXpvdmjRTu5QzOm6k/s1600/IMG_20191105_110445.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা," border="0" data-original-height="359" data-original-width="359" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjYKQX3SBzV-KyNWoy_6moX_gvBltcw9Gt4YVXhaV1j_2SWc-XtxNwjMlShxDqIyqXF7Gq1HGszY0ibkrCMmsbwrMv2q-Q_xONYAUiYnv9SSJ_frSAbxW3bUNA2yEEXpvdmjRTu5QzOm6k/s320/IMG_20191105_110445.jpg" title="নারীর মর্যাদা," width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">ইসলামে নারীর মর্যাদা,</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comUnknown location.30.913004329573177 -56.8652347500000135.3909698295731765 -98.173828750000013 56.435038829573173 -15.556640750000014tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-75217221673283063072019-08-26T08:30:00.000+06:002019-08-26T13:30:05.489+06:00ইসলামিক ঘটনা, জাদুকর ও বালকের ঘটনা। <div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
সুহাইব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ<br />
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের পূর্ব যুগে একজন বাদশাহ ছিল এবং তাঁর (উপদেষ্টা) এক জাদুকর ছিল। জাদুকর বার্ধক্যে উপনীত হলে বাদশাহকে বলল যে, ‘আমি বৃদ্ধ হয়ে গেলাম তাই আপনি আমার নিকট একটি বালক পাঠিয়ে দিন, যাতে আমি তাকে জাদু-বিদ্যা শিক্ষা দিতে পারি।’ ফলে বাদশাহ তার কাছে একটি বালক পাঠাতে আরম্ভ করল, যাকে সে জাদু শিক্ষা দিত। তার যাতায়াত পথে এক পাদ্রী বাস করত। যখনই বালকটি জাদুকরের কাছে যেত, তখনই পাদ্রীর নিকটে কিছুক্ষণের জন্য বসত, তাঁর কথা তাকে ভাল লাগত। ফলে সে যখনই জাদুকরের নিকট যেত, তখনই যাওয়ার সময় সে পাদ্রীর কাছে বসত। যখন সে পাদ্রীর কাছে আসত জাদুকর তাকে (তার বিলম্বের কারণে) মারত। ফলে সে পাদ্রীর নিকটে এর অভিযোগ করল। পাদ্রী বলল, ‘যখন তোমার ভয় হবে যে, জাদুকর তোমাকে মারধর করবে, তখন তুমি বলবে, আমার বাড়ির লোক আমাকে (কোন কাজে) আটকে দিয়েছিল। আর যখন বাড়ির লোকে মারবে বলে আশঙ্কা হবে, তখন তুমি বলবে যে, জাদুকর আমাকে (কোন কাজে) আটকে দিয়েছিল।’<br />
<br />
সুতরাং সে এভাবেই দিনপাত করতে থাকল। একদিন বালকটি তার চলার পথে একটি বিরাট (হিংস্র) জন্তু দেখতে পেল। ঐ (জন্তু)টি লোকের পথ অবরোধ করে রেখেছিল। বালকটি (মনে মনে) বলল, ‘আজ আমি জানতে পারব যে, জাদুকর শ্রেষ্ঠ না পাদ্রী?’ অতঃপর সে একটি পাথর নিয়ে বলল, ‘হে আল্লাহ! যদি পাদ্রীর বিষয়টি তোমার নিকটে জাদুকরের বিষয় থেকে পছন্দনীয় হয়, তাহলে তুমি এই পাথর দ্বারা এই জন্তুটিকে মেরে ফেল। যাতে (রাস্তা নিরাপদ হয়) এবং লোকেরা চলাফিরা করতে পারে।’ (এই দো‘আ করে) সে জন্তুটাকে পাথর ছুঁড়ল এবং তাকে হত্যা করে দিল। এর পর লোকেরা চলাফিরা করতে লাগল। বালকটি পাদ্রীর নিকটে এসে ঘটনাটি বর্ণনা করল। পাদ্রী তাকে বলল, ‘বৎস! তুমি আজ আমার চেয়ে উত্তম। তোমার (ঈমান ও একীনের) ব্যাপার দেখে আমি অনুভব করছি যে, শীঘ্রই তোমাকে পরীক্ষায় ফেলা হবে। সুতরাং যখন তুমি পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তখন তুমি আমার রহস্য প্রকাশ করে দিও না।’<br />
<br />
আর বালকটি (আল্লাহর ইচ্ছায়) জন্মান্ধত্ব ও কুষ্ঠরোগ ভাল করত এবং অন্যান্য সমস্ত রোগের চিকিৎসা করত। (এমতাবস্থায়) বাদশাহর জনৈক নিকটী অন্ধ হয়ে গেল। যখন সে বালকটির কথা শুনল, তখন প্রচুর উপঢৌকন নিয়ে তার কাছে এল এবং তাকে বলল যে, ‘তুমি যদি আমাকে ভাল করতে পার, তাহলে এ সমস্ত উপঢৌকন তোমার।’ সে বলল, ‘আমি তো কাউকে আরোগ্য দিতে পারি না, আল্লাহ তা‘আলাই আরোগ্য দান করে থাকেন। যদি তুমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন কর, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দো‘আ করব, ফলে তিনি তোমাকে অন্ধত্বমুক্ত করবেন।’ সুতরাং সে তার প্রতি ঈমান আনল। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে আরোগ্য দান করলেন। তারপর সে পূর্বেকার অভ্যাস অনুযায়ী বাদশাহর কাছে গিয়ে বসল। বাদশাহ তাকে বলল, ‘কে তোমাকে চোখ ফিরিয়ে দিল?’ সে বলল, ‘আমার প্রভু!’ সে বলল, ‘আমি ব্যতীত তোমার অন্য কেউ প্রভু আছে?’ সে বলল, ‘আমার প্রভু ও আপনার প্রভু হচ্ছেন আল্লাহ।’ বাদশাহ তাকে গ্রেপ্তার করল এবং তাকে ততক্ষণ পর্যন্ত শাস্তি দিতে থাকল, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে ঐ (চিকিৎসক) বালকের কথা বলে দিল। অতএব তাকে (বাদশার নিকটে) নিয়ে আসা হল। বাদশাহ তাকে বলল, ‘বৎস! তোমার কৃতিত্ব ঐ সীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে যে, তুমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে আরোগ্য দান করছ এবং আরো অনেক কিছু করছ।’ বালকটি বলল, ‘আমি কাউকে আরোগ্য দান করি না, আরোগ্য দানকারী হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ।’ বাদশাহ তাকেও গ্রেপ্তার করে ততক্ষণ পর্যন্ত শাস্তি দিতে থাকল, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে ঐ পাদ্রীর কথা বলে দিল।<br />
<br />
অতঃপর পাদ্রীকেও (তার কাছে) নিয়ে আসা হল। পাদ্রীকে বলা হল যে, ‘তুমি নিজের ধর্ম থেকে ফিরে যাও।’ কিন্তু সে অস্বীকার করল। ফলে তার মাথার সিঁথিতে করাত রাখা হল। করাতটি তাকে (চিরে) দ্বিখন্ডিত করে দিল; এমনকি তার দুই ধার (মাটিতে) পড়ে গেল। তারপর বাদশাহর নিকটীকে নিয়ে আসা হল এবং তাকে বলা হল যে, ‘তোমার ধর্ম পরিত্যাগ কর।’ কিন্তু সেও (বাদশার কথা) প্রত্যাখান করল। ফলে তার মাথার সিঁথিতে করাত রাখা হল। তা দিয়ে তাকে (চিরে) দ্বিখন্ডিত করে দিল; এমনকি তার দুই ধার (মাটিতে) পড়ে গেল। তারপর বালকটিকে নিয়ে আসা হল। অতঃপর তাকে বলা হল যে, ‘তুমি ধর্ম থেকে ফিরে এস।’ কিন্তু সেও অসম্মতি জানাল। সুতরাং বাদশাহ তাকে তার কিছু বিশেষ লোকের হাতে সঁপে দিয়ে বলল যে, ‘একে অমুক পাহাড়ে নিয়ে যাও, তার উপরে তাকে আরোহণ করাও। অতঃপর যখন তোমরা তার চূড়ায় পৌঁছবে (তখন তাকে ধর্ম-ত্যাগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা কর) যদি সে নিজের ধর্ম থেকে ফিরে যায়, তাহলে ভাল। নচেৎ তাকে ওখান থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দাও।’ সুতরাং তারা তাকে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ের উপর আরোহণ করল। বালকটি আল্লাহর কাছে দো‘আ করল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য তাদের মুকাবেলায় যে ভাবেই চাও যথেষ্ট হয়ে যাও।’ সুতরাং পাহাড় কেঁপে উঠল এবং তারা সকলেই নীচে পড়ে গেল।<br />
<br />
বালকটি হেঁটে বাদশার কাছে উপস্থিত হল। বাদশাহ তাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার সঙ্গীদের কি হল?’ বালকটি বলল, ‘আল্লাহ তা‘আলা তাদের মোকাবেলায় আমার জন্য যথেষ্ট হয়েছেন।’<br />
<br />
বাদশাহ আবার তাকে তার কিছু বিশেষ লোকের হাতে সঁপে দিয়ে বলল যে, ‘একে নিয়ে তোমরা নৌকায় চড় এবং সমুদ্রের মধ্যস্থলে গিয়ে তাকে ধর্মের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা কর! যদি সে স্বধর্ম থেকে ফিরে আসে, তাহলে ঠিক আছে। নচেৎ তাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ কর।’ সুতরাং তারা তাকে নিয়ে গেল। অতঃপর বালকটি (নৌকায় চড়ে) দো‘আ করল, ‘হে আল্লাহ! তুমি এদের মোকাবেলায় যেভাবে চাও আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাও।’ সুতরাং নৌকা উল্টে গেল এবং তারা সকলেই পানিতে ডুবে গেল।<br />
<br />
তারপর বালকটি হেঁটে বাদশাহর কাছে এল। বাদশাহ বলল, ‘তোমার সঙ্গীদের কী হল?’ বালকটি বলল, ‘আল্লাহ তা‘আলা তাদের মোকাবেলায় আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে গেছেন।’ পুনরায় বালকটি বাদশাহকে বলল যে, ‘আপনি আমাকে সে পর্যন্ত হত্যা করতে পারবেন না, যে পর্যন্ত না আপনি আমার নির্দেশিত পদ্ধতি অবলম্বন করবেন।’ বাদশাহ বলল, ‘তা কী?’ সে বলল, ‘আপনি একটি মাঠে লোকজন একত্রিত করুন এবং গাছের গুড়িতে আমাকে ঝুলিয়ে দিন। অতঃপর আমার তূণ থেকে একটি তীর নিয়ে তা ধনুকের মাঝে রাখুন, তারপর বলুন, ‘‘বিসমিল্লাহি রাব্বিল গুলাম!’’ (অর্থাৎ এই বালকের প্রতিপালক আল্লাহর নামে মারছি।) অতঃপর আমাকে তীর মারুন। এভাবে করলে আপনি আমাকে হত্যা করতে সফল হবেন।’<br />
<br />
সুতরাং (বালকটির নির্দেশানুযায়ী) বাদশাহ একটি মাঠে লোকজন একত্রিত করল এবং গাছের গুঁড়িতে তাকে ঝুলিয়ে দিল। অতঃপর তার তূণ থেকে একটি তীর নিয়ে তা ধনুকের মাঝে রেখে বলল, ‘বিসমিল্লাহি রাব্বিল গুলাম!’ (অর্থাৎ এই বালকের প্রতিপালক আল্লাহর নামে মারছি।) অতঃপর তাকে তীর মারল। তীরটি তার কান ও মাথার মধ্যবর্তী স্থানে (কানমুতোয়) লাগল। বালকটি তার কানমুতোয় হাত রেখে মারা গেল। অতঃপর লোকেরা (বালকটির অলোকিকতা দেখে) বলল যে, ‘আমরা এ বালকটির প্রভুর উপর ঈমান আনলাম।’ বাদশার কাছে এসে বলা হল যে, ‘আপনি যার ভয় করছিলেন তাই ঘটে গেছে, লোকেরা (আল্লাহর প্রতি) ঈমান এনেছে।’ সুতরাং সে পথের দুয়ারে গর্ত খুঁড়ার আদেশ দিল। ফলে তা খুঁড়া হল এবং তাতে আগুন জ্বালানো হল। বাদশাহ আদেশ করল যে, ‘যে দ্বীন থেকে না ফিরবে তাকে এই আগুনে নিক্ষেপ কর’ অথবা তাকে বলা হল যে, ‘তুমি আগুনে প্রবেশ কর।’ তারা তাই করল। শেষ পর্যন্ত একটি স্ত্রীলোক এল। তার সঙ্গে তার একটি শিশু ছিল। সে তাতে পতিত হতে কুণ্ঠিত হলে তার বালকটি বলল, ‘আম্মা! তুমি সবর কর। কেননা, তুমি সত্যের উপরে আছ।’’[১]<br />
<br />
[১] মুসলিম ৩০০৫, তিরমিযী ৩৩৪০, আহমাদ ২৩৪১৩<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgpDB_czoI1d7_Km3ome4ttj21L7sutMyUyxTp0zudNFP3w1_xrO2NwqJYbDjQ2DI87ehvBCmlGy5Hu8fEVRn67dHX9vlBT8IPQ19C_SIXvSyOLHmbNYx9OsPut_mPTfryDxkUmbYuR1Sc/s1600/maxresdefault.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="জাদুকর ও বালকের ঘটনা" border="0" data-original-height="720" data-original-width="1280" height="180" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgpDB_czoI1d7_Km3ome4ttj21L7sutMyUyxTp0zudNFP3w1_xrO2NwqJYbDjQ2DI87ehvBCmlGy5Hu8fEVRn67dHX9vlBT8IPQ19C_SIXvSyOLHmbNYx9OsPut_mPTfryDxkUmbYuR1Sc/s320/maxresdefault.jpg" title="" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">জাদুকর ও বালকের ঘটনা</td></tr>
</tbody></table>
<br />
<br />
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Unknownnoreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-50225453797056902572019-08-26T08:07:00.000+06:002020-03-02T09:45:11.738+06:00পাথরের গুহায় আটকা পড়া তিন ব্যক্তির সত্য কাহিনী<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div>
পাথরের গুহায় আটকে পড়া ব্যাক্তির ঘটনাঃ<br />
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ</div>
<div>
তিনি বলেন, একদা তিন ব্যক্তি হেঁটে চলছিল। এমন সময় প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে তারা এক পাহাড়ের গুহায় প্রবেশ করে। হঠাৎ একটি পাথর গড়িয়ে তাদের গুহার মুখ বন্ধ করে দেয়। তাদের একজন আরেকজনকে বলল; তোমরা যে সব আমল করেছ, তার মধ্যে উত্তম আমলের ওয়াসীলা করে আল্লাহ্র কাছে দু’আ কর। তাদের যে একজন বলল আল্লাহ্! আমার অতিবৃদ্ধ পিতামাতা ছিলেন, আমি (প্রত্যহ সকালে) মেষ চরাতে বের হতাম। তারপর ফিরে এসে দুধ দোহন করতাম এবং এ দুধ নিয়ে আমার পিতা-মাতার নিকট উপস্থিত হতাম ও তারা তা পান করতেন। তারপরে আমি শিশুদের, পরিজনদের এবং স্ত্রীকে পান করতে দিতাম। একরাত্রে আমি আটকা পরে যাই। তারপর আমি যখন এলাম তখন তারা দুজনে ঘুমিয়ে পড়েছেন। সে বলল, আমি তাদের জাগানো পছন্দ করলাম না। আর তখন শিশুরা আমার পায়ের কাছে (ক্ষুধায়) চীৎকার করছিল। এ অবস্থায়ই আমার এবং পিতা-মাতার ফজর হয়ে গেল। ইয়া আল্লাহ্! তুমি যদি জান তা আমি শুধুমাত্র তোমার সন্তুষ্ট লাভের আশায় করেছিলাম তা হলে তুমি আমাদের গুহার মুখ এতটুকু ফাঁক করে দাও, যাতে আমরা আকাশ দেখতে পারি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন একটু ফাঁকা হয়ে গেল। আরেকজন বলল, ইয়া আল্লাহ্! তুমি জান যে, আমি আমার এক চাচাতো বোনকে এত ভালবাসতাম, যা একজন পুরুষ নারীকে ভালবেসে থাকে। সে বলল, তুমি আমার হতে সে মনস্কামনা সিদ্ধ করতে পারবে না, যতক্ষণ আমাকে একশত দীনার না দেবে। আমি চেষ্টা করে তা সংগ্রহ করি। তারপর আমি যখন তার পদদ্বয়ের মাঝে উপবেশন করি, তখন সে বলে “আল্লাহ্কে ভয় কর”। বৈধ অধিকার ছাড়া মাহ্রকৃত বস্তুর সীল ভাঙবে না। এতে আমি তাকে ছেড়ে উঠে পড়ি। (হে আল্লাহ্) তুমি যদি জান আমি তা তোমারই সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করেছি, তবে আমাদের হতে আরো একটু ফাঁক করে দাও। তখন তাদের হতে (গুহার মুখের) দুই-তৃতীয়াংশ ফাঁক হয়ে গেল। অপরজন বলল, হে আল্লাহ্! তুমি জান যে, এক ফারাক (পরিমাণ) শস্য দানার বিনিময়ে আমি একজন মজুর রেখেছিলাম। আমি তাকে তা দিতে গেলে সে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করল। তারপর আমি সে এর ফারাক শস্য দানা দিয়ে চাষ করে ফসল উৎপন্ন করি এবং তা দিয়ে গরু ক্রয় করি এবং রাখাল নিযুক্ত করি। কিছুকাল পরে সে মজুর এসে বলল, হে আল্লাহ্র বান্দা! আমাকে আমার পাওনা দাও। আমি বললাম এই গরুগুলো ও রাখাল নিয়ে যাও। সে বলল, তুমি কি আমার সাথে উপহাস করছ? আমি বললাম, আমি তোমার সাথে উপহাস করছি না বরং এসব তোমার। হে আল্লাহ্! তুমি যদি জান আমি তা তোমারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করেছি, তবে আমাদের হতে (গুহার মুখ) উন্মুক্ত করে দাও। তখন তাদের হতে গুহার মুখ উন্মুক্ত হয়ে গেল।</div>
<div>
</div>
<div>
<br /></div>
<div>
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২২১৫<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhoIsTuS8AekIGOqeHUy7aBnLvgK8a6NmE4VgYU-UDEckJcEstnSAaT2o8-x7TQe_1BYXwsfxu2PdAX6yPd0Xpze9VmSMa0Ci-_Z9vqTgzv8WbwDzQ9rWDEQt8dcV5JcZMl7oUTgcjNNf8/s1600/%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A5%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="পাথরের গুহা সম্পর্কিত ইসলামিক ঘটনা," border="0" data-original-height="257" data-original-width="387" height="212" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhoIsTuS8AekIGOqeHUy7aBnLvgK8a6NmE4VgYU-UDEckJcEstnSAaT2o8-x7TQe_1BYXwsfxu2PdAX6yPd0Xpze9VmSMa0Ci-_Z9vqTgzv8WbwDzQ9rWDEQt8dcV5JcZMl7oUTgcjNNf8/s320/%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A5%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE.jpg" title="" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">পাথরের গুহার ঘটনা,</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div>
<br /></div>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Unknownnoreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-28350804057423550932019-08-26T07:21:00.001+06:002019-08-26T07:21:13.937+06:00দাজ্জালের কাহিনী, ইসলামের আলোকে দাজ্জালের কাহিনী<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
ইসলামের আলোকে দাজ্জালের কাহিনীঃ</h3>
নাওয়াস ইবনে সামআন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ<br />
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সকালে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তাতে তিনি একবার নিম্ন স্বরে এবং একবার উচ্চ স্বরে বাক ভঙ্গিমা অবলম্বন করলেন। শেষ পর্যন্ত আমরা (প্রভাবিত হয়ে) মনে মনে ভাবলাম যে, সে যেন সামনের এই খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে। তারপর আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গেলাম, তখন তিনি আমাদের উদ্বিগ্নতা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমাদের কি হয়েছে?’’ আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আজ সকালে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে এমন নিম্ন ও উচ্চ কণ্ঠে বর্ণনা করলেন, যার ফলে আমরা ধারণা করে বসি যে, সে যেন খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে।’ তিনি বললেন, ‘‘দাজ্জাল ছাড়া তোমাদের ব্যাপারে অন্যান্য জিনিসকে আমার আরও বেশী ভয় হয়। আমি তোমাদের মাঝে থাকাকালে দাজ্জাল যদি আত্মপ্রকাশ করে, তাহলে আমি স্বয়ং তোমাদের পক্ষ থেকে তার প্রতিরোধ করব। আর যদি তার আত্মপ্রকাশ হয় এবং আমি তোমাদের মাঝে না থাকি, তাহলে (তোমরা) প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ আত্মরক্ষা করবে। আর আল্লাহ স্বয়ং প্রতিটি মুসলিমের জন্য (আমার) প্রতিনিধিত্ব করবেন।<br />
সে দাজ্জাল নব-যুবক হবে, তার মাথার কেশরাশি হবে খুব বেশি কোঁচকানো। তার একটি চোখ (আঙ্গুরের ন্যায়) ফোলা থাকবে। যেন সে আব্দুল উয্-যা ইবনে ক্বাত্বানের মত দেখতে হবে। সুতরাং তোমাদের যে কেউ তাকে পাবে, সে যেন তার সামনে সূরা কাহ্-ফের শুরুর (দশ পর্যন্ত) আয়াতগুলি পড়ে। সে শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থানে আবির্ভূত হবে। আর তার ডাইনে-বামে (এদিকে ওদিকে) ফিতনা ছড়াবে। হে আল্লাহর বান্দারা। (ঐ সময়) তোমরা অবিচল থাকবে।’’<br />
আমরা বললাম, ‘পৃথিবীতে তার অবস্থান কতদিন থাকবে?’ তিনি বললেন, ‘‘চল্লিশ দিন পর্যন্ত। আর তার একটি দিন এক বছরের সমান দীর্ঘ হবে। একটি দিন হবে এক মাসের সমান লম্বা। একটা দিন এক সপ্তাহের সমান হবে এবং বাকি দিনগুলি প্রায় তোমাদের দিনগুলির সম পরিমাণ হবে।’’<br />
আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! যেদিনটি এক বছরের সমান লম্বা হবে, তাতে আমাদের একদিনের (পাঁচ ওয়াক্তের) নামাযই কি যথেষ্ট হবে?’ তিনি বললেন, ‘‘তোমরা (দিন রাতের ২৪ ঘণ্টা হিসাবে) অনুমান ক’রে নামায আদায় করতে থাকবে।’’<br />
আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, ভূপৃষ্ঠে তার দ্রুত গতির অবস্থা কিরূপ হবে? তিনি বললেন, তীব্র বায়ু তাড়িত মেঘের ন্যায় (দ্রুত বেগে ভ্রমণ করে অশান্তি ও বিপর্যয় ছড়াবে।) সুতরাং সে কিছু লোকের নিকট আসবে ও তাদেরকে তার দিকে আহ্বান জানাবে এবং তারা তার প্রতি ঈমান আনবে ও তার আদেশ পালন করবে। সে আকাশকে বৃষ্টি বর্ষণ করতে আদেশ করবে, আকাশ আদেশক্রমে বৃষ্টি বর্ষণ করবে। আর যমিনকে (গাছ-পালা) উদ্গত করার নির্দেশ দেবে। যমিন তার নির্দেশক্রমে তাই উদ্গত করবে। সুতরাং (সে সব গাছ-পালা ভক্ষণ ক’রে) সন্ধ্যায় তাদের গবাদি পশুদের কুঁজ (ও ঝুঁটি) অধিক উঁচু হবে ও তাদের পালানে অধিক পরিমাণে দুধ ভরে থাকবে। উদর পূর্ণ আহার জনিত তাদের পেট টান হয়ে থাকবে। অতঃপর দাজ্জাল (অন্য) লোকের নিকট যাবে ও তার দিকে (আসার জন্য) তাদেরকে আহ্বান জানাবে। তারা কিন্তু তার ডাকে সাড়া দেবে না। ফলে সে তাদের নিকট থেকে ফিরে যাবে। সে সময় তারা চরম দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হয়ে পড়বে ও সর্বস্বান্ত হবে। তারপর সে কোন প্রাচীন ধ্বংসস্তূপের নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় সেটাকে সম্বোধন ক’রে বলবে, ‘তুই তোর গচ্ছিত রত্নভাণ্ডার বের ক’রে দে।’ তখন সেখানকার গুপ্ত রত্নভাণ্ডার মৌমাছিদের নিজ রাণী মৌমাছির অনুসরণ করার মতো (মাটি থেকে বেরিয়ে) তার পিছন ধরবে। তারপর এক পূর্ণ যুবককে ডেকে তাকে অস্ত্রাঘাতে দ্বিখণ্ডিত ক’রে তীর নিক্ষেপের লক্ষ্যমাত্রার দূরত্বে নিক্ষেপ ক’রে দেবে। তারপর তাকে ডাক দেবে। আর সে উজ্জ্বল সহাস্যবদনে তার দিকে (অক্ষত শরীরে) এগিয়ে আসবে।<br />
দাজ্জাল এরূপ কর্ম-কাণ্ডে মগ্ন থাকবে। ইত্যবসরে মহান আল্লাহ তা‘আলা মসীহ বিন মারয়্যাম আলাইহিস সালাম-কে পৃথিবীতে পাঠাবেন। তিনি দামেস্কের পূর্বে অবস্থিত শ্বেত মিনারের নিকট অর্স ও জাফরান মিশ্রিত রঙের দুই বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় দু’জন ফিরিশ্-তার ডানাতে হাত রেখে অবতরণ করবেন। তিনি যখন মাথা নীচু করবেন, তখন মাথা থেকে বিন্দু বিন্দু পানি ঝরবে এবং যখন মাথা উঁচু করবেন, তখনও মতির আকারে তা গড়িয়ে পড়বে। যে কাফেরই তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসের নাগালে আসবে, সে সঙ্গে সঙ্গে প্রাণ হারাবে। তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস তাঁর দৃষ্টি যত দূর যাবে, তত দূর পৌঁছবে। অতঃপর তিনি দাজ্জালের সন্ধান চালাবেন। শেষ পর্যন্ত (জেরুজালেমের) ‘লুদ’ প্রবেশ দ্বারে তাকে ধরে ফেলবেন এবং অনতিবিলম্বে তাকে হত্যা ক’রে দেবেন।<br />
তারপর ঈসা আলাইহিস সালাম এমন এক জনগোষ্ঠীর নিকট আসবেন, যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা দাজ্জালের চক্রান্ত ও ফিৎনা থেকে মুক্ত রেখেছেন। তিনি তাদের চেহারায় হাত বুলাবেন (বিপদমুক্ত করবেন) এবং জান্নাতে তাদের মর্যাদাসমূহ সম্পর্কে তাদেরকে জানাবেন। এসব কাজে তিনি ব্যস্ত থাকবেন এমন সময় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিকট অহী পাঠাবেন যে, ‘‘আমি আমার কিছু বান্দার আবির্ভাব ঘটিয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে কারো লড়ার ক্ষমতা নেই। সুতরাং তুমি আমার প্রিয় বান্দাদের নিয়ে ‘ত্বূর’ পর্বতে আশ্রয় নাও।’’ আল্লাহ তা‘আলা য়্যা’জুজ-মা’জুজ জাতিকে পাঠাবেন। তারা প্রত্যেক উচ্চস্থান থেকে দ্রুত বেগে ছুটে যাবে। তাদের প্রথম দলটি ত্বাবারী হ্রদ পার হবার সময় তার সম্পূর্ণ পানি এমনভাবে পান ক’রে ফেলবে যে, তাদের সর্বশেষ দলটি সেখান দিয়ে পার হবার সময় বলবে, এখানে এক সময় পানি ছিল। আল্লাহর নবী ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সাথীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত তাঁদের কাছে একটি গরুর মাথা, বর্তমানে তোমাদের একশ’টি স্বর্ণমুদ্রা অপেক্ষা অধিক উত্তম হবে। সুতরাং আল্লাহর নবী ঈসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সঙ্গীগণ আল্লাহর কাছে দুআ করবেন। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের (য়্যা’জূজ-মা’জূজ জাতির) ঘাড়সমূহে এক প্রকার কীট সৃষ্টি ক’রে দেবেন। যার শিকারে পরিণত হয়ে তারা এক সঙ্গে সবাই মারা যাবে। তারপর আল্লাহ তা'আলার নবী ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সাথীগণ নিচে নেমে আসবেন। তারপর (এমন অবস্থা ঘটবে যে,) সেই অঞ্চল তাদের মৃতদেহ ও দুর্গন্ধে ভরে থাকবে; এক বিঘত জায়গাও তা থেকে খালি থাকবে না। সুতরাং ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সঙ্গীরা আল্লাহর কাছে দুআ করবেন। ফলে তিনি বুখতী উটের ঘাড়ের ন্যায় বৃহদকায় এক প্রকার পাখি পাঠাবেন। তারা উক্ত লাশগুলিকে তুলে নিয়ে গিয়ে আল্লাহ যেখানে চাইবেন সেখানে নিয়ে গিয়ে নিক্ষেপ করবে। তারপর আল্লাহ তা‘আলা এমন প্রবল বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যে, কোন ঘর ও শিবির বাদ পড়বে না। সুতরাং সমস্ত জমিন ধুয়ে মসৃণ পাথরের ন্যায় অথবা স্বচ্ছ কাঁচের ন্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে। তারপর জমিনকে আদেশ করা হবে যে, ‘তুমি আপন ফল-মূল যথারীতি উৎপন্ন কর ও নিজ বরকত পুনরায় ফিরিয়ে আন।’ সুতরাং (বরকতের এত ছড়াছড়ি হবে যে,) একদল লোক একটি মাত্র ডালিম ফল ভক্ষণ করে পরিতৃপ্ত হবে এবং তার খোসার নীচে ছায়া অবলম্বন করবে। পশুর দুধে এত প্রাচুর্য প্রদান করা হবে যে, একটি মাত্র দুগ্ধবতী উটনী একটি সম্প্রদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি দুগ্ধবতী গাভী একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে। আর একটি দুগ্ধবতী ছাগী কয়েকটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে।<br />
তারা ঐ অবস্থায় থাকবে, এমন সময় আল্লাহ তা‘আলা এক প্রকার পবিত্র বাতাস পাঠাবেন, যা তাদের বগলের নীচে দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জীবন হরণ করবে। তারপর স্রেফ দুর্বৃত্ত ও অসৎ মানুষজন বেঁচে থাকবে, যারা এই ধরার বুকে গাধার ন্যায় প্রকাশ্যে লোকচক্ষুর সামনে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে। সুতরাং এদের উপরেই সংঘটিত হবে মহাপ্রলয় (কিয়ামত)।’’<br />
(মুসলিম ২৯৩৭, তিরমিযী ২২৪০, ৪০০১, আবূ দাউদ ৪৩২১, ইবনু মাজাহ ৪০৭৫, আহমাদ ১৭১৭৭)<br />
ৃ<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi1zSWqLee4LhseLaJdIpSl0xLC43O34baJiovh8ml0D_ehvBGXjAobAN88OTE6Qlnky0CuN3oOKDEDDQ0je4rz8jH2BTCuW5jw6vfv_RtBaIkFeF_0oSLehMH74wSmd0MIEUTlRrZjwy8/s1600/images.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="ইসলামের আলোকে দাজ্জালের কাহিনী" border="0" data-original-height="415" data-original-width="739" height="179" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi1zSWqLee4LhseLaJdIpSl0xLC43O34baJiovh8ml0D_ehvBGXjAobAN88OTE6Qlnky0CuN3oOKDEDDQ0je4rz8jH2BTCuW5jw6vfv_RtBaIkFeF_0oSLehMH74wSmd0MIEUTlRrZjwy8/s320/images.jpeg" title="" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><span style="font-size: 12.8px;">ইসলামের আলোকে দাজ্জালের কাহিনী</span></td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Unknownnoreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-53061238670321042802019-08-23T01:02:00.001+06:002019-08-23T01:02:20.770+06:00ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের জন্য পাত্রী দেখার নিয়ম, বিবাহের জন্য কনে দেখার সঠিক নিয়মকানুন, ইসলামে বিয়ের জন্য মেয়ে দেখার নিয়ম,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
বিবাহ করার পূর্বে পাত্রী দর্শনের নিয়মাবলিঃ</h3>
<div>
<div dir="ltr">
পাত্রী সৌন্দর্যে যতই প্রসিদ্ধ হোক তবুও তাকে বিবাহের পূর্বে এক ঝলক দেখে নেওয়া উত্তম। ঘটকের চটকদার কথায় সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা না রেখে জীবন-সঙ্গিনীকে জীবন তরীতে চড়াবার পূর্বে সবচক্ষে যাচাই করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বন্ধনে মধুরতা আসে, অধিক ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। একে অপরকে দোষারোপ করা থেকে বাঁচা যায় এবং বিবাহের পর পস্তাতে হয় না।</div>
<div dir="ltr">
পাত্রী দেখতে গিয়ে পাত্র যা দেখবে তা হল, পাত্রীর কেবল চেহারা ও কব্জি পর্যন্ত হস্তদ্বয়। অন্যান্য অঙ্গ দেখা বা দেখানো বৈধ নয়। কারণ, এমনিতে কোন গম্য নারীর প্রতি দৃক্পাত করাই অবৈধ। তাই প্রয়োজনে যা বৈধ, তা হল পাত্রীর ঐ দুই অঙ্গ।</div>
<div dir="ltr">
এই দর্শনের সময় পাত্রীর সাথে যেন তার বাপ বা ভাই বা কোন মাহরাম থাকে। তাকে পাত্রের সাথে একাকিনী কোন রুমে ছেড়ে দেওয়া বৈধ নয়। যদিও বিয়ের কথা পাক্কা হয়।</div>
<div dir="ltr">
পাত্র যেন পাত্রীর প্রতি কামনজরে না দেখে।[1] আর দর্শনের সময় তাকে বিবাহ করার যেন পাক্কা ইরাদা থাকে।</div>
<div dir="ltr">
পাত্রীকে পরিচয় জিজ্ঞাসা বৈধ। তবে লম্বা সময় ধরে বসিয়ে রাখা বৈধ নয় এবং বারবার বহুবার অথবা অনিমেষনেত্রে দীর্ঘক্ষণ তার প্রতি দৃষ্টি রাখাও অবৈধ। অনুরূপ একবার দেখার পর পুনরায় দেখা বা দেখতে চাওয়া বৈধ নয়।[2]</div>
<div dir="ltr">
পাত্রীর সাথে মুসাফাহা করা, রসালাপ ও রহস্য করাও অবৈধ। কিছুক্ষণ তাদের মাঝে হৃদয়ের আদান-প্রদান হোক, এই বলে সুযোগ দেওয়া অভিভাবকের জন্য হারাম।</div>
<div dir="ltr">
এই সময় পাত্রীর মন বড় করার জন্য কিছু উপহার দেওয়া উত্তম। কারণ,</div>
<div dir="ltr">
<i>‘‘স্মৃতি দিয়ে বাঁধা থাকে প্রীতি, প্রীতি দিয়ে বাঁধা থাকে মন,</i><br />
<i>উপহারে বাঁধা থাকে স্মৃতি, তাই দেওয়া প্রয়োজন।’’</i></div>
<div dir="ltr">
অবশ্য পাত্রীর গলে নিজে হার পরানো বা হাত ধরে ঘড়ি অথবা আংটি পরানো হারাম। পরন্তু পয়গামের আংটি বলে কিছু নেই। এমন অঙ্গুরীয়কে শুভাশুভ কিছু ধারণা করা বিদআত ও শির্ক। যা পাশ্চাত্য-সভ্যতার রীতি।[3]</div>
<div dir="ltr">
এরপর পছন্দ-অপছন্দের কথা ভাবনা-চিন্তা করে পরে জানাবে।</div>
<div dir="ltr">
অনুষ্ঠান করে ক্ষণেকের দেখায় পাত্রী আচমকা সুন্দরী মনে হতে পারে অথবা প্রসাধন ও সাজসজ্জায় ধোঁকাও হতে পারে। তাই যদি কেউ বিবাহ করার পাক্কা নিয়তে নিজ পাত্রীকে তার ও তার অভিভাবকের অজান্তে গোপনে থেকে লুকিয়ে দেখে, তাহলে তাও বৈধ। তবে এমন স্থান থেকে লুকিয়ে দেখা বৈধ নয়, যেখানে সে তার একান্ত গোপনীয় অঙ্গ প্রকাশ করতে পারে। অতএব স্কুলের পথে বা কোন আত্মীয়র বাড়িতে থেকেও দেখা যায়।</div>
<div dir="ltr">
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ امْرَأَةً فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَنْظُرَ إِلَيْهَا إِذَا كَانَ إِنَّمَا يَنْظُرُ إِلَيْهَا لِخِطْبَتِهِ وَإِنْ كَانَتْ لَا تَعْلَمُ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘যখন তোমাদের কেউ কোন রমণীকে বিবাহ প্রস্তাব দেয়, তখন যদি প্রস্তাবের জন্যই তাকে দেখে, তবে তা দূষণীয় নয়; যদিও ঐ রমণী তা জানতে না পারে।’’[4]</div>
<div dir="ltr">
সাহাবী জাবের বিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি এক তরুণীকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তাকে দেখার জন্য লুকিয়ে থাকতাম। শেষ পর্যন্ত আমি তার সেই সৌন্দর্য দেখলাম যা আমাকে বিবাহ করতে উৎসাহিত করল। অতঃপর আমি তাকে বিবাহ করলাম।[5]</div>
<div dir="ltr">
পাত্রী দেখার সময় কালো কলপে যুবক সেজে তাকে ধোঁকা দেওয়া হারাম। যেমন পাত্রীপক্ষের জন্য হারাম, একজনকে দেখিয়ে অপরজনের সাথে পাত্রের বিয়ে দেওয়া। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>لَيْسَ مِنَّا مَنْ غَشَّ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘যে (কাউকে) ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’’ <i>(ইর ১৩১৯নং)</i></div>
<div dir="ltr">
পক্ষান্তরে একজনের সাথে বিবাহের কথাবার্তা হয়ে বিবাহ-বন্ধনের সময় অন্যের সাথে ধোঁকা দিয়ে বিয়ে দিলে সে বিবাহ শুদ্ধ নয়। এমন করলে মেয়েকে ব্যভিচার করতে দেওয়া হবে।[6]</div>
<div dir="ltr">
পাত্রের বাড়ির যে কোন মহিলা বউ দেখতে পারে। তবে পাত্র ছাড়া কোন অন্য পুরুষ দেখতে পারে না; পাত্রের বাপ-চাচাও নয়। সুতরাং বুনাই বা বন্ধু সহ পাত্রের পাত্রী দেখা ঈর্ষাহীনতা ও দ্বীন-বিরোধিতা। পাত্রী ও পাত্রীপক্ষের উচিৎ, একমাত্র পাত্র ছাড়া অন্য কোন পুরুষকে পাত্রীর চেহারা না দেখানো। নচেৎ এতে সকলেই সমান গোনাহগার হবে। কিন্তু যে নারীকে না চাইলেও দেখা যায়, সে (টোঁ-টোঁ কোম্পানী) নারী ও তার অভিভাবকের অবস্থা কি তা অনুমেয়।</div>
<div dir="ltr">
পাত্রী দেখার আগে অথবা পরে বাড়ির লোককে দেখানোর জন্য পাত্রীর ফটো বা ছবি নেওয়া এবং পাত্রীপক্ষের তা দেওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ। বিশেষ করে বিবাহ না হলে সে ছবি রয়ে যাবে এ বেগানার কাছে। তাছাড়া ঈর্ষাহীন পুরুষ হলে সেই ছবি তার বন্ধু-বান্ধব ও অন্যান্য পুরুষ তৃপ্তির সাথে দর্শন করবে। যাতে পাত্রী ও তার অভিভাবকের লজ্জা হওয়া উচিৎ।</div>
<div dir="ltr">
অবশ্য প্রগতিশীল (দুর্গতিশীল) অভিভাবকের কাছে এসব ধর্মীয় বাণী হাস্যকর। কিন্তু আল্লাহর আযাব তার জন্য ভয়ংকর।</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>﴿فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘সুতরাং যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় অথবা কঠিন শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে।’’[7]</div>
<div dir="ltr">
পক্ষান্তরে পাত্রীকে সরাসরি না দেখে তার ছবি দেখে পছন্দ সঠিক নাও হতে পারে। কারণ, ছবিতে সৌন্দর্য বর্ধন এবং ত্রুটি গোপন করা যায় সে কথা হয়তো প্রায় সকলেই জানে।</div>
<div dir="ltr">
পাত্রীরও পছন্দ-অপছন্দের অধিকার আছে। সুতরাং পাত্রকে ঐ সময় দেখে নেবে। (বিবাহের দিন বিবাহবন্ধনের পূর্বে বাড়িতে দেখায় বিশেষ লাভ হয় না।) তার পছন্দ না হলে সেও রদ্ করতে পারে।[8]</div>
<div dir="ltr">
বিশেষ করে অপাত্র, বিদআতী, মাযারী, বেনামাযী, ফাসেক, ধূমপায়ী, মদ্যপায়ী, বদমেজাজী প্রভৃতি দেখে ও শুনে তাকে বিয়ে করতে রাজী না হওয়াই ওয়াজেব। কিন্তু হায়! সে সুপাত্র আর ক’জন সুশীলার ভাগ্যে জোটে। আর সে সুশীলাই বা আছে ক’জন? পক্ষান্তরে দ্বীন ও চরিত্রের অনুকূল কোন বিষয় অপছন্দ করে অমত প্রকাশ করা আধুনিকাদের নতুন ফ্যাশান। তাই তো কেউ পাত্র অপছন্দ করে এই জন্যে যে, পাত্রের দাড়ি আছে! অথবা বোরকা পরতে হবে। বাইরে যেতে পাবে না! সিনেমা ও মেলা-খেলা দেখতে পাবে না। পাত্র প্যান্ট্ পরে না, পাত্রের হিপ্পি নেই, সোজা টাইপের তাই -যদিও সে খোজা নয়! তাই তো যুবকরা আল্লাহ ও তদীয় রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের প্রিয়তমা ও প্রণয়িনীদের একান্ত অনুগত হতে শুরু করেছে। নচেৎ হয়তো বিয়েই হবে না অথবা প্রেয়সীর মনসঙ্গ পাবে না! পণের গরম বাজারেও এরূপ উদাহরণ যথেষ্ট পরিদৃষ্ট হয়! কানা বেগুনের ডোগলা খদ্দেরের অভাব নেই কোথাও! বরং এই বেগুন ও তার খদ্দের দিয়েই হাটের প্রায় সমস্ত স্থান পূর্ণ। সুতরাং আল্লাহর পানাহ।</div>
<div dir="ltr">
একশ্রেণীর সভ্য (?) মানুষ যারা বউ দেখতে গিয়ে দ্বীন বিষয়ে কোন প্রশ্ন করে না। ‘নামায পড়ে কি না, কুরআন পড়তে জানে কি না’--এসব বিষয় জানার কোন প্রয়োজনই মনে করে না। পক্ষান্তরে নাচ-গান জানে কি না, সেতারা-বেহালা বাজাতে পারে কি না---সে সব বিষয়ে প্রধান প্রশ্ন থাকে! আহা! পাঁচজনকে খোশ করতে পারলে তবেই তো বউ নিয়ে গর্ব হবে! এই শ্রেণীর মানুষ সভ্য (?) হতে পারে, কিন্তু প্রকৃত ‘মুসলিম’ নয়।</div>
<div dir="ltr">
পাত্রী পছন্দ না হলে পাত্র বা পাত্রপক্ষ ইঙ্গিতে জানিয়ে দেবে যে, এ বিয়ে গড়া তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। স্পষ্টরূপে পাত্রীর কোন দোষ-ত্রুটি তার অভিভাবক বা অন্য লোকের সামনে বর্ণনা করবে না। যে উপহার দিয়ে পাত্রীর মুখ দেখেছিল তা আর ফেরৎ নেওয়া বৈধ নয়, উচিৎও নয়। তবে বিয়ে হবেই মনে করে যদি অগ্রিম কিছু মোহরানা (ব’লে উল্লেখ করে) দিয়ে থাকে তবে তা ফেরৎ নেওয়া বৈধ এবং পাত্রীপক্ষের তা ফেরৎ দেওয়া কর্তব্য।[9]</div>
<div dir="ltr">
পরন্তু সামান্য ত্রুটির কারণে বিবাহে জবাব দিয়ে অঙ্গীকার ভঙ্গ করা বৈধ নয়। কারণ অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে তা ভঙ্গ করা মুনাফিকের লক্ষণ।[10]</div>
<div dir="ltr">
যেমন কোন ‘থার্ড পার্টি’র কথায় কান দিয়ে অথবা কোন হিংসুকের কান-ভাঙ্গানি শুনে বিয়ে ভেঙ্গে পাত্রীর মন ভাঙ্গা উচিৎ নয়।</div>
<div dir="ltr">
অনুরূপ মনে পছন্দ হলেও ‘পণে’ পছন্দ না হয়ে পাত্রীর কোন খুঁত বের করে বিয়েতে জবাব দেওয়া নির্ঘাত ডবল অন্যায়। নও-সম্বন্ধের ভোজের ডালে লবণ কম হয়েছিল বলে ‘ওরা মানুষের মান জানে না’ দুর্নাম দিয়ে দ্বীনদার পাত্রী রদ্ করাও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। পেটুকের মত খেয়ে বেড়ানো অভ্যাস হলে, বিয়ের পাক্কা ইরাদা না নিয়ে (যে মেয়ে হারাম সে) পাত্রী দেখে বেড়ালে, নিশ্চয় তা সচ্চরিত্রবান মানুষের রীতি নয়।</div>
<div dir="ltr">
বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম করার ব্যাপারে কোন দ্বীনদার মানুষ যদি কারো কাছে পরামর্শ নেয় তবে পাত্র বা পাত্রীর দোষ-গুণ খুলে বলা অবশ্যই উচিৎ।[11] যেহেতু মুসলিম ভাই যদি তার সমক্ষে, তার জানতে-শুনতে কোন বেদ্বীন বা বিদআতী ও নোংরা পরিবেশে প্রেমসূত্র স্থাপন করে বিপদে পড়ে তবে নিশ্চয় এর দায়িত্ব সে বহন করবে। যেহেতু সঠিক পরামর্শ দেওয়া এক আমানত। অবশ্য অহেতুক নিছক কোন ব্যক্তিগত স্বার্থে বা হিংসায় অতিরঞ্জন করে বা যা নয় তা বলে বিয়ে ভাঙ্গানোও মহাপাপ। তাছাড়া পরহিতৈষিতা দ্বীনের এক প্রধান লক্ষ্য।[12] এ লক্ষ্যে পৌঁছনো সকল মুসলিমের কর্তব্য।</div>
<div dir="ltr">
পরন্তু ‘‘যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ভায়ের কোন বিপদ বা কষ্ট দূর করে আল্লাহ কিয়ামতে তার বিপদ ও কষ্ট দূর করবেন।’’[13] কন্যাদায় আমাদের দেশের বর্তমান সমাজে এক চরম বিপদ। এ বিপদেও মুসলিম ভাইকে সাহায্য করা মুসলিমের কর্তব্য। অর্থ, সুপরামর্শ ও সুপাত্রের সন্ধান দিয়ে উপকার, বড় উপকার। অবশ্য এমন উপকারে নিজের ক্ষতি এবং বদনামও হতে পারে। কারণ, পাত্র দেখে দিয়ে মেয়ের সুখ হলে তার মা-বাবা বলবে, ‘আল্লাহ দিয়েছে।’ পক্ষান্তরে দুখ বা জবালা-জবলন হলে বলবে, ‘অমুক দিলে বা বিপদে ফেললে।’ অথচ সুখ-দুঃখ উভয়ই আল্লাহরই দান; ভাগ্যের ব্যাপার। তাছাড়া জেনে-শুনে কেউ কষ্টে ফেলে দেয় না। কিন্তু অবুঝ মানুষ অনিচ্ছাকৃত এসব বিষয়ে উপকারীকেও অপকারীরূপে দোষারোপ করে থাকে; যা নির্ঘাত অন্যায়। আর এ অন্যায়ে সবর করায় উপকারীর অতিরিক্ত সওয়াব লাভ হয়।</div>
<div dir="ltr">
দ্বীনদার সুপাত্র পেলে অভিভাবকের উচিৎ বিলম্ব না করা। বাড়িতে নিজেদের খিদমত নেওয়ার উদ্দেশ্যে, আরো উঁচু শিক্ষিতা করার উদ্দেশ্যে (যেহেতু বিয়ের পরও পড়তে পারে) অথবা তার চাকুরির অর্থ খাওয়ার স্বার্থে অথবা গাফলতির কারণে মেয়ে বা বোনের বিয়ে পিছিয়ে দেওয়া বা ‘দিচ্ছি-দিব’ করা তার জন্য বৈধ নয়।[14]</div>
<div dir="ltr">
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘তোমাদের নিকট যদি এমন ব্যক্তি (বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে) আসে যার দ্বীন ও চরিত্রে তোমরা সন্তুষ্ট তবে তার (সাথে কন্যার) বিবাহ দাও। যদি তা না কর তবে পৃথিবীতে ফিৎনা ও বড় ফাসাদ সৃষ্টি হয়ে যাবে।’’[15] তখন ঐ মেয়ের পদস্খলন ঘটলে কোর্টকাছারি বা দাঙ্গা-কলহও হতে পারে।</div>
<div dir="ltr">
প্রকাশ যে, যুবতীর বয়স হলে উপযুক্ত মোহর, সুপাত্র ও দ্বীনদার বর থাকা সত্ত্বেও অভিভাবক নিজস্ব স্বার্থের খাতিরে অন্যায়ভাবে তার বিবাহে বাধা দিলে সে নিজে কাজীর নিকট অভিযোগ করে বিবাহ করতে পারে।[16] নচেৎ কেবলমাত্র কারো প্রেমে পড়ে, কোন অপাত্রের সাথে অবৈধ প্রণয়ে ফেঁসে বের হয়ে গিয়ে কোর্টে ‘লাভ ম্যারেজ’ করা এবং অভিভাবককে জানতেও না দেওয়া অথবা তার অনুমতি না নিয়ে বিবাহ করা হারাম ও বাতিল। সাধারণতঃ ব্যভিচারিণীরাই এরূপ বিবাহ করে চিরজীবন ব্যভিচার করে থাকে।[17]</div>
<div dir="ltr">
পরন্তু প্রেম হল ধূপের মত; যাতে সুবাসের আমেজ থাকলেও তার সূত্রপাত হয় জবলন্ত আগুন দিয়ে, আর শেষ পরিণতি হয় ছাই দিয়ে। তাই প্রেমে পড়ে আগা-পিছা চিন্তা না করে স্বামী বা স্ত্রী নির্বাচন করায় ঠকতে হয় অধিকাংশে।</div>
<div dir="ltr">
ছেলের বয়স হলেও সত্বর বিবাহ দেওয়া অভিভাবকের কর্তব্য। ছেলেকে ছোট ভেবে অবজ্ঞা করা উচিৎ নয়। ছেলে ‘বিয়ে করব না’ বললেও তারা কর্তব্যে পিছপা হবে না। কারণ, ‘‘পুরুষের একটা বয়স আছে; যখন নারী-নেশা গোপনে মনকে পেয়ে বসে। অবস্থার চাপে সে বিয়ে করবে না বললেও, সত্যি সত্যি ‘না’ করলেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নারী-সান্নিধ্যের কথা পরের মুখ দিয়ে শুনতেও মন্দ লাগে না। মন বলে, ‘চাই চাই’, মুখ বলে, ‘চাইনে।’’ অবস্থা এই হলে তার বন্ধু-বান্ধবের নিকট থেকেও সে রহস্য উদ্ঘাটিত হতে পারে। সুতরাং অভিভাবক সতর্ক হলে পাপ থেকে রেহাই পেয়ে যাবে।</div>
<div dir="ltr">
পক্ষান্তরে অভিভাবক যদি যুবককে বিয়েতে বাধা দেয় অথবা দ্বীনদার সুপাত্রীকে বিয়ে করতে না দিয়ে তার কোন আত্মীয় অপাত্রীকে বউ করে আনতে চায় অথবা পণে পছন্দ না হয়ে বিয়েতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেই যায় তবে সে ক্ষেত্রে মা-বাপের অবাধ্য হওয়া পাপ নয়। ব্যভিচারের ভয় হলে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বাধ্য হওয়াই মুসলিম যুবকের উচিৎ।</div>
<div dir="ltr">
তবে নিছক কারো প্রেমে পড়ে সুপাত্রী দ্বীনদার যুবতী ছেড়ে মা-বাপের কথা না মেনে নিজের ইচ্ছামত অপাত্রী বিবাহ করা বা ‘লাভ ম্যারেজ’ করায় পিতামাতার তথা আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্যতা হয়। আল্লাহ যাতে রাজী, তাতে মা-বাপ বা সাতগুষ্ঠি রাজী না হলেও কোন ক্ষতি হয় না। পক্ষান্তরে যাতে আল্লাহ রাজী নন, তাতে মা-বাপ ও চৌদ্দগুষ্ঠিকে রাজী করা যুবকের আত্মীয় ও মাতৃপিতৃভক্তি নয় বরং প্রবৃত্তি ও আত্মতৃপ্তির পরিচয়।</div>
<div dir="ltr">
কোন পাত্রের ব্যাপারে পাত্রী বা পাত্রীপক্ষের অথবা কোন পাত্রীর ব্যাপারে পাত্র বা পাত্রপক্ষের সন্দেহ হলে এবং সম্পর্ক গড়তে সংশয় ও দ্বিধা হলে ইস্তিখারা করলে ফল লাভ হয়। আল্লাহ তাঁর দ্বীনদার বান্দা-বান্দীকে সঠিক পথ নির্দেশ করেন।[18]</div>
<div dir="ltr">
সুপাত্রে কন্যা পড়লে সত্যিই সৌভাগ্যের বিষয়। ‘দশ পুত্রসম কন্যা; যদি সুপাত্রে পড়ে।’</div>
<div dir="ltr">
পাত্র-পাত্রী পছন্দ এবং বাগদানের পর তাদের আপোসের মধ্যে আসা-যাওয়া, পত্রালাপ, টেলিফোনে দূরালাপ, একান্তে ভ্রমণ, একে অপরকে বিশেষভাবে পরীক্ষা করার জন্য অবাধ মিলামিশা, কোর্ট্শিপ বা ইউরোপীয় প্রথায় তাদের আপোসের মধ্যে মন দেওয়া-নেওয়া প্রভৃতি ইসলামে বৈধ নয়। ‘বিয়ে তো হবেই’ মনে ক’রে বিবাহ-বন্ধনের পূর্বে বাগদত্তার সাথে স্ত্রীরূপ ব্যবহার, নির্জনতা অবলম্বন, একাকী কুরআন শিক্ষা দেওয়া প্রভৃতিও হারাম।[19] অবশ্য বিবাহ আক্দ সম্পন্ন হয়ে থাকলে তার সাথে (সারার পূর্বেও) স্ত্রীর মত ব্যবহার করতে এবং কুরআন ও দ্বীন শিক্ষা ইত্যাদি দিতে পারে। সমাজে তা নিন্দনীয় হলেও শরীয়তে নিন্দনীয় নয়।[20]</div>
<div dir="ltr">
<br /></div>
<div dir="ltr">
<b>বিবাহের পূর্বে ভালোরূপে ভেবে নিনঃ-</b></div>
<div dir="ltr">
আপনি কি ভালোবাসার মর্মার্থ জানেন? কেবল যৌন-সুখ লুটাই প্রকৃত সুখ নয়---তা জানেন তো? আপনি কি আপনার তাকে সুখী ও খুশী করতে পারবেন?</div>
<div dir="ltr">
আপনি তাকে চিরদিনের জন্য নিজের অর্ধেক অঙ্গ মনে করতে পারবেন? আপনার স্বাস্থ্যরক্ষার চেয়ে দাম্পত্য-সুখ রক্ষা করতে কি অধিক সচেষ্ট হতে পারবেন?</div>
<div dir="ltr">
আপনাদের উভয়ের মাঝে কোন ভুল বুঝাবুঝির সময় সন্ধির উদ্দেশ্যে একটুও নমনীয়তা স্বীকার করতে পারবেন তো? বিবাহ আপনার বহু স্বাধীনতা হরণ করে নেবে, সে কথা জানেন তো? দাম্পত্য কেবল কয়েক দিনের সফর নয় তা জানেন তো?</div>
<div dir="ltr">
বলা বাহুল্য, বিবাহ কোন মজার খেলা নয়। বিবাহ কাঁধের জোঁয়াল। বিবাহ একটি অনুষ্ঠানের নাম, যাতে কনের আঙ্গুলে আংটি এবং বরের নাকে লাগাম পরানো হয়। স্ত্রীর গলায় হার এবং স্বামীর গলায় বেড়ি পরানো হয়। বিবাহ ‘দিল্লী কা লাড্ডু; (হাওয়া-মিঠাই) যো খায়েগা ওহ ভী পছতায়েগা, আওর যো নেহীঁ খায়েগা ওহ ভী পছতায়েগা!</div>
[1] (মুগনী ৬/৫৫৩) [2] (দলীলুত্ব ত্বালিব, ফী হুক্মি নযরিল খাত্বিব, মুসাইদ আল-ফালিহ২৮পৃঃ) [3] (আফরাহুনা, অজ্ঞাতদ ১০ পৃঃ, আজিঃ ২১২পৃঃ) [4] (আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ৯৭নং) [5] (আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ৯৯নং) [6] (হাশিয়াতু রওযিল মুরাববা’ ৬/২৫৪) [7] (সূরা আন-নিসা (২৪) : ৬৩) [8] (দলীলুত্ব ত্বালিব, ফী হুক্মি নাযারিল খাত্বিব,৩৫পৃঃ) [9] (ই’লামুল মুআক্কিঈন ২/৫০) [10] (মিশকাতুল মাসাবীহ ৫৬নং) [11] (মিশকাতুল মাসাবীহ৩৩২৪) [12] (মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ৪৯৬৬নং) [13] (মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ২০৪নং) [14] (আর-রাসাইলু অল ফাতাওয়ান নিসাইয়্যাহ, ইবনে বায ৫৫পৃঃ, ইসলাম মেঁ হালাল অ হারামঃ ২৩৬পৃঃ) [15] (তিরমিযী, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩০৯০নং) [16] (ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়েদ সাবেক ২/১২৮) [17] (আবু দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ, ইরঃ ১৮৪০নং, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩১৩১নং) [18] (সহীহ নাসাঈ, আল্লামা আলবানী ৩০৫০নং) [19] (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ২৬/১৩৬) [20] (ফাতাওয়া উসাইমীনঃ২/৭৪৮)</div>
<div>
<br /></div>
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEguQLaW3yIjS9ZvNzibN_1fGPeMA1YIZOLeT7LxNXUFaYUbktzPNiE5tyJWFh6Jhg6erLfnxjYVfYiabt-1MdEpkEYNXVqzclteeXEoVxKdp_RZri9Eyll0_ZiMFczjELYg4SDrkczPBVU/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B6%25E0%25A6%25A8.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="ইসলামে বিয়ের জন্য পাত্রী দর্শন," border="0" data-original-height="158" data-original-width="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEguQLaW3yIjS9ZvNzibN_1fGPeMA1YIZOLeT7LxNXUFaYUbktzPNiE5tyJWFh6Jhg6erLfnxjYVfYiabt-1MdEpkEYNXVqzclteeXEoVxKdp_RZri9Eyll0_ZiMFczjELYg4SDrkczPBVU/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B6%25E0%25A6%25A8.jpeg" title="বিবাহের জন্য পাত্রী পছন্দ, " /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">বিবাহের জন্য পাত্রী দর্শন,</td></tr>
</tbody></table>
<div>
<br /></div>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-55997860309742177692019-08-23T00:44:00.000+06:002019-08-26T06:39:20.035+06:00বিবাহের জন্য উওম পাত্রী পছন্দ, ইসলামের দৃষ্টিতে পাত্রী নির্বাচন, ইসলামে পাত্রী দেখার নিয়ম, <div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
বিয়ের করার আগে পাত্রী দেখার ক্ষেত্রে যেসরল বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবেঃ</h3>
<div>
<div dir="ltr">
পত্নী পুরুষের সহধর্মিনী, অর্ধাঙ্গিনী, সন্তানদাত্রী, জীবন-সঙ্গিনী, গৃহের গৃহিণী, সন্তানের জননী, হৃদয়ের শান্তিদায়িনী, রহস্য রক্ষাকারিণী, তার সুখী সংসারের প্রধান সদস্যা। সুতরাং এমন সাথী নির্বাচনে পুরুষকে সত্যই ভাবতে হয়, বুঝতে হয়। শুধুমাত্র প্রেম, উচ্ছৃঙ্খলতা ও আবেগে নয়; বরং বিবেক ও দিমাগে সে বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হয়।</div>
<div dir="ltr">
সাধারণতঃ মানুষ তার ভাবী-সঙ্গিনীর প্রভাব-প্রতিপত্তি, মান-যশ-খ্যাতি, ধন-সম্পদ, কুলীন বংশ, মনোলোভা রূপ-সৌন্দর্য প্রভৃতি দেখে মুগ্ধ হয়ে তার জীবন-সঙ্গ লাভ করতে চায়; অথচ তার আধ্যাত্মিক ও গুণের দিকটা গৌণ মনে করে। যার ফলে দাম্পত্যের চাকা অনেক সময় অচল হয়ে রয়ে যায় অথবা সংসার হয়ে উঠে তিক্তময়। কিন্তু জ্ঞানী পুরুষ অবশ্যই খেয়াল রাখে যে,</div>
<div dir="ltr">
<i>‘‘দেখিতে পলাশ ফুল অতি মনোহর,</i></div>
<div dir="ltr">
<i>গন্ধ বিনে তারে সবে করে অনাদর।</i></div>
<div dir="ltr">
<i>যে ফুলের সৌরভ নাই, কিসের সে ফুল?</i></div>
<div dir="ltr">
<i>কদাচ তাহার প্রেমে মজেনা বুলবুল।</i></div>
<div dir="ltr">
<i>গুণীর গুণ চিরকাল বিরাজিত রয়, </i></div>
<div dir="ltr">
<i>তুচ্ছ রূপ দুই দিনে ধূলিসাৎ হয়।’’</i></div>
<div dir="ltr">
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘রমণীকে তার অর্থ, আভিজাত্য, রূপ-সৌন্দর্য ও দ্বীন-ধর্ম দেখে বিবাহ করা হয়। কিন্তু তুমি দ্বীনদারকে পেয়ে কৃতকার্য হও। তোমার হস্ত ধূলিধূসরিত হোক।’’[1]</div>
<div dir="ltr">
তিনি আরো বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>ليَتَّخذَ أحَدُكُمْ قَلْباً شَاكِراً وَلِسَاناً ذَاكراً وَزَوْجَةً صَالِحَةً تُعينُهُ عَلَى أَمرِ الآخِرَة.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘তোমাদের প্রত্যেকের শুক্রকারী অন্তর ও যিক্রকারী জিহ্বা হওয়া উচিৎ। আর এমন মুমিন স্ত্রী গ্রহণ করা উচিৎ; যে তার আখেরাতের কাজে সহায়তা করবে।’’[2]</div>
<div dir="ltr">
সুতরাং এমন পাত্রী পছন্দ করা উচিৎ, যে হবে পুণ্যময়ী, সুশীলা, সচ্চরিত্রা, দ্বীনদার, পর্দানশীন; যাকে দেখলে মন খুশীতে ভরে ওঠে, যাকে আদেশ করলে সত্বর পালন করে, স্বামী বাইরে গেলে নিজের দেহ, সৌন্দর্য ও ইজ্জতের এবং স্বামীর ধন-সম্পদের যথার্থ রক্ষণা-বেক্ষণা করে।[3]</div>
<div dir="ltr">
মহান আল্লাহ বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>﴿فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللهُ﴾</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘সুতরাং সাধবী নারী তো তারা, যারা (তাদের স্বামীদের অনুপস্থিতিতে ও লোক চক্ষুর অন্তরালে) অনুগতা এবং নিজেদের ইজ্জত রক্ষাকারিণী; আল্লাহর হিফাযতে (তওফীকে) তারা তা হিফাযত করে।’’[4]</div>
<div dir="ltr">
এরপর দেখা উচিৎ, ভাবী-সঙ্গিনীর পরিবেশ। শান্ত প্রকৃতির মেজাজ, মানসিক সুস্থতা ইত্যাদি; যাতে সংসার হয় প্রশান্তিময়। জবালাময়তা থেকে দূর হয় বাক্যালাপ, লেন-দেন ও সকল ব্যবহার।</div>
<div dir="ltr">
বিবাহের একটি মহান উদ্দেশ্য হল সন্তান গ্রহণ । এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্ত্রী নির্বাচন বাঞ্ছনীয়। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>تَزَوَّجُوا الْوَدُودَ الْوَلُودَ فَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمْ الْأُمَمَ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘অধিক প্রেমময়ী, অধিক সন্তানদাত্রী রমণী বিবাহ কর। কারণ, আমি তোমাদেরকে নিয়ে কিয়ামতে অন্যান্য উম্মতের সামনে (সংখ্যাধিক্যের ফলে) গর্ব করব।’’[5]</div>
<div dir="ltr">
অতঃপর সাথীর রূপ-সৌন্দর্য তো মানুষের প্রকৃতিগত বাঞ্ছিত বাসনা। যেহেতু স্ত্রী সুন্দরী হলে মনের প্রশান্তি ও আনন্দ অধিক হয়। অন্যান্য রমণীর প্রতি কখনই মন ছুটে না। পরন্তু ‘‘আল্লাহ সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন।’’[6]</div>
<div dir="ltr">
অনেক যুবক আছে যারা ভুল করে মহিলার চেহারাকে বিবাহ করে, কিন্তু সংসার করে তার সবকিছু নিয়ে! ফলে অশান্তি দেখা দেয় সংসারে।</div>
<div dir="ltr">
অতঃপর দেখার বিষয় সঙ্গিনীর কৌমার্য। কুমারীর নিকট যে সুখ আছে অকুমারীর নিকট তা নেই। এটা তো মানুষের প্রকৃতিগত পছন্দ। যেহেতু ভালোবাসার প্রথম উপহার তার নিকট পেলে দাম্পত্যে পূর্ণ পরিতৃপ্তি আসে। নচেৎ যদি তার মনে ভালোবাসার নিক্তি পূর্ব ও বর্তমান স্বামীর প্রেম ওজন করতে শুরু করে, তবে সেই তুলনায় তার হৃদয় কখনো পূর্ব স্বামীর দিকে ঝুঁকে বর্তমান স্বামীকে তুচ্ছজ্ঞান করে। আবার কখনো নিজের ভাগ্যের এই পরিবর্তনকে বড় দুর্ভাগ্য মনে ক’রে ভালোবাসার ডালি খালি ক’রে রসহীন সংসার করে বর্তমান স্বামীর দেহপাশে। কিন্তু মন থাকে সেই মৃত অথবা সেই তালাকদাতা স্বামীর নিকট। ফলে দাম্পত্য জীবন মধুর হয়ে গড়ে উঠতে পারে না। অবশ্য বর্তমান স্বামী পূর্ব স্বামী হতে সর্ববিষয়ে উত্তম হলে সে কথা ভিন্ন। পরন্তু প্রকৃত দাম্পত্য-সুখ উপভোগ করার উদ্দেশ্যে প্রিয় নবী (সাঃ) এক সাহাবীকে কুমারী নারী বিবাহ করতে উদ্বুদ্ধ করে বলেছিলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>أَفَلاَ تَزَوَّجْتَ بِكْرًا تُلاَعِبُكَ وَتُلاَعِبُهَا.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘কেন কুমারী বিবাহ করলে না? সে তোমাকে নিয়ে এবং তুমি তাকে নিয়ে প্রেমকেলি করতে।’’[7]</div>
<div dir="ltr">
অন্যত্র তিনি বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>عَلَيْكُمْ بِالأَبْكَارِ فَإِنَّهُنَّ أَعْذَبُ أَفْوَاهًا وَأَنْتَقُ أَرْحَامًا (وأسخًنُ أقبالاً، وأقَلُّ خباً) وَأَرْضَى بِالْيَسِيرِ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘তোমরা কুমারী বিবাহ কর। কারণ কুমারীদের মুখ অধিক মিষ্টি, তাদের গর্ভাশয় অধিক সন্তানধারী, তাদের যোনীপথ অধিক উষ্ণ, তারা ছলনায় কম হয় এবং সবল্পে অধিক সন্তুষ্ট থাকে।’’[8]</div>
<div dir="ltr">
উর্বর জমিতে যে ফসলের বীজ সর্বপ্রথম রোপিত হয় সেই ফসলই ফলনে অধিক ও উত্তম হয়। ফসল তুলে সেই জমিতেই অন্য ফসল রোপন করলে আর সেই সোনার ফসল ফলে না। অনুরূপ ভালোবাসার বীজও।</div>
<div dir="ltr">
অবশ্য যার সংসারে পাক্কা গৃহিণীর প্রয়োজন, যে তার ছোট ছোট ভাই-বোন ইত্যাদির সঠিক প্রতিপালন চায়, তাকে অকুমারী বিধবা বিবাহ করাই উচিৎ।[9]</div>
<div dir="ltr">
পরন্তু যদি কেউ কোন বিধবা বা পরিত্যক্তার প্রতি এবং তার সন্তান-সন্ততির প্রতি সদয় হয়ে তাকে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ ক’রে তার দুর্দিন দূর ক’রে সুদিন আনে, তবে নিশ্চয় সে ব্যক্তি অধিক সওয়াবের অধিকারী।[10]</div>
<div dir="ltr">
সর্বদিক দিয়ে নিজের মান যেমন, ঠিক সেই সমপর্যায় মান ও পরিবেশের পাত্রী পছন্দ করা উচিৎ। এতে কেউ কারোর উপর গর্ব প্রকাশ না করতে পেরে কথার আঘাতে প্রেমের গতি বাধাপ্রাপ্ত হবে না। পজিশন, শিক্ষা, সভ্যতা, অর্থনৈতিক অবস্থা, বংশ প্রভৃতি উভয়ের সমান হলে সেটাই উত্তম। যেমন উভয়ের বয়সের মধ্যে বেশী তারতম্য থাকা উচিৎ নয়। নচেৎ ভবিষ্যতে বিভিন্ন জোয়ার-ভাটা দেখা দিতে পারে।</div>
<div dir="ltr">
উপর্যুক্ত সর্বপ্রকার গুণ ও পজিশনের পাত্রী পেলেই সোনায় সোহাগা। এমন দাম্পত্য হবে চিরসুখের এবং এমন স্বামী হবে বড় সৌভাগ্যবান। পক্ষান্তরে কিছু না পেলেও যদি দ্বীন পায়, তবে তাও তার সৌভাগ্যের কারণ অবশ্যই।</div>
<div dir="ltr">
সুতরাং বউ ও জামাই পছন্দের কষ্টিপাথর একমাত্র দ্বীন ও চরিত্র। বংশের উচ্চ-নীচতা কিছু নেই। যেহেতু মানুষ সকলেই সমান। সকল মুসলিম ভাই-ভাই। মহান আল্লাহ বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوباً وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ﴾</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী হতে সৃষ্টি করেছি। পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে; যাতে তোমরা এক অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে ব্যক্তি অধিক সংযমী (মুত্তাকী ও পরহেযগার)।’’[11]</div>
<div dir="ltr">
তাছাড়া ‘ভালো-মন্দ কোন গোষ্ঠী-বর্ণের মধ্যে নির্দিষ্ট নয়। প্রত্যেক বস্ত্তর উত্তম, মধ্যম ও অধম আছে।’ আর ‘কাকের ডিম সাদা হয়, পন্ডিতের ছেলে গাধাও হয়।’ সুতরাং বিবেচ্য হল, যে মানুষকে নিয়ে আমার দরকার কেবল তারই চরিত্র ও ব্যবহার। অবশ্য পারিপাশির্বক অবস্থা দেখাও দরকার নিশ্চয়ই। কারণ, তাতেও কুপ্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।</div>
<div dir="ltr">
অতএব বর-কনে নির্বাচনের সময়ঃ</div>
<div dir="ltr">
১। পাত্র বা পাত্রী কোন্ স্কুলে পড়েছে জানার আগে কোন্ পরিবেশে মানুষ হয়েছে--তা জানার চেষ্টা করুন। কারণ, অনেক সময় বংশ খারাপ হলেও পরিবেশ-গুণে মানুষ সুন্দর ও চরিত্রবান হয়ে গড়ে উঠে।</div>
<div dir="ltr">
২। পাত্র বা পাত্রীর চরিত্র দেখার আগে তার বাপ-মায়ের চরিত্রও বিচার্য। কারণ, সাধারণতঃ ‘আটা গুণে রুটি আর মা গুণে বেটি’ এবং ‘দুধ গুণে ঘি ও মা গুণে ঝি’ হয়ে থাকে। আর ‘বাপকা বেটা সিপাহি কা ঘোড়া, কুছ না হো তো থোড়া থোড়া।’</div>
<div dir="ltr">
৩। বিবাহ একটি সহাবস্থান কোম্পানী প্রতিষ্ঠাকরণের নাম। সুতরাং এমন সঙ্গী নির্বাচন করা উচিৎ যাতে উভয়ের পানাহার প্রকৃতি ও চরিত্রে মিল খায়। নচেৎ অচলাবস্থার আশঙ্কাই বেশী।[12]</div>
<div dir="ltr">
অবশ্য কারো বাহ্যিক দ্বীনদারী দেখেও ধোঁকা খাওয়া উচিৎ নয়। কারণ, সকাল ৭ টায় কাউকে নামায পড়তে দেখলেই যে সে চাশ্তের নামায পড়ে--সে ধারণা ভুলও হতে পারে। কেননা, হতে পারে সে চাশ্তের নয়, বরং ফজরের কাযা আদায় করছিল।</div>
<div dir="ltr">
অনুরূপ কারো বাপের দ্বীনদারীর মতো কথা শুনে অথবা কেবল কারো ভাইয়ের বা বুনায়ের দ্বীনদারীর কথা শুনে তার দ্বীনদারী হওয়াতে নিশ্চিত হয়ে ধোঁকা খাওয়াও অনুচিত। খোদ পাত্র বা পাত্রী কেমন তা সর্বপ্রথম ও শেষ বিচার্য।</div>
<div dir="ltr">
অনুরূপ মাল-ধন আছে কি না, কিছু পাব কি না পাব---তাও বিচার্য নয়। কারণ, তা তো আজ আছে কাল নাও থাকতে পারে। আবার আজ না থাকলে কাল এসে যেতেও পারে। আমি যেমন ঠিক তেমনি ঘরে বিবাহ করা বা দেওয়াই উচিৎ। বিশেষ করে ঘুষ (মোটা টাকা পণ) দিয়ে বড় ঘরে ঢুকতে যাওয়া ঠিক নয়।</div>
<div dir="ltr">
জ্ঞানীরা বলেন, ‘তোমার চেয়ে যে নীচে তার সঙ্গ গ্রহণ করো না। কারণ, হয়তো তুমি তার মূর্খতায় কষ্ট পাবে এবং তোমার চেয়ে যে উচেচ তারও সাথী হয়ো না। কারণ, সম্ভবতঃ সে তোমার উপর গর্ব ও অহংকার প্রকাশ করবে। তুমি যেমন ঠিক তেমন সমমানের বন্ধু, সঙ্গী ও জীবন-সঙ্গিনী গ্রহণ করো, তাতে তোমার মন কোন প্রকার ব্যথিত হবে না।’</div>
<div dir="ltr">
হাতি-ওয়ালার সাথে বন্ধুত্ব করলে হাতি রাখার মত ঘর নিজেকে বানাতে হবে। নতুবা ‘বড়র পিরীতি বালির বাঁধ, ক্ষণে হাতে দড়ি ক্ষণে চাঁদ।’</div>
<div dir="ltr">
এ কথা ভাবা যায় যে, বড় বাড়িতে মেয়ে পড়লে তার খেতে-পরতে কোন কষ্ট হবে না; সুখে থাকবে। কিন্তু তার নিশ্চয়তা কোথায়? ‘বড় গাছের তলায় বাস, ডাল ভাঙ্গলেই সর্বনাশ।’</div>
<div dir="ltr">
মেয়ের অভিভাবকের উচিৎ, মেয়ের রুচি ও পছন্দের খেয়াল রাখা। অবশ্য তার হাতে ডোর ছেড়ে দেওয়া উচিৎ নয়। পরন্তু দ্বীনের ডোর কোন সময়ই ছাড়ার নয়। কারণ, সাধারণতঃ মেয়েদের কল্পনায় থাকে,</div>
<div dir="ltr">
<i>‘রসের নাগর, রূপের সাগর, যদি ধন পাই,</i><br />
<i>আদর ক’রে করি তারে বাপের জামাই।’</i></div>
<div dir="ltr">
বাস্! এই হল ভোগবাদিনী ও পরলোক সম্বন্ধে অন্ধ নারীদের আশা। এরা কেবল বাহ্যিক দৃষ্টির সৌন্দর্য পছন্দ ও কামনা করে; কিন্তু অন্তর্দৃষ্টির সৌন্দর্য অপ্রয়োজনীয় ভাবে! তারা জানে না যে, কুৎসিত মনের থেকে কুৎসিত মুখ অনেক ভালো।</div>
<div dir="ltr">
অতএব এ কাজে অভিভাবককে তার মেয়ের সহায়ক হওয়া একান্ত ফরয। তাই তো মেয়ের বিবাহে অভিভাবক থাকার শর্তারোপ করা হয়েছে।</div>
<div dir="ltr">
আবু অদাআহ বলেন, আমি সাঈদ বিন মুসাইয়েবের দর্সে বসতাম। কিছু দিন তিনি আমাকে দেখতে না পেয়ে যখন আমি তাঁর নিকট এলাম, তখন আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি ছিলে কোথায়?’ আমি বললাম, ‘আমার স্ত্রী মারা গেল; সেই নিয়ে কিছুদিন ব্যস্ত ছিলাম।’ তিনি বললেন, ‘আমাদেরকে খবর দাওনি কেন? তার জানাযা পড়তাম।’ তারপর উঠে চলে আসার ইচ্ছা করলে তিনি আমাকে বললেন, ‘দ্বিতীয় বিবাহ করলে না কেন?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ আপনাকে রহম করুন! কে আমাকে মেয়ে দেবে? আমি তো দুই কি তিন দিরহামের মালিক মাত্র।’ তিনি বললেন, ‘যদি আমি দিই, তবে তুমি করবে কি?’ আমি বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’</div>
<div dir="ltr">
সঙ্গে সঙ্গে খোৎবা পাঠ করে ২ কি ৩ দিরহাম মোহরের বিনিময়ে তাঁর মেয়ের সাথে আমার বিবাহ পড়িয়ে দিলেন। তারপর আমি উঠে এলাম। তখন খুশীতে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ঘরে এসে লাগলাম চিন্তা করতে; ঋণ করতে হবে, কার নিকট করি? মাগরিবের নামায পড়লাম। রোযায় ছিলাম সেদিন। ইফতার ক’রে রাতের খানা খেলাম। খানা ছিল রুটি ও তেল। ইত্যবসরে কে দরজায় আঘাত করল। আমি বললাম, ‘কে?’ আগন্তুক বলল, ‘আমি সাঈদ।’ ভাবলাম, তিনি কি সাঈদ বিন মুসাইয়েব? তাঁকে তো চল্লিশ বছর যাবৎ ঘর থেকে মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও যেতে দেখা যায়নি। উঠে দরজা খুলতেই দেখি উনিই। ধারণা করলাম, হয়তো বা মত পরিবর্তন হয়েছে। আমি বললাম, ‘আবু মুহাম্মাদ! আপনি নিজে এলেন! আমাকে ডেকে পাঠাতে পারতেন? আমি আপনার নিকট আসতাম।’ তিনি বললেন, ‘না। এর হকদার তুমি।’ আমি বললাম, ‘আদেশ করুন।’ তিনি বললেন, ‘ভাবলাম, বিপত্নীক পুরুষ তুমি; অথচ তোমার বিবাহ হল। তাই তুমি একাকী রাত কাটাও এটা অপছন্দ করলাম। এই নাও তোমার স্ত্রী!’</div>
<div dir="ltr">
দেখলাম, সে তাঁর সোজাসুজি পশ্চাতে সলজ্জ দন্ডায়মানা। অতঃপর তিনি তাকে দরজা পার করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে প্রস্থান করলেন। লজ্জায় সে যেন দরজার সাথে মিশে গেল। আমি বাড়ির ছাদে চড়ে প্রতিবেশীর সকলকে হাঁক দিলাম। সকলেই বলল, ‘কি ব্যাপার?’ আমি বললাম, ‘সাঈদ তাঁর মেয়ের সঙ্গে আমার বিবাহ দিয়েছেন। হঠাৎ করে তিনি তাঁর মেয়েকে আমার ঘরে দিয়ে গেলেন। ঐ ওখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’</div>
<div dir="ltr">
সকল মহিলা তাকে দেখতে এল।</div>
<div dir="ltr">
আমার মায়ের কাছে খবর গেলে তিনি এসে বললেন, ‘তিন দিন না সাজানো পর্যন্ত যদি তুমি ওকে স্পর্শ করো, তবে আমার চেহারা দেখা তোমার জন্য হারাম।’ অতএব তিন দিন অপেক্ষার পর তার সাথে বাসর-শয্যায় মিলিত হলাম। দেখলাম সে অন্যতমা সুন্দরী, কুরআনের হাফেয, আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর সুন্নাহ বিষয়ে সুবিজ্ঞা এবং স্বামীর অধিকার বিষয়ে সবজান্তা।</div>
<div dir="ltr">
এরপর একমাস ওস্তাদ সাঈদের নিকট আমার যাওয়া-আসা ছিল না। অতঃপর একদিন তাঁর মসজিদে গিয়ে সালাম দিলে তিনি উত্তর দিলেন। কিন্তু কোন কথা বললেন না। তৎপর সমস্ত লোক যখন মসজিদ থেকে বের হয়ে গেল, তখন একা পেয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন। ‘ঐ লোকটার খবর কি?’ আমি বললাম, ‘তার খবর এমন; যা বন্ধুতে পছন্দ আর শত্রুতে অপছন্দ করবে।’ তিনি বললেন, ‘যদি তার কোন বিষয় তোমাকে সন্দিহান করে, তবে লাঠি ব্যবহার করো।’ অতঃপর বাড়ি ফিরে এলাম।</div>
<div dir="ltr">
সাঈদের মেয়ে; যাকে খলীফা আব্দুল মালেক বিন মারওয়ান তাঁর ছেলে অলীদের জন্য পয়গাম দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজপরিবারে মেয়ের বিবাহ দিতে অস্বীকার করেছিলেন। অবশেষে পছন্দ করলেন এক দ্বীনদার গরীবকে![13]</div>
<div dir="ltr">
মুবারক আবু আব্দুল্লাহর ব্যাপারে কথিত আছে যে, তিনি তাঁর প্রভু (মনীব) এর বাগানে কাজ করতেন। তাঁর প্রভু বাগান-মালিক হামাযানের বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। একদিন বাগানে এসে দাসকে বললেন, ‘মুবারক! একটি মিষ্টি বেদানা চাই।’</div>
<div dir="ltr">
মুবারক গাছ হতে খুঁজে খুঁজে একটি বেদানা প্রভুর হাতে দিলেন। প্রভু তো ভেঙ্গে খেতেই চটে উঠলেন। বললেন, ‘তোমাকে মিষ্টি দেখে আনতে বললাম, অথচ টক বেছেই নিয়ে এলে? মিষ্টি দেখে নিয়ে এস।’</div>
<div dir="ltr">
মুবারক অন্য একটি গাছ থেকে আর একটি বেদানা এনে দিলে তিনি খেয়ে দেখলেন সেটাও টক। রেগে তৃতীয়বার পাঠালে একই অবস্থা। প্রভু বললেন, ‘আরে তুমি টক আর মিষ্টি বেদানা কাকে বলে চেন না?’ বললেন, ‘জী না। আপনার অনুমতি না পেয়ে কি করে খেতাম?’</div>
<div dir="ltr">
দাসের এই আমানতদারী ও সততা দেখে প্রভু অবাক হলেন। তাঁর চোখে তাঁর কদর ও মর্যাদা বৃদ্ধি পেল।</div>
<div dir="ltr">
প্রভুর ছিল এক সুন্দরী কন্যা। বহু বড় বড় পরিবার থেকেই তার বিয়ের সম্বন্ধ আসছিল। একদা প্রভু মুবারককে ডেকে বললেন, ‘আমার মেয়ের সাথে কেমন লোকের বিয়ে হওয়া উচিৎ বল তো?’ মুবারক বললেন, ‘জাহেলিয়াত যুগের লোকেরা বংশ ও কুলমান দেখে বিয়ে দিত, ইয়াহুদীরা দেয় ধন দেখে, খ্রীষ্টানরা দেয় রূপ-সৌন্দর্য দেখে। কিন্তু এই উম্মত কেবল দ্বীন দেখেই বিয়ে দিয়ে থাকে।’</div>
<div dir="ltr">
এ ধরনের জ্ঞানগর্ভ কথা প্রভুর বড় পছন্দ হল। মুবারকের কথা প্রভু তাঁর স্ত্রীর নিকট উল্লেখ করে বললেন, ‘আমি তো মেয়ের জন্য মুবারকের চেয়ে অধিক উপযুক্ত পাত্র আর কাউকে মনে করি না।’</div>
<div dir="ltr">
হয়েও গেল বিবাহ। পিতা উভয়কে প্রচুর অর্থ দিয়ে তাঁদের দাম্পত্যে সাহায্য করলেন। এই সেই দম্পতি যাঁদের ঔরসে জন্ম নিয়েছিলেন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস, যাহেদ, বীর মুজাহিদ আব্দুল্লাহ বিন মুবারক।[14]</div>
<div dir="ltr">
এই ছিল মেয়ের বাবাদের তাদের মেয়েদের আখেরাত বানানোর প্রতি খেয়াল রেখে পাত্র পছন্দ করার পদ্ধতি। দুনিয়াদারীর প্রতি খেয়াল রেখে নয়।</div>
<div dir="ltr">
এক ব্যক্তি হাসান বাসরী (রঃ) কে জিজ্ঞাসা করল, ‘আমার একটি মেয়ে আছে। বহু জায়গা হতে তার বিয়ের কথা আসছে। কাকে দেব বলতে পারেন?’</div>
<div dir="ltr">
হাসান বললেন, ‘সেই পুরুষ দেখে মেয়ে দাও; যে আল্লাহকে ভয় করে (যে পরহেযগার)। এতে যদি সে তাকে ভালোবাসে, তাহলে তার যথার্থ কদর করবে। আর ভালো না বাসলে সে তার উপর অত্যাচার করবে না।’[15]</div>
<div dir="ltr">
শুধু অভিভাবকই নয় বরং খোদ মেয়েদেরকেও এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিৎ।</div>
<div dir="ltr">
আবূ তালহা তখন ইসলাম গ্রহণ করেননি। তিনি উম্মে সুলাইমকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে উম্মে সুলাইম বললেন, ‘আপনার মত যুবক স্বামী হওয়ার যোগ্য; রদ্যোগ্য নন। কিন্তু আপনি তো কাফের। আর আমি হলাম একজন মুসলিম নারী। তাই আমাদের মধ্যে বিবাহ শুদ্ধ নয়।’ আবূ তালহা ধন-দৌলতের লোভ দেখিয়ে বললেন, ‘তুমি কি সোনা-চাঁদি ও অর্থ পেয়ে খুশী হতে পারবে না?’</div>
<div dir="ltr">
উম্মে সুলাইম বললেন, ‘আমি সোনা চাঁদি কিছুই চাই না। কিন্তু আপনি এমন মানুষ; যে শুনতে পায় না, দেখতে পায় না এবং কোন উপকার করতে পারে না এমন কোন হাবশী দাসের গড়া কাঠের (মূর্তি) পূজা করেন। এতে কি আপনার বিবেকে বাধে না? শুনুন, যদি আপনি মুসলমান হন, তাহলে আমি আপনাকে বিয়ে করব। আর ইসলাম হবে আমার মোহর! এ ছাড়া অন্য কিছু আমি মোহররূপে চাই না!’ [16]</div>
<div dir="ltr">
উল্লেখ্য যে, আমার এক ছাত্রী মুখ খুলে কয়েকটি বিবাহ প্রস্তাব রদ্ করলে তাকে রাজী করাবার জন্য তার অভিভাবক আমাকে দায়িত্ব দেন। রদের কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে আদবের সাথে জানাল। ‘জী, ওরা মাযার পূজা করে।’ অন্য এক প্রস্তাবের জবাবে বলল, ‘আমি শুনেছি ওদের বাড়িতে টি-ভি আছে। আমার ভয় হয় যে, আমি খারাপ হয়ে যাব?!’</div>
<div dir="ltr">
এরূপ দ্বীনদারী জবাব শুনে আমি অবাক না হয়ে এবং তাকে শত ধন্যবাদ ও দুআ না দিয়ে পারিনি।</div>
<div dir="ltr">
সঊদী আরবের আল-মাজমাআহ শহরে এককালে আমি বিবাহ রেজিষ্ট্রীর মুহরী (লেখক) ছিলাম। এক বিবাহ মজলিসে পাত্রীর শর্ত লিখার সময় ১ম শর্ত ছিল, সে কলেজের অধ্যয়ন শেষ করবে। ২য় শর্ত ছিল, পাত্র সিগারেট খায়, তাকে সিগারেট খাওয়া ছাড়তে হবে!</div>
<div dir="ltr">
উক্ত শর্ত পালনে বর সম্মত কি না, তা জানতে তাকে প্রশ্ন করা হলে সে বলল, ‘ছাড়ার চেষ্টা করব।’ কনের কাছে তা বলা হলে সে বলল, ‘চেষ্টা নয়; শর্তে লিখুন, আজ থেকেই ছাড়বে এবং যেদিন সে পুনরায় সিগারেট খাবে সেদিন আমার এক তালাক বলে গণ্য হবে!’</div>
<div dir="ltr">
মজলিসে যে বাহবা ও দুআর শোর উঠেছিল তা বলাই বাহুল্য। পরিশেষে এই শর্তে বর স্বাক্ষর করেছিল। আমি নিজ হাতে সেই শর্ত লিখেছিলাম। আজ সমাজে দরকার আছে এমন গুণবতী কন্যার।</div>
<div dir="ltr">
কিন্তু হায়! নারীর মূল্যমান কমে যাওয়ার ফলে এবং পণের চাপের মুখে বহু গুণবতী কনে অমত সত্ত্বেও অযোগ্য পাত্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। করলে হয়তো অভিভাবকদের কথার জবালা সহ্য করাই দায় হয়ে উঠবে। পক্ষান্তরে পাত্রের দাড়ি আছে বলে অথবা মেলা-খেলায় নিয়ে যাবে না বলে পাত্র রদ্ করলে তখন অভিভাবকের কোন অসুবিধা হয় না। বরং ‘এখন ছোট মেয়ে, শক-আহ্লাদ থাকতে হবে বৈ কি’---বলে দ্বীনদার পাত্র ফিরিয়ে দিতে এতটুকু লজ্জাবোধ হয় না। অথচ দাবী করে, ‘তারা নাকি মুসলমান!’</div>
<div dir="ltr">
সুতরাং দ্বীনদারী ও চরিত্র ব্যতীত আভিজাত্য, নাম করা বংশ, যশ, সম্পদ, পদ প্রভৃতি বিবেচনা করে বিবাহ দিলে বা করলে দাম্পত্য-সুখের সুনিশ্চিত আশা করা যায় না। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>إِذَا أَتَاكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ دِينَهُ وَخُلُقَهُ فَزَوِّجُوهُ، إِلا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘তোমাদের নিকট যখন এমন ব্যক্তি (বিবাহের পয়গাম নিয়ে) আসে; যার দ্বীন ও চরিত্রে তোমরা মুগ্ধ তখন তার সাথে (মেয়ের) বিবাহ দাও। যদি তা না কর তাহলে পৃথিবীতে ফিৎনা ও মহাফাসাদ সৃষ্টি হয়ে যাবে।’’[17]</div>
<div dir="ltr">
তিনি আরো বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>مَنْ أَعْطَى لِلَّهِ تَعَالَى وَمَنَعَ لِلَّهِ تَعَالَى وَأَحَبَّ لِلَّهِ تَعَالَى وَأَبْغَضَ لِلَّهِ تَعَالَى وَأَنْكَحَ لِلَّهِ تَعَالَى فَقَدْ اسْتَكْمَلَ إِيمَانَهُ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে কিছু দান করে, কিছু দেওয়া হতে বিরত থাকে, কাউকে ভালোবাসে অথবা ঘৃণাবাসে এবং তাঁরই সন্তুষ্টিলাভের কথা খেয়াল করে বিবাহ দেয়, তার ঈমান পূর্ণাঙ্গ ঈমান।’’[18]</div>
<div dir="ltr">
অতএব দ্বীন ও চরিত্রেই পাত্র-পাত্রীর সমতা জরুরী। কারণ, সকল প্রকার বর্ণ-বৈষম্য, বন্ধন ও উচ্চতা-নিচুতার প্রাচীর চুরমার করে দেয় দ্বীন ও তাকওয়া।</div>
<div dir="ltr">
কোন দ্বীনদার পর্দা-প্রেমী পাত্র-পাত্রীর জন্য ফাসেক বেপর্দা-প্রেমী পাত্র-পাত্রী হতে পারে না। কোন তেŠহীদবাদী পাত্র-পাত্রীর জন্য কোন বিদআতী বা মাযারী পাত্র-পাত্রী হতে পারে না। মিঠাপানির মাছের সাথে অনুরূপ মাছের বিবাহ শোভনীয় এবং নোনাপানির মাছের সাথে অনুরূপ মাছের বিবাহই মানানসই। নতুবা মিঠা পানির মাছের নোনা পানিতে এসে এবং নোনা পানির মাছের মিঠা পানিতে এসে বাস করা কঠিনই হবে। আর মানানসই তখনই হয়; যখন ‘য্যায়সন কা ত্যায়সন শুকটি কা ব্যায়গন’-এর ঘর পড়ে। এতে স্বামী-স্ত্রীর মান-অপমানের ব্যাপারটা সমান পর্যায়ে থাকে। নচেৎ এই অসমতার কারণেই কারো স্ত্রী প্রভু হয় অথবা দাসী। পক্ষান্তরে সমতার স্ত্রী হয় বন্ধু। গেঁয়ো পাত্র-পাত্রীর পক্ষে শহুরে, শিক্ষিতের পক্ষে অশিক্ষিত, দরিদ্রের পক্ষে ধনী পাত্র-পাত্রী খুব কমই সুখ আনতে পারে। </div>
<div dir="ltr">
তদনুরূপ বেপর্দা পরিবেশের পাত্রী পর্দা পরিবেশে এলে তার দম বন্ধ হয়ে যায়! কারণ, জঙ্গলের পাখীকে সোনার খাঁচা দিলেও তার মন পড়ে থাকে জঙ্গলে। কেননা, সে পর্দার পরিবেশকে খাঁচাই মনে করে! তাই সে নিজেও এমন পরিবেশে শান্তি পায় না এবং ঈর্ষাবান স্বামীও তাকে নিয়ে অশান্তি ভোগ করে। বন থেকে বাঘ তুলে এনে তার যতই তরবিয়ত দেওয়া হোক এবং পোষ মানানো যাক না কেন, তবুও তার মন থেকে কিন্তু বন তুলে ফেলা যায় না। তাই সে সদা ফাঁক খোঁজে, ফাঁকি দিতে চেষ্টা করে; এমনকি ধোঁকাও দিয়ে বসে অনেক সময়।</div>
<div dir="ltr">
অবশ্য এসব কিছু হয় দ্বীনদারী তরবিয়ত ঢিলে হওয়ার ফলেই। দ্বীন ও তাকওয়া থাকলে স্বামী-স্ত্রী কারোই অসুবিধা হয় না।</div>
<div dir="ltr">
একটা বিষয় খেয়াল রাখার যে, কোন পাত্র বা পাত্রী সম্পর্কে জানতে তার দ্বীন বিষয়ে প্রথমে প্রশ্ন করা উচিৎ নয়। নচেৎ এরপর সৌন্দর্যাদি পছন্দ না হয়ে তাকে রদ্ করলে দ্বীনদার রদ্ করা হয় এবং তাতে মহানবী (সাঃ) এর বিরোধিতা হয়। অতএব কর্তৃপক্ষের উচিৎ যে, অন্যান্য বিষয়ে প্রথমে পছন্দ হয়ে শেষে দ্বীন বিষয়ে প্রশ্ন (অবশ্যই) করে দ্বীন থাকলে গ্রহণ করবে, নতুবা রদ্ করে দেবে; যখন শরীয়তের বিপরীত চলা হতে বেঁচে যাবে। কথায় বলে, ‘আগে দর্শন ধারি, শেষে গুণ বিচারি।’</div>
<div dir="ltr">
প্রকাশ যে, পাত্রী পছন্দের জন্য জোড়া-ভ্রূ, কুপগাল ইত্যাদি শুভ-অশুভের কিছু লক্ষণ নয়।</div>
<div dir="ltr">
পাত্র বা পাত্রপক্ষ পারিপাশির্বক অবস্থা, পরিবেশ ইত্যাদি দেখে ও জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন পাত্রী পছন্দ হলে তার অভিভাবককে বিবাহের প্রস্তাব দেবে। তবে তার পূর্বে দেখা উচিৎ যে, সেই পাত্রী এই পাত্রের জন্য গম্যা কি না। অগম্যা বা অবৈধ হলে তাকে বিবাহ প্রস্তাব দেওয়া হারাম।</div>
<div dir="ltr">
অনুরূপ যদি তার পূর্বে অন্য পাণিপ্রার্থী ঐ পাত্রীর জন্য প্রস্তাব দিয়ে থাকে, তাহলে সে জবাব না দেওয়া পর্যন্ত তার প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব বা (দর কষাকষি করে) প্রলোভন বৈধ নয়। অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা এবং এতে বিদ্বেষ গড়ে তোলা মুসলিমের কাজ নয়।</div>
<div dir="ltr">
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>الْمُؤْمِنُ أَخُو الْمُؤْمِنِ فَلاَ يَحِلُّ لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يَبْتَاعَ عَلَى بَيْعِ أَخِيهِ وَلاَ يَخْطُبَ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيهِ حَتَّى يَذَرَ.</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সুতরাং তার জন্য তার ভায়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় এবং বিবাহ-প্রস্তাবের উপর বিবাহ প্রস্তাব -তার ছেড়ে না দেওয়া পর্যন্ত - হালাল নয়।[19]</div>
<div dir="ltr">
পাত্রী যদি কারো তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী হয়, তবে তার ইদ্দতে তাকে বিবাহ-পয়গাম দেওয়া হারাম। স্বামী-মৃত্যুর ইদ্দতে থাকলে স্পষ্টভাবে প্রস্তাব দেওয়া নিষিদ্ধ। ইঙ্গিতে দেওয়া চলে। মহান আল্লাহ বলেন,</div>
<div dir="ltr">
<span style="font-size: 1.40em;"><b>﴿وَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا عَرَّضْتُمْ بِهِ مِنْ خِطْبَةِ النِّسَاءِ أَوْ أَكْنَنْتُمْ فِي أَنْفُسِكُمْ عَلِمَ اللهُ أَنَّكُمْ سَتَذْكُرُونَهُنَّ وَلَكِنْ لاَ تُوَاعِدُوهُنَّ سِرّاً إِلَّا أَنْ تَقُولُوا قَوْلاً مَعْرُوفاً وَلاَ تَعْزِمُوا عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتَّى يَبْلُغَ الْكِتَابُ أَجَلَهُ وَاعْلَمُوا أَنَّ الله يَعْلَمُ مَا فِي أَنْفُسِكُمْ فَاحْذَرُوهُ﴾</b></span></div>
<div dir="ltr">
‘‘আর যদি তোমরা আভাসে-ইঙ্গিতে উক্ত রমণীদেরকে বিবাহ-প্রস্তাব দাও অথবা অন্তরে তা গোপন রাখ, তবে তাতে তোমাদের দোষ হবে না। আল্লাহ জানেন যে, তোমরা তাদের সম্বন্ধে আলোচনা করবে। কিন্তু বিধিমত কথাবার্তা ছাড়া গোপনে তাদের নিকট কোন অঙ্গীকার করো না। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত বিবাহকার্য সম্পন্ন করার সংকল্প করো না এবং জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের মনোভাব জানেন। অতএব তাঁকে ভয় কর।’’[20]</div>
<div dir="ltr">
অনুরূপ হজ্জ বা উমরা করতে গিয়ে ইহরাম অবস্থায় কোন নারীকে বিবাহ প্রস্তাব দেওয়া অবৈধ।[21]</div>
<div dir="ltr">
বিবাহের পূর্বে পাত্র-পাত্রীর রক্ত, বীর্য প্রভৃতি পরীক্ষা করে তারা রোগমুক্ত কি না তা দেখে নেওয়ার সমর্থন রয়েছে ইসলামে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘তোমরা কুষ্ঠরোগ হতে দূরে থেকো; যেমন বাঘ হতে দূরে পলায়ন কর।’’[22]</div>
<div dir="ltr">
‘‘চর্মরোগাক্রান্ত উটের মালিক যেন সুস্থ উট দলে তার উট না নিয়ে যায়।’’[23]</div>
<div dir="ltr">
‘‘কারো জন্য অপরের কোন প্রকার ক্ষতি করা বৈধ নয়। কোন দু’জনের জন্য প্রতিশোধমূলক পরস্পরকে ক্ষতিগ্রস্ত করাও বৈধ নয়।’’[24]</div>
<div dir="ltr">
<br /></div>
<div dir="ltr">
[1] (বুখারী, মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩০৮২নং) [2] (ইবনে মাজাহ ১৮৫৬নং, আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ২১৭৬নং) [3] (নাসাঈ ৩২৩১নং, হাকেম ২/১৬১, মুসনাদে আহমদ ২/২৫১) [4] (সূরা আন-নিসা (৪) : ৩৪) [5] (আবু দাঊদ, নাসাঈ, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩০৯১নং) [6] (সিলসিলা সহীহাহ ১৬২৬নং) [7] (বুখারী, মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩০৮৮নং) [8] (ইবনে মাজাহ, আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ৬২৩নং, সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৪০৫৩নং) [9] (বুখারী ২৯৬৭নং) [10] (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ১৮/১১৯) [11] (সূরা আল-হুজুরাত (৪৯) : ১৩) [12] (তুহফাতুল আরূস, ৪৯পৃঃ) [13] (অফিয়াতুল আ’ইয়ান ২/৩৭৭) [14] (অফায়াতুল আ’ইয়ান, ইবনে খাল্লেকান ২/২৩৮) [15] (উয়ূনুল আখবার, ইবনে কুতাইবাহ ৪/১৭) [16] (তুহফাতুল আরূস, ৫২-৫৩পৃঃ) [17] (আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ১০২২নং) [18] (মুসনাদে আহমদ, হাকেম , বাইহাকী, সহীহ তিরমিযী, আল্লামা আলবানী ২০৪৬ নং) [19] (বুখারী, মুসলিম ১৪১৪নং) [20] (সূরা আল-বাক্বারা (২) : ২৩৫) [21] (সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৭৮০৯নং) [22] (বুখারী ৫৭৯৭নং) [23] (বুখারী ৫৭৭১নং) [24] (মুসনাদে আহমদ, মাঃ, ইবনে মাজাহ ২৩৪০, ২৩৪১ নং)<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
</div>
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjfROAr0F2fjNjlw0QDkULA4gRav3ud4PaKNL7cBGHj71dLuDxRU3EF2knGiEZNxXpcp_HUVj4Q7SEOHYZMR9l8BdEiYyDhPQLwygKTi169CxGZ1e_jv2tiFv4Se8VstO71MRmW8IunnPo/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%259B%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="বিয়ের জন্য উওম পাত্রী পছন্দ," border="0" data-original-height="355" data-original-width="533" height="213" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjfROAr0F2fjNjlw0QDkULA4gRav3ud4PaKNL7cBGHj71dLuDxRU3EF2knGiEZNxXpcp_HUVj4Q7SEOHYZMR9l8BdEiYyDhPQLwygKTi169CxGZ1e_jv2tiFv4Se8VstO71MRmW8IunnPo/s320/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%259B%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A6.jpg" title="বিবাহ" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">বিহাহের জন্য উওম পাত্রী</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
</div>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-56995642132388978302019-08-11T08:28:00.000+06:002019-08-11T08:28:41.970+06:00কুরবানীর পশু সংক্রান্ত মাসায়েল ৷ কুরবানী পশুর বৈশিষ্ট, যে ত্রুটিযুক্ত পশু কুরবানী করা মাকরুহ ৷<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
কুরবানীর পশু সংক্রান্ত বিস্তারিত বর্ননাঃ<br />
১। কান কাটা বা শিং ভাঙ্গা। এর দ্বারা কুরবানী মকরূহ। তবে সিদ্ধ হয়ে যাবে। কারণ, এতে গোশতের কোন ক্ষতি বা কমি হয় না এবং সাধারণতঃ এমন ত্রুটি পশুর মধ্যে বেশী পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। কিন্তু যে পশুর জন্ম থেকেই শিং বা কান নেই তার দ্বারা কুরবানী মকরূহ নয়। যেহেতু ভাঙ্গা বা কাটাতে পশু রক্তাক্ত ও ক্লিষ্ট হয়; যা এক রোগের মত। কিন্তু জন্ম থেকে না থাকাটা এ ধরনের কোন রোগ নয়। অবশ্য পূর্ণাঙ্গ পশুই আফযল।<br />
<br />
২। লেজ কাটা। যার পূর্ণমঅথবা কিছু অংশ লেজ কাটা গেছে তার কুরবানী মকরূহ। ভেড়ার পুচ্ছে গোশতপিন্ড কাটা থাকলে তার কুরবানী সিদ্ধ নয়। যেহেতু তা এক স্পষ্ট কমি এবং ঈ¨্যসত অংশ। অবশ্য এমন জাতের ভেঁড়া যার পশ্চাতে গোশত পিন্ড হয় না তার দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ।<br />
<br />
৩। কান চিরা, দৈর্ঘ্যে চিরা, পশ্চাৎ থেকে চিরা, সম্মুখ থেকে প্রস্থে চিরা, কান ফাটা ইত্যাদি।<br />
<br />
৪। লিঙ্গ কাটা। অবশ্য মুষ্ক কাটা মকরূহ নয়। যেহেতু খাসীর দেহ হূষ্টপুষ্ট ও গোশত উৎকৃষ্ট হয়।<br />
<br />
৫। দাঁত ভাঙ্গা ও চামড়ার কোন অংশ অগভীর কাটা বা চিরা ইত্যাদি।<br />
<br />
কুরবানী সিদ্ধ হওয়ার তৃতীয় শর্ত হল মালিকানা। অর্থাৎ, কুরবানীদাতা যেন বৈধভাবে ঐ পশুর মালিক হয়। সুতরাং চুরিকৃত, আত্মসাৎকৃত অথবা অবৈধ ক্রয়-বিক্রয়ে ক্রীত পশুর কুরবানী সিদ্ধ নয়। তদনুরূপ অবৈধ মূল্য (যেমন সূদ, ঘুস, প্রবঞ্চনা প্রভৃতির অর্থ) দ্বারা ক্রীত পশুর কুরবানীও জায়েয নয়। যেহেতু কুরবানী এক ইবাদত যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা হয়। আর কুরবানীর পশুর মালিক হওয়ার ঐ সমস্ত পদ্ধতি হল পাপময়। আর পাপ দ্বারা কোন প্রকার নৈকট্য লাভ সম্ভব নয়। বরং তাতে দূরতক্ষ সৃষ্টি হয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ব্যতীত কিছু গ্রহণ করেন না।[1] <br />
<br />
কুরবানীর পশু নির্ধারণে মুসলিমকে সবিশেষ যত্নবান হওয়া উচিত, যাতে পশু সর্বগুণে সম্পূর্ণ হয়। যেহেতু এটা আল্লাহর নিদর্শন ও তা’যীমযোগ্য দ্বীনী প্রতীকসমূহের অন্যতম। যা আত্মসংযম ও তাকওয়ার পরিচায়ক। আল্লাহ তাআলা বলেন,<br />
<br />
(ذلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللهِ فَإِنَّهَا مَنْ تَقْوَى الْقُلُوْبِ)<br />
<br />
অর্থাৎ, এটিই আল্লাহর বিধান এবং কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীর সম্মান করলে এতো তার হূদয়ের তাকওয়া (ধর্মনিষ্ঠা) সঞ্জাত।<br />
<br />
(সূরা হজ্জ্ ৩২আয়াত)<br />
<br />
এ তো সাধারণ দ্বীনী প্রতীকসমূহের কথা। নির্দিষ্টভাবে কুরবানীর পশু যে এক দ্বীনী প্রতীক এবং তার যত্ন করা যে আল্লাহর সম্মান ও তা’যীম করার শামিল, সে কথা অন্য এক আয়াত আমাদেরকে নির্দেশ করে। মহান আল্লাহ বলেন,<br />
<br />
(وَالبُدْنَ جَعَلْنَاهَا لَكُمْ مِنْ شَعَائِرِ الله)<br />
<br />
অর্থাৎ, (কুরবানীর) উঁটকে তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্যতম করেছি। (সূরা হজ্জ ৩৬ আয়াত)<br />
<br />
এখানে কুরবানী পশুর তা’যীম হবে তা উত্তম নির্বাচনের মাধ্যমে। ইবনে আববাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথম আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘কুরবানী পশুর সম্মান করার অর্থ হল, পুষ্ট গোশতল, সুন্দর ও বড় পশু নির্বাচন করা।’[2]<br />
<br />
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মুসলিমগণ দামী পশু কুরবানীর জন্য ক্রয় করতেন, মোটা-তাজা এবং উত্তম পশু বাছাই করতেন; যার দ্বারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর তা’যীম ঘোষণা করতেন। যা একমাত্র তাঁদের তাক্বওয়া, আল্লাহর প্রতি ভীতি ও ভালবাসা থেকে উদ্গত হত।[3]<br />
<br />
অবশ্য মুসলিমকে এই স্থানে খেয়াল রাখা উচিত যে, মোটা-তাজা পশু কুরবানী করার উদ্দেশ্য কেবল উত্তম গোশত খাওয়া এবং আপোসে প্রতিযোগিতা করা না হয়। বরং উদ্দেশ্য আল্লাহর নিদর্শন ও ধর্মীয় এক প্রতীকের তা’যীম এবং তার মাধ্যমে আল্লাহর সামীপ্যলাভ হয়।<br />
<br />
কালো রঙ অপেক্ষা ধূসর রঙের পশু কুরবানীর জন্য উত্তম। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘কালো রঙের দুটি কুরবানী অপেক্ষা ধূসর রঙের একটি কুরবানী আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয়।’’[4]<br />
<br />
এ পশু ক্রয়ের সময় ত্রুটিমুক্ত দেখা ও তার বয়সের খেয়াল রাখা উচিত। যেহেতু পশু যত নিখুঁত হবে তত আল্লাহর নিকট প্রিয় হবে, সওয়াবেও খুব বড় হবে এবং কুরবানীদাতার আন্তরিক তাক্বওয়ার পরিচায়ক হবে। কারণ, ‘‘আল্লাহর কাছে ওদের (কুরবানীর পশুর) গোশত এবং রক্ত পৌঁছে না, বরং তোমাদের তাক্বওয়া (পরহেযগারী) পৌঁছে থাকে। এভাবে তিনি এদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর; এ জন্য যে তিনি তোমাদেরকে পথপ্রদর্শন করেছেন। সুতরাং (হে নবী!) তুমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে সুসংবাদ দাও।’’ (সূরা হজ্জ ৩৭ আয়াত)<br />
<br />
কুরবানীদাতা কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর তাকে কথা দ্বারা (মুখে বলে) কুরবানীর জন্য নির্দিষ্ট করবে এবং কুরবানীর দিন তাকে কুরবানীর নিয়তে যবেহ করবে।<br />
<br />
যখন কোন পশু কুরবানীর বলে নির্ণীত হয়ে যাবে, তখন তার জন্য কতক আহকাম বিষয়ীভূত হবে। যেমনঃ-<br />
<br />
১। ঐ পশুর সবতক্ষ কুরবানীদাতার হাতছাড়া হবে। ফলে তা বিক্রয় করা, হেবা করা, উৎকৃষ্টতর বিনিময়ে ছাড়া পরিবর্তন করা বৈধ হবে না। যেহেতু যা আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে তার ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নয়। তবে যেহেতু ওর চেয়ে উৎকৃষ্টতর পশুর বিনিময়ে পরিবর্তন করাতে কুরবানীর মান অধিক বর্ধিত হয়, তাই তা বৈধ। আর ওর চেয়ে মন্দতর পশু দ্বারা পরিবর্তন অবৈধ। কারণ, তাতে কুরবানীর আংশিক পরিমাণ হাতছাড়া হয়।<br />
<br />
কুরবানীর পশু নির্দিষ্টকারী ব্যক্তি যদি মারা যায় তাহলেও তা বিক্রয় করা বৈধ নয়। বরং তার উত্তরাধিকারীগণ তা যবেহ করে ভক্ষণ করবে, দান করবে ও উপঢৌকন দিবে।<br />
<br />
২। যদি তার কোন ত্রুটি দেখা দেয়, তাহলে ঐ ত্রুটি বড় না হলে (যাতে কুরবানী মকরূহ হলেও সিদ্ধ হবে। যেমন, কান কাটা, শিং ভাঙ্গা ইত্যাদি) তাই কুরবানী করবে। কিন্তু ত্রুটি বড় হলে (যাতে কুরবানী সিদ্ধ হয় না, যেমন স্পষ্ট খঞ্জতা ইত্যাদি) যদি তা নিজ কর্মদোষে হয়, তাহলে তার পরিবর্তে ত্রুটিহীন পশু কুরবানী করা জরুরী হবে। আর ঐ ত্রুটিযুক্ত পশুটি তার অধিকারভুক্ত হবে। তবে ঐ ত্রুটি যদি কুরবানীদাতার কর্মদোষে বা অবহেলায় না হয়, তাহলে ওটাই কুরবানী করা তার জন্য সিদ্ধ হবে।<br />
<br />
কিন্তু নির্ণয়ের পূর্বে যদি কুরবানী তার উপর ওয়াজেব থাকে, যেমন কেউ কুরবানীর নযর মেনে থাকে এবং তারপর কোন ছাগল তার জন্য নির্ণীত করে এবং তারপর তার নিজ দোষে তা ত্রুটিযুক্ত না হয়ে অন্য কারণে হয়ে থাকে, তা হলেও ত্রুটিহীন পশু দ্বারা তার পরিবর্তন জরুরী হবে।<br />
<br />
৩। কুরবানীর পশু হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলে, যদি তা কুরবানী দাতার অবহেলার ফলে না হয়, তাহলে তার পক্ষে অন্য কুরবানী জরুরী নয়। কারণ, তা তার হাতে এক প্রকার আমানত, যা যত্ন সত্ত্বেও বিনষ্ট হলে তার যামানত নেই। তবে ভবিষ্যতে ঐ পশু যদি ফিরে পায়, তবে কুরবানীর সময় পার হয়ে গেলেও ঐ সময়েই তা যবেহ করবে। কিন্তু যদি কুরবানী দাতার অবহেলা ও অযত্নের কারণে রক্ষা না করার ফলে হারিয়ে বা চুরি হয়ে যায়, তাহলে তার পরিবর্তে অন্য একটি পশু কুরবানী করা জরুরী হবে।<br />
<br />
৪। কুরবানীর পশুর কোন অংশ (গোশত, চর্বি, চামড়া, দড়ি ইত্যাদি) বিক্রয় করা বৈধ হবে না। কারণ, তা আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত বস্ত্ত, তাই কোনও প্রকারে পুনরায় তা নিজের ব্যবহারে ফিরিয়ে আনা বৈধ নয়। তদনুরূপ ওর কোনও অংশ দ্বারা কসাইকে পারিশ্রমিক দেওয়া বৈধ নয়। যেহেতু সেটাও এক প্রকার বিনিময় যা ক্রয়-বিক্রয়ের মত[5]<br />
<br />
অবশ্য কসাই গরীব হলে দান সবরূপ অথবা গরীব না হলে হাদিয়া সবরূপ তাকে কুরবানীর গোশত ইত্যাদি দেওয়া দূষণীয় নয়। যেহেতু তখন তাকে অন্যান্য হকদারদের শামিল মনে করা হবে; বরং সেই অধিক হকদার হবে। কারণ সে ঐ কুরবানীতে কর্মযোগে শরীক হয়েছে এবং তার মন ওর প্রতি আশানিক্ষত হয়েছে। তবে উত্তম এই যে, তার মজুরী আগে মিটিয়ে দেবে এবং পরে কিছু দান বা হাদিয়া দেবে। যাতে কোন সন্দেহ ও গোলযোগই অবশিষ্ট না থাকে।[6]<br />
<br />
৫। পশু ক্রয় করার পর যদি তার বাচ্চা হয়, তাহলে মায়ের সাথে তাকেও কুরবানী করতে হবে।[7] এর পূর্বে ঐ পশুর দুধ খাওয়া যাবে; তবে শর্ত হল, যেন ঐ বাচ্চা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়[8]<br />
<br />
[1] (মুসলিম ১০১৫নং) [2] (তফসীর ইবনে কাষীর ৩/২২৯) [3] (ফাতহুল বারী ১০/৯) [4] (আহমাদ, হাকেম, প্রমুখ, সিলসিলাহ সহীহাহ ১৮৬১নং) [5] (বুখারী ১৬৩০, মুসলিম ১৩১৭নং) [6] (ফাতহুল বারী ৩/৫৫৬) [7] (তিঃ ১৫০৩নং) [8] (বাইহাকী ৯/২৮৮, আল-মুমতে ৭/৫১০)<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjyeDoVZ-qfXQZrCIJX0OG243LlbNzKFEoyiX6kikQ0h7roXDFtH7MZFZOBA8R4HDPBvdLVHEYAN4bp2_llNegAmNt8ZPBqGiWPRXDtF1JesJpRkciNMcXV6o40tS4q2v3Kcq4Vctrsy8E/s1600/%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%2581.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="কুরবানীর পশুর যেসকল ত্রুটি থাকলে কুরবানী কবুল হবেনা," border="0" data-original-height="413" data-original-width="743" height="177" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjyeDoVZ-qfXQZrCIJX0OG243LlbNzKFEoyiX6kikQ0h7roXDFtH7MZFZOBA8R4HDPBvdLVHEYAN4bp2_llNegAmNt8ZPBqGiWPRXDtF1JesJpRkciNMcXV6o40tS4q2v3Kcq4Vctrsy8E/s320/%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%2581.jpeg" title="কুরবানীর পশু বিষয়ক মাসায়েল," width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">ত্রুটিযুক্ত পশুর কুরবানী দেওয়া যাবে কি,</td></tr>
</tbody></table>
<br />
<div>
<br /></div>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-28075727936856378542019-08-11T08:09:00.001+06:002019-08-11T08:09:24.634+06:00কুরবানী দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে করনীয় আমলসমূহ<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
কুরবানী দেওযার ইচ্ছা থাকলে করনীয়ঃ</h3>
সুন্নাহতে এ কথা প্রমাণিত যে, যে ব্যক্তি কুরবানী দেওয়ার ইচ্ছা বা সংকল্প করেছে তার জন্য ওয়াজিব; যুলহাজ্জ মাস প্রবেশের সাথে সাথে কুরাবানীর পশু যবেহ না করা পর্যন্ত সে যেন তার দেহের কোন লোম বা চুল, নখ ও চর্মাদি না কাটে। এ বিষয়ে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘‘যখন তোমরা যুলহাজ্জ মাসের চাঁদ দেখবে এবং তোমাদের মধ্যে কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করবে, তখন সে যেন কুরবানী না করা পর্যন্ত তার চুল ও নখ (কাটা) হতে বিরত থাকে।’’ অন্য এক বর্ণনায় বলেন, ‘‘সে যেন তার (মরা বা ফাটা) চর্মাদির কিছুও স্পর্শ না করে।’’[1]<br />
<br />
বলিষ্ঠ মতানুসারে এখানে এ নির্দেশ ওয়াজিবের অর্থে এবং নিষেধ হারামের অর্থে ব্যবহার হয়েছে। কারণ, তা ব্যাপক আদেশ এবং অনির্দিষ্ট নিষেধ, যার কোন প্রত্যাহতকারীও নেই। কিন্তু যদি কেউ জেনে-শুনে ইচ্ছা করেই চুল-নখ কাটে, তবে তার জন্য জরুরী যে, সে যেন আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে। আর তার জন্য কোন কাফফারা নেই। সে সবাভাবিকভাবে কুরবানীই করবে। আবার প্রয়োজনে (যেমন নখ ফেটে বা ভেঙ্গে ঝুলতে থাকলে বা মাথায় জখমের উপর চুল থাকলে এবং ক্ষতির আশঙ্কা হলে) কেটে ফেলতে কোন দোষ নেই। কারণ, সে মুহরিম (যে হাজ্জ বা ওমরার জন্য ইহরাম বেঁধেছে তার) অপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যার জন্য অসুবিধার ক্ষেত্রে মাথা মুন্ডিত করাও বৈধ করা হয়েছে।<br />
<br />
এই নির্দেশের পশ্চাতে যুক্তি এই যে, কুরবানীদাতা কিছু আমলে মুহরিমের মতই। যেমন, কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভ করা ইত্যাদি। তাই কুরবানীদাতাও মুহরিমের পালনীয় কিঞ্চিৎ কর্তব্য পালন করতে আদিষ্ট হয়েছে।<br />
<br />
এমন কোন ব্যক্তি যার চাঁদ দেখার পর কুরবানী করার ইচ্ছা ছিল না, সে চুল বা নখ কেটে থাকলে এবং তারপর কুরবানী করার ইচ্ছা হলে তারপর থেকেই আর তা কাটবে না।<br />
<br />
কুরবানী করার জন্য যদি কেউ কাউকে ভার দেয় অথবা অসীয়ত করে, তবে সেও নখ-চুল কাটবে না। অবশ্য ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা অসী এই নিষেধের শামিল হবে না। অর্থাৎ তাদের জন্য নখ-চুল কাটা দূষণীয় নয়।<br />
<br />
অনুরূপভাবে পরিবারের অভিভাবক কুরবানী করলে এই নিষেধাজ্ঞা কেবল তার পক্ষে হবে; বাকী অন্যান্য স্ত্রী-পুত্র বা আত্মীয়দেরকে শামিল হবে না। তাদের জন্য নির্দিষ্ট কুরবানী না থাকলে তারা নিজেদের চুল-নখ কাটতে পারে। যেহেতু আল্লাহর রসূল (সা.) নিজ বংশধরের তরফ থেকে কুরবানী করতেন অথচ তিনি তাদেরকে নখচুল কাটতে নিষেধ করেছেন বলে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।<br />
<br />
যে ব্যক্তি কুরবানী করার ইচ্ছা করে পুনরায় হাজ্জ করার নিয়ত করে (অর্থাৎ হাজ্জও করে এবং পৃথকভাবে কুরবানীও করে) তবে ইহরাম বাঁধার পূর্বে (যুলহাজ্জের চাঁদ উঠে গেলে) চুল-নখাদি কাটা উচিত নয়। যেহেতু তা প্রয়োজনে সুন্নাত।<br />
<br />
অবশ্য তামাত্তু হাজ্জকারী (হাজ্জের ওয়াজিব কুরবানী ছাড়া পৃথক কুরবানী দেওয়ার নিয়ত থাকলেও) উমরাহ শেষ করে চুল ছোট করবে। কারণ তা উমরাহর এক ওয়াজিব কর্ম। অনুরূপভাবে কুরবানীর দিনে পাথর মারার পর কুরবানী করার আগে মাথা নেড়া করতে পারে।<br />
<br />
প্রকাশ যে, ‘যারা কুরবানী দিতে পারে না তারা কুরবানীর দিনে নখ-চুল ইত্যাদি কাটলে তাদের কুরবানী করার সওয়াব লাভ হয়’ এমন কথা এক হাদীসে থাকলেও তা সহীহ নয়।[2]<br />
<br />
[1] (মুসলিম) [2] (মিশকাত ১৪৭৯নং, যইফ আবূ দাঊদ ৫৯৫, যইফ নাসাঈ ২৯৪, যয়ীফুল জামে’ ১২৬৫নং)<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEglMpdGhoGfSMiOvPghjKvtdP7k5xe5FcnrkzY3heT7rhF1oWX9rNdQyFI3TlUuNoZdREsEJaRf_Ep2DuX3YquYHvc2lKo0zZR64C5_7zVWm6MtC6PHMVZ4yqI-0AVN1zYGUThmiq4ZRLk/s1600/%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%259F%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B2.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="কুরবানী দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে করনীয়," border="0" data-original-height="158" data-original-width="300" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEglMpdGhoGfSMiOvPghjKvtdP7k5xe5FcnrkzY3heT7rhF1oWX9rNdQyFI3TlUuNoZdREsEJaRf_Ep2DuX3YquYHvc2lKo0zZR64C5_7zVWm6MtC6PHMVZ4yqI-0AVN1zYGUThmiq4ZRLk/s1600/%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%259F%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B2.jpeg" title="কুরবানী" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">কুরবানীর সহীহ মাসায়েল,</td></tr>
</tbody></table>
<br />
<div>
<br /></div>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-14968582021700612312019-03-04T09:21:00.000+06:002019-05-03T12:16:57.339+06:00বিবাহের পর নবদম্পতির জন্য দোয়া, নতুন বউ এর জন্য পঠিত দোয়াসমূহ,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
বিবাহের পর নবদম্পতির জন্য দোয়া:</h3>
<br />
بَارَكَ اللهُ لَكُمَا وَبَارَكَ عَلَيْكُمَا وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِيْ خَيْرٍ-<br />
<br />
বা-রাকাল্লা-হু লাকুমা ওয়া বা-রাকা ‘আলাইকুমা ওয়া জামা‘আ বায়নাকুমা ফী খায়রিন। (এই বিবাহে আল্লাহ তোমাদের জন্য বরকত দান করুন ও তোমাদের উপর বরকত দান করুন এবং তোমাদের উভয়কে কল্যাণের সাথে একত্রিত করুন)। [120] অথবা বলবে, اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ আল্লা-হুম্মা বা-রিক লাহুম (হে আল্লাহ! তুমি তাদেরকে বরকত দাও)। বিয়ের খবর শুনে বরকে বলবে, بَارَكَ اللهُ لَكَ বা-রাকাল্লা-হু লাকা (আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন!)। [121]<br />
<br />
উল্লেখ্য যে, ব্যক্তিগত ভাবে প্রত্যেকে নবদম্পতির উদ্দেশ্যে উক্ত দো‘আ পড়বেন। এ সময় দু’হাত তুলে সম্মিলিত ভাবে মুনাজাত করার প্রথাটি ভিত্তিহীন এবং এসময় বরের দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করার প্রথাটিও প্রমাণহীন।<br />
<br />
বিবাহের পর স্ত্রীর জন্য স্বামীর দোয়া :<br />
<br />
اَللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ-<br />
<br />
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খায়রাহা ওয়া খায়রা মা জাবালতাহা ‘আলাইহি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রিহা ওয়া শার্রি মা জাবালতাহা ‘আলাইহি।<br />
<br />
অনুবাদ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তার মঙ্গল চাই এবং তার সেই কল্যাণময় স্বভাব প্রার্থনা করি, যার উপর তুমি তাকে সৃষ্টি করেছ। আর আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই তার অনিষ্ট হ’তে এবং সেই মন্দ স্বভাবের অনিষ্ট হ’তে, যা দিয়ে তুমি তাকে সৃষ্টি করেছ’। এই সময় স্ত্রীর কপালের চুল ধরে স্বামী উক্ত বরকতের দো‘আটি করবে। [122] এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়াশীল হয়ে দাম্পত্য জীবন যাপন করার ইঙ্গিত রয়েছে।<br />
<br />
[120] . ইবনু মাজাহ হা/১৯০৫; আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪৪৫, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘বিভিন্ন সময়ের দো‘আ সমূহ’ অনুচ্ছেদ-৭ । [121] . ইবনু মাজাহ হা/১৯০৬-০৭। [122] . আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৪৬, ‘দোয়া সমূহ’ অধ্যায়-৯, অনুচ্ছেদ-৭; মিরক্বাত ৫/২১৬।<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgR0vlCwidfQXJKZ5GJ_D9qEDFIEwB_5etXm-GvqoCx7Mpn8eubigYPZjU_swKq00CW3D3r5rJWZTHSaOeqZNnfOhXncidzaZrDhDekOBBPVfU2XLor_YgJkvnv5wGQ08Pgl5T_67QLrpw/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE.png" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="নতুন বউ এর জন্য পঠিত দোয়া," border="0" data-original-height="200" data-original-width="300" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgR0vlCwidfQXJKZ5GJ_D9qEDFIEwB_5etXm-GvqoCx7Mpn8eubigYPZjU_swKq00CW3D3r5rJWZTHSaOeqZNnfOhXncidzaZrDhDekOBBPVfU2XLor_YgJkvnv5wGQ08Pgl5T_67QLrpw/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF+%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258B%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE.png" title="" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">নবদম্পতির জন্য দোয়া,</td></tr>
</tbody></table>
<br />
<br />
আসসালামু আলাইকুম, আমরা আমাদের অবস্থান সম্পর্কে অবগত নই ৷ আমরা জানিনা আমরা কোন অবস্থানে আছি, আমরা সামনে এগোতে পারছি, না স্থির আছি, না পিছিয়ে যাচ্ছি ৷ আমরা ভালো কিছু করছি, না ভুল কিছু করছি ৷ আপনাদের মন্তব্যই আমাদেরকে সামনে এগোতে এবং আমাদের লক্ষার্জনে সাহায্য করবে ৷ আপনাদের মন্তব্যই আমাদেরকে দ্বীনের প্রচারে আরো আগ্রহী করে তুলবে ইনশাআল্লাহ ৷</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-79839101780272270062018-12-27T21:04:00.000+06:002018-12-27T21:04:17.268+06:00যে ৬টি জিনিসের জিম্মাদার হলে রাসূল সাঃ জান্নাতের জিম্মাদার হবে<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<br />
উবাদাহ বিন স্বামেত (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা তোমাদের পক্ষ থেকে আমার জন্য ছয়টি বিষয়ের জামিন হও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতর জামিন হয়ে যাব;<br />
১৷ কথা বললে সত্য বল,<br />
২৷ অঙ্গীকার করলে তা পালন কর,<br />
৩৷ তোমাদের নিকটে কোন আমানত রাখা হলে তা আদায় কর,<br />
৪৷ তোমাদের যৌনাঙ্গের হিফাযত কর,<br />
৫৷ তোমাদের চক্ষুকে (অবৈধ কিছু দেখা হতে) অবনত রাখ, ৬৷ আর তোমাদের হাতকে (অন্যায় ও অত্যাচার করা হতে) সংযত রাখ।’’ (আহমাদ ২২৭৫৭, ত্বাবারানী, ইবনে খুযাইমাহ, ইবনে হিব্বান, হাকেম, সিলসিলাহ সহীহাহ ১৪৭০)<br />
<br />
<div dir="ltr">
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল যে, ‘কোন্ আমল মানুষকে বেশি জান্নাতে নিয়ে যাবে?’ তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহভীতি ও সচ্চরিত্র।’’ আর তাঁকে (এটাও) জিজ্ঞাসা করা হল যে, ‘কোন্ আমল মানুষকে বেশি জাহান্নামে নিয়ে যাবে?’ তিনি বললেন, ‘‘মুখ ও যৌনাঙ্গ (অর্থাৎ উভয় দ্বারা সংঘটিত পাপ)।’’ (তিরমিযী হাসান সহীহ সূত্রে) [1]<br />
[1] তিরমিযী <a href="tel:2004">২০০৪</a>, ইবনু মাজাহ <a href="tel:4246">৪২৪৬</a>, আহমাদ <a href="tel:7847">৭৮৪৭</a>, <a href="tel:8852">৮৮৫২</a>, <a href="tel:9403">৯৪০৩</a></div>
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjcH_77WDYjBil6Up-0H0FJLZdqykNPrCfXVsCDYdFU_HSQsK9GoAOAsgNJjFrdDR6_THUA4DochzReYrfQUCLZyi7KEHvPTU0iTz1ysq-_O4OkFU2UBqgr9edrRBVXbxTHN9Uz23sHyUg/s1600/%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.png" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="জান্নাতের যিম্মাদার," border="0" data-original-height="200" data-original-width="300" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjcH_77WDYjBil6Up-0H0FJLZdqykNPrCfXVsCDYdFU_HSQsK9GoAOAsgNJjFrdDR6_THUA4DochzReYrfQUCLZyi7KEHvPTU0iTz1ysq-_O4OkFU2UBqgr9edrRBVXbxTHN9Uz23sHyUg/s1600/%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0.png" title="" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">জান্নাতের যিম্মাদার,</td></tr>
</tbody></table>
<br />
আসসালামু আলাইকুম, আমরা আমাদের অবস্থান সম্পর্কে অবগত নই ৷ আমরা জানিনা আমরা কোন অবস্থানে আছি, আমরা সামনে এগোতে পারছি, না স্থির আছি, না পিছিয়ে যাচ্ছি ৷ আমরা ভালো কিছু করছি, না ভুল কিছু করছি ৷ আপনাদের মন্তব্যই আমাদেরকে সামনে এগোতে এবং আমাদের লক্ষার্জনে সাহায্য করবে ৷ আপনাদের মন্তব্যই আমাদেরকে দ্বীনের প্রচারে আরো আগ্রহী করে তুলবে ইনশাআল্লাহ ৷</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-45843998758574831202018-12-27T09:12:00.002+06:002019-05-15T01:49:48.806+06:00আযান দেওয়ার ফযিলতসমূহ কি কি ? <div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
আযানের ফযিলতসমূহঃ<br />
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “লোকেরা যদি জানত যে, <a href="https://www.islamkjanun.com/2017/01/blog-post_279.html" target="_blank">আযান</a> দেওয়া ও <a href="https://www.islamkjanun.com/2017/01/blog-post_379.html" target="_blank">নামাজের</a> প্রথম সারিতে দাঁড়াবার কি মাহাত্ম্য আছে, অতঃপর (তাতে অংশগ্রহণের জন্য) যদি লটারি ছাড়া অন্য কোন উপায় না পেত, তবে তারা অবশ্যই সে ক্ষেত্রে লটারির সাহায্য নিত।” (বুখারী, মুসলিম) [1]<br />
[1] সহীহুল বুখারী ৬১৫, ৬৫৪, ৭২১, ২৪৭২, ২৬৮৯, ২৮২৯, ৫৭৩৩, মুসলিম ৪৩৭, ৪৩৯, ১৯১৪, তিরমিযী ২২৫, ১০৬৩, ১৯৫৮, নাসায়ী ৫৪০, ৬৭১, আহমাদ ৫২৪৫, ইবনু মাজাহ ৭৯৭,<br />
<br />
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি বারো বছর আযান দেয় তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। আর প্রতি দিনের আযানের বিনিময়ে তার জন্য ষাট নেকী এবং প্রতি ইকামতের জন্য তিরিশ নেকী লেখা হয়।<br />
মিশকাত ৬৭৮, সহীহাহ ৪২, সহীহ তারগীব ২৪২।<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে স্বা‘স্বা‘আহ হতে বর্ণিত, একদা আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, ‘আমি তোমাকে দেখছি যে, তুমি ছাগল ও মরুভূমি ভালোবাসো। সুতরাং তুমি যখন তোমার ছাগলে বা মরুভূমিতে থাকবে আর নামাযের জন্য আযান দেবে, তখন উচ্চ স্বরে আযান দিয়ো। কারণ মুয়াজ্জিনের আযান ধ্বনি যতদূর পর্যন্ত মানব-দানব ও অন্যান্য বস্তু শুনতে পাবে, কিয়ামতের দিন তারা তার জন্য সাক্ষ্য দেবে।’ আবূ সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি এটি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট শুনেছি।’ (বুখারী) [1]<br />
[1] সহীহুল বুখারী ৬০৮, ১২২২, ১২৩১, ১২৩২, ৩২৮৫, মুসলিম ৩৮৯, তিরমিযী ৩৯৭, নাসায়ী ৬৭০, ১২৫৩,<br />
<br />
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিজ মুখে বলতে শুনেছি: মুয়ায্যিনের আযান ধ্বনি যত দূর পর্যন্ত পৌঁছবে, তত দূর তাকে ক্ষমা করা হবে এবং জীবিত ও নির্জীব সকলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। সালাতে উপস্থিত লোকেদের পঁচিশ নেকী লেখা হয় এবং তার দু সালাতের মধ্যবর্তী কালের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।<br />
নাসায়ী ৬৪৫, আবূ দাঊদ ৫১৫, আহমাদ ৭৫৫৬, ৯০৭৩, ৯২৫৭। তাহক্বীক্ব আলবানী: হাসান সহীহ<br />
<br />
#আযানের_জবাবঃ<br />
<br />
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমরা আযান ধ্বনি শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুয়াজ্জিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলো” (বুখারী, মুসলিম) [1]<br />
<br />
[1] সহীহুল বুখারী ৬১৪, ৪৭১৯, তিরমিযী ২১১, নাসায়ী ৬৮০, আবূ দাউদ ৫২৯<br />
<br />
উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুয়ায্যিন যখন ‘‘আল্লা-হু আকবার’’ বলে তখন তোমাদের কেউ যদি (উত্তরে) অন্তর থেকে বলে, ‘‘আল্লা-হু আকবার’’ ‘‘আল্লা-হু আকবার’’, এরপর মুয়ায্যিন যখন বলেন, ‘‘আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ,’’ সেও বলে, ‘‘আশ্হাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’’। অতঃপর মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার্ রসূলুল্ল-হ’’, সেও বলে ‘‘আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ’’, তারপর মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘হাইয়্যা ‘আলাস্ সলা-হ্’’, সে তখন বলে, ‘‘<a href="https://www.islamkjanun.com/2017/03/blog-post_94.html" target="_blank">লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা</a> ইল্লা- বিল্লা-হ’’; পরে মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘আল্লা-হু আকবার ‘আল্লা-হু আকবার’’, সেও বলে, ‘‘আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার’’ এরপর মুয়ায্যিন যখন বলে, ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ,’’ সেও বলে ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’, সে <a href="https://www.islamkjanun.com/2018/12/Jannat-er-bistarito-bornona.html" target="_blank">জান্নাতে</a> প্রবেশ করবে। (মুসলিম)[1]<br />
1]<br />
[1] সহীহ : মুসলিম ৩৮৫, আবূ দাঊদ ৫২৭, সহীহ আল জামি‘ ৭১৪।<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন (আযানের উত্তরে) মুয়াজ্জিন যা কিছু বলবে, তোমরাও ঠিক তাই বলবে। তারপর আযান শেষে আমার উপর <a href="https://www.islamkjanun.com/2017/03/blog-post_13.html" target="_blank">দরুদ পাঠ</a> করবে। কেননা, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে, তার বিনিময়ে তার প্রতি আল্লাহ দশটি রহমত নাযিল করবেন। অতঃপর তোমরা আল্লাহর নিকট আমার জন্য ‘অসীলা’ প্রার্থনা করবে। কারণ, ‘অসীলা’ হচ্ছে জান্নাতের এমন একটি স্থান, যা সমস্ত বান্দার মধ্যে কেবল আল্লাহর একটি বান্দা (তার উপযুক্ত) হবে। আর আশা করি, আমিই সেই বান্দা হব। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার জন্য অসীলা প্রার্থনা করবে, সে (আমার) সুপারিশ প্রাপ্ত হবে।” (মুসলিম) [1]<br />
<br />
[1] সহীহুল বুখারী ৬১১, মুসলিম ৩৮৩, তিরমিযী ২০৮, নাসায়ী ৬৭৩, আবূ দাউদ ৫২২, ইবনু মাজাহ ৭২০<br />
<br />
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি মুয়াজ্জিনের আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার-এর জওয়াবে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে এবং আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর জওয়াবে আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে এবং আশহাদু আন্না মুাহম্মাদার রাসূলুল্লাহ এর জওয়াবে আশহাদু আন্না মুাহম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলে। অতঃপর হাইয়্যা ‘আলাস্-সলাহ-এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলে। তারপর হাইয়্যা ‘আলাল-ফালাহ-এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলে। তারপর যদি আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার জওয়াবে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর জওয়াবে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।[1]<br />
সহীহ : মুসলিম<br />
ইবনু খুযাইমাহ (৪১৭), ‘আসিম ইবনু ‘আমর সূত্রে।<br />
<br />
#<a href="https://www.islamkjanun.com/2017/01/blog-post_39.html" target="_blank">আযানের দোয়াঃ</a><br />
<br />
জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আযান শুনে (আযানের শেষে) এই দো‘আ বলবে,<br />
<br />
‘আল্লা-হুম্মা রাব্বা হা-যিহিদ দা‘অতিত্ তা-ম্মাহ, অসস্বালা-তিল ক্বা-য়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল অসীলাতা অলফাযীলাহ, অবআষহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী অ‘আত্তাহ।’<br />
<br />
অর্থাৎ হে আল্লাহ এই পূর্ণাঙ্গ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠা লাভকারী নামাযের প্রভু! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তুমি অসীলা (জান্নাতের এক উচ্চ স্থান) ও মর্যাদা দান কর এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ।<br />
<br />
সে ব্যক্তির জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ অনিবার্য হয়ে যাবে।” (বুখারী) [1]<br />
[1] মুসলিম ৩৮৬, তিরমিযী ২১০, নাসায়ী ৬৭৯, আবূ দাউদ ৫২৫, ইবনু মাজাহ ৭২১, আহমাদ ১৫৬৮<br />
<br />
সা‘দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “আযান শুনে যে ব্যক্তি এই দো‘আ পড়বে,<br />
<br />
‘আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহদাহু লা শারীকা লাহ, অ আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু অরাসূলুহ, রাদ্বীতু বিল্লা-হি রাববাঁউ অ বিমুহাম্মাদির রাসূলাঁউ অ বিলইসলা-মি দ্বীনা।’<br />
<br />
অর্থাৎ আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দাস ও প্রেরিত রাসূল। আল্লাহকে প্রতিপালক বলে মেনে নিয়ে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবীরূপে স্বীকার করে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে আমি সম্মত ও তুষ্ট হয়েছি।<br />
<br />
সে ব্যক্তির (ছোট ছোট) গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (মুসলিম) [1]<br />
<br />
[1] সহীহুল বুখারী ৫২৮, মুসলিম ৬৬৭, তিরমিযী ২৮৬৮, নাসায়ী ৪৬২, আহমাদ ৮৭০৫, ৯২২১, ৯৩৯৯, দারেমী ১১৮৩<br />
<br />
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আযান ও ইকামতের মধ্য সময়ে কৃত প্রার্থনা রদ করা হয় না।” (অর্থাৎ এ সময়ের দো‘আ কবুল হয়)। (আবূ দাউদ, তিরমিযী, হাসান) [1]<br />
[1] মুসলিম ৬৬৮, আহমাদ ১৩৮৬৩, ১৩৯৯৯, ১৪৪৩৯, দারেমী ১১৮২<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgw7eGJR5OksE2sFDcZdXm2KW7ilUtW5Wnt8zV4vBg22OM7QqEC6-1vagJKAAbN6z_ZQqJxGPDyIQpYi3N2yu-gN31V7UcTuY-YH9nSOk1fntp2pkBoLXioBqHtdX5qDtci0x5Byg_CK2k/s1600/%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AB%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25A4.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="আযানের ফযিলত," border="0" data-original-height="414" data-original-width="552" height="240" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgw7eGJR5OksE2sFDcZdXm2KW7ilUtW5Wnt8zV4vBg22OM7QqEC6-1vagJKAAbN6z_ZQqJxGPDyIQpYi3N2yu-gN31V7UcTuY-YH9nSOk1fntp2pkBoLXioBqHtdX5qDtci0x5Byg_CK2k/s320/%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AB%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25A4.jpg" title="আযানের গুরুত্ব ফযিলত," width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">আযানের ফযিলত,</td></tr>
</tbody></table>
<br />
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-51305400834694695112018-12-17T18:12:00.001+06:002020-02-06T22:33:22.177+06:00তাশাহুদে বসে আঙ্গুল কিভাবে রাখতে হবে?<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
সালাতে তাশাহ্হুদে বসে শাহাদাত আঙ্গুল উঠানো বিষয়।</h3>
<div dir="ltr">
<br /></div>
<div dir="ltr">
আঙ্গুল দ্বারা একবার ইশারা করার কোন দলীল নেই। এর পক্ষে কোন জাল হাদীছও নেই। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, প্রচলিত আছে যে, ‘লা ইলা-হা’ বলার সময় আঙ্গুল উঠাতে হবে। কেউ বলেন, ‘ইল্লাল্লাহ’ বলার সময় উঠাতে হবে। এগুলো সবই ব্যক্তি মতামত। হাদীছে এগুলোর কোন দলীল নেই। ছহীহ সনদে নেই, যঈফ সনদে নেই, এমনকি জাল সনদেও নেই। অনুরূপভাবে আঙ্গুল উঠিয়ে রেখে দেয়ারও কোন ভিত্তি নেই। বরং ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সালাম পর্যন্ত আঙ্গুল নড়াতে থাকতে হবে।[1] উল্লেখ্য যে, অনেকে আঙ্গুল উঠিয়ে রাখে কিন্তু ইশারা করে না। এটাও ঠিক নয়। কারণ উক্ত মর্মে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা যঈফ।</div>
<div dir="ltr">
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ ذَكَرَ أَنَّ النَّبِىَّ كَانَ يُشِيْرُ بِأُصْبُعِهِ إِذَا دَعَا وَلاَ يُحَرِّكُهَا.</div>
<div dir="ltr">
আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন দু‘আ করতেন তখন আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। কিন্তু নাড়াতেন না।[2]</div>
<div dir="ltr">
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ।[3] ‘আঙ্গুল নাড়াতেন না’ অংশটুকু ছহীহ হাদীছে নেই। বরং আঙ্গুল নাড়ানোর পক্ষেই ছহীহ হাদীছ রয়েছে। যেমন- ثُمَّ رَفَعَ أُصْبُعَهُ فَرَأَيْتُهُ يُحَرِّكُهَا يَدْعُو بِهَا ‘অতঃপর তিনি তাঁর আঙ্গুল উঠাতেন। রাবী ওয়ায়েল বিন হুজর বলেন, আমি দেখতাম তিনি আঙ্গুল নাড়িয়ে দু‘আ করতেন’।[4]</div>
<div dir="ltr">
অতএব তাশাহ্হুদ পড়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কিংবা শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানো পর্যন্ত ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা সর্বদা ইশারা করবে। এ সময় দৃষ্টি থাকবে আঙ্গুলের মাথায়।[5] দুই তাশাহ্হুদেই ইশারা করবে।[6]</div>
<div dir="ltr">
عَنِ ابْنِ أَبْزَى أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ كَانَ يُشِيْرُ بِأُصْبُعِهِ السَّبَّاحَةِ فِى الصَّلاَةِ.</div>
<div dir="ltr">
ইবনু আবযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) ছালাতে তার শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন।[7]</div>
<div dir="ltr">
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ إِذَا قَعَدَ يَدْعُو وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَيَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ السَّبَّابَةِ وَوَضَعَ إِبْهَامَهُ عَلَى أُصْبُعِهِ الْوُسْطَى وَيُلْقِمُ كَفَّهُ الْيُسْرَى رُكْبَتَهُ.</div>
<div dir="ltr">
আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন তাশাহ্হুদে বসতেন, তখন দু‘আ করতেন। তিনি ডান হাত ডান উরুর উপর এবং বাম হাত বাম উরুর উপর রাখতেন। আর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন এবং বৃদ্ধা আঙ্গুল মধ্যমা আঙ্গুলের উপর রাখতেন। আর বাম হাতের পাতা দ্বারা বাম হাঁটু চেপে ধরতেন।[8] উল্লেখ্য যে, অন্য হাদীছে এসেছে, তিপ্পান্নের ন্যায় ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ করে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবে।[9]</div>
<div dir="ltr">
[1]. তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/৯০৬-এর টীকা দ্রঃ, ১/২৮৫ পৃঃ- والظاهر من الحديث أن الاشارة والرفع عقب الجلوس وما يقال إن الرفع إنما هو عند قوله لا إله وفي المذهب الآخر عند قوله إلا الله فكله رأي لا دليل عليه من السنة، وقول ابن حجو الفقيه كما نقله في المرقاة ويسن... أن يخصص الرفع بكونه مع إلا الله لما في رواية لمسلم. فوهم محض، فإنه لاأصل لذلك لا في مسلم ولا في غيره من كتب السنة لا باسناده صحيح ولاضعيف بل ولا موضوع. ومثله وضع الأصبع بعد الرفع لاأصل له بل ظاهر الحديث الآتى (৯০৭) وغيره استمرار تحريكها إلى السلام.। [2]. আবুদাঊদ হা/৯৮৯, ১/১৪২ পৃঃ; নাসাঈ, আল-কুবরা ১/৩৭২; বায়হাক্বী ২/১৩২; মিশকাত হা/৯১২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮১৫, ২/৩০৬ পৃঃ। [3]. যঈফ আবুদাঊদ হা/৯৮৯; তামামুল মিন্না, পৃঃ ২১৮। [4]. নাসাঈ হা/৮৮৯, ১/১০৩ পৃঃ ও ১২৬৮, ১/১৪২ পৃঃ সনদ ছহীহ। [5]. নাসাঈ হা/১২৭৫, ১/১৪২ পৃঃ, হা/১১৬০, ১/১৩০ পৃঃ। [6]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/২৯০৩; সনদ ছহীহ, ছিফাতু ছালাতিন নবী, পৃঃ ১৫৯। [7]. আহমাদ হা/১৫৪০৫; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩১৮১। [8]. ছহীহ মুসলিম হা/১৩৩৬, ১৩৩৮, ১/২১৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১৮৪); মিশকাত হা/৯০৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮৪৭, ২/৩০৪ পৃঃ। [9]. ছহীহ মুসলিম হা/১৩৩৮, ১/২১৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১৮৬); মিশকাত হা/৯০৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮৪৬, ২/৩০৩ পৃঃ। </div>
<div dir="ltr">
<br /></div>
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjCoIKxZGXhBKne1HdrO5YcxLDwyIlsa1CG0-3G0uJI0ej6sXj4ajToq8UVuZHZ8bJU19l8jNvAMnkqkmXsRdT5QSTJ16uf5dGSumvMxjO2cHqe6lt6-MSK1PUreR5JEbbtCGTYbjQc2uw/s1600/%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%2599%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B2+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A1%25E0%25A6%25BC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258B.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="তাশাহুদে বসে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা," border="0" data-original-height="326" data-original-width="420" height="248" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjCoIKxZGXhBKne1HdrO5YcxLDwyIlsa1CG0-3G0uJI0ej6sXj4ajToq8UVuZHZ8bJU19l8jNvAMnkqkmXsRdT5QSTJ16uf5dGSumvMxjO2cHqe6lt6-MSK1PUreR5JEbbtCGTYbjQc2uw/s320/%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%2599%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B2+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A1%25E0%25A6%25BC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258B.jpg" title="" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">তাশাহুদে আঙ্গুল কিভাবে রাখতে হবে,</td></tr>
</tbody></table>
<div dir="ltr">
<br /></div>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Unknownnoreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-89417616273058644412018-12-15T21:05:00.001+06:002018-12-15T21:05:20.216+06:00জাহান্নামের ভয়াবহ আযাব এবং জাহান্নাম সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ননা,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="height: 0px; text-align: left;">
জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তির বিস্তারিত বর্ননাঃ</h3>
<div>
<br /></div>
<div>
<div>
মরনের পর তিনটি ভয়াবহ জায়গা রয়েছে। তার তৃতীয় জায়গা হচ্ছে জাহান্নাম। মানুষের উচিত জাহান্নাম হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাওয়া।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنَ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا اسْتَجَارَ عَبْدٌ مِنَ النَّارِ سَبْعَ مَرَّاتٍ فِىْ يَوْمِ اِلَّا قَالَتِ النَّارُ يَارَبِّ اِنَّ عَبْدَكَ فُلَانًا قَدْ اسْتَجَارَكَ مِنِّى فَأَجِرْهُ وَلَايَسْأَلُ اللهَ عَبْدٌ الْجَنَّةَ فِىْ يَوْمٍ سَبْعَ مَرَّاتٍ اِلَّا قَالَتِ الْجَنَّةُ يَارَبِّ اِنَّ عَبْدَكَ فُلَانًا سَأَلَنِىْ فَاَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, কোন মানুষ সাতবার জাহান্নাম হ’তে পরিত্রাণ চাইলে জাহান্নাম বলে, হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আপনার ওমক দাস আমার থেকে আপনার নিকট পরিত্রাণ চেয়েছে। আপনি তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন। আর কোন বান্দা আল্লাহর নিকট সাতবার জান্নাত চাইলে, জান্নাত বলে, হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আপনার ওমুক বান্দা আমাকে চেয়েছে। আপনি দয়া করে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/২৫০৬)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَنَسٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَأَلَ اللهَ الْجَنَّةَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ قَالَتِ الْجَنَّةُ اللهُمَّ اَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ. وَمَنِ اسْتَجَارَ مِنَ النَّارِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ قَالَتِ النَّارُ اللهُمَّ اجِرْهُ مِنَ النَّارِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট তিনবার জান্নাত চায়, তখন জান্নাত বলে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। আর যে ব্যক্তি তিনবার জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ চায়, তখন জাহান্নাম বলে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ দাও (ইবনে মাজাহ হা/৪৩৪০, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছদ্বয় দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, প্রত্যেকের উচিত দিনে তিনবার অথবা সাতবার করে জান্নাত চাওয়া এবং জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ চাওয়া। জান্নাত চাওয়ার শব্দগুলি এরূপ হ’তে পারে اللهُمَّ اِنِّى أسْئَلُكَ جَنَّةَ الْفِرْدَوْسِ ‘হে আল্লাহ! আমাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান কর’। আর জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ চাওয়ার শব্দগুলি এরূপ হ’তে পারে اللهُمَّ أجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও’</div>
<div>
<br /></div>
<div>
এ মর্মে মহান আল্লাহ বলেন, هَذِهِ جَهَنَّمُ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ اصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ ‘এই সেই জাহান্নাম, যার ব্যাপারে তোমাদেরকে সাবধান ও সতর্ক করা হচ্ছিল। তোমরা দুনিয়াতে যে কুফরী করতেছিলে, তার প্রতিফল হিসাবে এখন এ জাহান্নমে প্রবেশ কর’ (ইয়াসীন ৬৪)। অত্র আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে দেয়ার সময় পৃথিবীর কথা স্মরণ করিয়ে অপমান করে জাহান্নামে দেয়া হবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
اَذَلِكَ خَيْرٌ نُزُلًا اَمْ شَجَرَةٌ الزَّقُّوْمِ اِنَّا جَعَلْنَاهَا فِتْنَةَ للِّظَّالِمِيْنَ اِنَّهَا شَجَرَةٌ تَخْرُجُ فِىْ اَصْلِ الْجَحِيْمِ طَلْعُهَا كَاَنَّهُ رُؤُسٌ الشَّيَاطِيْنِ فَاِنَّهُمْ لَاكِلُوْنَ مِنْهَا فَمَا لِئُوْنَ مِنْهَا الْبُطُوْنَ ثُمَّ اِنَّ لَهُمْ عَلَيْهَا لَشَوْبًا مِنْ حَمِيْمٍ ثُمَّ اِنَّ مَرْجِعَهُمْ لَااِلَى الْجَحِيْمِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘বল, জান্নাতের এ বড় সফলতা উত্তম, না এ যাক্কুম গাছ? আমি এ যাক্কুম গাছটি অত্যাচারীদের জন্য বিপদজনক করেছি। এটা এমন একটা গাছ যা জাহান্নামের তলদেশ হ’তে বের হয়। এর ছড়াগুলি যেন শয়তানের মাথা। জাহান্নামীরা তা খাবে এবং তা দ্বারা পেট পূর্ণ করবে। তারপর পান করার জন্য তাদেরকে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি। তারপর তারা সে জাহান্নামের আগুনের দিকেই ফিরে যাবে’ (ছাফফাত ৬৩-৬৯)। যাক্কুম এক প্রকার গাছ। এ গাছ আরব দেশের তেহামা অঞ্চলে হয়। তার স্বাদ তিক্ত ও কটু আর গন্ধ অসহ্যকর। ভাঙ্গলে দুধের মত রস বের হয়। শরীরে লাগলে ফোস্কা পড়ে যায়।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
اِنَّ شَجَرَةَ الزَّقُّوْمِ طَعَامُ الْاَثِيْمِ كَالْمُهْلِىْ يَغْلِىْ فِى الْبُطُوْنِ كَغَلْىِ الْحَمِيْمِ خُذُوْهُ فَاعْتِلُوْهُ اِلَى سَوَاءِ الْجَحِيْمِ ثُمَّ صُبُّوْا فَوْقَ رَأْسِهِ مِنْ عَذَابِ الْحَمِيْمِ ذُقْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘যাক্কুম গাছ হবে পাপীদের খাদ্য। তেলের তলানীর মত। এ খাদ্য পেটের মধ্যে এমনভাবে উথলে উঠবে, যেমন টগবগ করে ফুটন্ত পানি। (ফেরেশতাদের বলা হবে) তাকে ধর এবং টেনে হেচড়ে নিয়ে যাও জাহান্নামের মাঝখানে। তারপর ঢেলে দাও তার মাথার উপর টগবগ করা ফুটন্ত পানি আর বলা হবে এখন গ্রহণ কর এর স্বাদ’ (দুখান ৪৫-৪৭)। وَسُقُوْا مَاءً حَمِيْمًا فَقَطّعَ اَمْعَائَهُمْ- ‘তাদেরকে এমন উত্তপ্ত পানি পান করানো হবে যা তাদের নাড়ী-ভূঁড়ি পর্যন্ত ছিন্ন ভিন্ন করে দিবে’ (মুহাম্মাদ ১৫)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, اِنَّ الْمُجْرِمِيْنَ فِى ضَلَالٍ وَّسُعُرٍ يَوْمَ يُسْحَبُوْنَ فِى النَّارِ عَلى وُجُوْهِهِمْ ذُوْقُوْا مَسَّ سَقَرَ. ‘অপরাধী লোকেরা ভুল ধারণায় নিমজ্জিত এবং তাদের বিবেক বুদ্ধি তিরোহিত যেদিন তাদেরকে উল্টাভাবে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। সেদিন তাদেরকে বলা হবে এখন সাকার নামক জাহান্নামের স্বাদ আস্বাদন কর’ (কামার ৪৭-৪৮)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ثُمَّ اِنَّكُمْ اَيُّهَا الضَّالُّوْنَ الْمُكَذِّبُوْنَ لَأَكِلُوْنَ مِّنْ شَجَرٍ مِنْ زَقُّوْمِ فَمَالِئُوْنَ مِنْهَا الْبُطُوْنَ فَشَارِبُوْنَ عَلَيْهِ مِنَ الْحَمِيْمِ فَشَارِبُوْنَ شُرْبَ الْهِيْمِ هذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ الدِّيْنِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘তাহলে হে পথভ্রষ্ট ও অবিশ্বাসকারী লোকেরা! তোমরা যাক্কুম গাছের খাদ্য অবশ্যই খাবে। তা দ্বারা তোমরা পেট ভর্তি করবে। আর ফুটন্ত টগবগে পানি পিপাসায় কাতর উটের ন্যায় পান করবে। এটাই হচ্ছে অপরাধীদের জন্য শেষ বিচারের দিনে মেহমানের খাদ্য (ওয়াকিয়া ৫৩-৫৬)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
يَالَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ مَا اَغْنَى عَنّى مَالِيَة هلَكَ عَنّى سُلْطَانِيَة خُذُوْهُ فَغُلُّوْهُ ثُمَّ الْجَحِيْمَ صَلُّوْهُ ثُمّ فِىْ سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُوْنَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوْهُ اِنّهُ كَانَ لَايُؤْمِنُ بِاللهِ الْعَظِيْمِ وَلَايَحُضّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِيْنِ فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ ههُنَا حَمِيْمٌ وَلَا طَعَامٌ اِلّا مِنْ غِسْلِيْنَ لَا يَأْكُلُهُ اِلّا الْخَاطِئُوْنَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘অপরাধী ক্বিয়ামতের মাঠে বলবে, হায়! আফসোস দুনিয়ার মরণই যদি চূড়ান্ত হত! আজ আমার অর্থ-সম্পদ কোন কাজে আসল না। আমার সব ক্ষমতা-আধিপত্য প্রভূত্ব শেষ হয়ে গেল। বলা হবে তাকে ধর তার গলায় লোহার শিকল দিয়ে ফাঁস লাগাও। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ কর। আর তাকে ৭০ হাত দীর্ঘ শিকলে বেঁধে দাও। এ তো আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে নি এবং মিস্কীনকে খাদ্য দেওয়ার প্রতি মানুষকে উৎসাহ দান করেনি। এ কারণেই আজ এখানে তার কোন সহযোগী বন্ধু নেই। আর ক্ষত নিঃসৃত রক্ত পুজ ছাড়া তার আর কোন খাদ্য নেই। নিতান্ত অপরাধী ছাড়া এ খাদ্য আর কেউ খায় না’ (হাককাহ ২৭-৩৭)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
كَلّا اِنّهَا لَظى نَزَّاعَةً لّلِشَّوَى تَدْعُوْ مَنْ اَدْبَرَ وَتَوَلّى وَجَمَعَ فَاَوْعَى.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘কক্ষণই নয়। তাতো হবে তীব্র উৎক্ষিপ্ত আগুনের লেলিহান শিখা। যা শরীরকে ঝলসিয়ে দিবে। আর ঐ সব ব্যক্তিকে নিজের দিকে ডাক দিবে যারা সত্য হ’তে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং পিঠ প্রদর্শন করেছে, এবং অর্থ-সম্পদ সঞ্চয় করেছে ও গুণে গুণে সংরক্ষণ করে রেখেছে’ (মা‘আরিজ ১৬)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, اِنّ لَدَيْنَا اَنْكَالًا وَجحِيْمًا وَطَعَامًا ذَا غُصّةٍ وَعَذَابًا اَلِيْمًا নিশ্চয়ই আমার নিকট তাদের জন্য রয়েছে দূর্বহ বেড়ী, আর দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুন, গলায় আটকে যাওয়া খাদ্য এবং কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি (মুযাম্মেল ১২-১৩)। অত্র আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, খুব ভারী ও দুর্বহ বেড়ী পাপাচারী অপরাধী লোকের পায়ে বেঁধে দেওয়া হবে। এটা হচ্ছে শাস্তির বেড়ি শাস্তির উপর শাস্তি। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, سَاُصْلِيْهِ سَقَرَ وَمَا َادْركَ مَا سَقَرَ لَا تُبْقِىْ وَلَا تَذَرْ لَوَّاحَةٌ لِلْبَشَرِ عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ. খুব শীঘ্রই আমি তাকে সাকার নামক জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর আপনি কি জানেন সে সাকার নামক জাহান্নাম কি? তা এমন একটি জাহান্নাম যা কাউকেও জীবিত রাখে না আবার মরা অবস্থায় ছেড়েও দেয় না। জাহান্নামীদের চামড়া ঝলসিয়ে দেয়। সে জাহান্নামে কর্মচারী হিসাবে ১৯জন ফেরেশতা নিয়োজিত আছে (মুদ্দাসসির ২৬-৩০)। এ কথাটি আল্লাহ অন্য আয়াতে এভাবে বলেছেন. لاَيَمُوْتُ فِيْهَا وَلَا يَحْي সে সেখানে মরবেও না বাঁচবেও না (আলা ১৩)। জাহান্নাম এমন একটি কঠিন ও জটিল জায়গা যেখানে মানুষের মরণও হবে না বাঁচতেও পারবে না। আল্লাহ অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
إِنَّ جَهَنّمَ كَانَتْ مِرْصَادًا لِلطّاغِيْنَ مَآبًا لّابِثِيْنَ فِيْهَا اَحْقَابًا لَايَذُوْقُوْنَ فِيْهَا بَرْدًا وَلَا شَرَابًا اِلّا حَمِيْمًا وَغَسّاقًا جَزَاءً وِّفَاقًا اِنَّهُمْ كَانُوْا لَاَيْرجُوْنَ حِسَابًا وَكَذّبُوْا بِايَتِنَا كِذّاَبًا وَكُلَّ شَيْئٍ اَحْصَيْنَاهُ كِتَابًا فَذُوْقُوْا فَلَنْ نَزِيْدَكُمْ اِلّاعَذَابًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘নিশ্চয়ই জাহান্নাম একটি ফাঁদ। আল্লাহদ্রোহীদের জন্য আশ্রয়স্থল। সেখানে তারা যুগ যুগ ধরে অবস্থান করবে। সেখানে তারা কোন শীতল ও সুপেয় জিনিসের স্বাদ আস্বাদন করবে না। তাদের পান করার জন্য রয়েছে ফুটন্ত গরম পানি এবং ক্ষত হ’তে নির্গত রক্তপুঁজ। এ হবে তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল। তারা তো হিসাব-নিকাশের কোন প্রকার আশা পোষণ করত না। বরং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে প্রত্যাখ্যান করত। অথচ আমি তাদের প্রত্যেকটি বিষয় গুণে গুণে লিখে রেখেছিলাম। অতএব, এখন স্বাদ গ্রহণ কর। আমি একমাত্র তোমাদের শাস্তিই বেশি করব’ (নাবা ২১-৩০)। অত্র আয়াতে একটি শব্দ রয়েছে غَسَّاقٌ গাসসাক্ব হচ্ছে কঠিন নির্যাতনের ফলে চক্ষু এবং চামড়া হ’তে যে সব রস নিঃসৃত হয় তাকে গাসসাক্ব বলে, আর এ খানে পুঁজ মিশ্রিত রক্তকে বুঝানো হয়েছে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وُجُوْهٌ يَوْمَئِذٍ خَاشِعَةٌ عَامِلَةٌ نَاصِبَةٌ تَصْلى نَارًا حَامِيَةٌ تُسْقَى مِنْ عَيْنٍ اَنِيَةٍ لَيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ اِلّا مِنْ َضرِيْعٍ لَا يُسْمِنُ وَلَا ُيْغْنِيىْ مِنْ جُوْعٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘সেদিন কতক মুখমন্ডল ভীত সন্ত্রস্ত হবে। কঠোর শ্রমে ক্লান্ত-শ্রান্তহবে, তীব্র অগ্নি শিখায় জ্বলে ছাই হয়ে যাবে। ফুটন্ত ঝর্ণার পানি তাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে। কাঁটাযুক্ত শুস্ক ঘাস ছাড়া আর অন্য কোন খাদ্য তাদের জন্য থাকবে না। তা তাদের পরিপুষ্টও করবে না এবং তাদের ক্ষুধাও নিবারণ করবে না’ (গাশিয়াহ ২-৭)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
কুরআনের এক স্থানে বলা হয়েছে, ক্ষত স্থান হ’তে নির্গত রক্ত পুঁজ ছাড়া কোন খাদ্য দেওয়া হবে না। আর এখানে বলা হয়েছে কাঁটাযুক্ত শুস্ক ঘাস ছাড়া তারা খাবার জন্য আর কিছু পাবে না। এসব কথার মধ্যে কোন বৈপরিত্য নেই। কারণ এগুলি সব কঠিন শাস্তির মাধ্যম। তবে এটাও হ’তে পারে জাহান্নামে অপরাধীদের অপরাধ অনুপাতে রাখা হবে এবং তাদের বিভিন্নভাবে শাস্তি দেওয়া হবে। আল্লাহ অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وَاَمّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِيْنُهُ فَاُمُّهُ هَاوِيَةٌ وَمَا اَدْرَكَ مَا هِيَةُ نَارٌ حَامِيَةُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘আর যার নেকীর পাল্লা হালকা হবে, তার আশ্রয়স্থল হবে গভীর গহবর হাবীয়া নামক জাহান্নাম। আর আপনি কি জানেন, হাবীয়া নামক জাহান্নাম কি জিনিস? তা হচ্ছে জ্বলন্ত উত্তপ্ত আগুন’ (ক্বারিয়াহ ১০-১১)। هاوية শব্দের অর্থ হচ্ছে উচু স্থান হ’তে নীচে পতিত হওয়া। আর জাহান্নামকে هاوية বলার কারণ হচ্ছে হাবীয়া জাহান্নাম খুবই গভীর হবে এবং জাহান্নামীদেরকে উপর থেকে ফেলে দেওয়া হবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وَيْلٌ لِكُلِّ هُمَزَةٍ لُمَزَةٍ الذَِّىْ جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُ يَحْسَبُ أَنّ مَالَهُ أَخْلَدَهُ كَلّا لَيُنْبَذَنَّ فِى الْحُطَمَةِ وَمَا أدْرَكَ مَا لْحُطَمَةِ نَارُ اللهِ الْمُوْقَدَةُ الَّتِىْ تَطَّلِعُ عَلى الْأَفْئِدَةِ اِنَّهَا عَلَيْهِمْ مُؤْصَدَةٌ فِىْ عَمَدٍ مُمَدَّةٌ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘নিশ্চিত ধ্বংস, এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে সামনা সামনি লোকদের গালি দেয় এবং পিছনে গিবত করাতে অভ্যস্ত। যে ব্যক্তি অর্থ সম্পদ সঞ্চয় করে এবং তা গুণে গুণে রাখে তার জন্যও ধ্বংস নিশ্চিত। সে মনে করে তার অর্থ-সম্পদ তার কাছে চিরকাল থাকবে, কক্ষনই নয়। সে ব্যক্তি তো চূর্ণ-বিচূর্ণকারী ‘হুতামা’ নামক জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। আর আপনি কি জানেন সে চূর্ণ-বিচূর্ণকারী ‘হুতামা’ কি? তা হচ্ছে প্রচন্ডভাবে জ্বলন্ত উত্তপ্ত উৎক্ষিপ্ত আগুন, যা অন্তর পর্যন্ত স্পর্শ করবে। আর সে আগুনকে তাদের উপর ঢেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর এটা এমন অবস্থায় হবে যে, তারা উঁচু উঁচু স্তম্ভে পরিবেষ্টিত হবে’ (হুমাযাহ)। অত্র সূরায় যে ‘হুতামা’ শব্দটি রয়েছে তার অর্থ ভেঙ্গে ফেলা, নিস্পেষিত করা ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করা। ‘হুতামা’ জাহান্নামের একটি নাম। যে এ জাহান্নামে যাবে তাকে চূর্ণ-বিচুর্ণ ও ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলবে। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
مِنْ وَرَائِهِ جَهَنَّمُ وَيُسْقَى مِنْ مَّاءٍ صَدِيْدٍ يَتَجَرَّعُهُ وَلاَ يَكَادُ يُسِيْغُهُ وَيَأْتِيْهِ الْمَوْتُ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ وَمَا هُوَ بِمَيِّتٍ وَمِنْ وَرَائِهِ عَذَابٌ غَلِيْظٌ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘অতঃপর তার পিছনে জাহান্নাম তার জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে। সেখানে তাকে পুঁজ মিশানো পানি পান করতে দেওয়া হবে। সে খুব কষ্ট করে ঢোক গিলে তা পান করার চেষ্টা করবে, আর খুব কমই ঢোক গিলতে পারবে। মরণের ছায়া তাকে চারিদিক থেকে আচ্ছন্ন করে ধরবে, কিন্তু সে মরবে না। আর পিছন হ’তে এক কঠিন শাস্তি তার উপর চেপে বসবে’ (ইবরাহীম ১৬-১৭)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَازِيْنُهُ فَأُوْلَئِكَ الَّذِيْنَ خَسِرُوْا أَنْفُسَهُمْ فِىْ جَهَنَّمَ خَالِدِيْنَ تَلْفَحُ وُجُوْهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيْهَا كَالِحُوْنَ-</div>
<div>
<br /></div>
<div>
অতঃপর ক্বিয়ামতের মাঠে যাদের নেকীর পাল্লা হালকা হবে, তারাই হবে সে সমস্ত লোক যারা নিজেদেরকে মহা ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে, তারা চিরদিন জাহান্নামে থাকবে। আগুন তাদের মুখের চামড়া দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারণ করবে’ (মুমিনূন ১০৩-১০৪)। অত্র আয়াতে ‘কালিহুন’ ‘কালিহুন’ এমন চেহারাকে বলা হয়, যার চামড়া আলাদা করা হয়েছে এবং দাঁত বের হয়ে পড়েছে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
اِنَّا اَعْتَدْنَا لِلظَّالِمِيْنَ نَارًا اَحَاطَ بِهِمْ سُرَادِقُهَا وَاِنْ يَسْتَغِيْثُوْا يُغَاثُوْا بِمَاءٍ كَالْمُهْلِ يَشْوِى الْوُجُوْهَ بِئْسَ الشَّرَابُ وَسَائَتْ مُرْتَفَقًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘আমি অমান্যকারী অত্যাচারীদের জন্য আগুনের ব্যবস্থা করে রেখেছি, যার লেলিহান শিখা তাদেরকে পরিবেষ্টন করে নিয়েছে। সেখানে তারা যদি পানি পান করতে চায়, তাহ’লে এমন পানি তাদেরকে পরিবেশন করা হবে, যা তেলপাত্রের তলানীর মত হবে এবং তাদের মুখমন্ডল ভাজাভাজা করে দিবে। এ কতইনা নিকৃষ্ট পানীয়, আর কতই না খারাপ আশ্রয়স্থল’ (কাহাফ ২৯)। আয়াতে ‘মুহল’ শব্দের অর্থ এরূপ হ’তে পারে তেলপাত্রের তলানী, ভূগর্ভস্ত গলিত ধাতু, যা গরমের তীব্রতার কারণে গলে প্রবাহিত হয় পুঁজ ও রক্ত। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, يَوْمَ نَقُوْلُ لِجَهَنَّمَ هَلِ امْتَلَأْتِ وَتَقُوْلُ هَلْ مِنْ مَزِيْدٍ. ‘সেদিনের কথা স্মরণ কর যেদিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করব তুমি কি পূর্ণ ভর্তি হয়েছ? তখন সে বলবে, আর কিছু আছে কি’ (ক্বাফ ৩০)। এ বাক্যের তাৎপর্য এমন হ’তে পারে জাহান্নাম পাপীদের উপর ক্রুদ্ধ ক্ষুব্ধ হয়ে ফোঁস-ফোঁস করে ফুঁসছে আর বলছে আরও আছে নাকি, থাকলে নিয়ে আস যত থাকে, সমস্ত অপরাধীকে গ্রাস করে নিব কাউকে রেহাই দিব না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَحَاجَّتْ الْجَنَّةُ وَالنَّارُ فَقَالَتِ النَّارُ اُوْثِرْتُ بِالْمُتَكَبِّرِيْنَ وَالْمُتَجَبِّرِيْنَ وَقَالَتِ الْجَنَّةُ فَمَالِى لاَ يَدْخُلُنِىْ اِلاَّ ضُعَفَاءُ النَّاسِ وَسَقَطُهُمْ وَغِرَّتُهُمْ قَالَ اللهُ لِلْجَنَّةِ اِنَّمَا اَنْتِ رَحْمَتِىْ اَرْحَمُ بِكِ مَنْ اَشَاءُ مِنْ عِبَادِىْ وَقَالَ لِلنَّارِ اِنَّمَا اَنْتَ عَذَابِىْ اُعَذِّبُ بِكِ مَنْ اَشَاءُ مِنْ عِبَادِىْ وَلِكُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْكُمَا مِلْؤُهَا فَاَمَّا النَّارُ فَلاَ تَمْتَلِئُ حَتىَّ يَضَعَ اللهُ رِجْلَهُ تَقُوْل قَطْ قَطْ قَطْ فَهُنَالِكَ تَمْتَلِئُ وَيُزْوَى بَعْضُهَا اِلَى بَعْضٍ فَلاَ يَظْلِمُ اللهُ مِنْ خَلْقِهِ اَحَدًا وَاَمَّا الْجَنَّةُ فَاِنَّ اللهَ يُنْشِئُ لَهَا خَلْقًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়ে তাদের প্রতিপালকের নিকট অভিযোগ করল, ব্যাপার কি আমাকে শুধু অহংকারী ও স্বৈরাচারীদের জন্য নির্ধরণ করা হ’ল কেন? আর জান্নাত বলল, আমার মধ্যে কেবল মাত্র দুর্বল নিম্ন স্তরের ও নির্বোধ লোকেরাই প্রবেশ করবে কেন? তখন আল্লাহ জান্নাতকে বললেন, তুমি আমার দয়ার বিকাশ। এজন্য আমার যাকে ইচ্ছা তোমার দ্বারা তার প্রতি অনুগ্রহ করব। অতএব, আমার বান্দা হ’তে যাকে ইচ্ছা তোমার দ্বারা তাকে শান্তি দিব। আর জাহান্নামকে বললেন, তুমি আমার শাস্তির বিকাশ। অতএব, আমার বান্দা হ’তে যাকে ইচ্ছা তোমার দ্বারা তাকে শাস্তি দিব এবং তোমাদের প্রত্যেককে পরিপূর্ণ করা হবে। অবশ্য জাহান্নাম ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্ তাঁর পা তার মধ্যে না রাখবেন। তখন জাহান্নাম বলবে, যথেষ্ট, যথেষ্ট, যথেষ্ট হয়েছে। এ সময় জাহান্নাম পরিপূর্ণ হয়ে যাবে এবং তার এক অংশকে আরেক অংশের সাথে মিলিয়ে দেওয়া হবে। বস্তত আল্লাহ্ তার সৃষ্টির কারও প্রতি সামান্য পরিমাণও অত্যাচার করবেন না। আর জান্নাতের বিষয়টি হ’ল তার খালি অংশ পূরণের জন্য আল্লাহ নতুন নতুন মাখলুক সৃষ্টি করবেন (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৫০)। জাহান্নাম ও জান্নাত নিজ নিজ ব্যাপারে আল্লাহর নিকট অভিযোগ করলে আল্লাহ তার কারণ উল্লেখ করবেন। জাহান্নাম মানুষ দ্বারা পূর্ণ হবে না। তখন আল্লাহ স্বীয় পা জাহান্নামের উপর রাখবেন তখন জাহান্নাম পরিপূর্ণ হবে এবং জাহান্নাম আল্লাহকে বলবে, আমি এখন পূর্ণ। ক্বিয়ামতের মাঠে আল্লাহ কারো প্রতি বিন্দু পরিমাণ অত্যাচার করবেন না। সেদিন জান্নাত পূরণের জন্য আল্লাহ নতুন নতুন প্রাণী সৃষ্টি করবেন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَنَسٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ تَزَالُ جَهَنَّمُ يُلْقَى فِيْهَا وَتَقُوْلُ هَلْ مِنْ مَزِيْدٍ حَتَّى يَضَعَ رَبُّ الْعِزَّةِ فِيْهَا قَدَمَهُ فَيَنْزَوِى بَعْضُهَا اِلَى بَعْضٍ فَتَقُوْلُ قَطْ قَطْ بِعِزَّتِكَ وَكَرَمِكَ وَلاَ يَزَالُ فِى الْجَنَّةِ فَضْلٌ حَتَّى يُنْشِئَ اللهُ لَهَا خَلْقًا فَيُسْكِنُهُمْ فَضْلَ الْجَنَّةِ-</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম(সা.) বলেছেন, জাহান্নামে অনবরত মানুষ ও জিনকে নিক্ষেপ করা হবে। তখন জাহান্নাম অনবরত বলতে থাকবে, আর কিছু আছে কি? এভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত বলতে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাঁর পবিত্র পা তার উপর না রাখছেন। তখন জাহান্নামের একাংশ অপর অংশের সাথে মিলে যাবে এবং বলবে তোমার মর্যাদা ও অনুগ্রহের কসম! যথেষ্ঠ হয়েছে, যথেষ্ঠ হয়েছে। আর জান্নাতে মানুষ প্রবেশের পর অতিরিক্ত স্থান খালি থেকে যাবে। তখন আল্লাহ ঐ খালি জায়গার জন্য নতুন নতুন মাখলুক সৃষ্টি করবেন। তাদেরকে জান্নাতের এ খালি জায়গায় রাখবেন (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৫১)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَمَّا خَلَقَ اللهُ الْجَنَّةَ قَالَ لِجِبْرَئِيْلَ اِذْهَبْ فَانْظُرْ اِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ اِلَيْهَا وَاِلَى مَا اَعَدَّ اللهُ لِاَهْلِهَا فِيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ اَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَايَسْمَعُ بِهَا اَحَدٌ اِلَّا دَخَلَهَا ثُمَّ حَفَهَا بِالْمَكَارِهِ ثُمَّ قَالَ يَاجِبْرَئِيْلُ اِذْهَبْ فَانْظُرْ اِلَيْهَا قَالَ فَذَهَبَ فَنَظَرَ اِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ اَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيْتُ اَنْ لَايَدْخُلَهَا اَحَدٌ قَالَ فَلَمَّا خَلَقَ اللهُ النَّارَ قَالَ يَاجِبْرَئِيْلُ اِذْهَبْ فَانْظُرْ اِلَيْهَا فَذَهَبَ فَنَظَرَ اِلَيْهَا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ اَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَايَسْمَعُ بِهَا اَحَدٌ فَيَدْخُلُهَا فَحَّفَهَا بِالشَّهْوَاتِ ثُمَّ قَالَ يَا جِبْرَئِيْلُ اِذْهَبْ فَانْظُرْ اِلَيْهَا قَالَ فَذَهَبَ فَنَظَرَ اِلَيْهَا فَقَالَ اَىْ رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيْتُ اَنْ لَا يَبْقَى اَحَدٌ اِلَّا دَخَلَهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, আল্লাহ যখন জান্নাত তৈরী করলেন, তখন জিবরীলকে বললেন, যাও জান্নাত দেখে আস। তিনি গিয়ে জান্নাত এবং জান্নাতের অধিবাসীদের জন্য যে সমস্ত জিনিস প্রস্তত করছেন, সবকিছু দেখে এসে বললেন, হে আমার প্রতিপালক! তোমার ইয্যতের কসম! যে কোন ব্যক্তি জান্নাতের এ সুব্যবস্থার কথা শুনবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশের আশা আকাঙ্ক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহ জান্নাতের চারিদিকে কষ্ট দ্বারা ঘেরে দিলেন, তারপর পুনরায় জিবরাঈল (আঃ)কে বললেন, হে জিবরাঈল আবার যাও এবং জান্নাত দেখে আস। তিনি গিয়ে জান্নাত দেখে এসে বললেন, হে আমার প্রতিপালক! এখন যা কিছু দেখলাম! তাতে জান্নাতে প্রবেশের পথ যে কি কষ্টকর! তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এতে আমার আশংকা হচ্ছে যে, জান্নাতে কোন ব্যক্তিই প্রবেশ করবে না। তারপর রাসূল(সা.) বললেন, অতঃপর আল্লাহ জাহান্নামকে তৈরী করলেন এবং বললেন, হে জিবরাঈল যাও, জাহান্নাম দেখে আস। তিনি গিয়ে জাহান্নাম দেখে এসে বললেন, হে আমার প্রতিপালক! তোমার ইয্যতের কসম! যে কেউ এ জাহান্নামের ভয়াবহ অবস্থার কথা শুনবে, সে কখনও তাতে প্রবেশ করতে চাইবে না। অতঃপর আল্লহ জাহান্নামের চারদিক প্রবৃত্তির আকর্ষণীয় বস্ত্ত দ্বারা ঘেরে দিলেন এবং জিবরাঈল (আঃ)-কে বললেন, আবার যাও, জাহান্নাম দেখে আস। তিনি গেলেন এবং দেখে বললেন, হে আমার প্রতিপালক! তোমার ইয্যতের কসম করে বলছি! আমার আশংকা হচ্ছে সকলেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৬৯৬, হাদীছ হাসান; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৫২)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জান্নাত খুব আরাম আয়েশ ও ভোগ বিলাসের জায়গা যা দেখলে সকলের যাওয়ার আশা আকাঙ্খা জাগবে। তবে জান্নাতে যাওয়া কষ্টকর। কঠোর নীতি পালনের নাম জান্নাত। অনুরূপ ভয়ংকর বিভীষিকাময় কঠিন জায়গার নাম জাহান্নাম। সেখানে কেউ যেতে চাইবে না। তবে তা মনের প্রবৃত্তি দ্বারা সাজানো আছে। এজন্য জিবরাঈল (আঃ) আশংকা করেছেন মানুষ কি তার প্রবৃত্তির বিরোধিতা করতে পারবে। মানুষ চায় অবৈধ পয়সা উপার্জন করতে, মানুষ চায় অবৈধভাবে নারী ভোগ করতে। নারীরা চায় নগ্ন হয়ে চলতে, মানুষের প্রবৃত্তি চায় সবধরনের নিষিদ্ধ কাজগুলি করতে। মানুষ কি তার প্রবৃত্তির কঠোর বিরোধিতা করতে সক্ষম। এজন্য তো নবী করীম(সা.) বলেছেন, সবচেয়ে বড় মুজাহিদ হচ্ছে সেই, যে তার প্রবৃত্তির সাথে জিহাদ করতে পারে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَا آدَمُ. يَقُولُ لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ، فَيُنَادِى بِصَوْتٍ إِنَّ اللهَ يَأْمُرُكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ ذُرِّيَّتِكَ بَعْثًا إِلَى النَّارِ. قَالَ يَا رَبِّ وَمَا بَعْثُ النَّارِ قَالَ مِنْ كُلِّ أَلْفٍ- أُرَاهُ قَالَ- تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ فَحِينَئِذٍ تَضَعُ الْحَامِلُ حَمْلَهَا وَيَشِيبُ الْوَلِيدُ (وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللهِ شَدِيدٌ). فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَى النَّاسِ حَتَّى تَغَيَّرَتْ وُجُوهُهُمْ ، فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ، وَمِنْكُمْ وَاحِدٌ، ثُمَّ أَنْتُمْ فِى النَّاسِ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِى جَنْبِ الثَّوْرِ الأَبْيَضِ، أَوْ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِى جَنْبِ الثَّوْرِ الأَسْوَدِ، وَإِنِّى لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ. فَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ. فَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ : شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ. فَكَبَّرْنَا .</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন ডাক দিয়ে বলবেন, হে আদম! তখন আদম (আঃ) বলবেন, হে আমার প্রতিপালক আমি আপনার দরবারে উপস্থিত হয়েছি। তখন উঁচু কণ্ঠে চিৎকার করে বলা হবে ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ আপনাকে আদেশ করেন যে, আপনি আপনার সন্তানদের মধ্য হ’তে জাহান্নামীদের বের করে দিন। আদম (আঃ) বলবেন, হে আমার প্রতিপালক কতজন জাহান্নামী? আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন। ঐ সময় গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভ খসে পড়বে, বাচ্চারা বৃদ্ধ হয়ে যাবে এবং আপনি মানুষকে নেশাগ্রস্ত মনে করবেন অথচ তারা নেশাগ্রস্ত হবে না। কিন্তু আল্লাহর ভয়াবহ শাস্তি দেখে এরূপ অবস্থা হবে। এ বক্তব্য মানুষের নিকট খুব কঠিন ও জটিল হল, এমনকি তাদের চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল। তখন নবী করীম(সা.) বললেন, দেখ ইয়াজুজ মাজুজ সম্প্রদায় থেকে হবে জন। আর তোমাদের মধ্য থেকে হবে একজন। তারপর বললেন, তোমরা মানুষের মধ্যে সংখ্যায় এত কম হবে সাদা বলদের গায়ে একটি কাল লোম যেমন, অথবা বলেছেন, কাল বলদের গায়ে একটি সাদা লোম যেমন। আর অবশ্যই আমি আশা রাখি তোমরা জান্নাতীদের চার ভাগের এক ভাগ হবে। তখন আমরা আল্লাহু আকবার বললাম। তিনি আবার বললেন, জান্নাতবাসীদের তিনভাগের এক ভাগ তোমরা, আমরা বললাম, আল্লাহু আকবার। তিনি আবার বললেন, জান্নাতবাসীদের অধিক তোমরাই হবে। তখন আমরা বললাম, আল্লাহু আকবার (বুখারী হা/৪৭৪১)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُجِبَتِ النَّارُ بِالشَّهَوَاتِ وَحُجِبَتِ الْجَنَّةُ بِالْمَكَارِهِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জাহান্নামকে মনের প্রবৃত্তি ও কামনা-বাসনা দ্বারা ঢেকে রাখা হয়েছে। আর জান্নাতকে ঢেকে রাখা হয়েছে নিয়ম-নীতি ও বিপদ-মুছীবত দ্বারা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৩৩)। হাদীছের মর্ম হ’ল প্রবৃত্তি বা কামনা-বাসনার পরিণাম জাহান্নাম। আর প্রবৃত্তির চাহিদাকে দমন করে খুব কষ্ট করে নিয়ম-নীতি পালন করার পরিণাম জান্নাত।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نَارُكًُمْ جُزْءٌ مِنْ سَبْعِيْنَ جُزْءً مِنْ نَارِ جَهَنَّمَ قِيْلَ يَارَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنْ كَانَتْ لَكَافِيَةٌ قَالَ فُضِّلَتْ كُلُّهُنَّ بِتِسْعَةٍ وَّسِتِّيْنَ جُزْءً كُلُّهُنَّ مِثْلُ حَرِّهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, তোমাদের ব্যবহৃত আগুনের উত্তাপ জাহান্নামের আগুনের উত্তাপের সত্তর ভাগের এক ভাগ মাত্র। বলা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! জাহান্নামীদের শাস্তি প্রদানের জন্য দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ঠ ছিল। নবী করীম(সা.) বললেন, দুনিয়ার আগুনের উপর তার সমপরিমাণ তাপসম্পন্ন জাহান্নামের আগুন আরো ঊনসত্তরগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪২১)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُؤْتَى جَهَنَّمُ يَوْمَئِذٍ لَهَا سَبْعُوْنَ اَلْفَ زِمَامٍ مَعَ كُلِّ زِمَامٍ سَبْعُوْنَ اَلْفَ مَلَكٍ تَجُرُّوْنَهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ইবনে মাস্উদ (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামকে এমন অবস্থায় টেনে নিয়ে যাওয়া হবে যে, তার সত্তর হাজার লাগাম হবে এবং প্রতিটি লাগামের সাথে সত্তর হাজার ফেরেশতা থাকবেন। তাঁরা জাহান্নামকে টেনে হেঁচড়ে বিচারের মাঠে উপস্থিত করবেন (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪২২)। এমর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَجِيْئَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْاِنْسَانُ وَاَنَّى لَهُ الذَّكْرَى. ‘তোমরা সেদিনকে স্বরণ কর যেদিন জাহান্নামকে টেনে হেঁচড়ে মানুষের সামনে নিয়ে আসা হবে, সেদিন মানুষের চেতনা ফিরবে, কিন্তু চেতনা ফিরে কোন লাভ হবে না’ (ফজর ২৪)। জাহান্নাম এমন কিছু যাকে স্থানান্তর করা যায়। জাহান্নামকে টেনে মানুষের সামনে আনা হবে যেখানে ৭০ হাজার ফেরেশতা থাকবে। আর এ জাহান্নামের উপর পুলসিরাত নির্মাণ করা হবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ نُعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اَهْوَنَ اَهْلِ النَّارِ عَذَابًا مَنْ لَهُ نَعْلاَنِ وَشِرَاكَانِ مِنْ نَارٍ يَغْلِى مِنْهُمَا دِمَاغُهُ كَمَا يَغْلِى الْمِرْجَلُ مَا يُرَى اَنَّ اَحَدًا اَشَدُّ مِنْهُ عَذَابًا وَاِنَّهُ لَاَهْوَنُهُمْ عَذَابًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
নো’মান ইবনে বাশীর (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ঐ ব্যক্তির হবে যাকে আগুনের ফিতাসহ দু’টি জুতা পরানো হবে। এতে তার মাথার মগজ এমনভাবে ফুটতে থাকবে যেমন জ্বলন্ত চুলার উপর তামার পাত্র ফুটতে থাকে। সে মনে করবে তার চেয়ে কঠিন শাস্তি আর কেউ ভোগ করছে না। অথচ সেই হবে সহজতর শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪২৩)। দু’টি আগুনের জুতার কারণে যদি মানুষের এ অবস্থা হয় তাহ’লে যে ব্যক্তি সর্বদা আগুনের মধ্যে থাকবে তার অবস্থা কি হ’তে পারে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُؤْتَى بِاَنْعَمِ اَهْلِ الدُّنْيَا مِنْ اَهْلِ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُصْبَغُ فِى النَّارِ صِبْغَةً ثُمَّ يُقَالُ يَا ابْنَ آدَمَ هَلْ رَأَيْتَ خَيْرًا قَطُّ هَلْ مَرَّ بِكَ نَعِيْمٌ قَطُّ فَيَقُوْلُ لاَ وَاللهِ يَارَبِّ وَيُؤْتَى بِاَشَدِّ النَّاسِ بُؤْسًا فِى الدُّنْيَا مِنْ اَهْلِ الْجَنَّةِ فَيُصْبَغُ صِبْغَةً فِى الْجَنَّةِ فَيُقَالُ لَهُ يَآ ابْنَ آدَمَ هَلْ رَأَيْتَ بُؤْسًا قَطٌّ وَهَلْ مَرَّ بِكَ شِدَّةً قَطُّ فَيَقُوْلُ لاَ وَاللهِ يَارَبِّ مَامَرَّبِى بُؤْسٌ قَطٌّ وَلاَ رَأَيْتُ شِدَّةَ قَطٌّ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্য হ’তে দুনিয়ার সর্বাধিক সম্পদশালী ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে জাহান্নামের আগুনে ডুবিয়ে তোলা হবে। অতঃপর তাকে বলা হবে হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও আরাম-আয়েশ দেখেছ? পূর্বে কখনও তোমার নেয়ামতের সুখ শান্তি অর্জিত হয়েছিল? সে বলবে, না, আল্লাহর কসম, হে আমার প্রতিপালক! আমি কখনও সুখ ভোগ করিনি। তারপর জান্নাতীদের মধ্য হ’তে এমন একজন ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে যে, দুনিয়াতে সর্বাপেক্ষা কঠিন জীবন যাপন করেছিল। তখন তাকে মূহূর্তের জন্য জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে হে আদম সন্তান কখনও কঠিন সমস্যা ও কঠোরতার সন্মুখীন হয়েছিলে? সে বলবে, না, আল্লাহর কসম, হে আমার প্রতিপালক! আমি কখনও দুঃখ কষ্টে পতিত হয়নি। আর কখনও কোন কঠোর অবস্থার মুখোমুখিও হয়নি (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪২৫)। দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী ভোগবিলাসী ব্যক্তি যেমন জাহান্নামের শাস্তি স্পর্শ করা মাত্রই দুনিয়ার সকল সুখ-শান্তি ও ভোগ-বিলাসের স্বাদ ভুলে যাবে তেমনি দুনিয়ার সবচেয়ে দুস্থ ও কঠোর অবস্থার সন্মুখীন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করা মাত্রই দুনিয়ার সকল দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদের যাতনা ভুলে যাবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَنَسٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَقُوْلُ اللهُ لَاَهْوَنُ اَهْلِ النَّارِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَوْ اَنَّ لَكَ مَا فِى الْاَرْضِ مِنْ شَيْئٍ اَكُنْتَ تَفْتَدِى بِهِ فَيَقُوْلُ نَعَمْ فَيَقُوْلُ اَرَدْتُ مِنْكَ اَهْوَنَ مِنْ هَذَا وَاَنْتَ فِى صُلْبِ آدَمَ اَنْ لاَّتُشْرِكَ بِىْ شَيْئًا فَاَبَيْتَ الاَّ اَنْ تُشْرِكَ بِىْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন সর্বাপেক্ষা কম ও সহজতর শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তিকে বলবেন, যদি গোটা পৃথিবী পরিমাণ সম্পদ তোমার থাকত, তাহ’লে তুমি কি সমস্ত কিছুর বিনিময়ে এ শাস্তি হ’তে মুক্তি পাওয়ার চেষ্ট করতে? সে বলবে, হ্যাঁ। তখন আল্লাহ তাকে বলবেন, আদমের ঔরসে থাকা কালে এর চাইতেও সহজতর বিষয়ের হুকুম করেছিলাম যে, আমার সাথে কাউকে শরীক কর না, কিন্তু তুমি তা অমান্য করেছ এবং আমার সাথে শরীক করেছ (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪২৬)। হাদীছে বুঝা গেল, জাহান্নাম এমন এক কঠিন জায়গা যে, গোটা পৃথিবীর বিনিময়ে হ’লেও মানুষ জাহান্নাম হ’তে মুক্তি চাইবে। কিন্তু তার কোন কথা শুনা হবে না। অথচ দুনিয়াতে শির্ক মুক্ত থাকতে পারলেই একদিন জান্নাত পাওয়া যাবে আশা করা যায়।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ اَنَّ النَِّبَّى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مِنْهُمْ مَنْ تَأْخُذُهُ النَّارُ اِلَى كَعْبَيْهِ وَمِنْهُمْ مَنْ تَأْخُذُهُ النَّارُ اِلَى رُكْبَتَيْهِ وَمِنْهُمْ مَنْ تَأْخُذُهُ النَّارُ اِلَى حُجْزَتِهِ وَمِنْهُمْ مَنْ تَأْخُذُهُ النَّارُ اِلَى تَرْقُوَتِهِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
সামুরা ইবনে জুন্দুব (রা.) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম(সা.) বলেছেন, জাহান্নামীদের মধ্যে কোন লোক এমন হবে, যার পায়ের টাখনু পর্যন্ত জাহান্নামের আগুন হবে। কারো হাঁটু পর্যন্ত কারো হবে কোমর পর্যন্ত এবং কারো হবে কাঁধ পর্যন্ত (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪২৭)। মানুষ জাহান্নামে তার পাপ অনুপাতে আগুনের মধ্যে ডুবে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, سَاُرْهِقُهُ صَعُوْدًا অচিরেই আমি (আবু জাহলকে) প্রত্যেক অপরাধিকে আগুনের পাহাড়ে চড়াব (মুদ্দাছছির ১৭)। অত্র আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জাহান্নামে আগুনের পাহাড় থাকবে। জাহান্নামীরা সে পাহাড়ের উপর উঠবে ও নামবে। এটাও হবে এক ধরনের ভয়াবহ শাস্তি। আল্লাহ অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
اِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِاَيَتِنَا سَوْفَ نُصْلِيْهِمْ نَارًا كُلَّمَا نَضِجَتْ جُلُوْدُهُمْ بَدَّلْنَاهُمْ جُلُوْدًا غَيْرَهَا لِيَذُوْقُوا الْعَذَابَ اِنَّ اللهَ كَانَ عَزِيْزًا حَكِيْمًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘যারা আমার আয়াতসমূহ মেনে নিতে অস্বীকার করেছে, আমি তাদেরকে নিঃসন্দেহে আগুনে নিক্ষেপ করব। যখন তাদের চামড়া গলে যাবে, তখন সে স্থানে অন্য চামড়া পুনরায় সৃষ্টি করে দিব, যেন তারা শাস্তির স্বাদ পুরাপুরি গ্রহণ করতে পারে। বস্ত্ততঃ আল্লাহ বড় শক্তিশালী এবং কৌশলে সব জানেন’ (নিসা ৫৬)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا بَيْنَ مَنْكِبَىِ الْكَافِرِ فِى النَّارِ مَسِيْرَةُ ثَلاَثََةِ اَيَّامِ لِلرَّاكِبِ الْمُسْرِعِ وَفِى رِوَايَةٍ ضِرْسُ الْكَافِرِ مِثْلُ اُحُدٍ وَغِلْظُ جِلْدِهِ مَسِيْرَةُ ثَلاَثٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, জাহান্নামের মধ্যে কাফেরের উভয় ঘাড়ের দূরত্ব হবে কোন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের পথ। অপর এক বর্ণনায় আছে, কাফেরের এক একটি দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান এবং তার গায়ের চামড়া হবে তিন দিনের পথ (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪২৮)। অত্র হাদীছে জাহান্নামীদের শারীরিক অবস্থার বর্ণনা পাওয়া যায়।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا اشْتَدَّ الْحَرُّ فَاَبْرِدُوْا بِالظُّهْرِ فَاِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ وَ اشْتَكَتِ النَّارُ اِلَى رَبِّهَا فَقَالَ رَبِّ اَكَلَ بَعْضِيْ بَعْضًا فَاُذِنَ لَهَا بِنَفْسَيْنِ نَفْسٍ فِى الشِّتَاءِ وَنَفْسٍ فِى الصَّيْفِ اَشَدُّ مَا تَجِدُوْنَ ِمنَ الْحَرِّ فَمِنْ سَمُوْمِهَا وَاَشَدُّ مَا تَجِدُوْنَ مِنَ الْبَرَدِ فَمِنْ زَمْهَرِيْرِهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সা‘ঈদ খুদ্রী (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, যখন উত্তাপ বাড়বে তখন যোহরের সালাত শীতল করে আদায় কর। কারণ উত্তাপের আধিক্য জাহান্নামের ভাপ। জাহান্নাম তার প্রতিপালকের নিকট অভিযোগ করে বলেছিল, হে আমার প্রতিপালক! উত্তাপের তীব্রতায় আমার একাংশ অপরাংশকে খেয়ে ফেলছে। তখন আল্লাহ জাহান্নামকে দু’টি নিশ্বাসের অনুমতি দিলেন। বুখারীর এক বর্ণনায় আছে তোমরা যে গরম অনুভব কর তা জাহান্নামের গরম নিশ্বাসের কারণে। আর তোমরা শীত অনুভব কর তা জাহান্নামের শীতল নিশ্বাসের কারণে (বুখারী, তাহক্বীকে মিশকাত হা/৫৯১)। অত্র হাদীছে বুঝা গেল জাহান্নামে যেমন আগুনের তাপে প্রচন্ড উত্তপ্ত এলাকা রয়েছে তেমন প্রচন্ড শীতল এলাকাও রয়েছে। আর উভয় স্থান মানুষকে কঠোর শাস্তি দেয়ার জন্য।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِطَّلَعْتُ فِى الْجَنَّةِ فَرَأَيْتُ اَكْثَرَ اَهْلِهَا الْفُقَرَأَ وَاِطَّلَعْتُ فِى النَّارِ فَرَأَيْتُ اَكْثَرَ اَهْلِهَا النِّسَاءَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ইবনে আববাস (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বললেন, আমি জান্নাতের প্রতি লক্ষ্য করলাম, জান্নাতের অধিকাংশ অধিবাসী গরীব। অতঃপর জাহান্নামের প্রতি লক্ষ্য করে দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী নারী (বুখারী, মুসলিম, তাহক্বীকে মিশকাত হা/৫২৩৪)। হাদীছের মর্ম। মূলত তারা স্বামীর অকৃতজ্ঞ সাথে সাথে নারীরা পুরুষের জন্য এক বিপদজনক ভয়াবহ বস্ত্ত। এরা পুরুষের ঈমান ধ্বংস করে। তাদের মান-সম্মান ধ্বংস করে। তারা নগ্ন হয়ে চলে এবং সামাজিক অবস্থার অবনতি ঘটায়। এজন্য আল্লাহ তাদেরকে নির্লজ্জতা, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার পথ অবলম্বন করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضِرْسُ الْكَافِرِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِثْلُ اُحُدٍ وَفَخِذُهُ مِثْلُ الْبَيْضَاءِ وَمَقْعَدُهُ مِنَ النَّارِ مَسِيْرَةُ ثَلاَثٍ مِثْلُ الرَّبَذَةِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন কাফেরদের দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের ন্যায়, আর রান বা উরু হবে ‘বায়যা’ পাহাড়ের মত মোটা জাহান্নামে তার বসার স্থান হচ্ছে তিনদিনের দূরত্ব এমন পথের সমান প্রশস্ত জায়গা। যেমন মাদীনা হ’তে ‘রাবায’ নামক জায়গার দুরত্বের ব্যবধান (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৬৭৪; হাদীছ ছহীহ; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৩০)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ غِلْظَ جِلْدِ الْكَافِرِ اِثْنَانِ وَاَرْبَعُوْنَ ذِرَاعًا وَاِنَّ ضِرْسَهُ مِثْلُ اُحُدٍ وَاِنَّ مَجْلِسَهُ مِنْ جَهَنَّمَ مَا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِيْنَةِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, জাহান্নামের মধ্যে কাফেরের গায়ের চামড়া হবে বিয়াল্লিশ হাত মোটা, দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান এবং জাহান্নামীদের বসার স্থান হবে মক্কা-মদীনার মধ্যবর্তী ব্যবধান পরিমাণ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৬৭৫; হাদীছ ছহীহ; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৩১)। একজন জাহান্নামীর দাঁত ওহুদ পাহাড়ের সমান হবে। গায়ের চামড়া বিয়াল্লিশ হাত মোটা বা তিনদিনের চলার পথ পরিমাণ মোটা হবে। তার দু’কাঁধের ব্যবধান তিনদিনের চলার পথ পরিমাণ হবে। আর বসার জায়গা হবে প্রায় আড়াইশত মাইল, তাহ’লে জাহান্নামী ব্যক্তি কত বড় হ’তে পারে অনুমান করা যায়। অপর দিকে নবী করীম(সা.) বলেছেন, হাজারে ৯৯৯ জন লোক জাহান্নামে যাবে এবং প্রতিজনের বসার স্থান হবে প্রায় আড়াই শত মাইল। তাহ’লে জাহান্নাম কত বড় হবে তা মানুষের হিসাব করা সম্ভব নয়। </div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَن نُعْمَانَ بْنِ بَشِيْرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اَنْذَرْتُكُمْ النَّارَ اَنْذَرْتُكُمْ النَّارَ فَمَازَالَ يَقُوْلُهَا حَتَّى لَوْكَانَ فِىْ مَقَامِىْ هَذَا سَمِعَهُ اَهْلُ السُّوْقِ وَحَتَّى سَقَطَتْ خَمِيْصَةُ كَانَتْ عَلَيْهِ عِنْدَ رِجْلَيْهِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
নো‘মান ইবনে বশীর (রা.) বলেন, আমি রাসূল(সা.) -কে বলতে শুনেছি, আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হ’তে ভীতি প্রদর্শন করছি আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হ’তে ভীতি প্রদর্শন করছি। তিনি এ বাক্যগুলি বার বার এমনভাবে উচ্চ কণ্ঠে বলতে থাকলেন যে, বর্তমানে আমি যে স্থানে বসে আছি, যদি রাসূল(সা.) এ স্থান হ’তে উক্ত বাক্যগুলি বলতেন, তবে ঐ উচ্চ কণ্ঠ বাজারের লোকেরাও শুনতে পেত। আর তিনি এমনভাবে হেলে দুলে বাক্যগুলি বলছিলেন যে, তার কাঁধের উপর রক্ষিত চাদরখানা পায়ের উপর গড়ে পড়েছিল (দারেমী, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৪৩, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তিনি মানুষকে খুব উচ্চ কণ্ঠে জাহান্নামের ভয় দেখাতেন। এমন কি বলার সময় বেখিয়াল হয়ে যেতেন। যার দরুন তার কাঁধের চাদর পড়ে যেত। অথবা শরীর ও হাত নাড়িয়ে খুব উচ্চ কণ্ঠে জাহান্নামের ভয় দেখানোর চেষ্টা করতেন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صِنْفَانِ مِنْ اَهْلِ النَّارِ لمَْ اَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَاَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُوْنَ بِهَا النَّاسَ وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيْلاَتٌ مَائِلاَتٌ رُؤُسُهُنَّ كَاَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ لاَ يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلاَ يَجِدْنَ رِيْحَهَا وَ إِنَّ رِيْحَهَا لَتُوْجَدُ مِنْ مَسِيْرَةِ كَذَا وكَذَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, দু’প্রকারের লোক জাহান্নামী। অবশ্য আমি তাদেরকে দেখতে পাব না। তাদের এক শ্রেণী এমন লোক হবে, যাদের হাতের মধ্যে থাকবে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক। তা দ্বারা তারা মানুষকে মারধর করতে থাকবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হবে এমন সব নারী, যারা কাপড় পরেও উলংগ থেকে অপরকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে এবং নিজেও অপরের দিকে আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথার চুল হবে বুখতি উটের হেলিয়ে পড়া কুঁজের ন্যায়। তারা কখনও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি তারা জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। যদিও তার সুঘ্রাণ অনেক অনেক দূর হ’তে পাওয়া যাবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩৬৯)। যে সব নারী বেহায়া-বেপর্দা হয়ে মাথার চুল প্রকাশ করে মাথা হেলিয়ে দুলিয়ে চলে, পুরষদেরকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে এবং তারাও পুরষদের দিকে আকৃষ্ট হয়, এরা সকলেই জাহান্নামে যাবে। এরা জান্নাতের গন্ধও পাবে না, যে গন্ধ অনেক অনেক দূর থেকে পাওয়া যাবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِسِ بْنِ جَزْءٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ فِى النَّارِ حَيَّاتٍ كَاَمْثَالِ الْبُخْتِ تَلْسَعُ اِحْدَهُنَّ الْلَسْعَةَ فَيَجِدُ حمَْوَتَهَا اَرْبَعِيْنَ خَرِيْفًا وَاِنَّ فِى النَّارِ عَقَارِبَ كَاَمْثَالِ الْبِغَالِ الْمُؤْكَفَةِ تَلْسَعُ اِحْدَهُنَّ الْلَسْعَةَ فَيَجِدُ حَمْوَتَهَا اَرْبَعِيْنَ خَرِيْفًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস ইবনে জাযয়ে (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জাহান্নামের মধ্যে ‘খোরাসানী’ উটের ন্যায় বিরাট বিরাট সাপ আছে। সে সাপ একবার দংশন করলে তার বিষ ও ব্যাথা চল্লিশ বছর পর্যন্ত থাকবে। আর জাহান্নামের মধ্যে এমন সব বিচ্ছু আছে যা পালান বাঁধা খচ্চরের মত। যা একবার দংশন করলে তার বিষ ব্যথার ক্রিয়া চল্লিশ বছর পর্যন্ত অনুভব করবে (আহমাদ, মিশকাত হা/৫৬৯১)। জাহান্নামের সাপ থাকবে, যারা সর্বদা জাহান্নামীকে দংশন করতে থাকবে। আর একবার দংশনের ব্যথা থাকবে ৪০ বছর।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِاَهْلِ الْجَنَّةِ الضُّعَفَاءُ الْمَظْلُوْمُوْنَ وَاَهْلُ النَّارِ كُلُّ شَدِيْدٍ جَعْظَرِىٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতের অধিবাসীদের সংবাদ দিব না? যারা দুর্বল, অত্যাচারিত তারাই জান্নাতের অধিবাসী। আর জাহান্নামের অধিবাসী হচ্ছে প্রত্যেক যারা শক্তিশালী, কঠোর, কর্কশ ভাষী ও অহংকারী (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৪৪)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الحَمِيْمُ لَيُصَبُّ عَلَى رُؤُسِهِمْ فَيَنْفُذُ الْحَمِيْمُ حَتَّى يَخْلُصَ اِلَى جَوْفِهِ فَيَسْلُتُ مَا فِىْ جَوْفِهِ حَتَّى يَمْرُقَ مِنْ قَدَمَيْهِ وَهُوَ الصَّهْرُ ثُمَّ يُعَادُ كَمَا كَانَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই ফুটন্ত গরম পানি জাহান্নামীদের মাথায় ঢেলে দেওয়া হবে। সে পানি তাদের পেটে পৌঁছে যাবে ফলে যা কিছু পেটে আছে সব টেনে বের করে ফেলবে। এমনকি নাড়ি ভুঁড়ি দু’পায়ের মধ্য দিয়ে গলে গলে বের হয়ে যাবে। তারপর লোকটি পুনরায় ঠিক হয়ে যাবে, যেমন পূর্বে ছিল (সিলসিলা ছাহীহাহ ১৪৫৫)। হাদীছে বুঝা গেল যখন জাহান্নামীদের মাথায় গরম পানি ঢেলে দেওয়া হবে তখন মাথাসহ পেটের নাড়ি ভুড়ি সব গলে নীচে পড়ে যাবে। আর এটাই তার শেষ নয়। পুনরায় তার শরীরে গোশত দিয়ে আবার মাথায় গরম পানি ঢেলে দেওয়া হবে। এভাবেই তার শাস্তি হ’তে থাকবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ سَمِعَ وَجْبَةً فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَدْرُوْنَ مَا هَذَا قَالَ قُلْنَا اللهُ ورَسُوْلُهُ أَعْلَمُ، قَالَ هَذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ فِي النَّارِ مُنْذُ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا فَهُوَ يَهْوِى فِي النَّارِ الأَنْ حَتَّى اِنْتَهَى إِلَى قَعْرِهَا وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ هَذَا وَقَعَ فِي أَسْفَلِهَا فَسَمِعْتُمْ وَجْبَتَهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদা আমরা রাসূল(সা.) -এর সঙ্গে ছিলাম। হঠাৎ তিনি একটি শব্দ শুনলেন এবং বললেন, তোমরা কি বলতে পার এটা কিসের শব্দ? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। নবী করীম (সা.) বললেন, এটা একটা পাথর। আজ থেকে ৭০ বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। সেটা এখন জাহান্নামের শেষ প্রান্তে পৌঁছল। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, নবী করীম(সা.) বললেন, পাথরটি জাহান্নামের নিম্নে পৌঁছল, তোমরা তার শব্দ শুনতে পেলে’ (মুসলিম, ২য় খন্ড, ৩৮১ পৃঃ)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ عُتْبَةَ بْنِ غَزْوَانَ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِنَّ الصَّخْرَةَ الْعَظِيْمَةَ لَتُلْقَى مِنْ شَفِيْرِ جَهَنَّمَ فَتَهْوِى فِيْهَا سَبْعِيْنَ عَامًا مَاتُفْضِى اِلَى قَرَارِهَا-</div>
<div>
<br /></div>
<div>
উতবা ইবনে গায্ওয়ান (রা.) হ’তে বর্ণিত নবী করীম(সা.) বলেছেন, একটি বড় পাথর যদি জাহান্নামের কিনারা হ’তে নিক্ষেপ করা হয়, আর সে পাথর ৭০ বছর নীচে যেতে থাকে তবুও জাহান্নামের শেষ প্রান্তে পৌঁছতে পারবে না (সিলসিলা ছাহীহা হা/১৪৬০)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ عُتْبَةَ بْنِ غَزْوَانَ قَالَ ذُكِرَ لَنَا اَنّ الْحَجَرَ يُلْقَى مِنْ شَفَةِ جَهَنّمَ فَيَهْوِىْ فِيْهَا سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا لَايُدْرِكُ لَهَا قَعَرًا واللهِ لَتُمْلَأَنّ وَلَقْد ذُكِرَ لَنَا اَنّ مَا بَيْنَ مِصْرَاعَيْنِ مِنْ َمَصارِيْعِ الْجَنّةِ مَسِيْرَةُ اَرْبَعِيْنَ سَنَةً وَليَأْتِيَنَّ عَلَيْهَا يَوْمٌ وَهُوَ كَظِيْظٌ مِنَ الزِحَامِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
উত্বা ইবনে গাযওয়ান হ’তে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমাদের সামনে নবী করীম(সা.) -এর হাদীছ বর্ণনা করা হয় যে, যদি জাহান্নামের উপর হ’তে একটি পাথর নিক্ষেপ করা হয়, সত্তর বছরেও জাহান্নামের নীচে পৌঁছতে পারবে না। আল্লাহর কসম! জাহান্নামের এ গভিরতা কাফের-মুশরিক জিন ও মানুষ দ্বারা পরিপূর্ণ করা হবে এবং এটাও বলা হয়েছে যে, জান্নাতের দরজার উভয় কপাটের মধ্যবর্তী জায়গা ৪০ বছরের দুরত্ব হবে। নিশ্চয়ই একদিন এমন আসবে যে, জান্নাতের অধিবাসী দ্বারা জান্নাতও পরিপূর্ণ হয়ে যাবে (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৮৭)। অত্র হাদীছে জান্নাতের দরজার প্রশস্ততা বুঝা যায় এবং জাহান্নামের গভীরতা অনুভাব করা যায়।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ مُوْسَى الْاَشْعَرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ حَجَرًا يُقْذَفُ بِهِ فِىْ جَهَنَّمَ هَوَى سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا قَبْلَ اَنْ يَبْلُغَ قَعَرَهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু মূসা আশ‘আরী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, যদি একটি পাথর জাহান্নামের মুখ হ’তে নিক্ষেপ করা হয়, পাথরটি ৭০ বছর নীচে যেতে থাকে, তবুও জাহান্নামের শেষ প্রান্তে পৌঁছতে পারবে না (সিলসিলা ছাহীহা হা/১৪৯৬)। অত্র হাদীছ সমূহে জাহান্নামের এমন গভীরতা প্রমাণ হয়, যা মানুষের আয়ত্বের বাহিরে। কারণ একটি পাথর ৭০ বছর ধরে নীচে পড়তে থাকলে ঐ স্থানের গভীরতা কত হ’তে পারে তা অনুমান করা মানুষের পক্ষে অতীব কঠিন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ اَتَدْرِىْ مَا سَعَةُ جَهَنَّمَ قُلْتُ لاَ قَالَ اَجَلْ وَاللهِ مَا تَدْرِىْ اَنَّ بَيْنَ شَحْمَةِ اُذْنِ اَحَدِهِمْ وَبَيْنَ عَاتِقِهِِ مَسِيْرَةُ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا تَجْرِى فِيْهَا اَوْدِيَةُ الْقَيْحِ وَالدَّمِ قُلْتُ اَنْهَارٌ قَالَ لاَ بَلْ اَوْدِيَةٌ ثُمَّ قَالَ اَتَدْرُوْنَ مَا سَعَةُ جَهَنَّمَ قُلْتُ لاَ قَالَ اَجَلْ وَاللهِ مَا تَدْرِى حَدَّثَنِى عَائِشَةُ اَنَّهَا سَأَلَتْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ قَوْلِهِ وَالْاَرْضُ جَمِيْعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِيْنِهِ فَاَيْنَ النَّاسُ يَوْمَئِذٍ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ هُمْ عَلَى جَسَرِ جَهَنَّمَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
মুজাহিদ (রহঃ) হ’তে বর্ণিত, ইবনে আববাস (রা.) আমাকে বললেন, আপনি কি জাহান্নামের প্রশস্ততা সম্পর্কে কিছু জানেন? আমি বললাম, জি-না। তিনি বললেন, হ্যাঁ আল্লাহর কসম! আপনি জানেন না। নিশ্চয়ই জাহান্নামীদের কারো কানের লতি এবং তার কাঁধের মধ্যে দূরত্বের ব্যবধান হচ্ছে ৭০ বছরের পথ। তার মধ্যে চালু থাকবে পুঁজ ও রক্তের নালা। আমি বললাম সেগুলি কি নদী? তিনি বললেন, না; বরং সেগুলি হচ্ছে নালা বা ঝর্ণা। ইবনে আববাস (রা.) আবার বললেন, আপনি কি জাহান্নামের প্রশস্ততা সম্পর্কে কিছু জানেন? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, হ্যাঁ আল্লাহর কসম! আপনি জানেন না। আয়েশা (রাঃ) আমাকে বলেছেন, তিনি রাসূল(সা.) -কে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, وَالْاَرْضُ جَمِيْعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِيْنِهِ ‘ক্বিয়ামতের দিন সমস্ত জমিন আল্লাহর হাতের মুষ্টিতে থাকবে আর সমস্ত আকাশ তার ডান হাতে পেঁচানো থাকবে (যুমার ৬৭)। হে আল্লাহর রাসূল (সা.) ! সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? নবী করীম(সা.) বললেন, সেদিন তারা জাহান্নামের পুলের উপর থাকবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৫১৩)। অত্র হাদীছে জাহান্নামের প্রশস্ততা প্রমাণ হয়। কারণ জাহান্নামীদের কানের লতি ও কাঁধের দুরত্বের ব্যবধান যদি ৭০ বছরের পথ হয় তাহ’লে ব্যক্তি কত বড় হ’তে পারে এবং প্রতি হাজারে নয়শত নিরানহবই জন লোক যদি জাহান্নামে যায়, তবে জাহান্নাম কত বড়। তারপর আল্লাহর নবী বললেন, যেদিন আসমান যমিন আল্লাহ হাতে গুটিয়ে নিবেন সমস্ত সেদিন মানুষ জাহান্নামের পুলের উপর থাকবে। তাহ’লে জাহান্নাম কত বড় এবং পুল কত বড় তা মানুষ বিবেচনা করতে পারবে কি?</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِى قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْرُجُ عُنُقٌ مِنْ النَّارِ يَتَكَلَّمُ يَقُوْلُ وُكِّلْتُ الْيَوْمَ بَثَلاَثَةٍ بِكُلِّ جَبَّارٍ عَنِيْدٍ وَبِمَنْ جَعَلَ مَعَ اللهِ اِلَهًا آخَرَ وَبِمَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ فَيَنْطَوِى عَلَيْهِمْ فَيُقْذِفُهُمْ فِىْ غَمَرَاتِ جَهَنَّمَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সা‘ঈদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নাম থেকে একটি গ্রীবা বা গলা বের হবে, সে কথা বলবে। সে বলবে, আজ তিন শ্রেণীর মানুষকে আমার নিকট সমর্পণ করা হয়েছে। ১. প্রত্যেক অহংকারী, স্বেচ্ছাচারী, অবাধ্য ও জেদী মানুষকে ২. আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে মা‘বুদ হিসাবে গ্রহণ করত অর্থাৎ শিরক করত ৩. আর যে ব্যক্তি মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিল। তারপর জাহান্নাম তাদেরকে ঘিরে ধরবে এবং জাহান্নামের গভীরতায় নিক্ষেপ করবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৫২৩)। জাহান্নাম উক্ত তিন শ্রেণীর মানুষের সাথে কথা বলবে এবং তাদের ঘিরে ধরে জাহান্নামের গভীরতায় নিক্ষেপ করবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنِ السُّدِّى قَالَ سَأَلْتُ مَرَّةً الهَمْدَانِىَّ عَنْ قَوْلِ هَذَا وَاِنْ مِّنْكُمْ اِلاَّ وَارِدُهَا كَانَ عَلَى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا فَحَدَّثَنِىْ اَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ حَدَّثَهُمْ عَنْ رَسُوْلِ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَرِدُ النَّاسُ كُلُّهُمُ النَّارَ ثُمَّ يَصْدُرُوْنَ مِنْهَا بِاَعْمَالِهِمْ فَاَوَّلُهُمْ كَلَمْعِ الْبَرَقِ ثُمَّ كَمَرِّ الرِّيْحِ ثُمَّ كَحَضَرِ الْفَرَسِ ثُمَّ كَالرَّاكِبِ ثًمَّ كَشَدِّ الرِّجَالِ ثُمَّ كَمَشْيِهِمْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
মুফাসসির আল্লামা সুদ্দী (রহঃ) বলেন, আমি একদা হামদানী (রা.) -কে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম,وَاِنْ مِّنْكُمْ اِلاَّ وَارِدُهَا كَانَ عَلَى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا আর তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে, জাহান্নামের উপর দিয়ে অতিক্রম করবে না (মরিয়ম৭১)। হামদানী বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ আমাদেরকে বলেছেন। নবী করীম(সা.) আমাদের বলেছেন, সকল মানুষকেই জাহান্নামের উপর দিয়ে পার হ’তে হবে। তারা তাদের আমলের ভিত্তিতে জাহান্নামের উপর দিয়ে পার হয়ে যাবে। তাদের প্রথম দল পার হবে বিদ্যুৎ গতিতে, তারপরের দল পার হবে বাতাসের গতিতে, তারপরের দল পার হবে ঘোড়ার গতিতে, তারপরের দল স্বাভাবিক আরোহীর গতিতে, তারপরের দল পায়ে চলার গতিতে পার হবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৫২৬)। সকল মানুষকেই জাহান্নামের উপর দিয়ে পার হ’তে হবে। মানুষ তাদের আমল অনুপাতে পার হবে। এ জন্য পার হওয়ার গতি বিভিন্ন ধরনের হবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدِ الْخُدْرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا دَخَلَ اَهْلُ الْجَنَّةِ وَاَهْلُ النَّارِ يُجَاءُ بِالْمَوْتِ كَأَنَّهُ كَبْشٌ اَمْلَحٌ فَيُوْقَفُ عَلَى السُّوْرِ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَيُقَالُ يَااَهْلَ الْجَنَّةِ هَلْ تَعْرِفُوْنَ هَذَا فَيَشْرِفُوْنَ وَيَنْظُرُوْنَ وَيَقُوْلُوْنَ نَعَمْ هَذَا الْمَوْتُ وَكُلُّهُمْ قَدْ رَآهُ فَيُؤَمَّرُ بِهِ فَيُضْجَعُ فَيُذْبَحُ فَيُقَالُ يَااَهْلَ الْجَنَّةِ خُلُوْدٌ بِلَا مَوْتٍ وَيَااَهْلَ النَّارِ خُلُوْدٌ بِلَا مَوْتٍ ثُمَّ قَرَأَ رَسُوْلُ اللهِ وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ الْحَسْرَةِ إِذْ قُضِيَ الْأَمْرُ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ وَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ وَاَشَارَ بِيَدِهِ وَقَالَ اَهْلُ الدُّنْيَا فِىْ غَفْلَةٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সা‘ঈদ খুদরী (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যখন জাহান্নামীরা জাহান্নামে চলে যাবে এবং জান্নাতীরা জান্নাতে চলে যাবে, তখন মরণকে সাদাকালো মিশ্রিত রং এর একটি ভেড়ার আকৃতিতে নিয়ে আসা হবে তাকে জাহান্নাম ও জান্নাতের মাঝে এক প্রাচীরের উপর দাঁড় করা হবে। বলা হবে হে জান্নাতের অধিবাসী তোমরা কি একে চিনতে পারছ? তারা মাথা উঁচু করে দেখবে এবং বলবে হ্যাঁ আমরা চিনতে পারছি এ হচ্ছে মরণ। তারা সকলেই তাকে দেখবে। অতঃপর বলা হবে, হে জাহান্নামের অধিবাসী! তোমরা কি একে চিনতে পারছ? তারা মাথা উঁচু করে দেখে বলবে হ্যাঁ আমরা চিনতে পারছি এ হচ্ছে মরণ। তারা সকলেই তাকে দেখবে। তারপর তাকে শুয়ে দিয়ে যবেহ করার আদেশ করা হবে। বলা হবে হে জান্নাতী তোমরা চিরদিন জান্নাতে থাক আর কোন দিন তোমাদের মরণ হবে না। হে জাহান্নামী তোমরা চিরদিন জাহান্নামে থাক তোমাদের আর কোনদিন মরণ হবে না। তারপর রাসূল(সা.) অত্র আয়াতটি পড়লেন, وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ الْحَسْرَةِ إِذْ قُضِيَ الْأَمْرُ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ وَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ তারপর হাতের ইশারা করে বললেন, দুনিয়াবাসীরা চায় অসাবধান থাকতে (তিরমিযী হা/৩১৫৬)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا صَارَ اَهْلُ الْجَنَّةِ اِلَى الْجَنَّةِ وَاَهْلُ النَّارِ اِلَى النَّارِ جِئَ بِالْمَوْتِ حَتَّى يَجْعَلَ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ يُذْبَحُ ثُمَّ يُنَادِىْ مُنَادِيًا اَهْلَ الْجَنَّةِ لَامَوْتَ وَيَااَهْلَ النَّارِ لَا مَوْتَ فَيَزْدَادُ اَهْلُ الْجَنَّةِ فَرْحًا اِلَى فَرْحِهِمْ وَيَزْدَادُ اَهْلَ النَّارِ حُزْنًا اِلَى حُزْنِهِمْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, যখন জান্নাতবাসীগন জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তখন মরণকে জাহান্নাম ও জান্নাতের মধ্যে উপস্থিত করে তাকে জবেহ করা হবে। অতঃপর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে, হে জান্নাতবাসীগণ! এখানে তোমাদের আর কোন মরণ নেই। হে জাহান্নামবাসীরা! এখানে আর মরণ নেই। এতে জান্নাতীদের আনন্দের পর আনান্দ আরও বেড়ে যাবে, আর জাহান্নামীদের দুশ্চিন্তা আরও বেশি হয়ে যাবে (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৫২)।</div>
<div>
<br /></div>
</div>
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiXHl4V9o2Lwn5nowyjDZ7moXiDWwxjrd9V5UqvO1WsehAgrgDnjek_qJorLuggXgXcbNy9hCMR2z6CNZll_apUgmuBwkIFXvpheTpaR3O5M9PhjSGC8MwUYfQo2cP_neU9NyvOOo4xYsg/s1600/Jahannamer+ajab%252C%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AC.png" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="জাহান্নামের আযাব," border="0" data-original-height="200" data-original-width="300" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiXHl4V9o2Lwn5nowyjDZ7moXiDWwxjrd9V5UqvO1WsehAgrgDnjek_qJorLuggXgXcbNy9hCMR2z6CNZll_apUgmuBwkIFXvpheTpaR3O5M9PhjSGC8MwUYfQo2cP_neU9NyvOOo4xYsg/s1600/Jahannamer+ajab%252C%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AC.png" title="জাহান্নামের বর্ননা," /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">জাহান্নামের বর্ননা,</td></tr>
</tbody></table>
<h3 style="height: 0px; text-align: left;">
<br /></h3>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-82227313328678169662018-12-15T20:39:00.000+06:002018-12-26T14:29:43.512+06:00জান্নাত কেমন হবে, কুরআন ও হাদিসের আলোকে জান্নাতের বিস্তারিত বর্ননা,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="height: 0px; text-align: left;">
জান্নাতে কি কি নেয়ামত থাকবে ও জান্নাত সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ননা, এবং জান্নাতের হুরদের বর্ননাঃ</h3>
<div>
<br /></div>
<div>
<div>
মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যবান ওরা, যারা মরণের পর জান্নাত লাভ করবে। আর সবচেয়ে হতভাগ্য ওরাই, যারা মরণের পর জাহান্নামে যাবে। জান্নাত এক অনাবিল শান্তির জায়গা। জান্নাতের শান্তির পূর্ণ বিবরণ দেওয়া মানুষের সাধ্যের বাহিরে। তাই জান্নাতের কিছু নমুনা সহ আনুসঙ্গিক বিষয়াদিও বর্ণনা পেশ করা হ’ল।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
জান্নাতীদের বর্ণনায় মহান আল্লাহ বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
اُولَئِكَ لَهُمْ رِزْقٌ مَعْلُوْمٌ فَوَاكِهُ وَهُمْ مُّكْرَمُوْنَ فِىْ جَنَّتِ النَّعِيْمِ عَلَى سُرُرٍ مُّتَقَابِلِيْنَ يُطَافُ عَلَيْهِم بِكَأْسٍ مِن مَّعِينٍ بَيْضَاءَ لَذَّةٍ لِّلشَّارِبِيْنَ لَافِيْهَا غَوْلٌ وَلَاهُمْ عَنْهَايُنْزَفُوْنَ وَعِنْدَهُمْ قَاصِرَاتِ الطَّرْفِ عِيْنٌ كَأَنَّ هُنَّ بَيْضٌ مَّكْنُوْن.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘তাদের জন্যই রয়েছে নির্ধারিত রুযী ফল-মূল এবং তারা সম্মানিত। তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতের বাগান সমূহ। তারা মুখোমুখি হয়ে আসনে আসীন থাকবে। তাদেরকে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ পানপাত্র। তা হবে উজ্জ্বল পানীয় পানকারীদের জন্য সুপেয় সুস্বাদু। তার দরুন তাদের দেহে কোন ক্ষতি হবে না এবং তাদের জ্ঞান বুদ্ধিও নষ্ট হবে না। তাদের নিকট দৃষ্টি সংরক্ষণকারী সুন্দর চক্ষু বিশিষ্ট নারীগণ থাকবে। তারা এমন স্বচ্ছ যেমন ডিমের খোসার নীচে লুকানো ঝিল্লি’ (ছাফফাত ৪১-৪৯)। জান্নাতে মানুষের জন্য রুযী রয়েছে। তাদের জন্য ফল বাগান রয়েছে। তারা হুরদের নিয়ে মুখোমুখি উঁচু আসনে বসে থাকবে। তাদের সামনে উৎকৃষ্টমানের শরাব পরিবেশন করা হবে। তাতে বিবেকের কোন ক্ষতি হবে না। তাদের উপভোগের জন্য হরিণ নয়না সুদর্শনা নারীগণ থাকবেন। তারা এত সচ্ছ ও নরম যেমন ডিমের খোসার নীচে লুকানো ঝিল্লি।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
শরবের এ পানপাত্র নিয়ে ঘুরতে থাকবে সুশ্রী বালকেরা। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, وَيَطُوْفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُونٌ ‘তাদের খেদমতের জন্য ঘুরতে থাকবে তাদের জন্য নিযুক্ত সেবক বালক। তারা যেন লুকানো মুক্তা’ (তুর ২৪)। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُّخَلَّدُونَ إِذَا رَأَيْتَهُمْ حَسِبْتَهُمْ لُؤْلُؤًا مَّنثُورًا ‘তাদের সেবার জন্য ঘুরতে থাকবে এমন সব ছেলে যারা সব সময় বালকই থাকবে। তোমরা তাদেরকে দেখলে বিক্ষিপ্ত মণি-মুক্তা বলেই মনে করবে’ (দাহর ১৯)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ادْخُلُوا الْجَنَّةَ أَنتُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ تُحْبَرُونَ يُطَافُ عَلَيْهِم بِصِحَافٍ مِّن ذَهَبٍ وَأَكْوَابٍ وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ الْأَنفُسُ وَتَلَذُّ الْأَعْيُنُ وَأَنتُمْ فِيهَا خَالِدُونَ وَتِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ لَكُمْ فِيْهَا فَاكِهَةٌ كَثِيْرَةٌ مِّنْهَا تَأْكُلُوْنَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘তোমরা এবং তোমাদের স্ত্রীরা জান্নাতে প্রবেশ কর তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে দেওয়া হবে। তাদের সামনে সোনার থালা ও পানপাত্রসমূহ পরিবেশন করা হবে এবং মন ভুলানো ও দৃষ্টির পরিতৃপ্তকারী জিনিস সমূহ সেখানে থাকবে। তাদেরকে বলা হবে এখন তোমরা চিরদিন এখানেই থাক। তোমরা পৃথিবীতে যে নেক আমল করেছিলে সে সব আমলের দরুন তোমরা এ জান্নাতের উত্তরাধিকারী হয়েছ। তোমাদের জন্য এখানে প্রচুর ফল-ফলাদী রয়েছে যা তোমরা খাবে’ (যুখরূফ ৭০-৭৩)। আল্লাহ তাআ‘লা অন্যত্র বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ فِيهَا أَنْهَارٌ مِّن مَّاء غَيْرِ آسِنٍ وَأَنْهَارٌ مِن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ وَأَنْهَارٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشَّارِبِينَ وَأَنْهَارٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَمَغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘মুত্তাকী লোকদের জন্য যে জান্নাতের ওয়াদা করা হয়েছে, তার পরিচয় তো এই যে, তাতে স্বচ্ছ ও সুমিষ্ট পানির ঝরণাধারা প্রবাহমান রয়েছে। এমন দুধের ঝর্ণাধারা প্রবাহমান রয়েছে যার স্বাদ ও বর্ণ কখনও বিকৃত হবে না। এমন পানির ঝর্ণাধারা প্রবাহমান থাকবে, যা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু ও সুপেয় হবে। আর এমন মধুর ঝর্ণাধারা প্রবাহমান রয়েছে, যা অতীব স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন। সেখানে তাদের সর্ব প্রকারের ফল থাকবে এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রয়েছে ক্ষমা’ (মুহাম্মাদ ১৫)। আল্লাহ আরো বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ جَنَّتَانِ، ذَوَاتَا اَفْنَانٍ، فِيْهِمَا عَيْنَانِ تَجْرِيَانِ، فِيْهِمَا مِنْ كُلِّ فَاكِهَةٍ زَوْجَانٌ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘আর যারা আপন প্রতিপালকের সামনে আসার ব্যাপারে ভয় পোষণ করে তাদের প্রত্যেকের জন্যই দু’টি করে বাগান রয়েছে’ (রহমান ৪৭)। উভয় বাগানই সবুজ-সতেজ ডাল-পালায় পরিপূর্ণ (রহমান ৪৯)। দু’টি বাগানেই ঝর্ণাধারা সদাসর্বদা প্রবাহমান রয়েছে (রহমান ৫১)। উভয় বাগানের ফলসমূহের অবস্থা ভিন্ন ভিন্ন হবে (রহমান ৫২)। আল্লাহ আরো বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
مُتَّكِئِينَ عَلَى فُرُشٍ بَطَائِنُهَا مِنْ إِسْتَبْرَقٍ وَجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ- فِيهِنَّ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ- كَأَنَّهُنَّ الْيَقُوْتُ وَالْمَرْجَانُ- وَمِنْ دُوْنِهِمَا جَنَّتَانِ- مُدْهَامَّتاَنِ- فِيْهِمَا عَيْنَانِ نَضَّاخَتَانِ- فِيْهِمَا فَاكِهَةٌ وَّنَخْلٌ وَّرُمَّانٌ- فِيْهِنَّ خَيْرَاتٌ حِسَانٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘জান্নাতী লোকেরা এমন শয্যার উপর ঠেস দিয়ে বসে থাকবে যার আবরণ মোটা রেশমের তৈরী হবে আর বাগানের ডাল-পালা ঝুঁকে নুয়ে থাকবে (রহমান ৫৪)। এ অফুরন্ত নিয়ামত সমূহের মধ্যে লজ্জাবনত নয়না ললনারাও থাকবে। তাদেরকে এ জান্নাতী লোকদের পূর্বে কোন মানুষ বা জ্বিন স্পর্শ করেনি (রহমান ৫৬)। তারা এমনই সুন্দরী রূপসী যেমন হীরা ও মণি-মুক্তা (রহমান ৫৮)। জান্নাতী লোকদের পূর্ববর্তী দু’টি বাগান ছাড়াও আরও দু’টি বাগান দেওয়া হবে, যা হবে ঘন-সন্নিবেশিত সবুজ-শ্যামল ও সতেজ। দু’টি বাগানে দু’টি উৎক্ষিপ্তমান ঝর্ণাধারা থাকবে (রহমান ৬৬)। তাতে বিপুল পরিমাণ ফল, খেজুর ও আনার থাকবে। এসব নিয়ামতের মধ্যেই থাকবে স্বচরিত্রের অধিকারী সুদর্শনা স্ত্রীগণ (রহমান ৭০)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
حُورٌ مَّقْصُورَاتٌ فِي الْخِيَامِ- لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَانٌّ- مُتَّكِئِينَ عَلَى رَفْرَفٍ خُضْرٍ وَعَبْقَرِيٍّ حِسَانٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
তাবুসমূহের মধ্যে সুরক্ষিত থাকবে বড় চোখবিশিষ্ট শ্বেত সুন্দরী নারীগণ। তাদেরকে কোন মানুষ বা জ্বিন স্পর্শ করেনি (রহমান ৭৪)। তারা অস্বাভাবিক উৎকৃষ্টমানের উত্তম সবুজ গালিচা এবং সুন্দর সুসজ্জিত শয্যায় হেলান দিয়ে অবস্থান করবে (রহমান ৭৭)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
اِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِىْ مَقَامٍ اَمِيْنٍ فِىْ جَنَّتٍ وَعُيُوْنٍ يَلْبَسُوْنَ مِنْ سُنْدُسٍ وَّاِسْتَبْرَقٍ مُّتَقَابِلِيْنَ كَذَلِكَ وَزَوَّجْنَاهُمْ بِحُوْرٍ عِيْنٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘আল্লাহভীরু লোকেরা দুশ্চিন্তা ও ভয়ভীতি মুক্ত নিরাপদ ও শান্তিময় স্থানে থাকবে। তা হবে বাগ-বাগিচা ও ঝর্ণাধারা পরিবেষ্টিত জায়গা। চিকন রেশম ও মুখমলের পোশক পরে সামনা-সামনি আসীন হবে। এটাই হবে তাদের জাঁকজমকের অবস্থা। সুন্দরী রুপসী হরিণ নয়না নারীদেরকে তাদের স্ত্রী করে দিবে’ (দুখান ৫১-৫৪)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وَالسَّابِقُونَ السَّابِقُونَ اُولَئِكَ الْمُقَرَّبُوْنَ فِىْ جَنَّتٍ النَّعِيْمِ ثُلَّةٌ مِّنَ الْأَوَّلِينَ وَقَلِيْلٌ مِنَ الْاَخِرِيْنَ عَلىَ سُرُرٍ مَوْضُوْنَةٍ مُتَّكِئِينَ عَلَيْهَا مُتَقَابِلِينَ يَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُّخَلَّدُونَ بِأَكْوَابٍ وَأَبَارِيقَ وَكَأْسٍ مِّن مَّعِينٍ لَايُصَدَّعُوْنَ عَنْهَا وَلَا يُنْزَفُوْنَ وَفَاكِهَةٍ مِّمَّا يَتَخَيَّرُونَ وَلَحْمِ طَيْرٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ وَحُوْرٍ عِيْنٍ كَأَمْثَالٍ اللُّؤْلُوٍ الْمَكْنُوْنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنُ لَايَسْمَعُوْنَ فِيْهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيْمًا اِلَّا قِيْلًا سَلَامًا سَلَامَا وَأَصْحَابُ الْيَمِيْنِ مَاأَصْحَابُ الْيَمِيْنِ فِىْسِدْرٍ مَّخْضُوْدٍ وَطَلْحٍ مَنْضُوْدٍ وَظِلِّ مَمْدُوْدٍ وَمَاءٍ مَسْكُوْبٍ وَفَاكِهَةٍ كَثِيْرَةٍ لَاَمَقْطُوْعَةٍ وَّلَا مَمْنُوْعَةٍ وَفُرُشٍ مَّرْفُوْعَةٍ اِنَّا أَنْشَائْنَاهُنَّ اِنْشَاءَ فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا عُرُبًا أَتْرَابًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘আর অগ্রবর্তী লোকেরা তো সব ব্যাপারেই অগ্রবর্তী থাকবে। তারাই তো সান্নিধ্য লাভকারী লোক। তারা নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাতে অবস্থান ও বসবাস করবে। পূর্ববর্তী লোকদের মধ্যে বেশিসংখ্যক আর পরবর্তী লোকদের মধ্যে কমসংখ্যক, তারা মণিমুক্তা খচিত আসন সমূহের উপর হেলান দিয়ে মুখোমুখি হয়ে বসে থাকবে। চির কিশোরীগণ তাদের সামনে প্রবাহমান ঝর্ণার সুরায় ভরা পানপাত্র পরিবেশন করবে। হাতলধারী বড় বড় সুরাভান্ড, হাতলবিহীন পানপাত্র নিয়ে দৌড়া দৌড়ি করতে থাকবে। এসব পানীয় পান করে তাদের মাথা ঘুরবে না, তাদের বিবেক বুদ্ধিও লোপ পাবে না। আর চির কিশোরীগণ তাদের সামনে নানা রকমের সুস্বাদু ফল পরিবেশন করবে। যেন ইচ্ছামত নিতে পারে। আর তাদের জন্য সুন্দর চক্ষুধারী নারীগণও থাকবে। তারা লুকিয়ে রাখা মুক্তার মত সুশ্রী, সুন্দরী হবে। এসব কিছু তাদের সেই আমলের শুভ প্রতিফল যা তারা দুনিয়ার জীবনে করেছিল। তারা সেখানে কোন বাজে কথা বা পাপের কথা শুনতে পাবে না। যা কথা হবে তা ঠিক ঠিক ও যথাযথ হবে। আর ডান বাহুর লোকেরা, ডান বাহুর লোকদের সৌভাগ্যের কথা আর কি বলা যায়। তাদের জন্য থাকবে কাটাবিহীন কুল বৃক্ষসমূহ, থরে থরে সাজানো কলা সমূহ, বিস্তীর্ণ এলাকাব্যাপী ছায়া, সর্বদা প্রবাহমান পানি, আর প্রচুর পরিমাণে ফল থাকবে। যা কোনদিন শেষ হবে না, খেতে কোন বাধা বিপত্তি ঘটবে না। তারা উচ্চ আসনসমূহে সমাসীন থাকবে। তাদের স্ত্রীগণকে আমি বিশেষভাবে সম্পূর্ণ নতুন করে সৃষ্টি করব এবং তাদেরকে কুমারী করে দিব। তারা নিজেরদের স্বামীদের প্রতি থাকবে আসক্ত। আর তারা বয়সে সবাই সমান হবে’ (ওয়াক্বিয়া ১০-৩৭)। (أبْكَارَ) শব্দটি মহিলাদের অতীব উত্তম নারীসুলভ সৌন্দর্য-বৈশিষ্ট্য বুঝাবার জন্য ব্যবহার হয়। অর্থাৎ এমন সব মহিলাকে বুঝাই যারা নারীত্বে উত্তম, উন্নতমান, শুভ আচার-আচরণ মিষ্ট-ভদ্র কথা-বার্তা ও নারীসূলভ প্রেম-ভালবাসা ও হৃদয়াবেগে ভরপুর। যারা নিজেদের স্বামীগণকে মন-প্রাণ দিয়ে পেতে চায়, কামনা করে, ভালবাসে এবং তাদের স্বামীরাও তাদের প্রতি অকৃত্রিম প্রেমিক।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وَجَزَاهُم بِمَا صَبَرُوا جَنَّةً وَحَرِيرًا مُتَّكِئِينَ فِيهَا عَلَى الْأَرَائِكِ لَا يَرَوْنَ فِيهَا شَمْسًا وَلَا زَمْهَرِيرًا وَدَانِيَةً عَلَيْهِمْ ظِلَالُهَا وَذُلِّلَتْ قُطُوفُهَا تَذْلِيلًا وَيُطَافُ عَلَيْهِم بِآنِيَةٍ مِّن فِضَّةٍ وَأَكْوَابٍ كَانَتْ قَوَارِيرَا قَوَارِيرَ مِن فِضَّةٍ قَدَّرُوهَا تَقْدِيرًا وَيُسْقَوْنَ فِيهَا كَأْسًا كَانَ مِزَاجُهَا زَنجَبِيلًا عَيْنًا فِيهَا تُسَمَّى سَلْسَبِيلًا ويطوف عليهم وِلْدَانٌ مُّخَلَّدُونَ إِذَا رَأَيْتَهُمْ حَسِبْتَهُمْ لُؤْلُؤًا مَّنثُورًا وَإِذَا رَأَيْتَ ثَمَّ رَأَيْتَ نَعِيمًا وَمُلْكًا كَبِيرًا عَالِيَهُمْ ثِيَابُ سُندُسٍ خُضْرٌ وَإِسْتَبْرَقٌ وَحُلُّوا أَسَاوِرَ مِن فِضَّةٍ وَسَقَاهُمْ رَبُّهُمْ شَرَابًا طَهُورًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘আল্লাহ তাদের ধৈর্যের বিনিময়ে তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী পোশাক দান করবেন। সেখানে তারা তাদের উচ্চ আসন সমূহে ঠেস দিয়ে বসবে। তারা সেখানে সূর্যের তাপ পাবে না, শীতের প্রকোপও অনুভব করবে না। জান্নাতের গাছের ছায়া তাদের উপর অবনত থাকবে। আর ফলমূল তাদের অধিনে থাকবে, তারা ইচ্ছামত তা পাড়তে পারবে। তাদের সামনে রৌপ্য নির্মিত পাত্র ও কাঁচের পিয়ালা পরিবেশন করানো হবে। সে কাঁচ পাত্র ও রৌপ্য জাতীয় হবে। আর সে পানপাত্র গুলি জান্নাতের সেবক চির বালকেরা পরিমাণমত ভর্তি করে রাখবে। তাদেরকে সেখানে এমন সুরা পাত্র পরিবেশন করানো হবে, যাতে শুকনা আদার সংমিশ্রণ থাকবে। এ হবে জান্নাতের একটি ঝর্ণা যাকে সালসাবীলও বলা হয়। তাদের সেবার জন্য এমন সব বালক ছুটা-ছুটি করতে থাকবে, যারা চিরকালই বালক থাকবে। তোমরা তাদেরকে দেখলে মনে করবে এরা যেন ছড়িয়ে দেয়া মুক্তা। তোমরা সেখানে যেদিকেই দেখবে শুধু নিয়ামত আর নিয়ামত দেখতে পাবে। দেখতে পাবে এক বিরাট সম্রাজ্যের সাজ-সরঞ্জাম, তাদের উপর চিকন রেশমের সবুজ পোশক এবং মখমলের কাপড় থাকবে। তাদেরকে রৌপ্যের কংকন পরানো হবে এবং তাদেরকে তাদের প্রতিপালক পবিত্র পরিচ্ছন্ন শরাব পান করাবেন’ (দাহর ১২-২১)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
اِنَّ لِلْمُتَّقِيْنَ مَفَازًا حَدَائِقَ وَأَعْنَابًا وَكَوَاعِبَ اَترَابًا وَكَأْسًا دِهَاقًا لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا كِذَّابًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘নিঃসন্দেহে মুত্তাকী লোকদের জন্য রয়েছে একটি সাফল্যের স্থান এবং বাগ-বাগিচা, আংগুর, সমবয়স্কা নব্য যুবতীগণ এবং উচ্ছাসিত পানপাত্রও। সেখানে তারা কোন অসার অর্থহীন ও মিথ্যা কথা শুনতে পাবে না’ (নাবা ৩১-৩৫)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
إنَّ الْاَبْرَارَ لَفِىْ نَعِيْمٍ عَلىَ الْاَرَائِكِ يَنْظُرُوْنَ تَعْرِفُ فِىْ وُجُوْهُهِمْ نَضْرَةً النَّعِيْمِ يُسْقَوْنَ مِنْ رَّحِيْقٍ مَّخْتُوْمٍ خِتَامُهُ مِسْكٌ وَفِىْ ذَلِكَ فَلْيَتَنَافَسِ الْمُتَنَافِسُوْنَ وَمِزَاجُهُ مِنْ تَسْنِيْمٍ عَيْنًا يَشْرَبُ بِهَا الْمُقَرَّبُوْنَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘নিঃসন্দেহে নেক লোকেরা অফুরন্ত নিয়ামতের মধ্যে থাকবে। উচ্চ আসনে সমাসীন হয়ে দৃশ্যাবলী অবলকন করবে। তাদের মুখে তোমরা স্বাচ্ছন্দ দেখতে পাবে। তাদেরকে মুখরোচক উৎকৃষ্ট মানের শরাব পান করতে দেওয়া হবে। তার উপর মিশক এর মোহর লাগানো থাকবে। যে সব লোক অন্যদের উপর প্রতিযোগিতায় জয়ী হ’তে চায় তারা যেন এই জিনিসটি লাভের প্রতিযোগিতায় জয়ী হ’তে চেষ্টা করে। সে শরাবে তাসনীম মিশ্রিত থাকবে, এটা একটা ঝর্ণা, নৈকট্য লাভকারী লোকেরা এ শরাব পান করবে’ (মুতাফফিফিন ২২-২৮)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاعِمَةٌ لِسَعْيِهَا رَاضِيَةٌ فِىْ جَنَّةٍ عَالِيَةٍ لَاتَسْمَعُ فِيْهَا لَاغِيَةٌ فِيْهَا عَيْنٌ جَارِيَةٌ فِيهَا سُرُرٌ مَّرْفُوعَةٌ وَأَكْوَابٌ مَّوْضُوعَةٌ وَنَمَارِقُ مَصْفُوفَةٌ وَزَرَابِيُّ مَبْثُوثَةٌ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘সেদিন কতিপয় লোকের মুখ উজ্জ্বল ঝকঝকে হবে, তারা নিজেদের চেষ্টা-সাধনার জন্য সন্তুষ্টচিত্ত হবে। সুউচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন জান্নাতে অবস্থান করবে। সেখানে তারা কোন বাজে কথা শুনবে না। সেখানে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান থাকবে। সমুন্নত আসনসমূহ থাকবে। পানপাত্রসমূহ সুসজ্জিত থাকবে। গির্দা বালিশ সমূহ সারিবদ্ধ থাকবে এবং সুদৃশ্য মখমলের বিছানা পাতানো থাকবে’ (গাশিয়াহ ৮-১৬)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللهُ تَعَالَى اَعَدَدْتُ لِعِبَادِىْ الصَّالِحِيْنَ مَالَا عَيْنٌ رَأَتْ وَلَا اُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন জিনিস প্রস্তত করে রেখেছি, যা কখনও কোন চক্ষু দেখেনি কোন কান শুনেনি এবং কোন অন্তর কখনও কল্পনাও করেনি (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩৭১)। অত্র হাদীছের স্পষ্ট বিবরণ দেওয়া খুব কঠিন। কারণ আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে মানুষের ভোগ-বিলাস আরাম-আয়েশের জন্য এমন কিছু ব্যবস্থা করেছেন যা মানুষের চোখ কোন দিন দেখেনি। অথচ মানুষ পৃথিবীর অনেক কিছু দেখেছে। মানুষের কান কোনদিন শুনেনি। অথচ মানুষের কান অনেক নতুন পুরাতন রাজাধিরাজের ভোগ-বিলাসের কাহীনী শুনেছে। মানুষের অন্তর কোনদিন পরিকল্পনা করে নি। অথচ মানুষের অন্তরে অনেক কিছুই পরিকল্পনা হয়। জান্নাত এ সকল পরিকল্পনার চেয়েও ভিন্ন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَوْضِعُ سَوْطٍ فِى الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ‘জান্নাতে একটি চাবুকের সমপরিমাণ জায়গা গোটা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩৭২)। জান্নাতের সাথে পৃথিবীর আসলেই কোন তুলনা হয় না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غُدْوَةٌ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ اَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِّنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا وَلَوْ اَنَّ اِمْرَأةً مِنَ نِّسَاءِ اَهْلِ الْجَنَّةِ اِطَّلَعَتْ اِلَى الْاَرْضِ لَاضَاءَتْ مَا بَيْنَهُمَا وَلَمَلَاَتْ مَابَيْنَهُمَا رِيْحًا وَلَنَصِيْفُهَا عَلَى رَأْسِهَا خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আল্লাহর পথে এক সকাল এক সন্ধ্যা ব্যয় করা দুনিয়া ও তার সমস্ত সম্পদ হ’তে উত্তম। যদি জান্নাতের কোন নারী পৃথিবীতে উঁকি দেয় তবে গোটা পৃথিবী তার রূপের ছটায় আলোকিত হয়ে যাবে এবং আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থানসমূহ সুগন্ধিতে পরিণত হবে। এমনকি জান্নাতের নারীদের মাথার ওড়না গোটা দুনিয়া ও তার সব কিছুর চেয়ে উত্তম (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩৭৪)। জান্নাতের কোন কিছুর সাথে পৃথিবীর কোন বস্ত্তর তুলনা চলে না। তাই নবী করীম(সা.) ইহকাল ও পরকালের তুলনা পেশ করে বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ بْنِ شَدَّادٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ وَاللهِ مَا الدُّنْيَا فِى الْاَخِرَةِ اِلَّا مِثْلَ مَايَجْعَلُ اَحَدُكُمْ اِصْبَعَهُ فِى الْيَمِّ فَلْيَنْظُرْ بِمَ يَرْجِعُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
মুস্তাওরিদ ইবনে শাদ্দাদ (রা.) বলেন, আমি রাসূল(সা.) -কে বলতে শুনেছি আল্লাহর কসম! পরকালের তুলনায় দুনিয়ার উদাহরণ হ’ল যেমন তোমাদের কেউ সাগরের মধ্যে নিজের একটি আঙ্গুল ডুবানোর পর লক্ষ্য করে দেখুক আঙ্গুল কি পরিমাণ পানি নিয়ে আসল (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৫৬)। অত্র হাদীছে বুঝানো হয়েছে আঙ্গুলের পানি এবং সাগরের পানি কম-বেশী হওয়ার ব্যাপারে তুলনা যেমন ইহকাল ও জান্নাতের তুলনা তেমন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ جَابِرٍ اَنَّ رَسُوْلَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ بِجَدْىٍ اَسَكَّ مَيِّتٍ فَقَالَ اَيُّكُمْ يُحِبُّ اَنَّ هَذَا لَهُ بِدِرْهَمٍ فَقَالَ مَا نُحِبُّ اَنَّهُ لَنَابِشَيْئٍ قَالَ فَوَاللهِ لَلدُّنْيَا اَهْوَنُ عَلَى اللهِ مِنْ هَذَا عَلَيْكُمْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
জাবির (রা.) হ’তে বর্ণিত, রাসূল(সা.) একটি কানকাটা ছোট মরা ছাগলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, তোমাদের এমন কেউ আছে যে, ছাগলটি এক দিরহামের বিনিময়ে নিতে পসন্দ করে। ছাহাবীগণ বললেন, আমরা তো কোন কিছুর বিনিময়েই নিতে পসন্দ করি না। তখন নবী করীম(সা.) বললেন, আল্লাহর কসম! তোমাদের কাছে এ মরা কানকাটা বাচ্চা ছাগলটি যত তুচ্ছ দুনিয়া আল্লাহর কাছে তার চাইতে অনেক গুণ বেশি তুচ্ছ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৩০)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ سَهْلٍ بْنِ سَعْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْكَانَتِ الدُّنْيَا تَعْدِلُ عِنْدَ اللهِ جَنَاحُ بَعُوْضَةٍ مَا سَقَى كَافِرًا مِنْهَا شُرْبَةً.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
সাহ্ল ইবনে সা‘দ (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ‘যদি দুনিয়ার মূল্য আল্লাহর কাছে মাছির একটি পাখার সমমূল্য হত, তা‘হলে তিনি কোন কাফিরকে এক ঢোকও পানি পান করতে দিতেন না’ (আহমাদ, মিশকাত হা/৪৯৫০)। পৃথিবীর মূল্য একটি কানকাটা মরা বাচ্চা ছাগলের সমান নয়, আঙ্গুলের এক ফোটা পানির সমানও নয়, এমন কি একটি মাছির পাখার সমানও নয়। যা উপরের হাদীছগুলো প্রমাণ করে। অতএব, আল্লাহর কাছে পৃথিবীর কোন মূল্য নেই যাকে আমরা জীবনের সর্বক্ষেত্রে অধিক প্রাধান্য দিয়েছি। অথচ জান্নাত একটি চিরস্থায়ী ভোগবিলাসের অতীব উত্তম স্থান।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ مُوْسَى قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لِلْمُؤْمِنِ فِى الْجَنَّةِ لَخِيْمَةٌ مِنْ لُؤْلُؤَةٍ وَاحِدَةٍ مَجُوْفَةٍ عَرْضُهَا سِتُّوْنَ مَيْلًا وَفِى رِوَايَةٍ طُوْلُهَا سِتُّوْنَ مَيْلًا فِىْ كُلِّ زَاوِيَةٍ مِنْهَا اَهْلٌ مَايَرَوْنَ الْاَخَرِيْنَ يَطُوْفُ عَلَيْهِمُ الْمُؤْمِنُ وَجَنَّتَانِ مِنْ فِضَّةٍ اَاَنِيَتُهُمَا وَمَا فِيْهِمَا وَجَنَّتَانِ مِنْ ذَهَبٍ اَنِيَتُهُمَا وَمَا فِيْهِمَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু মূসা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতে মুমিনদের জন্য মুক্তা দ্বারা তৈরী একটি তাঁবু থাকবে, যার মধ্যস্থল হবে ফাঁকা। তার প্রশস্ততা ষাট মাইল। অন্য বর্ণনায় আছে তার দৈর্ঘ্যতা ষাট মাইল। তার প্রত্যেক কোণে জান্নাতীরা থাকবে। এক কোণের লোক অপর কোণের লোককে দেখতে পাবে না। ঈমানদারগণ তাদের নিকট যাতায়াত করবে। দু’টি জান্নাত হবে রূপার। তার ভিতরের পাত্র ও অন্যান্য সব কিছু হবে রূপার এবং অপর দু’টি জান্নাত হবে সোনার। তার পানপাত্র ও ভিতরে সব কিছু হবে সোনার (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৭৫)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ فِى الْجَنَّةِ شَجَرَةٌ يَسِيْرُ الرَّاكِبُ فِىْ ظِلِّهَا مِائَةَ عَامٍ لَايَقْطَعُهَا وَلَقَابُ قَوْسِ اَحَدِكُمْ فِى الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهُ الشَّمْسُ اَوْ تَغْرِبُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতে এমন একটি বড় গাছ আছে, যদি কোন সওয়ারী তার ছায়ায় একশত বছর ভ্রমণ করে তবুও তার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না। জান্নাতে তোমাদের কারো একটি ধনুকের সমপরিমাণ জায়গাটাও সূর্য যার উপর উঠে ও ডুবে তার চেয়ে উত্তম (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৭৪)। হাদীছে বুঝা গেল জান্নাতের ধনুকের সমপরিমাণ জায়গা গোটা পৃথিবীর চেয়ে উত্তম।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِى الْجَنَّةِ مِائَةُ دَرَجَةٍ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْاَرْضِ وَالْفِرْدَوْسُ اَعْلَاهَا دَرَجَةً مِنْهَا تَفَجَّرُ اَنْهَارُ الْجَنَّةِ الْاَرْبَعَةُ وَمِنْ فَوْقِهَا يَكُوْنُ الْعَرْشُ فَاذَا سَأَلَتُمُ اللهَ فاسْئَلُوْهَا الْفِرْدَوْسَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ওবাদা ইবনে ছমেত (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতের স্তর হবে একশতটি। প্রত্যেক দু’স্তরের মাঝখানের ব্যবধান হবে আসমান ও জমিনের দূরত্বের সমান। জান্নাতুল ফেরদাউসের স্তর হবে সবচেয়ে উপরে। সেখান থেকে প্রবাহিত রয়েছে চারটি ঝরণাধারা এবং তার উপর আল্লাহর আরশ। সুতরাং তোমরা যখনই আল্লাহর কাছে চাইবে তখন ফেরদাউস চাইবে (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৭৬)। অত্র হাদীছে যে চারটি ঝরণার কথা রয়েছে তা পানি, মধু, দুধ ও শরবের ঝরণা হ’তে পারে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ فِى الْجَنَّةِ لَسُوْقًا يَأْتُوْنَهَا كُلَّ جُمْعَةٍ تَهُبُّ رِيْحُ الشِّمَالِ فَتَحَثُّوْا فِىْ وُجُوْهِهِمْ وَثِيَابِهِمْ فَيَزْدَادُوْنَ حُسْنًا وَجَمَالًا فَيَرْجِعُوْنَ اِلَى اَهْلِيْهِمْ وَقَدِ ازْدَادُوْا حُسْنًا وَجَمَالًا فَيَقُوْلُ لَهُمْ اَهْلُوْهُمْ وَاللهِ لَقَدِ ازْدَدَتُمْ بَعْدَنَا حُسْنًا وَجَمَالًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতে একটি বাজার আছে। প্রত্যেক জুম‘আর দিন জান্নাতীরা সেখানে একত্রিত হবে। তখন উত্তর দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হবে এবং সে বাতাস তাদের মুখে ও পোশাকে সুগন্ধি নিক্ষেপ করবে। ফলে তাদের রূপ আরও বেশি হয়ে যাবে। অতঃপর তারা যখন বর্ধিত সুগন্ধি ও সৌন্দর্য অবস্থায় নিজের স্ত্রীদের কাছে যাবে তখন স্ত্রীগণ তাদেরকে বলবে, আল্লাহর কসম! আপনারা তো আমাদের অবর্তমানে সুগন্ধি ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ফেলেছেন। এর উত্তরে তারা বলবে আল্লাহর কসম! আমাদের অবর্তমানে তোমাদের রূপ-সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে (মুসলিম,বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৭৭)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জান্নাতে বাজার থাকবে জান্নাতীরা জুম’আর দিন বাজারে যাবে। বাজারে কোন ক্রয়-বিক্রয় হবে না। সেখানে গেলে জান্নাতীদের রূপ বৃদ্ধি পাবে। এ সময় তাদের স্ত্রীগণ যারা বাড়ীতে আছে তাদেরও রূপ বেশি হয়ে যাবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اَوَّلَ زُمْرَةٍ يَدْخُلْوَنَ الْجَنَّةَ صُوْرَةَ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ثُمَّ الّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ كَاَشَدِّ كَوْكَبٍ دُرِّىٍّ فِى السَّمَاءِ اِضَاءَةً قُلُوْبُهُمْ عَلَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ لَااِخْتِلَافَ بَيْنَهُمْ وَلَاتَبَاغُضَ لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ مِنَ الْحُوْرِ الْعِيْنِ يُرَى مُخُّ سُوْقِهِنَّ مِنْ وَّرَاءِ الْعَظْمِ واللَّحْمِ مِنَ الْحُسْنِ يُسَبِّحُوْنَ اللهَ بُكْرَةً وَعَشِيًّا لَايَسْقُمُوْنَ وَلَايَبُوْلُوْنَ وَلَايَتَغَوَّطُوْنَ وَلَايَتْفُلُوْنَ وَلَا يَمْتَخِطُوْنَ اَنِيَتُهُمُ الذَّهَبُ وَالْفِضَّةُ وَاَمْشَاطُهُمُ الذَّهَبُ وَوَقُوْدُ مَجَامِرِهِمُ الْاُلُوَّةُ وَرَشْحُهُمْ الْمِسْكُ عَلَى خُلُقِ رَجُلٍ وَاحِدٍ عَلَى صُوْرَةِ اَبِيْهِمْ اَدَمَ سِتُّوْنَ ذِرَاعًا فِى السَّمَاءِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, প্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে, তারা ১৫ দিনে চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বল ও সুন্দর রূপ ধারণ করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তারা হবে আকাশের তারকার ন্যায় ঝকঝকে। জান্নাতীদের সকলের অন্তর এক ব্যক্তির অন্তরের ন্যায় হবে। তাদের মধ্যে কোন মতবিরোধ থাকবে না এবং হিংসা বিদ্বেষও থাকবে না। তাদের প্রত্যেকের জন্য বিশেষ হুরদের মধ্য থেকে দু’জন দু’জন করে স্ত্রী থাকবে। বেশি সুন্দরী হওয়ার দরুন তাদের হাড় ও গোশতের উপর হ’তে নলার ভিতরের মজ্জা দেখা যাবে। তারা সকাল-সন্ধায় আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনায় রত থাকবে। তারা কখনও অসুস্থ হবে না। তাদের পেশাব হবে না। তাদের পায়খানার প্রয়োজন হবে না। তারা থুথু ফেলবে না। তাদের নাক দিয়ে শ্লেষ্যা বের হবে না। তাদের ব্যবহারিক পাত্র সমূহ হবে সোনা-রূপার। তাদের চিরনী হবে স্বর্ণের এবং তাদের সুগন্ধির জ্বালানী হবে আগরের। তাদের গায়ের ঘাম হবে কস্তরীর মত সুগন্ধি। তাদের স্বভাব হবে এক ব্যক্তির ন্যায়। শারীরিক গঠন হবে তাদের পিতা আদম (আঃ)-এর মত, উচ্চতায় ষাট গজ লম্বা হবে (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৭৮)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
অত্র হাদীছে বুঝা গেল, যারা সর্ব প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের চেহারা সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হবে। মানুষের মধ্যে কোন মতবিরোধ কোন হিংসা বিদ্বেষ থাকবে না। অন্যের তুলনায় বিশেষ মর্যাদাসম্পূর্ণ দু’জন স্ত্রী থাকবে। তারা খুব বেশি সুন্দরী হবে। এ জন্য তাদের পায়ের নলার ভিতরের মজ্জা দেখা যাবে। তাদের পেশাব পায়খানার প্রয়োজন হবে না। তাদের মুখে থুথু আসবে না, তাদের নাকে শিকনি আসবে না। সেই জান্নাতের পাত্রসমূহ হবে সোনা-রূপার। সুগন্ধি জ্বালানী হবে এক ধরনের আগরবাতি। শরীরের ঘামের গন্ধ হবে কস্তরীর মত সুগন্ধি। সকলের স্বভাব ও আচার আচরণ হবে একই।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اَهْلَ الْجَنَّةِ يَأْكُلُوْنَ فِيْهَا وَيَشْرَبُوْنَ وَلَايَبُوْلُوْنَ وَلَايَتَغَوَّطُوْنَ وَلَايَتْفُلُوْنَ وَلَايَمْتَخِطُوْنَ قَالُوْا فَمَا بَالُ الطَّعَامِ قَالَ جُشَاءٌ وَرَشْحٌ كَرَشْحِ الْمِسْكِ يُلْهَمُوْنَ التَّسْبِيْحَ وَالتَّحْمِيْدَ كَمَا تُلْهَمُوْنَ النَّفْسَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
জাবের (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতীরা সেখানে খাবে, পান করবে। কিন্তু তারা থুথু ফেলবে না, মল-মূত্র ত্যাগ করবে না এবং তাদের নাক হ’তে শিকনীও বের হবে না। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন তাহ‘লে তাদের এসব খাদ্যের পরিণতি কি হবে? নবী করীম(সা.) বললেন, ঢেকুর এবং মেশকের ন্যায় সুগন্ধি ঘাম দ্বারা শেষ হয়ে যাবে। আল্লাহর তাসবীহ্ ও তার প্রশংসা এমনভাবে তাদের অন্তরে ঢেলে দেওয়া হবে যেমন শ্বাস-নিঃশ্বাস অবিরাম চলছে (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৭৯)। অত্র হাদীছে প্রমাণিত হয় যে, তারা জান্নাতে খাবে ও পান করবে কিন্তু পেশাব পায়খানার প্রয়োজন হবে না। কারণ সেগুলি ঢেকুর ও ঘামের মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে। আর শ্বাস-প্রশ্বাস যেমন নিজ গতিতে চলে। এ জন্য কোন চিন্তা ভাবনা বা কোন পরিকল্পনা লাগে না তেমনি জান্নাতীদের মুখে সর্বদা তাসবীহ্ চলতে থাকবে। তাসবীহ্ পাঠের জন্য কোন চেষ্টা করা লাগবে না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يَّدْخُلُ الْجَنَّةَ يَنْعَمُ وَلَايَبْأَسُ وَلَا يَبْلَى ثِيَابُهُ وَلَا يَفْنَى شَبَابُهُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে সে সেখানে সুখ-স্বাচ্ছন্দে, ভোগ-বিলাসে ডুবে থাকবে। কোন প্রকার দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা তাকে পাবে না। পোশাক পরিচ্ছদ ময়লা বা পুরাতন হবে না। আর তার যৌবন কাল কখনও শেষ হবে না (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৮০)। প্রথমে বলা হয়েছে জান্নাত যে কি আরাম আয়েশের জায়গা তার বিবরণ দেওয়া মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। যেমন অত্র হাদীছে বলা হ’ল জান্নাত এক চির সুখ-স্বাচ্ছন্দ ও আরাম-আয়েশের জায়গা। যেখানে কোনদিন দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনার চিহ্ন আসবে না। পোশাক কোনদিন পুরাতন বা ময়লা হবে না, যৌবনও কোনদিন শেষ হবে না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدِ الْخُدْرِىّ وَ اَبِىْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يُنَادِىْ مُنَادٍ اِنَّ لَكُمْ اَنْ تَصِحُّوْا فَلَا تَسْقَمُوْا اَبَدًا وَاِنَّ لَكُمْ اَنْ تَحْيَوْا فَلَا تَمُوْتُوْا اَبَدًا وَاِنَّ لَكُمْ اَنْ تَشِبُّوْا فَلَا تَهْرَمُوْا اَبَدًا وَاِنَّ لَكُمْ اَنْ تَنْعَمُوْا فَلَا تَبَأْسُوْا اَبَدًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সা‘ঈদ খুদ্রী ও আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতীগণ জান্নাতে প্রবেশ করার পর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিবেন, তোমরা চিরদিন সুস্থ থাকবে আর কখনও অসুস্থ হবে না। তোমরা সর্বদা জীবিত থাকবে আর কখনও মৃত্যুবরণ করবে না। তোমরা চিরদিন যুবক থাকবে আর কোনদিন বৃদ্ধ হবেনা। তোমরা চিরদিন সুখ-স্বাচ্ছন্দে ও আরাম-আয়েশে থাকবে, কখনও হতাশা ও দুশ্চিন্তা তোমাদেরকে স্পর্শ করবে না (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৮১)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدِ الْخُدْرِىِّ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ قَالَ اِنّ اَهْلَ الْجَنّةِ يَتَرَاؤنَ اَهْلَ الْغُرَفِ مِنْ فَوْقِهِمْ كَمَا تَتَرَائُوْنَ الْكَوْكَبَ الدُّرِّىَ الْغَابِرَ فِى الْاُفُقِ مِنَ الْمَشْرِقِ اَوِ الْمَغْرِبِ لِتَفَاضُلِ ماَ بَيْنَهُمْ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ تِلْكَ مَنَازِلُ الْاَنْبِيَاءِ لَايَبْلُغُهَا غَيْرُهُمْ قَالَ بَلى والّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِه رِجَالٌ اَمَنُوْا بِاللهِ وَصَدّقُوْا الْمُرْسَلِيْنَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সা‘ঈদ খুদ্রী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই জান্নাতবাসীগণ তাদের উর্ধের বালাখানার বাসীন্দাগণকে এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমনভাবে তোমরা আকাশের পূর্ব দিকে কিংবা পশ্চিম দিকে একটি তারা দেখতে পাও। তাদের মধ্যে মর্যাদার পার্থক্যের কারণে এরূপ হবে। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! সে স্থান তো হবে নবীগণের, অন্যেরা তো সেখানে পৌঁছতে পারবে না। রাসূল(সা.) বললেন, না; বরং সে সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, যে সমস্ত লোকেরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে এবং রাসূলগণের সত্যতা স্বীকার করবে তারাও সেখানে পৌঁছতে সক্ষম হবে (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৮২)। জান্নাতে মানুষের মর্যাদার খুব তারতম্য হবে। যমীন ও তারকার যেমন একটা অপরটা থেকে নীচে ও উপরে রয়েছে, তেমন জান্নাতীদের মান-মর্যাদার পার্থক্য হবে। তবে অসম্মানিত হবে না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدِ الْخُدْرِىّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اِنّ اللهَ تَعَالى يَقُوْلُ لِاَهْلِ الْجَنّةِ يَااَهْلَ الْجَنّةِ فَيَقُوْلُوْنَ لَبّيْكَ رَبّنَا وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيرُ كُلُّهُ فِى يَدَيْكَ فَيَقُوْلُ هَلْ رَضِيْتُمْ فَيَقُوْلُوْنَ وَمَالنَا لِانَرْضَ يَارَبّ وَقَدْ اَعْطَيْتَنَا مَالَمْ تُعْطِ اَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ فَيَقُوْلُ الَااُعْطِيْكُمْ اَفْضَلَ مِنْ ذلِكَ فَيَقُوْلُوْنَ يَارَبّ وَاَىُّ شَيْئٍ اَفْضَلُ مِنْ ذلِكَ فَيَقُوْلُ اُحِلّ عَلَيْكُمْ رِضْوَانِىْ فَلَا اَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ اَبَدًا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সা‘ঈদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আল্লাহ জান্নাতবাসীগণকে লক্ষ্য করে বলবেন, হে জান্নাতবাসীগণ! তখন তারা বলবেন, ‘‘আমরা উপস্থিত। সৌভাগ্য তোমার নিকট থেকেই অর্জিত এবং যাবতীয় কল্যাণ তোমারই হাতে।’’ তখন আল্লাহ বলবেন, তোমরা কি সন্তষ্ট? তারা বলবেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না আপনিই তো আমাদের এমন জিনিস দান করেছেন যা আপনার সৃষ্টি জগতের আর কাউকেও দান করেন নি। তখন আল্লাহ বলবেন, আমি কি এর চেয়ে উত্তম জিনিস তোমাদেরকে দান করব না? তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! এর চেয়ে উত্তম কি হ’তে পারে? তখন আল্লাহ বলবেন, আমি তোমাদের উপর আমার সন্তুষ্টি দান করছি, এরপর থেকে আমি আর কখনও অসন্তুষ্ট হব না (বুখারী, মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৮৪)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জান্নাতে আল্লাহর সন্তষ্টি সবচেয়ে উত্তম জিনিস। আর তা হচ্ছে আল্লাহ নিজেই বলবেন, আমি তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হ’লাম, আর কোনদিন অসন্তুষ্ট হব না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِنّ اَدْنى مَقْعَدِ اَحَدِكُمْ مِنَ الْجَنّةِ اَنْ يَقُوْلَ لَهُ تَمَنّ فَيَتَمَنّى وَيَتَمَنّى فَيَقُوْلُ لَهُ هَلْ تَمَنّيْتَ فَيَقُوْلُ نَعَمْ فَيَقُوْلُ لَهُ فَاِنّ لَكَ مَا تَمَنّيْتَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) হ’তে বর্ণিত, রাসূল(সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জান্নাতে সর্বাপেক্ষা নিম্নমানের হবে, তাকে বলা হবে তুমি তোমার আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ কর। তখন সে তার আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করবে আরও আশা-আকাঙ্খা ব্যক্ত করবে অর্থাৎ বারবার অনেক অনেক আশা প্রকাশ করবে। তখন আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন, কি তোমার আশা-আকাঙ্খা শেষ হয়েছে? সে বলবে হ্যাঁ। অতঃপর আল্লাহ বলবেন, তুমি যা আশা করেছ তা দেওয়া হ‘ল এবং তার সমপরিমাণ দ্বিগুণ দেওয়া হ’ল (মুসলিম, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৮৫)। মানুষ চাইবে তার বিবেক অনুযায়ী, আর আল্লাহ দিবেন তাঁর মর্যাদা অনুযায়ী আল্লাহ মানুষকে এত কিছু দিবেন যা মানুষের অন্তর পরিকল্পনা করতে পারে না। মানুষ যা চোখেও দেখে না, কানেও শোনে না ভাবতেও পারে না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِمّ خُلِقَ الْخَلْقُ قَالَ مِنَ الْمَاءِ قُلْنَا الْجَنّةُ مَا ِبنَائُهَا قَالَ لَبِنَةٌ مِنْ ذَهَبٍ وَلَبِنَةٌ مِنْ فِضَّةٍ وَمَلَاطُهَا الْمِسْكُ الاَذْفَرُ وَحَصْبَاءُهَا اللُؤْلُؤُ وَالْيَاُقْوتُ وَتُرْبَتُهَا الزَّعْفَرَانُ مَنْ يَدْخُلُهَا يَنْعَمُ وَ لَايَبَأْسُ وَيَخْلُدُ وَلَا يَمُوْتُ وَلَا يَبْلى ثِيَابُهُمْ وَلَا يَفْنَى شَبَابُهُمْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) হ’তে বর্ণিত। আমি রাসূল(সা.) -কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আল্লাহ তার সমস্ত মাখলূক্বকে কি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন? নবী করীম(সা.) বললেন, পানি দ্বারা। আবার জিজ্ঞেস করলাম জান্নাত কি দ্বারা নির্মাণ করেছেন? নবী করীম(সা.) বললেন, এক ইট স্বর্ণের আর এক ইট রূপার এভাবে জান্নাত নির্মাণ করেছেন। আর তার মসল্লা হল সুগন্ধময় কস্ত্তরী এবং তার কংকর হ‘ল মনি-মুক্তা আর মাটি হ‘ল জাফরানের তৈরী। যে ব্যক্তি তাতে প্রবেশ করবে সে সুখে স্বাচ্ছন্দে থাকবে, সে কখনও হতাশা বা দুশ্চিন্তায় পতিত হবে না। সেখানে চিরস্থায়ী থাকবে কখনও মরবে না। তাদের পোশাক পরিচ্ছদ ময়লা বা পুরাতন হবে না এবং তাদের যৌবন শেষ হবে না (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/৫৬৩০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৮৮)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَنَسٍ عَنِ الّنِبّى صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اَنَّ رَسُوْلَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يُعْطَى الْمُؤمِنُ فِى الْجَنّةِ قُوّةً كَذا وَكذَا مِنَ الْجِمَاعِ قِيْلَ ياَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلمَ اَو يُطِيْقُ ذلِكَ قَالَ يُعْطَى قُوّةً مِئَةٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) হ’তে বর্ণিত। নবী করীম(সা.) বলেছেন, জান্নাতী মুমিনদেরকে এত এত সহবাসের শক্তি প্রদান করা হবে। জিজ্ঞেস করা হ’ল হে আল্লাহর রাসূল! এক ব্যক্তি এত শক্তি রাখবে কি? নবী করীম(সা.) বললেন, একশত পুরুষের শক্তি প্রদান করা হবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৬৩৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৯৪, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জান্নাতে পুরুষদের স্ত্রী মিলন ক্ষমতা অনেক অনেক গুণ বেশি করে দেওয়া হবে। জান্নাত অনাবিল শান্তির জায়গা, এটা তার একটা বড় মাধ্যম।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ سَعَدِ بْنِ اَبِىْ وَقّاصِ عنْ الّنِبّى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنّهُ قَالَ لَوْ اَنّ مَا يُقِلُّ ظُفْرٌ مِمّا فِى الْجَنّةِ بَدَأ لَتَزَخْرَفَتْ لَهُ مَا بَيْنَ خَوَافَقِ السّمَوَاتِ والْاَرْضِ ولَوْ اَنّ رَجُلًا مِنْ اَهْلِ الْجَنّةِ اِطَّلَعَ فَبَدَأ اَسَاوِرُهُ لَطَمِسَ ضؤْهُ ضُوْءَ الشّمْسِ كَمَا تَطْمَسُ الشّمْسُ ضُوْءَ النُّجُوْمِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
সা‘দ ইবনে আবু ওয়াককাছ (রা.) হ’তে বর্ণিত, নবী(সা.) বলেছেন, যদি জান্নাতের বস্ত সমূহ হ’তে নখ এর চেয়ে কম একটি ক্ষুদ্র বস্তুও পৃথিবীতে প্রকাশ হয়ে যায়, তবে আসমান ও যমীনের সমগ্র পার্শ্ব শেষ প্রান্তসহ উজ্জ্বল আলোকে সুসজ্জিত হয়ে যাবে। আর যদি জান্নাতের কোন ব্যক্তি দুনিয়ার দিকে উঁকি মারে এবং তার হাতের কংকন প্রকাশ পায়, তাহ’লে এ ব্যক্তি এবং কংকনের আলো সূর্য্যের আলোকে এমনভাবে বিলিন করে দিবে, যেমন সূর্যের আলো তারকার আলোকে বিলিন করে দেয় (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত আলবানী হা/৫৬৩০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৯৫)। অত্র হাদীছে জান্নাতের সমস্ত বস্তর এমন উজ্জ্বলতা প্রমাণ করা হয়েছে যা মানুষের বিবেচনার বাইরে। কারণ একজন জান্নাত হ’তে উঁকি মারলে তার জ্যোতিতে সূর্যের জ্যোতি বিলীন হবে, এ বাক্যের ভাবধারা মানুষের বুঝা বড় কঠিন। এমন জান্নাতের আশা করা মানুষের জন্য যরুরী কর্তব্য।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ بُرَيْدَةَ قاَلَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَهْلُ الْجَنّةِ عِشْرُوْنَ وَمِائَةُ صَفّ ثَمَانُوْنَ مِنْهَا مِنْ هذِهِ الْاُمّةِ وَاَرْبَعُوْنَ مِنْ سَائِرِ الْاُمَمِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
বুরাইদা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, জান্নাতবাসীদের একশত বিশ কাতার হবে। তার আশি কাতার হবে আমার উম্মতের, আর বাকী চল্লিশ কাতার হবে সমস্ত উম্মতের মধ্য হ’তে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৬৪৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪০২)। অন্য এক হাদীছে বলা হয়েছে জান্নাতবাসীদের অর্ধেক হবে এ উম্মত থেকে ।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدِ الْخُدْرِىّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ الْمُؤمِنُ اِذَا اشْتَهى الْوَلَدَ فِى الْجَنّةِ كانَ حَمْلُهُ وَوَضْعُهُ وَسِنّهُ فِى سَاعَةٍ كَمَا يَشْتَهِىْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সাঈ‘দ খু্দরী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতবাসী মুমিন যখন সন্তান কামনা করবে, তখন গর্ভ, প্রসাব এবং তার বয়স চাহিদা অনুযায়ী মূহুর্তের মধ্যে সংঘটিত হবে (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ আলবানী হা/৫৬৪৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪০৬)। অত্র হাদীছে বুঝা গেল জান্নাতীরা সন্তান কামনা করতে পারে। আর সন্তান কামনা করা মাত্রই পাওয়া যাবে। তবে যে বয়সের সন্তান কামানা করবে তা মুহুর্তের মধ্যেই পাবে। তবে ইসহাক বিন ইবরাহীম বলেন, জান্নাতীরা সন্তান কামনাই করবে না</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ حَكِيْمِ بْنِ مُعَاوِيَةَ عَنْ اَبِيْهِ عَنِ النّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إنّ فِى الْجَنَّةِ بَحْرَ الْعَسَلِ وَبَحْرَ اللَّبَنِ وَبَحرَ الْخَمْرِ ثُمَّ تُشَقَّقُ الْانْهَارُ بَعْدُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
হাকীম ইবনে মু‘আবিয়া (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতে রয়েছে পানির সাগর, মধুর সাগর, দুধের সাগর এবং শরাবের সাগর। অতঃপর এগুলি হ’তে আরও বহু নদী প্রবাহিত হবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৬৫০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৮০)। জান্নাতে মূলত চারটি সমুদ্র রয়েছে ১. পানির ২. মধুর ৩. দুধের ও ৪.শরাবের। আবার এ চারটি সমুদ্র হ’তে বহু নদী প্রবাহিত হবে (তিরমিযী হা/২৫৭১)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ اَنَّ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَتَحَدَّثُ وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ اَهْلِ الْبَادِيَةِ اَنّ رَجُلًا مِنْ اَهْلِ الْجَنّةِ اِسْتَاْذَنَ رَبّهُ فِى الزَّرْعِ فَقَال لَهُ اَلَسْتَ فِيْمَا شِئْتَ قَالَ بَلى وَلكِنّى احبُّ اَنْ اَزْرَعَ فَبَذَرَ فَبَادَرَ الطَّرْفُ نَبَاتُهُ وَاسْتِوَائُهُ وَاسْتَِحْصَادُهُ فَكَانَ اَمْثَالَ الْجِبَالِ فَيَقُوْلُ اللهُ تَعَالى دُوْنَكَ يَا اِبْنَ اَدَمَ فَانّهُ لَايُشْبِعُكَ شَيٌْئ فَقَالَ الْاَعْرَابِىُّ وَاللهِ لَاتَجِدُهُ الَّاقَرْشِيَا اَوْاَنْصَارِيًا فَاِنّهُمْ اَصْحَابُ زَرْعِ وَاَمّا نَحْنُ فَلَسْنَا بِاَصْحَابِ َزرْعِ فَضَحِكَ النّبِىُ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ-</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) হ’তে বর্ণিত, একদা নবী করীম(সা.) কথা বলছিলেন, এসময় একজন গ্রাম্য বেদুইন উপস্থিত ছিল। নবী করীম(সা.) বললেন, জান্নাতবাসীর একজন জান্নাতে কৃষি কাজ করার জন্য তার প্রতিপালকের কাছে অনুমতি চাইবে। তখন আল্লাহ তাকে বলবেন, তোমার যা কিছুর প্রয়োজন তা কি তোমার কাছে নেই? সে বলবে হ্যাঁ আছে। তবে আমি কৃষি কাজ ভালবাসি। অতঃপর সে বিজ বপন করবে এবং মূহুর্তের মধ্যে তা অংকুরিত হবে, ফসল পাকবে এবং ফসল কাটা হবে। তখন আল্লাহ তাকে বলবেন, হে আদম সন্তান! এসব ফসল নিয়ে যাও কোন কিছুতেই তোমার তৃপ্তি হয় না। তখন গ্রাম্য লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কসম! দেখবেন সে হয়তো কোন কোরাইশী অথবা আনছার গোত্রীয় লোক হবে। কেননা তারাই কৃষি কাজ করে থাকে। আর আমরা তো কৃষি কাজ করি না। তার কথা শুনে রাসূল(সা.) হেসে উঠলেন (বুখারী, মিশকাত হা/৫৪১০)। হাদীছের ভাষায় বুঝা যায় জান্নাতে মানুষ নিজ নিজ আশা আকাঙ্ক্ষা তার প্রতিপালকের কাছে পেশ করবে এবং তা তাৎক্ষণিক পূরণ করা হবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا فِى الْجَنَّةِ شَجَرَةٌ اِلّا وَسَاقُهَا مِنْ ذَهَبٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম(সা.) বলেছেন, জান্নাতের সমস্ত গাছেরই কান্ড ও শাখা হবে স্বর্ণের (তিরমিযী হা/২৫২৫)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ عَلِى قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنّ فِى الْجَنّةِ لَغُرَفًا تُرَى ظُهُوْرُهَا مِنْ بُطُوْنِهَا وَبُطُوْنُهَا مِنْ ظُهُوْرِهَا فَقَامَ اِلَيْهِ اَعْرَابِىُ فَقَالَ لِمَنْ هِىَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلمَّ قَالَ هِىَ لِمَنْ اَطَابَ الْكَلَامَ وَاَطْعَمَ الطَّعَامَ وَادَامَ الصِيَامَ وَصَلَّى لِلّهِ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আলী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতে এমন কতগুলি বালাখানা রয়েছে যার ভিতর থেকে বাহির দেখা যায় এবং বাহির থেকে ভিতর দেখা যায়। একজন গ্রাম্য বেদুইন রাসূল(সা.) -এর নিকটে গিয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! এমন জান্নাত কোন ব্যক্তির জন্য? নবী করীম(সা.) বললেন, যারা মানুষের সাথে নরমভাবে কথা বলে, ক্ষুধার্থ মানুষকে খাদ্য খাওয়ায়, নিয়মিত ছিয়াম পালন করে এবং রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন তাহাজ্জুদ পড়ে (তিরমিযী হা/২৫২৭, হাদীছ হাসান)। জান্নাতে সবচেয়ে উচুমানের বালাখানাগুলি এত স্বচ্ছ পদার্থ দ্বারা তৈরী যে, তার ভিতর থেকে বাহির এবং বাহির থেকে ভিতর দেখা যাবে। আর এর জন্য চারটি কাজ করা যরুরী। ১. মানুষের সাথে নরমভাবে কথা বলতে হবে ২. ক্ষুধার্ত ও অসহায় মানুষকে খাওয়াতে হবে ৩. নিয়মিত নফল ছিয়াম পালনে অভ্যাসী হ’তে হবে এবং ৪. রাতে তাহাজ্জাদ পড়তে হবে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِى الْجَنّةِ مِاَئُةُ دَرَجَةٍ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرجَتَيْنِ مِئَةُ عَامٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতে একশতটি স্তর রয়েছে আর প্রত্যেক দু’স্তরের মাঝে একশত বছরের ব্যবধান রয়েছে (তিরমিযী হা/২৫২৯, হাদীছ ছহীহ)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ سَعِيْدِ الْخُدْرِىّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اِنَّ اَوَّلَ زَمْرَةٍ يَدْخُلُوْنَ الْجَنّةَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضُؤْءُ وُجُوْهِهِمْ عَلَى مِثْلِ ضُؤْءِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ وَالزَّمْرَةُ الثَّانِيَةُ عَلى مِثْلِ احْسَنِ كَوْكَبٍ دُرِّىَّ فِى السّمَاءِ لِِكُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ عَلَى كُلِّ زَوْجَةٍ سَبْعُوْنَ حَلَّةً يُرَى مُخُّ سَاقِهَا مِنْ وَرَائِهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু সা‘ঈদ খুদ্রী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম যে দলটি জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের চেহারার জ্যোতি হবে পূর্ণিমার চন্দ্রের ন্যায়। আর দ্বিতীয় দলটির চেহারা হবে আকাশের সর্বাধিক উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত ঝকঝকে। সেখানে প্রত্যেকের জন্য দু’জন করে বিশেষ মর্যাদা সম্পূর্ণ অতীব সুন্দরী স্ত্রী থাকবে। তাদের প্রত্যেক স্ত্রীর পরিধানে সত্তর জোড়া কাপড় থাকবে, তাদের শরীর এত স্বচ্ছ, এবং কাপড় এত চিকন হবে যে, এত কাপড়ের উপর দিয়ে পায়ের নলার মজ্জা দেখা যাবে (তিরমিযী, হা/২৫৩৫; আলবানী মিশকাত হা/৫৬৩৫, হাদীছ ছহীহ)। এরা জান্নাতের বিশেষ নারী। এদের চেহারা হবে ঝকঝকে মুক্তার মত চোখ হবে বড় বড় ডাগর ডাগর হরিণ নয়োনা। দেখে মনে হবে চোখে সুরমা দেওয়া আছে। মাথার চুল হবে লম্বা পরিমাণে বেশি কুচকুচে কাল।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَهْلُ الْجَنّةِ جُرْدٌ مُرْدٌ كَحْلى لَايَفْنَى شَبَابُهُمْ وَلَايَبْلى ثِيَابُهُمْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতবাসী গোফ ও দাড়ী বিহীন হবে, তাদের চক্ষু সুরমায়িত হবে। তাদের যৌবন কোনদিন শেষ হবে না। তাদের কাপড় কোন দিন পুরাতন বা ময়লা হবে না (তিরমিযী, হা/২৫৩৯; আলবানী মিশকাত হা/৫৬৩৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৩৯৬)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَدْخُلُ اَهْلُ الْجَنّةِ الْجَنّةَ جُرْدًا مُرْدًا مُكَحَّلِيْنَ اَبْنَاءُ ثَلَاثِيْنَ اَوْ ثَلَاثُ وَثَلَاثِيْنَ سَنَةً.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
মু‘আয ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতবাসীগণ যখন জান্নাতে প্রবেশ করবেন, তখন তাদের বয়স হবে ত্রিশ বা তেত্রিশ বছর। তারা কেশবিহীন ও দাড়ীবিহীন হবেন, তাদের চক্ষু সুরমায়িত হবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৩৯৭, হাদীছ হাসান)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَطْفَالُ الْمُسْلِمِيْنَ فِى جَبَلٍ فِى الْجَنّةِ يُكَفِّلُهُمْ اِبْرَاهِيْمُ وَسَارَةُ حَتّى يُدْفَعُوْنَهُمْ اِلى اَبَائِهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ইবরাহীম (আঃ) ও তাঁর স্ত্রী সারা (আঃ) মুসলমানদের শিশুদেরকে জান্নাতের কোন পাহাড়ের পাশে লালন পালন করছেন, ক্বিয়ামতের দিন শিশুদেরকে তাদের পিতার নিকট সমার্পন করার পূর্ব পর্যন্ত তাঁরা তাদের লালন পালন করবেন (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৩৯)। সকল শিশু এখন জান্নাতে প্রতিপালিত হচ্ছে। তাদের প্রতিপালনের দায়িত্বে রয়েছেন ইবরাহীম (আঃ) ও তার স্ত্রী সারা (আঃ)। জান্নাতে আনন্দভোগ করার জন্য মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পাহাড় রয়েছে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ ابِىْ مَالِكٍ قَالَ سُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلىّ اللهُ عَلَيْهَ وَسَلّمَ عَنْ اَطْفَالِ الْمُشْرِكِيْنَ قَالَ هُمْ خَدَمُ اَهْلِ الْجَنّةِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু মালিক (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) -কে মুশরেকদের শিশু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, তারা জান্নাতীদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৪০)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ ابِىْ اَيُّوْبَ قَالَ اتَى النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَعْرَابِىٌّ فَقَالَ يَارَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّى اُحِبُّ الْخَيْلَ َاَفِى الْجَنّةِ خَيْلٌ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلىّ اللهُ عَلَيْهَ وَسَلّمَ اِنْ اُدْخِلْتَ الْجَنّةَ اُتِيْتَ بِفَرَسٍ مِنْ يَاقُوْتَةٍ لَهُ جَنَاحَانِ فَحَمِلَت عَلَيْهِ ثُمَّ طَارَبِكَ حَيْثُ شِئْتَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু আইয়ূব আনছারী (রা.) বলেন, একজন গ্রাম্য বেদুইন রাসুল(সা.) -এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আমি ঘোড়া ভালবাসী। জান্নাতে ঘোড়া পাওয়া যাবে কি? নবী করীম(সা.) বললেন, তোমাকে যদি জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়, তাহ’লে তোমাকে মুক্তা দ্বারা তৈরী একটি ঘোড়া দেওয়া হবে। যার দু’টি পাখা থাকবে, তোমাকে তার উপর সওয়ার করানো হবে। তোমার ইচ্ছামত তোমাকে উড়ে নিয়ে যাবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৪৬)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ انسٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلىّ اللهُ عَلَيْهَ وَسَلّمَ اِنَّ الْحُوْرَ فِى الْجَنّةِ يَتَغَنّيَنَ يَقُلْنَ نَحْنُ الْحُوْرُ الْحِسَانُ-هَدِيْنَا لِاَزْوَاجٍ كِرَام.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতে হুরগণ গান গইবে এবং তারা বলবে, আমরা অতীব সুন্দরী নারী। আমরা আমাদের সম্মানিত স্বামীদের জন্য উপহার (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৫৬)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ علىّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلىّ اللهُ عَلَيْهَ وَسَلّمَ اِنّ فِى الْجَنّةِ لَمُجْتَمَعًا لِلْحُوْرِ الْعِيْنِ يَرْفَعْنَ بِاَصْوَاتٍ لَمْ تَسْمَعِ الْخَلَائِقُ مِثْلَهَا يَقُلْنَ نَحْنُ الْخَالِدَاتُ فَلَا نَبِيْدُ وَنَحْنُ النَّاعِمَاتُ فَلَا نَبَأْسُ وَنَحْنُ الرَّاضِيَاتُ فَلَا نَسْخَطُ طُوْبى لِمَنْ كَانَ لَنَا وُكُنّا لَهُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আলী (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, জান্নাতের হুরগণ এক জায়গায় সমবেত হয়ে উঁচু কণ্ঠে এমন সুন্দর লহরীতে গান বলবে। সৃষ্টি জীব সে ধরনের লহরী কখনও শুনেনি। তারা বলবে আমরা চিরদিন থাকব, কখনও ধ্বংস হব না। আমরা সর্বদা সুখ স্বচ্ছন্দে বসবাস করব। কখনও দুঃখ দুশ্চিন্তায় পতিত হব না। অতএব চিরধন্য সে, যার জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যিনি (তিরমিযী, আলবানী মিশকাত হা/৫৬৪৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪০৭)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنّ فِى الْجَنّةِ شَجَرَة يَسِيْرُ الرّاكِبُ الْجَوَادُ الْمُضْمِرُ السَّرِيْعُ مِئَةَ عَامٍ مَا يَقْطَعُهَا.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই জান্নাতে এমন বড় গাছ রয়েছে। কোন ব্যক্তি দ্রুতগামী ঘোড়ায় আরোহণ হয়ে একশত বছর চললেও তার ছায়া শেষ হবে না’ (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৬৩)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةٌ لَاتَرَى اَعْيُنُهُمْ النّارَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَيْنٌ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ وَعَيْنٌ حَرَسَتْ فِى سَبِيْلِ اللهِ وَعَيْن غَضَت عَنْ مَحَارِمِ اللهِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, তিন শ্রেণীর মানুষের চক্ষু কিয়ামতের দিন জাহান্নাম দেখবে না। ১. এমন চক্ষু যে আল্লাহর ভয়ে কাঁদে ২. এমন চক্ষু যে আল্লাহর রাস্তায় জেগে থাকে এবং ৩. এমন চক্ষু যে বেগানা মহিলাকে দেখে নীচু হয়ে যায় (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৭৭)।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ عُتْبَةَ بْنِ عَبْد السُّلَمِىِّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْجَنّةُ لَهَا ثَمَانِيَةُ اَبْوَابٍ وَالنَّارُ لَهَا سَبْعَةُ اَبْوَابٍ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
উতবা ইবনে আবদে সুলামী (রা.) বলেন, আমি রাসূল(সা.) -কে বলতে শুনেছি জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে এবং জাহান্নামের সাতটি দরজা রয়েছে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৭৪)। প্রকাশ থাকে যে, জান্নাত আটটি নয় বরং জান্নাত একটি তার দরজা আটটি। অনুরূপ জাহান্নামও ।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِى اُمَامَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ وَعَدَنِىْ رَبِّىْ اَنْ يُّدْخِلَ الْجَنَّةَ مِنْ اُمَّتِىْ سَبْعِيْنَ اَلْفًا لَاحِسَابَ عَلَيْهِمْ وَلَاعَذَابَ مَعَ كُلِّ اَلْفٍ سَبْعُوْنَ اَلْفًا وَثَلَاثُ حَثَيَاتٍ مِنْ حَثَيَاتِ رَبِّىْ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু উমামা (রা.) বলেন, আমি রাসূল(সা.) -কে বলতে শুনেছি, আমার প্রতিপালক আমার সাথে এ ওয়াদা করেছেন যে, তিনি আমার উম্মতের মধ্য হ’তে সত্তর হাজার ব্যক্তিকে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তাদের কোন হিসাব হবে না, তাদের কোন শাস্তিও দেওয়া হবে না। আবার উক্ত প্রত্যেক হাজারের সাথে সত্তর হাজার ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। তারপর আমার প্রতিপালকের তিন অঞ্জলী সমপরিমাণ মানুষকেও জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/৫৫৫৬)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ বহু মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আল্লার অঞ্জলীতে কত মানুষ জান্নাতে যাবে একথা মানুষ জানে না।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ ابِىْ اُمَامَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ رَجُلُ الْجَنّةَ فَرَاى عَلى بِابِهَا مَكْتُوْبًا الصَّدَقَةُ بِعَشَرِ اَمْثَالِهَا وَالْقَرَضُ بِثَمَانِيَةَ عَشَرَ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, এক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করে দেখল জান্নাতের দরজায় লেখা আছে দানের নেকী দশগুণ বাড়ে আর কর্য প্রদানের নেকী ১৮ গুণ বাড়ে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৮১)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় দান ও কর্য উভয়ের প্রতিদান জান্নাত। তবে দান করার চেয়ে কর্য দিলে নেকী বেশি হয়।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ انسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلْتُ الْجَنّةَ فَاِذَا اَنَا بِقَصْرٍ مِنْ ذَهَبٍ فَقُلْتُ لِمَنْ هَذا الْقَصْرُ قَالُوْا لِشَابٍّ مِنْ قُرَيْشٍ فَظَنَنْتُ اَنّى اَنَا هُوَ فَقُلْتُ وَمَن هُوْ فَقَالُوْا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطّابِ قَالَ فَلَوْ لَا مَا عَلِمْتُ مِنْ غَيْرَتِكَ لَدَخَلْتُهُ فَقَالَ عُمَرُ عَلَيْكَ يَارَسُوْلَ اللهِ اَغَارُ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আনাস (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আমি জান্নাতে প্রবেশ করে পরিদর্শন করছিলাম। হঠাৎ দেখলাম উচ্চমানের স্বর্ণের একটি প্রাসাদ। আমি বললাম, এটা কার? তারা বলল, এক কুরাইশী যুবকের। আমি মনে করলাম, নিশ্চিত আমিই সেই যুবক হব। আমি পুনরায় বললাম, সে কে? তারা বলল, তিনি হচ্ছেন ওমর বিন খত্তাব (রা.) । নবী করীম(সা.) ওমর (রা.) -কে লক্ষ্য করে বললেন, ওমর! তোমার আত্মমর্যাদা আমার জানা না থাকলে অবশ্যই আমি তোমার ঘরে প্রবেশ করতাম। তখন ওমর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! আপনার জন্য কি কারো ব্যাপারে আত্মমর্যাদার বিবেচনা করা মানায়? (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৮২)। ওমর (রা.) -এর জন্য খুব উন্নত স্বর্ণের বালাখানা প্রস্ত্তত হয়ে আছে। আর রাসূল(সা.) ওমর (রা.) -এর আত্মমর্যাদা এত বেশি মনে করেন যে, তাঁর ঘরে ঢুকতে তিনি ইতস্তবোধ করেন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِى كَرِبَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِلشَّهِيْدِ عَنِ اللهِ خِصَالٌ يُغْفَرُ لَهُ فِى اَوَّلِ دَفْعَةٍ مِنْ دَمِهِ وَيُرَى مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنّةِ وَيُحَلّى حُلْيَةُ الْاِيْمَانِ وَيُزَوّجُ اِثْنَتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ زَوْجَةً مِنَ الْحُوْرِ الْعِيْنِ وَيُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَيأمنُ مِن الْفَزْعِ الاكْبَرِ ويُوْضَعُ عَلى رَاْسِه تَاجٌ الوَقَارِ اليَاقُوْتَةِ مِنْهُ خيْرُ مِنَ الدّنْيَا وَمَافِيها ويُشفَّعُ فِى سَبْعِيْنَ اِنْسَانًا مِنْ اَهْلِ بَيْتِهِ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
মিক্বদাম ইবনে মা‘দীকারাব (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, শহীদদের জন্য আল্লাহর নিকট কয়েকটি বিশেষ অধিকার রয়েছে। ১. তার শরীর থেকে প্রথম রক্তের ফোঁটা ঝরতেই তাকে ক্ষমা করা হয়। ২. তাকে ঐ সময় তার জান্নাতের স্থান দেখানো হয় ৩. তাকে ঈমানের গয়না পরানো হয় ৪. আখিরাতে হুরদের মধ্য হ’তে ৭২ জন নারীর সাথে তার বিবাহ দেওয়া হবে ৫. কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করা হবে। ৬. জাহান্নামের শাস্তি থেকে নিরাপদে রাখা হবে। ৭. কিয়ামতের মাঠে তাকে মর্যাদার টুপি পরানো হবে যা দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে উত্তম এবং ৮. তার পরিবারের ৭০ জনের ব্যাপারে সুপারিশ গ্রহণ করা হবে (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৯৪)। জান্নাতী সাধারণ মুমিন বান্দাগণের তুলনায় শহীদ জান্নাতীগণের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। জান্নাতে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী স্ত্রী হবে ২জন আর সাধারণ স্ত্রী হবে ৭০জন।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
عَنْ اَبِى اُمَامَةَ الْبَاهِلِى قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ أَتَانِى رَجُلاَنِ فَأَخَذَا بِضَبْعَىَّ فَأَتَيَا بِى جَبَلاً وَعْرًا فَقَالاَ: اِصْعَدْ فَقُلْتُ: إِنِّى لاَ أُطِيقُهُ فَقَالاَ : إِنَّا سَنُسَهِّلُهُ لَكَ فَصَعِدْتُ حَتَّى إِذَا كُنْتُ فِى سَوَاءِ الْجَبَلِ إِذَا أَنَا بَأَصْوَاتٍ شَدِيدَةٍ فَقُلْتُ : مَا هَذِهِ الأَصْوَاتُ قَالُوا : هَذَا عُوَاءُ أَهْلِ النَّارِ ، ثُمَّ انْطُلِقَا بِى فَإِذَا أَنَا بِقَوْمٍ مُعَلَّقِينَ بِعَرَاقِيبِهِمْ مُشَقَّقَةٌ أَشْدَاقُهُمْ تَسِيلُ أَشْدَاقُهُمْ دَمًا قَالَ قُلْتُ : مَنْ هَؤُلاَءِ قَالَ : هَؤُلاَءِ الَّذِينَ يُفْطِرُونَ قَبْلَ تَحِلَّةِ صَوْمِهِمْ فَقَالَ : خَابَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى فَقَالَ سُلَيْمَانُ : مَا أَدْرِي أَسَمِعَهُ أَبُو أُمَامَةَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمْ شَيْءٌ مِنْ رَأْيِهِ؟ ثُمَّ انْطَلَقَ ، فَإِذَا بِقَوْمٍ أَشَدَّ شَيْءٍ انْتِفَاخًا وَأَنْتَنِهِ رِيحًا، وَأَسْوَئِهِ مَنْظَرًا ، فَقُلْتُ: مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ فَقَالَ: هَؤُلاَءِ قَتْلَى الْكُفَّارِ، ثُمَّ انْطَلَقَ بِي، فَإِذَا بِقَوْمٍ أَشَدَّ شَيْءٍ انْتِفَاخًا، وَأَنْتَنِهِ رِيحًا، كَأَنَّ رِيحَهُمُ الْمَرَاحِيضُ، قُلْتُ : مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ : هَؤُلاَءِ الزَّانُونَ وَالزَّوَانِي، ثُمَّ انْطَلَقَ بِي، فَإِذَا أَنَا بِنِسَاءٍ تَنْهَشُ ثُدِيَّهُنَّ الْحَيَّاتُ، قُلْتُ: مَا بَالُ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ : هَؤُلاَءِ يَمْنَعْنَ أَوْلاَدَهُنَّ أَلْبَانَهُنَّ ، ثُمَّ انْطَلَقَ بِي، فَإِذَا أَنَا بِالْغِلْمَانِ يَلْعَبُونَ بَيْنَ نَهْرَيْنِ، قُلْتُ: مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ: هَؤُلاَءِ ذَرَارِي الْمُؤْمِنِينَ، ثُمَّ شَرَفَ شَرَفًا ، فَإِذَا أَنَا بِنَفَرٍ ثَلاَثَةٍ يَشْرَبُونَ مِنْ خَمْرٍ لَهُمْ ، قُلْتُ: مَنْ هَؤُلاَءِ؟ قَالَ: هَؤُلاَءِ جَعْفَرٌ، وَزِيدٌ، وَابْنُ رَوَاحَةَ، ثُمَّ شَرَفَنِي شَرَفًا آخَرَ، فَإِذَا أَنَا بِنَفَرٍ ثَلاَثَةٍ، قُلْتُ : مَنْ هَؤُلاَءِ ؟ قَالَ : هَذَا إِبْرَاهِيمُ ، وَمُوسَى، وَعِيسَى، وَهُمْ يَنْظُرُوْنَكَ -</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আবু উমামা বাহেলী (রা.) বলেন, আমি রাসূল(সা.) -কে বলতে শুনেছি, তিনি বলছিলেন, আমার নিকট দু’জন ব্যক্তি আসল তারা দু’জন আমার দু’বাহুর মাঝামাঝি ধরে আমাকে এক ভয়াবহ কঠিন পাহাড়ের নিকট নিয়ে আসল। তারা দু’জন বলল, আপনি এ পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমি এ পাহাড়ে উঠতে সক্ষম নই। তারা দু’জন বলল, আমরা আপনাকে পাহাড়ে উঠার কাজটি সহজ করে দিব। আমি উঠলাম, এমনকি পাহাড়ের উপরে চলে আসলাম। হঠাৎ আমি খুব কঠিন আওয়াজ শুনলাম। আমি বললাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বলল, এটা হচ্ছে জাহান্নামীদের বিলাপ-আর্তনাদ ও কান্না। তারপর তারা আমাকে নিয়ে যেতে লাগল। হঠাৎ আমি দেখি একদল লোককে পায়ের সাথে বেঁধে ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয়েছে। তাদের চোয়াল ফেটে দীর্ণ বিদীর্ণ হয়ে আছে এবং চোয়াল হ’তে রক্ত ঝরছে। নবী করীম(সা.) বলেন, আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা ঐ সব লোক যারা তাদের ছিয়াম শেষ হওয়ার পূর্বেই ছিয়াম ছেড়ে দিত। ছিয়াম অবস্থায় মিথ্যা কথা বলত। তখন তিনি বললেন, ইহুদী নাছারারা ধ্বংস হোক। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল। হঠাৎ দেখি কিছু লোক খুব ফুলে ওঠে মোটা হয়ে আছে। আর খুব দুর্গন্ধ ছড়িয়ে আছে। তাদের দৃশ্য খুব কাল বিদঘুটে। আমি বললাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা ঐ সব লোক যারা কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল। হঠাৎ দেখি কিছু লোক ফুলে মোটা হয়ে আছে। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে আছে। এত দুর্গন্ধ যেন তারা শৌচাগার। আমি বললাম, এরা কারা? তারা দু‘জন বলল, এরা হচ্ছে ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণী। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল দেখি কিছু মহিলা, প্রচুর সাপ তাদের স্তনগুলিতে বার বার ছোবল মারছে। আমি বললাম এদের কি হয়েছে? এদের এ অবস্থা কেন? তারা বলল, এরা ঐ সব মহিলা, যারা বাচ্চাদের দুধ পান করাতো না। তারপর তারা আমাকে নিয়ে চলল। হঠাৎ দেখি বেশকিছু ছেলে তারা দু নদীর মাঝে খেলা করছে। আমি বললাম, এ সমস্ত ছেলে কে? তারা বলল এগুলি মুমিনদের শিশু। তারপর তারা আমাকে আর একটি উঁচু পাহাড়ে নিয়ে গেল। হঠাৎ দেখি তিনজন মানুষ তারা অতীব মিষ্টি পরিস্কার শরাব পান করছে। আমি বললাম, এ লোকগুলি কে? তারা বলল, এ লোকগুলি হচ্ছে জাফর, যায়েদ ও ইবনে রাওহা (এ তিনজন লোক মুতার যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন)। তারপর তারা আমাকে অন্য একটি উঁচু পাহাড়ে নিয়ে গেল, দেখি তিনজন লোক। আমি বললাম, এ লোকগুলি কে? তারা বলল, এ লোকগুলি হচ্ছেন ইবরাহীম, মূসা ও ঈসা (আঃ) তারা আপনার অপেক্ষায় রয়েছেন (সিলসিলা ছাহীহাহ হা/১৪৩০)।</div>
<div>
<br /></div>
</div>
<h3 style="height: 0px; text-align: left;">
</h3>
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEik4dQ0KaA6UNHGSuKDdI4XUCpw-mAAV5FjSrPHzpWq9uLq63kI19lx5CBWzumFVF9pqhqkZpWQeVzoXmyh5KK1T25zxcZ_GnJ9gcE_OGbXYBv8eWiXh7R4CUtitwemdZXJSK_G3hfy_cw/s1600/%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%252C+jannater+bornona.png" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="জান্নাত সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ননা, " border="0" data-original-height="200" data-original-width="300" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEik4dQ0KaA6UNHGSuKDdI4XUCpw-mAAV5FjSrPHzpWq9uLq63kI19lx5CBWzumFVF9pqhqkZpWQeVzoXmyh5KK1T25zxcZ_GnJ9gcE_OGbXYBv8eWiXh7R4CUtitwemdZXJSK_G3hfy_cw/s1600/%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%252C+jannater+bornona.png" title="জান্নাতের হুরের বর্ননা," /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">জান্নাতের বিস্তারিত বর্ননা,</td></tr>
</tbody></table>
<h3 style="height: 0px; text-align: left;">
</h3>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-2211017583682038222018-12-15T19:21:00.000+06:002018-12-15T19:21:19.571+06:00কবরের আযাব, কবরের ভয়াবহ আযাব, কবরের আযাব থেকে বাচার উপায়,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: left;">
কবরের আযাবের ভয়াবহতা ও কবরের আযাব থেকে বাঁচার দোয়াঃ</h3>
মানুষের মরণের পর বড় ভয়াবহ কঠিন ও জটিল তিনটি স্থান রয়েছে। যেখানে মানুষের কোন সহযোগী থাকবে না। সেখানে মানুষ হবে বড় অসহায় ও নিরুপায়। সেদিন ভুল ধরা পড়লে সংশোধনের কোন পথ থাকবে না। সেদিন মানুষ কত অসহায় হয়ে পড়বে যা ভাষায় ও কলমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। যেমন নদীর স্রোত একবার চলে গেলে তাকে ফিরে আনা সম্ভব নয়। তেমনি মানুষের শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে সে ভয়াবহ সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না। তার একটি ভয়াবহ স্থান হচ্ছে কবর। এ সম্পর্কে অনেক ছহীহ হাদীছ ও কুরআনের আয়াত রয়েছে, যার কিছু নমুনা পেশ করা হ’ল।<br />
<br />
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,<br />
<br />
وَلَوْ تَرَي اِذِ الظَّالِمُوْنَ فِيْ غَمَرَاتِ الْمَوْتِ وَالْمَلئِكَةُ بَاسِطُوْا اَيْدِيْهِمْ اَخْرِجُوْا اَنْفُسَكُمْ اَلْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُوْنِ بِمَا كُنْتُمْ تَقُوْلُوْنَ عَلى اللهِ غَيْرَ الْحَقِّ وَكُنْتُمْ عَنْ ايَتِهِ تَسْتَكْبِرُوْنَ.<br />
<br />
‘হে নবী! আপনি যদি <a href="https://www.islamkjanun.com/2018/10/blog-post_24.html" target="_blank">অত্যাচারীদের</a> দেখতেন, যখন তারা মৃত্যুকষ্টে পতিত হয়, ফেরেশ্স্তাগণ তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে বলেন, তোমরা তোমাদের আত্মা বের করে দাও। ফেরেশতাগণ এ সময় বলেন, আজ হ’তে তোমাদেরকে প্রতিফল স্বরূপ অপমানজনক শাস্তি দেওয়া হবে। আর অপমানজনক শাস্তির কারণ হচ্ছে, তোমরা আল্লাহর প্রতি অসত্য আরোপ করতে এবং অহংকার করে তার আয়াত সমূহ এড়িয়ে চলতে’ (আন‘আম ৯৩)। অত্র আয়াতে অত্যাচারীদের মৃত্যু যন্ত্রণার কথা উল্লেখ হয়েছে। মৃত্যুর সময় তাদেরকে অপমান করা হয়, তা স্পষ্ট করা হয়েছে এবং মরণের পর হ’তেই তাদেরকে অপমানজনক শাস্তি দেওয়া হয়। আর মরণের পর হ’তে যে শাস্তি দেয়া হয় তাকেই কবরের শাস্তি বলে। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,<br />
<br />
فَوَقهُ اللهُ سَيِّئَاتِ مَامَكَرُوْا وَحَاقَ بِالِ فِرْعَوْنَ سُؤَالْعَذَابِ اَلنَّارُ يُعْرَضُوْنَ عَلَيْهَا غُدُوَّا وَّعَشِيًّا.<br />
<br />
‘ফেরাউন বংশীয় একজন মুমিনকে আল্লাহ ফেরাউনদের কবল হ’তে রক্ষা করেন। অবশেষে এদেরকে আল্লাহর কঠোর শাস্তি ঘিরে ধরে। আর এ কঠোর শাস্তি তাদের সামনে সকাল-সন্ধ্যা পেশ করা হয়’ (মুমিন ৪৫-৪৬)। অত্র আয়াতে সকাল-সন্ধ্যা যে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে কবরের শাস্তি। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, سَنُعَذِّبُهُمْ مَّرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّوْنَ اِلى عَذَابٍ عَظِيْمٍ. ‘অচিরেই আমি তাদেরকে বারবার শাস্তি দিব। অতঃপর তারা মহা কঠিন শাস্তির দিকে ফিরে যাবে’ (তাওবা ১০১)। অত্র আয়াতে বারবার শাস্তি বলে কবরের শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ অন্যত্র বলেন,يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِينَ آمَنُواْ بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ ‘আল্লাহ পার্থিব জীবনে ও আখেরাতে অবিচল রাখবেন সে সকল লোককে যারা ঈমান এনেছে প্রতিষ্ঠিত বাণীতে’ (ইবরাহীম ২৭)। এ আয়াত কবরের আযাব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।<br />
<br />
عَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْل الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ الْعَبْدَ اِذَا وُضِعَ فِيْ قَبْرِهِ وَتَوَلَّي عَنْهُ اَصْحَابُهُ اِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ اَتَاهُ مَلَكَانِ فَيَقْعُدَانِهِ فَيَقُوْلَانِ مَاكُنْتَ تَقُوْلُ فِيْ هذَا الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ فَاَمَّا الْمُؤْمِنُ فَيَقُوْلُ اَشْهَدُ اَنَّهُ عَبْدُ اللهِ وَرَسُوْلُهُ فَيُقَالُ لَهُ اُنْظُرْ اِلَي مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ قَدَ اَبْدَلَكَ اللهُ بِهِ مَقْعَدًا مِّنَ الْجَنَّةِ فَيَرَاهُمَا جَمِيْعًا وَاَمَّا الْمُنَافِقُ وَالْكَافِرُفَيُقَالُ لَهُ مَاكُنْتَ تَقُوْلُ فِيْ هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُوْلُ لَااَدْرِيْ كُنْتُ اَقُوْلُ مَايَقُوْلُ النَّاسُ فَيُقَالُ لَهُ لَادَرَيْتُ وَلَاتَلَيْتَ وَيُضْرَبُ بِمَطَارِقِ مِنْ حَدِيْدٍ ضَرْبَةً فَيَصِيْحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيْهِ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ.<br />
<br />
আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয় এবং তার সঙ্গীগণ সেখান হ’তে ফিরতে থাকে, তখন সে তাদের পায়ের শব্দ শুনতে পায়। তাদের ফিরে যেতে না যেতেই তার নিকট দু’জন ফেরেশতা চলে আসেন এবং তাকে উঠিয়ে বসান। তার পর নবী করিম (সা.) -এর প্রতি ইশারা করে জিজ্ঞেস করেন তুমি দুনিয়াতে এ ব্যক্তি সম্পর্কে কি ধারণা করতে? মুমিন ব্যক্তি তখন বলে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর দাস এবং তাঁর রাসূল। তখন তাকে বলা হয়, এই দেখে লও জাহান্নামে তোমার স্থান কেমন জঘন্য ছিল। আল্লাহ তোমার সেই স্থানকে জান্নাতের সাথে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তখন সে উভয় স্থান দেখে এবং খুশি হয়। কিন্তু মৃতু ব্যক্তি যদি মুনাফিক বা কাফের হয় তখন তাকে বলা হয়, দুনিয়াতে তুমি এ ব্যক্তি সর্ম্পকে কি ধারণা করতে? তখন সে বলে আমি বলতে পারি না। মানুষ যা বলত আমিও তাই বলতাম, (প্রকৃত সত্য কি ছিল তা আমার জানা নেই)। তখন তাকে বলা হয়, তুমি তোমার বিবেক দ্বারা বুঝার চেষ্টা করনি কেন? আল্লাহর কিতাব পড়ে বোঝার চেষ্টা করনি কেন? অতঃপর তাকে লোহার হাতুড়ি দ্বারা এমনভাবে পিটাতে শুরু করে। পিটানির চোটে সে হাউমাউ করে বিকটভাবে চিৎকার করতে থাকে। আর এত জোরে চিৎকার করে যে, মানুষ ও জিন ব্যতীত সব কিছুই তার চিৎকার শুনতে পায় (বুখারী, মুসলিম, বাংলা মিশকাত হা/১১৯)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মরণের পর মানুষ প্রশ্নের মুখামুখি হবে। প্রশ্নগুলি কি হবে তা নবী করিম(সা.) স্পষ্ট বলে দিয়েছেন এবং তার উত্তরও বলে দিয়েছেন। কবরে যথাযথ উত্তর দিতে না পারলে তার পরিণাম হবে বড় ভয়াবহ। হাতুড়ি দ্বারা কঠিনভাবে পিটানো হবে। তখন সে বিকট শব্দ করে চিৎকার করতে থাকবে। মানুষ এবং জিন ছাড়া জীব-জন্তু, কীট-পতঙ্গ ও জড় বস্ত্ত সব কিছুই শুনতে পাবে।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِاللهِ بْنْ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اَحَدَكُمْ اِذَا مَاتَ عُرِضَ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ انْ كَانَ مِنْ اَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ اَهْلِ الْجَنَّةِ وَاِنْ كَانَ مِنْ اَهْلِ النَّارِ فَمِنْ اَهْلِ النَّارِ فَيُقَالُ هذَا مَقْعَدُكَ حَتَّي يَبَْعَثَكَ اللهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامةِ.<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার স্থায়ী স্থানটি সকাল সন্ধায় তার সামনে পেশ করা হয়। সে যদি জান্নাতী হয়, তাহ’লে জানণাতের স্থান তার সামনে পেশ করা হয়। আর যদি জাহান্নামী হয়, তাহ’লে জাহানণামের স্থান তার সামনে পেশ করা হয় এবং বলা হয় এ হচ্ছে তোমার আসল স্থান। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা তোমাকে এখানেই পাঠাবেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১২০)। অত্র হাদীছে বলা হয়েছে, প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় কবরবাসীর সামনে জাহান্নাম বা জান্নাত পেশ করা হয় এবং বলা হয় এটাই তোমার আসল স্থান। তাকে জাহান্নাম দেখিয়ে সর্বদা আতঙ্কিত করা হয়। অথবা জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়।<br />
<br />
عَنْ عَائِشَةَ قَالتْ اَنَّ يَهُوْدِيَّةً دَخَلَتْ عَلَيْهَا فَذَكَرَتْ عَذَابَ الْقَبْرِ فَقَالَتْ لَهَا اَعَاذَك اللهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ فَسألَتْ عَائشةُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ عَذابِ القبْرِ فَقَالَ نَعَمْ عَذابُ الْقَبْرِ حَقٌّ قَالَتْ عائشةُ فَمَا رَأيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ صَلَّى صَلَاةً اِلَّا تَعَوَّذَ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ.<br />
<br />
আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা এক ইহুদী মহিলা তার নিকট আসল এবং কবরের আযাবের কথা উত্থাপন করে বলল, আয়েশা! আল্লাহ আপনাকে কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা করুন। অতঃপর আয়েশা (রাঃ) রাসূল(সা.) -কে কবরের শাস্তি সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূল(সা.) বললেন, হ্যাঁ, কবরের শাস্তি সত্য। আয়েশা (রাঃ) বলেন, তার পর হ’তে আমি রাসূল(সা.) -কে যখনই ছালাত আদায় করতে দেখেছি। তখনই তাকে কবরের আযাব হ’তে পরিত্রাণ চাইতে দেখেছি’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১২৮)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কবরের শাস্তি চূড়ান্ত সত্য। নবী করীম(সা.) যখনই ছালাত আদায় করতেন, তখনই কবরের আযাব হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন। তাই আমাদেরও উচিৎ প্রত্যেক ছালাতের মধ্যে কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাওয়া।<br />
<br />
عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ قَالَ بَيْنَا رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْ حَائِطٍ لِبَنِيْ النَّجَّارِ عَلَي بَغْلَةٍ لَهُ وَنَحْنُ مَعَهُ اِذْحَادَتْ فَكَادَتْ تُلْقِيْهِ وَاِذَا اَقْبُرُ سِتَّةٍ اَوْخَمْسَةٍ فَقَالَ مَنْ يَّعْرِفُ أَصْحَابَ هَذِهِ الْقُبُوْرِ قَالَ رَجُلٌ أَنَا قَالَ فَمَتىَ مَاتُوْا قَالَ فِى الشِّرْكِ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ الْاُمَّةَ لتَبُلْيَ فِيْ قُبُوْرِهَا فَلَوْلَا اَنْ لَّاتُدَفِّنُوْا لَدَعَوْتُ اللهَ اَنْ يُّسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِيْ اَسْمَعُ مِنْهُ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ تََعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ قَالُوْا نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِقَالَ تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالُوْا نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالَ تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنَ الْفِتَنَ مَاظَهَرَمِنْهَا وَمَابَطَنَ قَالُوْا تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنَ الْفِتَنِ مَاظَهَرَ مِنْهَا وَمَابَطَنَ قَالَ تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ قَالُوْا نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ فِتْنَةِالدَّجَّالِ.<br />
<br />
যায়েদ ইবনে ছাবিত (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) একদা নাজ্জার গোত্রের একটি বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় খচ্চরটি লাফিয়ে উঠল এবং নবী করীম (সা.) -কে ফেলে দেওয়ার উপক্রম করল। দেখা গেল সেখানে ৫টি কিংবা ৬টি কবর রয়েছে। তখন নবী করীম (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, এই কবরবাসীদের কে চিনে? এক ব্যক্তি বলল, আমি চিনি। নবী করীম (সা.) বললেন, তারা কখন মারা গেছে? সে বলল, মুশরিক অবস্থায় মারা গেছে। তখন নবী করীম (সা.) বললেন, নিশ্চয়ই মানুষকে তার কবরে কঠিন পরীক্ষায় ফেলা হয় এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। কবরের শাস্তির ভয়ে তোমরা কবর দেয়া ত্যাগ করবে, না হ’লে আমি আল্লাহর নিকট দো‘আ করতাম যেন আল্লাহ তোমাদেরকে কবরের শাস্তি শুনিয়ে দেন, যেমন আমি শুনতে পাচ্ছি। অতঃপর নবী করীম(সা.) আমাদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, তোমরা সকলেই জাহান্নামের আযাব হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা সকলেই বলে উঠল, আমরা জাহান্নামের আযাব হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাচ্ছি। নবী করীম(সা.) বললেন, তোমরা সকলেই কবরের আযাব হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা সকলেই বলল, আমরা কবরের শাস্তি হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাচ্ছি। নবী করীম (সা.) বললেন, তোমরা সমস্ত গোপন ও প্রকাশ্য ফেতনা হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা বলল, আমরা গোপন ও প্রকাশ্য ফেতনা হ’তে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। নবী করীম (সা.) বললেন, তোমরা দাজ্জালের ফেতনা হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা বলল, আমরা সকলেই আল্লাহর নিকট দাজ্জালের ফেতনা হ’তে পরিত্রাণ চাচ্ছি’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১২২)। মানুষ কবরে এমন ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হবে, যা মানুষকে শুনানো সম্ভব নয়। মানুষ কবরের শাস্তি শুনতে পেলে বেঁচে থাকতে পারবে না এবং কাউকে কবরে দাফন করতেও চাইবে না। এজন্য নবী করীম (সা.) আমাদের সাবধান ও সর্তক করে বলেছেন, ‘তোমরা সর্বদা কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাও’।<br />
<br />
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا أُقْبِرَ الْمَيِّتُ اَتَاهُ مَلَكَانِ اَسْوَادَانِ اَرْزَقَانِ يُقَالُ لِأَحَدِهِمَا الْمُنْكَرُ وَالْآخَرُ النَّكِيْرُ فَيَقُوْلَانِ مَاكُنْتَ تَقُوْلُ فِيْ هذَاالرَّجُلِ فَيَقُوْلُ هُوَعَبْدُاللهِ وَرَسُوْلُهُ أَشْهَدُ أنْ لَّااِلَهَ اِلَّااللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسًوْلُهُ فَيَقُوْلَانِ قَدْكُنَّا نَعْلْمُ إِنَّكَ تَقُوْلُ هَذَا ثُمَّ يُفْسَحُ لَهُ فِيْ قَبْرِهِ سَبْعُوْنَ ذِرَاعًا فِيْ سَبْعِيْنَ وَيُنَوِّرُلَهُ فِيْهِ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ نَمَّ فَيَقُوْلُ اَرْجِعُ اِلَي أَهْلِيْ فَأُخْبِرُهُمْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ نَمْ كَنَوْمَةِ الْعَرُوْسِ الَّذِيْ لَايُوْقِظُهُ اِلَّا أَحَبُّ اَهْلِهِ اِلَيْهِ حَتَّي يَبْعَثَهُ اللهُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ وَاِنْ كَانَ مُنَافِقًا قَالَ سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُوْلُوْنَ قَوْلًا فَقُلْتُ مِثْلُهَ لَا اَدْرِىْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ قَدْكُنَّا نَعْلَمُ اَنَّكَ تَقُوْلُ ذَلِكَ فَيُقَالُ لِلْأْرْضِ الْتَئِمِيْ عَلَيْهِ فَتَلْتَنِمُ عَلَيْهِ فَتَخْتَلِفُ اَضْلَاعُهُ فَلَايَزَالُ فِيْهَا مُعَذَّبًاحَتَّي يَبْعَثَهُ اللهُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ.<br />
<br />
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয়, তখন তার নিকট নীল চক্ষু বিশিষ্ট দু’জন কাল বর্ণের ফেরেশ্তা এসে উপস্থিত হন। তাদের একজনকে বলা হয় মুনকার, অপর জনকে বলা হয় নাকির। তারা রাসূল (সা.) -এর প্রতি ইশারা করে বলেন, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি দুনিয়াতে কি বলতে? মৃত ব্যক্তি মুমিন হ’লে বলেন, তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তখন তারা বলেন, আমরা পূর্বেই জানতাম আপনি এ কথাই বলবেন। অতঃপর তার কবরকে দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ৭০ (সত্তর) হাত করে দেয়া হয়। অর্থাৎ অনেক প্রশস্ত করে দেয়া হয় এবং সেখানে আলোর ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। তারপর তাকে বলা হয় ঘুমিয়ে থাক। তখন সে বলে না অমি আমার পরিবারের নিকট ফিরে যেতে চাই। ফেরেশ্তাগণ বলেন, তুমি এখানে বাসর ঘরের দুলার ন্যায় আনন্দে ঘুমাতে থাক যাকে তার পরিবারের সর্বাধিক প্রিয়জন ব্যতীত আর কেউ ঘুম ভাঙাতে পারে না। যতদিন পর্যন্ত আল্লাহ তাকে এ শয্যাস্থান হ’তে না উঠাবেন, ততদিন পর্যন্ত সে ঘুমিয়ে থাকবে। যদি মৃত ব্যক্তি মুনাফিক হয় তাহ’লে সে বলে, লোকে তার সর্ম্পকে যা বলত আমিও তাই বলতাম। আমার জানা নেই তিনি কে? তখন ফেরেশতাগণ বলেন, আমরা জানতাম যে, তুমি এ কথাই বলবে। তারপর জমিন কে বলা হয় তোমরা এর উপর মিলে যাও। সুতরাং জমিন তার উপর এমনভাবে মিলে যায় যাতে তার এক পাশের হাড় অপর দিকে চলে যায়। সেখানে সে এভাবে শাস্তি ভোগ করতে থাকবে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাকে তার এ স্থান হ’তে উঠাবেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩০, হাদীছ হাসান)। মৃতব্যক্তিকে কবরে রাখার পরপরই ভয়াবহ আকৃতিতে দু’জন ফেরেশতা আসেন এবং তারা জিজ্ঞেস করেন। জিজ্ঞাসার উত্তর ঠিক হ’লে কবরকে প্রশস্ত করা হয় এবং কবরকে আলোকিত করা হয়। আর বাসর ঘরের দুলার ন্যায় নিরাপদে ঘুমাতে বলা হয়। উত্তর সঠিক দিতে না পারলে মাটিকে বলা হয় তুমি একে দু’দিক থেকে চেপে পিশে একাকার করে দাও। তখন মাটি তাকে এভাবে চেপে পিশে একাকার করতে থাকে আর এরূপ হ’তে থাকবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত।<br />
<br />
عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبِ عَنْ رَسُوْلٍ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَأْتِيْهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَنْ رَبُّكَ فَيَقُوْلُ رَبِّيْ اللهُ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَادِيْنُكَ فَيَقُوْلُ دِيْنِيْ الْاِسْلَامُ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَاهَذَا الرَّجُلُ الَّذِيْ بُعِثَ فِيْكُمْ فَيَقُوْلُ هُوَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُوْلَانِ لَهُ وَمَا يُدْرِيْكَ فَيَقُوْلُ قَرَأْتُ كِتَابَ اللهِ فَأَمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُ فَذَلِكَ قَوْلُهُ يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ آَمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ- الاية قَالَ فَيُنَادِيْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ اَنْ صَدَقَ عَبْدِيْ فَافْرِشُوْهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَالْبِسُوْهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَافْتَحُوْا لَهُ بَابًا اِلَي الْجَنَّةِ فَيُفْتَحُ قَالَ فَيَأْتِيْهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيْبِهَا وَيُفْسَحُ لَهُ فِيْهَا مَدَّبَصَرِهِ وَأَمَّا الْكَافِرُ فَذَكَرَ مَوْتَهُ وَيُعَادُ رُوْحُهُ فِيْ جَسَدِهِ وَيَأْتِيْهِ مَلَكَانِ فَيَجْلِسَانِهِ فَيَقُوْلَانِ مَنْ رَبُّكَ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَا اَدْرِيْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَادِيْنُكَ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَا اَدْرِيْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَاهَذَا الرَّجُلُ الَّذِيْ بُعِثَ فِيْكُمْ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَا اَدْرِيْ فَيُنَادِيْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ اَنْ كَذَبَ فَافْرِشُوْهُ مِنَ النَّارِ وَالْبِسُوْهُ مِنَ النَّارِ وَافْتَحُوْا لَهُ بَابًا الي النَّارِ قَالَ فَيَأْتِيْهِ مِنْ حَرِّهَا وَسَمُوْمِهَا قَالَ وَيُضَيِّقُ عَلَيْهَ قَبْرُهُ حَتَّي يَخْتَلِفَ فِيْهِ اَضْلَاعُهُ ثُمَّ يُقَيِّضُ لَهُ اَعْمَي اَصَمُّ مَعَهُ مِرْزَبَةٌ مِنْ حَدِيْدٍ لَوْضُرِبَ بِهَا جَبَلٌ لَصَارَ تُرَابًا فَيُضْرَبُهُ بِهَا ضَرْبَةً يَسْمَعُهَا مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اِلَّا الثَّقَلَيْنِ فَيَصِيْرُتُرَابًا ثُمَّ يُعَادُفِيْهِ الرُّوْحُ.<br />
<br />
বারা ইবনে আযেব (রা.) রাসূল (সা.) হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূল(সা.) বলেছেন, কবরে মুমিন বান্দার নিকট দু’জন ফেরেশতা আসেন এবং তাকে উঠিয়ে বসান। অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার প্রতিপালক কে? সে বলে, আমার প্রতিপালক আল্লাহ। তারপর জিজ্ঞেস করেন, তোমার দ্বীন কি? সে বলে আমার দ্বীন ইসলাম। পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, এই যে লোকটি তোমাদের মাঝে প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? সে বলে তিনি আল্লাহর রাসূল(সা.) । তখন ফেরেশ্তাগণ তাকে বলেন, তুমি কিভাবে তা জানতে পারলে? সে বলে আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি তা দেখেছি তার প্রতি ঈমান এনেছি ও তাকে সমর্থন করেছি। তখন নবী করীম(সা.) বললেন, এই হ’ল আল্লাহর বাণী,يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ امَنُوْا بِاالْقَوْلِ الثّابِتِ ‘যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে আল্লাহ্ তাদেরকে কালেমা শাহাদাতের উপর অটল রাখবেন’ (ইবরাহীম ২৭)। তারপর নবী করীম(সা.) বললেন, এসময় আকাশ হ’তে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, আমার বান্দা সঠিক বলেছে। সুতরাং তার জন্য জান্নাতের একটি বিছানা বিছিয়ে দাও। তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য কবর হ’তে জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার জন্য তাই করা হয়। নবী করীম(সা.) বলেন, ফলে তার দিকে জান্নাতের সুগন্ধি আসতে থাকে এবং ঐ দরজা তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেয়া হয়। তারপর নবী করীম (সা.) কাফেরের মৃত্যু প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, তার আত্মাকে তার দেহে ফিরিয়ে আনা হয়। তারপর দু’জন ফেরেশতা তাকে উঠিয়ে বসান এবং জিজ্ঞেস করেন। তোমার প্রতিপালক কে? তখন সে বলে হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার দ্বীন কি? সে পুনরায় বলে হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর তারা ইশারা করে বলেন, এই লোকটি কে? যিনি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন। সে পুনরায় বলে হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর আকাশ থেকে একজন আহবানকারী বলেন, সে মিথ্যা বলেছে। তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দাও। তারপর তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। তখন তার দিকে জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দেয়া হয়। নবী করীম(সা.) বলেন, তখন তার দিকে জাহান্নামের লু হাওয়া আসতে থাকে। এছাড়া তার প্রতি তার কবরকে এত সংকীর্ণ করে দেয়া হয় যাতে তার এক দিকের পাঁজর আর এক দিকের পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যায়। অতঃপর তার জন্য একজন অন্ধ ও বধির ফেরেশতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার সাথে একটি লোহার হাতুড়ি থাকে যদি এই হাতুড়ি দ্বারা কোন পাহাড়কে আঘাত করা হয়, তাহ’লে পাহাড়ও ধূলিকণায় পরিণত হয়ে যাবে। আর সেই ফেরেশতা এ হাতুড়ি দ্বারা তাকে এত জোরে আঘাত করেন, আর সে আঘাতের চোটে এত বিকট চিৎকার করে যে, মানুষ ও জিন ব্যতীত পৃথিবীর সব কিছুই শুনতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে সে মাটির সাথে মিশে যায়। তারপর আবার তার দেহে আত্মা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে তার শাস্তি চলতে থাকে (আহমাদ, আবুদাঊদ, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/১৩১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১২৪)।<br />
<br />
অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, কবরে থাকতেই মানুষকে জাহান্নামের শাস্তি দেওয়া হবে। কবরে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হবে। জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দেয়া হবে, জাহান্নামের দিকে দরজা খুলে দেয়া হবে। এছাড়া কবরকে এত সংকীর্ণ করা হবে যাতে তার হাড় হাড্ডি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। এরপরও এমন একজন ফেরেশতা নির্ধাণ করা হবে যে অন্ধ ও বধির অর্থাৎ যার নিকট কোন দয়ার আশা করা যায় না। কেননা চক্ষু দিয়ে দেখলে অন্তরে দয়ার প্রভাব হয় আর কান দিয়ে শুনলেও অন্তরে দয়ার প্রভাব হয়। কিন্তু এমন একজন ফেরেশ্তা যে চখেও দেখে না কানেও শুনে না। তাই তার নিকট দয়ার কোন আশা করা যায় না।<br />
<br />
عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتُعَادُ رُوْحُهُ فِيْ جَسَدِهِ وَيَأْتِيْهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَاهَذَا الرَّجُلُ الَّذِيْ بُعِثَ فِيْكُمْ فَيَقُوْلُ هُوَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُوْلَانِ لَهُ وَمَا يُدْرِيْكَ فَيَقُوْلُ قَرَأْتُ كِتَابَ اللهِ فَأَمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُ فَيُنَادِيْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ اَنْ صَدَقَ عَبْدِيْ فَافْرِشُوْهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَالْبِسُوْهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَافْتَحُوْا لَهُ بَابًا اِلَي الْجَنَّةِ قَالَ فَيَأْتِيْهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيْبِهَا وَيُفْسَحُ لَهُ فِيْهَا مَدَّبَصَرِهِ قَالَ وَيَأْتِيْهِ رَجُلٌ اَحْسَنُ الْوَجْهِ حَسَنُ الثِّيَابِ طِيْبُ الرِّيْحِ فَيَقُوْلُ أَبْشِرْ بِالَّذِيْ يَسُرُّكَ هَذَا يَوْمُكَ الَّذِيْ كُنْتَ تُوْعَدُ فَيَقُوْلُ لَهُ مَنْ اَنْتَ فَوَجْهُكَ الْوَجْهُ يَجِئُ بِالْخَيْرِ فَيَقُوْلُ اَنَا عَمَلُكَ الصَّالِحُ.<br />
<br />
বারা ইবনে আযেব (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, লাশ কবরে রাখা হলে তার আত্মা তার শরীরে ফিরে দেয়া হয়। অতঃপর তার নিকট দু’জন ফেরেশতা আসেন এবং তাকে উঠিয়ে বসান। তারপর তারা তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমাদের মধ্যে যিনি প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? সে বলে তিনি আল্লাহর রাসূল (সা.) । পুনরায় তারা তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি তা কি করে জানতে পারলে? সে বলে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, অতঃপর তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছি। তখন আসমান হ’তে একজন আহবান করে বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে। সুতরাং তার জন্য একটি জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও। এছাড়া তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। নবী করীম (সা.) বলেন, তখন তার নিকট জান্নাতের সুখ-শান্তি আসতে থাকে এবং তার জন্য তার কবরকে তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেয়া হয়। নবী করীম (সা.) বলেন, অতঃপর তার নিকট এক সুন্দর চেহারা বিশিষ্ট সুবেশী ও সুগন্ধিযুক্ত ব্যক্তি আসেন এবং তাকে বলেন, তোমাকে খুশি করবে এমন জিনিসের সুসংবাদ গ্রহণ কর। আর এ দিনের ওয়াদাই তোমাকে দেওয়া হয়েছিল। তখন সে মৃতব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করবে, তুমি কে? তোমার চেহারা এত সুন্দর যে, কল্যাণের বার্তা বহণ করে। তখন সে বলে অমি তোমার সৎ আমল (আহমাদ, মিশকাত হা/১৫৪২, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ভাল ব্যক্তির জন্য কবরও জান্নাত। কারণ সে কবর থেকে জান্নাতের সব ধরনের সুখ ভোগ করতে পায়। তার জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হচ্ছে তার নিজের সৎ আমলগুলি এক সুন্দর চেহারা বিশিষ্ট সুবেশী সুগন্ধিযুক্ত ব্যক্তির আকার ধারণ করে এসে বলবে, তোমার জন্য সুসংবাদ, আমি তোমার সৎ আমল, আমি কল্যাণের বার্তা বহনকারী।<br />
<br />
عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتُعَادُ رُوْحُهُ فِيْ جَسَدِهِ وَيَأْتِيْهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَنْ رَبُّكَ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَاَدْرِيْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَادِيْنُكَ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَاَدْرِيْ فَيُنَادِيْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ اَنْ كَذَبَ فَافْرِشُوْهُ مِنَ النَّارِ وَالْبِسُوْهُ مِنَ النَّارِ وَافْتَحُوْا لَهُ بَابًا الي النَّارِ قَالَ فَيَأْتِيْهِ مِنْ حَرِّهَا وَسَمُوْمِهَا قَالَ وَيُضَيَّقُ عَلَيْهَ قَبْرُهُ حَتَّي يَخْتَلِفَ فِيْهِ اَضْلَاعُهُ وَيَأْتِيْهِ رَجُلٌ قَبِيْحُ الْوَجْهِ قَبِيْحُ الثِّيَابِ مَنْتَنُ الرِّيْحِ فَيَقُوْلَ أَبْشِرْ بِالَّذِيْ يَسُؤْكَ هَذَا يَوْمُكَ الَّذِيْ كُنْتَ تُوْعَدُ فَيَقُوْلُ لَهُ مَنْ اَنْتَ فَوَجْهُكَ الْوَجْهُ يَجِئُ بِالشَّرِّ فَيَقُوْلُ اَنَا عَمَلُكَ الْخَبِيْثُ.<br />
<br />
বারা ইবনে আযেব (রঃ) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, লাশ কবরে রাখা হলে আত্মা তার দেহে ফেরত দেয়া হয়। তখন তার নিকট দু’জন ফেরেশ্তা আসেন এবং তাকে উঠিয়ে বসান। অতঃপর তারা তাকে জিজ্ঞেস করেন তোমার প্রতিপালক কে? তখন সে উত্তরে বলে, হায়! হায়! আমি জানি না। তারপর জিজ্ঞেস করেন তোমার দ্বীন কি? তখন সে উত্তরে বলে হায়! হায়! আমি জানি না। তারপর জিজ্ঞেস করেন তোমাদের মধ্যে যিনি প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? তখন সে উত্তরে বলে, হায়! হায়! আমি জানি না। এসময় আকাশের দিক হ’তে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করে বলেন, সে মিথ্যা বলেছে। সুতরাং তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার দিকে জাহান্নামের লু হাওয়া আসতে থাকে। আর তার কবর এত সংকীর্ণ হয়ে যায় যে, তার এক দিকের পাজর অপর দিকে ঢুকে যায়। এ সময় তার নিকট অতি কুৎসিত চেহারা বিশিষ্ট নোংরা বেশী দুরগন্ধযুক্ত লোক এসে বলে, তোমাকে দুঃখিত করবে এমন জিনিসের দুঃসংবাদ গ্রহণ কর। এদিন সম্পর্কে তোমাকে পৃথিবীতে ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল। তখন সে জিজ্ঞেস করে তুমি কে, কি কুৎসিত তোমার চেহারা, যা মন্দ সংবাদ বহন করে? সে বলবে, আমি তোমার বদ আমল (আহমাদ মিশকাত হা/১৫৪২, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে পাপাচার ব্যক্তি কবরেই জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। আর সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে তার আমলগুলি এক কুৎসিত চেহারা বিশিষ্ট নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত লোকের আকৃতি ধারণ করে এসে বলবে, আমি তোমার বদ আমল তোমার জন্য দুঃসংবাদ বহন করে এনেছি।<br />
<br />
عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قاَلَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِى جَنَازَةِ رَجُلٍ مِّنَ الْانَصارِ فَانْتَهَيْنَا اِلي الْقَبْرِ وَلَمَّا يُلْحَدُ فَجَلَسَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَلَسْنَا حَوْلَهُ كَأنَّ عَلي رُؤُسِنَا الطَّيْرَ وَفِيْ يَدِهِ عُوْدٌ يَنْكُتُ ِبهِ الْاَرْضَ فَرَفَعَ رَاْسَهُ فَقَالَ اِسْتَعِيْذُوْا بِاللهِ مِنْ عَذابِ القبْرِ مَرّتَيْنِ اَوْثَلَثًا.<br />
<br />
বারা ইবনে আযিব (রা.) বলেন, আমরা একবার নবী করীম(সা.) -এর সাথে আনছারদের এক লোকের জানাযায় গেছিলাম। আমরা কবরের নিকট গেলাম, কিন্তু তখনও কবর খোড়া হয়নি, তখন নবী করীম(সা.) বসলেন, আমরাও তার আশেপাশে বসলাম। আমরা এমন চুপচাপ বসে ছিলাম, যেন আমাদের মাথায় পাখি বসে আছে। তখন নবী করীম(সা.) -এর হাতে একটি কাঠের টুকরা ছিল, যা দ্বারা তিনি চিন্তিত ব্যক্তির ন্যায় মাটিতে দাগ কাটতেছিলেন। অতঃপর তিনি মাথা উঠালেন এবং বললেন আল্লাহর নিকট কবর আযাব হ’তে পরিত্রাণ চাও। তিনি কথাটি দুই-তিন বার বললেন (আহমাদ, মিশকাত হা/১৬৩০; বঙ্গানুবা মিশকাত হা/১৫৪২, হাদীছ ছহীহ)। কবরের শাস্তি গভীরভাবে ভাববার বিষয়। কবরের শাস্তি থেকে পরিত্রাণ চাওয়ার জন্য নবী করীম(সা.) আদেশ করেছেন। কথাটি তিনি বারবার বলে মানুষকে কঠোর হুঁশিয়ারী দিয়েছেন।<br />
<br />
عَنْ عُثْمَانَ اَنَّهُ كَانَ اِذَا وَقَفَ عَلي قَبْرٍبَكي حَتّي يَبُلَّ لِحْيَتَهُ فَقِيْلَ لَهُ تَذْكُرُ الْجَنّةَ وَالنَّارَ فَلَاتَبْكِيْ وَتَبْكِىْ مِنْ هذا فَقَالَ اِنّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال اِنّ الْقَبْرَ اَوَّلُ مَنْزِلٍ مِنَ مَنَازِلِ الْاَخِرَةِ فَاِنْ نَجَي مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ اَيْسَرَمِنْهُ وَاِنْ لَمْ يَنْجُ مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ اشَدُّمِنْهُ قَالَ وَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلّى اللهِ عَلَيْهِ وَسَلّمَ مَا رَاَيْتُ مَنْظَرًا قَطُّ اِلَّا وَالْقَبرَ اَفْظَعُ مَنْهُ.<br />
<br />
ওছমান (রা.) হ’তে বর্ণিত তিনি যখন কোন কবরের পাশে দাঁড়াতেন, তখন এমন কাঁদতেন যে, তার দাড়ি ভিজে যেত। একদিন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি জাহান্নামের এবং জান্নাতের কথা স্বরণ করেন, অথচ কাঁদেন না, আর কবর দেখলেই কাঁদেন, ব্যাপার কি? তিনি বললেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, পরকালের বিপদজনক স্থান সমূহের মধ্যে কবর হচ্ছে প্রথম। যদি কেউ সেখানে মুক্তি পেয়ে যায়, তা‘হলে তার পরের সব স্থানগুলি সহজ হয়ে যাবে। আর যদি কবরে মুক্তি লাভ করতে না পারে ত‘াহলে পরের সব স্থানগুলি আরও কঠিন ও জটিল হয়ে যাবে। অতঃপর তিনি বললেন, নবী করীম (সা.) এটাও বলেছেন যে, আমি এমন কোন জঘন্য ও ভয়াবহ স্থান দেখিনি যা কবরের চেয়ে জঘন্য ও ভয়াবহ হ‘‘ত পারে। (তিরমিযি বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১২৫, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ হ’তে বুঝা গেল যে, পরকালের ভয়াবহ স্থানসমূহের প্রথম স্থান হচ্ছে কবর। কবরের বিপদ হ’তে রক্ষা পেলে, বাকি সব স্থানে রক্ষা পাওয়া যাবে। কবরের ভয়-ভীতি মনে করে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করা এবং কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাওয়া উচিত।<br />
<br />
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هذا الّذِيْ تَحَرَّكَ لَهُ الْعَرْشُ وَفُتِحَتْ لَهُ اَبْوَابُ السَّمَاءِ وَشَهِدَهُ سَبْعُوْنَ اَلْفًا مِنَ الْمَلائكةِ لَقدْ ضَمّ ضَمّةً ثُمّ فُرِجَ عَنْهُ.<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, সা‘দ (রা.) মৃত্যুবরণ করলে রাসূল (সা.) বলেন, সা‘দ এমন ব্যক্তি যার মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপেছিল, যার জন্য আকাশের দরজা খুলে দেয়া হয়েছিল এবং যার জানাযাতে সত্তর হাজার ফেরেশতা উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু এমন ব্যক্তির কবরও সংকীর্ণ করা হয়েছিল। অবশ্য পরে তা প্রশস্ত করা হয়েছিল (নাসাঈ, মিশকাত হা/১৩৬)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, ভাল মানুষের কবরও সংকীর্ণ হ’তে পারে।<br />
<br />
عَنْ اَسْمَاءِ بِنْتِ اَبِيْ بَكْرٍ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ اُوْحِيَ اِلَيَّ اِنَّكُمْ تُفْتَنُوْنَ فِي القْبْرِ قَرِيْبًا مِنْ فِتْنَةِ الدّجَّاِل.<br />
<br />
আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, তাঁকে অহীর মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, দাজ্জালের ফেতনার মতই তোমাদেরকে কবরের ফিতনার মুখোমুখি করা হবে (নাসাঈ, মিশকাত হা/১৩৭)। দাজ্জালের ফিতনা যেমন বিপদজনক তেমনি বিপদজনক হচ্ছে কবরের ফেতনা।<br />
<br />
عَنْ اَسْمَاءِ بِنْتِ اَبِيْ بَكْرٍ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطِيْبًا فَذَكَرَ فِتْنَةَ القَبْرِ الّتِيْ يُفْتَنُ فِيْهَا الْمَرْءُ فَلَمّا ذَكَرَ ذلِكَ ضَجّ الْمُسْلِمُوْنَ ضَجَّةً.<br />
<br />
আবু বকর (রা.) -এর মেয়ে আসমা (রাঃ) বলেন, নবী করীম(সা.) একদিন আমাদের মাঝে খুৎবা দিলেন। তাতে কবরের আলচনা করলেন। কবরের ফেৎনার কথা শুনে মুসলমানগণ চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন (বুখারী, মিশকাত হা/১৩৭)। মানুষের সামনে কবরের আলোচনা হওয়া উচিত। কবরের শাস্তি ও ফেতনার ভয়ে কান্নাকাটি করা উচিত।<br />
<br />
عَنْ اَبِي هُريرةَ قال قَالَ رَسُوْلُ اللهِ اَكْثِرُوْا مِنْ ذِكْرِهَاذمِ اللّذَّاتِ الْمَوْتِ.<br />
<br />
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, তোমরা এমন এক জিনিস খুব বেশি বেশি স্মরণ কর, যা মানুষের জীবনের স্বাদকে ধ্বংস করে দেয়, আর তা হচ্ছে মরণ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/১৬০৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪২৫৮, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতিয়মাণ হয় যে, মানুষের সবচেয়ে স্মরণীয় কথা হচ্ছে মরণ। আর মরণই মানুষের জীবনের সব আশা-আকাঙ্ক্ষাকে শেষ করে দেয়।<br />
<br />
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ رَسُوْلِ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَاءَهُ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَسَلَّمَ عَلَي النَّبِيِّ ثُمَّ قَالَ يَارَسُوْلَ اللهِ اَيُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَفْضَلُ قَالَ اَحْسَنُهُمْ خُلُقًا قَالَ اَيُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَكْيَسُ قَالَ اَكْثَرُهُمْ لِلْمَوْتِ ذِكْرًا وَاَحْسَنُهُمْ لَمَا بَعْدَهُ اِسْتِعْدَادًا اُولئِكَ الْاَكْيَاسُ.<br />
<br />
ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসূল(সা.) -এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ আনছারদের একজন লোক আসলেন। সে নবী করীম(সা.) -কে সালাম করলেন, অতঃপর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! সবচেয়ে উত্তম মমিন কে? নবী করীম(সা.) বললেন, চরিত্রে যে সবচেয়ে ভাল। তারপর লোকটি জিজ্ঞেস করলেন, সবচেয়ে বুদ্ধিমান মুমিন কে? রাসূল(সা.) বললেন যে, সবচেয়ে বেশি মরণকে স্মরণ করতে পারে আর মরণের পরবর্তী জীবনের জন্য সবচেয়ে সুন্দর প্রস্ত্ততি গ্রহণ করতে পারে। তারাই সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান (ইবনে মাজাহ, হাদীছ হাসান হা/৪২৫৯)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, মরণকে যারা বেশী বেশি স্মরণ করে তারাই বেশী বুদ্ধিমান এবং তারাই পরবর্তী জীবনে বেশি সফলতা অর্জন করতে পারবে।<br />
<br />
عَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّهُ مَرَّ بِقَبْرَيْنِ يُعَذَّبَانِ فَقَالَ اِنّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ وَمَايُعَذَّبَانِ فِيْ كَبِيْرٍ اَمَّا اَحَدُهُمَا فَكَانَ لَايَسْتَتِرُ مِنَ الْبَوْلِ وَاَمّا الْاخَرُ فَكَانَ يَمْشِيْ بِالنَّمِيْمَةِ.<br />
<br />
ইবনে আববাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম(সা.) এমন দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যে কবর দু’টিতে শাস্তি হচ্ছিল। তখন তিনি বললেন, কবরে এ দু’ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে অথচ তাদের বড় পাপের জন্য শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। তাদের একজন পেশাব থেকে সর্তকতা অবলম্বন করত না আর অপরজন চোগলক্ষোরী করে বেড়াত (বুখারী হা/১৩৬১)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পেশাব হ’তে সতর্ক না থাকলে কবরে শাস্তি হবে।<br />
<br />
قَالَ اِبْنُ عُمَرَ اَطْلَعَ النّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلى اَهْلِ الْقَلِيْبِ فَقَالَ وَجَدْتُمْ مَاوَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًا فَقِيْلَ لَهُ تَدْعُوْ اَمْوَاتًا فقالَ مَا اَنْتُمْ بِاَسْمَعَ مِنْهُمْ وَلكِنْ لَايُوْجِيْبُوْنَ.<br />
<br />
ইবনে ওমর (রা.) বলেন, বদরের যুদ্ধে নিহত কাফিরদের যারা কালীব নামক এক গর্তে পড়েছিল, তাদের দিকে ঝুকে দেখে নবী করীম(সা.) বললেন, তোমাদের সাথে তোমাদের প্রতিপালক যে ওয়াদা করেছিলেন, তা তোমরা বাস্তবে পেয়েছো তো? (তারা ছিল ৪৪ জন) তখন ছাহাবীগণ নবী কারীম (সা.) -কে বললেন, আপনি মৃতদের ডেকে কথা বলছেন, ওরা কি আপনার কথা শুনতে পায়? নবী করীম (সা.) বললেন, তোমরা তাদের চেয়ে অধিক বেশি শুনতে পাও না। তারাই তোমাদের চেয়ে বেশী শুনতে পাচ্ছে! তবে তারা জবাব দিতে পারছে না (বাংলা বুখারী ২য় খন্ড, ই: ফা: হা/১৩৭০)। অত্র হাদীছ প্রমাণ করে যে, নবী করীম (সা.) বদরের যুদ্ধে নিহত কাফিরদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, তোমরা মরণের পর যে শাস্তি ভোগ করছ এ শাস্তির কথাই আমি তোমাদের বলতাম। এ শাস্তির ব্যাপারেই আল্লাহ সতর্ক করেছিলেন। যা তোমরা অস্বীকার করেছিলে। আর এটা হচ্ছে কবরের শাস্তি। জাহান্নাম-জান্নাতের বিষয়টি বিচারের পর।<br />
<br />
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ الّنبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إنَّهُمْ لَيَعْلَمُوْنَ الْانَ اِنّ مَا كُنْتُ اَقُوْلُ لَهُمْ حَقٌّ.<br />
<br />
আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই তারা এখন ভালভাবে জানতে ও বুঝতে পেরেছে যে, কবরের শাস্তি প্রসঙ্গে আমি তাদের যা বলতাম, তা বাস্তব ও চূড়ান্ত সত্য (বাংলা বুখারী ২য় খন্ড ই: ফা: হা/১৩৭১)।<br />
<br />
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُوْ وَيَقُوْلُ اللهُمَّ إنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ.<br />
<br />
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চেয়ে প্রার্থনা করতেন- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাই, জাহান্নামের শাস্তি হ’তে আশ্রয় চাই, জীবন ও মরণের ফেতনা হ’তে পরিত্রাণ চাই এবং দাজ্জালের ফেতনা হ’তে পরিত্রাণ চাই (বুখারী হা/১৩৭৭)। হাদীছে বুঝা যায় যে, নবী করীম (সা.) কবরের শাস্তি হ’তে নিয়মিত পরিত্রাণ চাইতেন। এজন্য সকল মানুষের জরুরী কর্তব্য হচ্ছে, কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাওয়া (বাংলা বুখারী হা/১৩৮৫)। তারপর অত্র হাদীছে যেসব শাস্তির কথা রয়েছে তা কবরেও হ’তে থাকে।<br />
<br />
قال رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يَقْتُلْهُ بَطْنُهُ فَلَنْ يُّعَذَّب فِىْ قَبْرِهِ.<br />
<br />
রাসূল (সা.) বলেন, যারা পেটের অসুখে মারা যায় তাদের কবরের শাস্তি হবে না (নাসাঈ হা/২০৫২; হাদীছ ছহীহ)।<br />
<br />
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوْتُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ اَوْلَيْلَةَ الْجُمْعَةِ اِلَّا وَقَاهُ اللهُ فِتْنَةَ الْقَبْرِ.<br />
<br />
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে কোন মুসলমান জুম’আর রাতে অথবা জুম’আর দিনে যদি মারা যায়, তা’হলে আল্লাহ তাকে কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা করেন (আহমাদ, মিশকাত হা/১৩৬৭, হাদীছ ছহীহ)। কবরের শাস্তি চূড়ান্ত যা অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণ হয়। জুম’আর দিন কোন মুসলমান মারা গেলে তাকে কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা করা হয়।<br />
<br />
عَنْ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيْ كَرِبَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لِلشّهِيْدِ عِنْدَ اللهِ سِتُّ خِصَالٍ يُغْفَرُ لَهُ فِىْ اَوَّلِ دَفْعَةٍ وَيُرى مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَيُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَيَأْمَنُ مِنَ الْفَزْعِ الْاَكْبَرِ وَيُوْضَعُ عَلى رَأْسِهِ تَاجُ الْوَقَارِ الْيَاقُوْتَةِ مِنْهَا خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا وَيُزَوِّجُ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ زَوْجَةً مِّنَ الْحُوْرِ الْعِيْن وَيُشَفَّعُ فِىْ سَبْعِيْنَ مِنْ اَقْرِبَائِه.<br />
<br />
মেক্দাম ইবনে মা’দী কারেব (রা.) বলেন, রাসূল(সা.) বলেছেন, আল্লাহর নিকট শহীদের জন্য ছয়টি বিশেষ পুরস্কার রয়েছে। (১) শরীরের রক্তের প্রথম ফোটা ঝরতেই তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং প্রাণ বের হওয়ার পূর্বেই তার জান্নাতের জায়গাটি তাকে দেখিয়ে দেয়া হয় (২) কবরের শাস্তি হ’তে তাকে রক্ষা করা হয় (৩) কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করা হবে। (৪) তার মাথার উপর সম্মান ও মর্যাদার মুকুট পরানো হবে। তাতে থাকবে একটি ইয়াকুত, যা দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুর চেয়ে উত্তম। (৫) তাকে বড় বড় চক্ষু বিশিষ্ট ৭২ জন হুর দেয়া হবে এবং (৬) তার সত্তর জন নিকটতম আত্মীয়ের সুপারিশ কবুল করা হবে। হাদীছে বুঝা যায় কবরের শাস্তি চূড়ান্ত, তবে যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে এবং তাদের জানমাল কোন কিছু নিয়ে ফিরেনি অর্থাৎ শহীদ হয়, তাদেরকে কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা করা হবে (ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/৩৮৩৪)।<br />
<br />
عَنْ عَوْفٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ صَلّى رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلى جَنَازَةٍ فَحَفِظْتُ مِنْ دُعَائِهِ وَهُوَ يَقُوْلُ اَلّلَهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَعَفِهِ وَاعْفُ عَنْهُ وَ اَكْرِمْ نُزُلهُ وَوَسِّعْ مَدْخَلَهُ وَاَغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّه مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الْاَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ وَاَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِهِ وَاَهْلَا خَيْرًا مِّنْ اَهْلِهِ وَزَوْجًا خَيْرًا مِنْ زَوْجِهِ واَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَاَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَاب النَّارِ وفى رواية وَقِهِ فِتْنَةَ الْقَبْرِ وَعَذَابَ النَّارِ قَاَل حَتىَّ تَمَنَّيْتُ اَنْ اَكُوْنَ اَنَا ذلِكَ الْمَيِّتُ.<br />
<br />
আ’ওফ ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) একবার এক জানাযার ছালাত আদায় করলেন। আমি তার দো‘আর কিছু অংশ মনে রেখেছি। তিনি তাতে বললেন, হে আল্লাহ! তুমি তাকে ক্ষমা কর, তার প্রতি দয়া কর, তার প্রতি নিরাপত্তা অবতীর্ণ কর, তাকে ক্ষমা কর, তাকে সম্মানিত আতিথ্য দান কর, তার থাকার স্থানকে প্রসারিত কর, তাকে পানি, বরফ ও তুষার দ্বারা ধুয়ে দাও, অর্থাৎ তার গুনাহ্ মাফ করে দাও। তাকে গুনাহ্ খাতা হ’তে পরিস্কার কর যেভাবে তুমি পরিস্কার কর সাদা কাপড়কে ময়লা হ’তে। তার ঘর অপেক্ষা উত্তম ঘর তাকে দান কর, তার পরিবার অপেক্ষা উত্তম পরিবার তাকে দান কর, তার স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম স্ত্রী দান কর, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং কবরের আযাব থেকে রক্ষা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচাও। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে তাকে কবরের ফেতনা হ’তে বাঁচাও এবং জাহান্নামের শাস্তি হ’তে রক্ষা কর। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আকাংখা করছিলাম যে, যদি ঐ মৃত্যু ব্যক্তি আমিই হ‘তাম (বাংলা মুসলিম ৪র্থ খন্ড, মিশকাত হা/১৫৬৬)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল জানাযার সময় নবী করীম (সা.) কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন।<br />
<br />
عَنْ عَاِئشَةَ اَنَّ النّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَسْتَعِيْذُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الدّجّالِ وَقَالَ إِنّكُمْ تُفْتَنُوْنَ فِىْ قُبُوْرِكُمْ.<br />
<br />
আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সা.) সর্বদা আল্লাহর নিকট কবরের শাস্তি হ’তে আশ্রয় চাইতেন। আর দাজ্জালের ফিতনা হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন এবং বলতেন তোমাদেরকে কবরে বিপদের মুখোমুখি করা হবে (নাসাঈ হা/২০৬৫; হাদীছ ছহীহ)।<br />
<br />
عَنْ عَاِئشَةَ قَالتْ دَخَلَتْ عَلَىَّ عَجُوْزَتَانِ مِنْ عُجُزِ يَهُوْدِ الْمَدِيْنَةِ فَقَالَتَا اِنّ اَهْلَ الُقبُوْرِ يُعَذّبُوْنَ فِىْ قُبُوْرِهِمْ فَكَذَّبْتُهُمَا وَلَهُمْ اَنْعَمُ اَنْ اُصَدِّقَهُمَا فَخَرَجَتَا وَدَخَلَ عَلَىّ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فسَلَّم فَقُلْتُ يَارَسُوْلَ اللهِ اَنَّ عَجُوْزَتَيْنِ مِنْ عُجُزِ يَهُوْدِ الْمَدِيْنَةِ قَالَتَا اِنَّ اَهْلَ الْقُبُوْرِ يُعَذّبُوْنَ فِىْ قُبُوْرِهِمْ قَالَ صَدَقَتَا اَنّهُمْ يُعَذّبُوْنَ عَذَابًا تَسْمَعُهُ الْبَهَائِمُ كُلُّهَا فَمَا رَأَيْتُهَ صَلَّى صَلَاةً اِلَّا تَعَوَّذَ مِنْ عَذَابِ القبَْرِ.<br />
<br />
আয়েশা (রাঃ) বলেন, মাদীনার ইহুদী বৃদ্ধা মহিলাদের মধ্য হ’তে দু’জন বৃদ্ধা মহিলা আমার নিকট আসল এবং বলল, নিশ্চয়ই কবরবাসীকে তাদের কবরে শাস্তি দেয়া হয়। তাদের কথা বিশ্বাস করতে না পারায় আমি তাদের কথা অস্বীকার করলাম। তারপর নবী করীম (সা.) আমার নিকট আসলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল(সা.) ! মদীনার বৃদ্ধা মহিলাদের মধ্য হ’তে দু’জন বৃদ্ধা মহিলা বলল, নিশ্চয়ই কবরবাসীকে তাদের কবরে শাস্তি দেয় হয়। নবী করীম (সা.) বললেন, তারা ঠিক বলেছে। নিশ্চয় তাদেরকে কবরে এত কঠিন শাস্তি দেয়া হয় যে, সমস্ত চতুস্পদ প্রাণী শুনতে পায়। আয়েশা (রাঃ) বলেন, তারপর থেকে আমি রাসূল(সা.) -কে এমন কোন ছালাত আদায় করতে দেখিনি যে, তিনি ছালাত শেষে কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন না। অর্থাৎ কোন ছালাত আদায় করলে ছালাত শেষে কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাইতেন। হাদীছে বুঝা গেল কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাওয়া আমাদের জন্য একান্ত জরুরী।<br />
<br />
সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) -এর অভ্যাস ছিল তিনি ফজরের নামায শেষে প্রায় আমাদের দিকে মুখ করে বসতেন এবং জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কেউ আজ রাত্রে কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের কেউ স্বপ্ন দেখে থাকলে সে তাঁর নিকট বলত। আর তিনি আল্লাহর হুকুম মোতাবেক তার তা‘বীর বর্ণনা করতেন। যথারীতি একদিন সকালে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কেউ (আজ রাত্রে) কোন স্বপ্ন দেখেছে কি? আমরা বললাম, না। তখন তিনি বললেন, কিন্তু আমি দেখেছি। আজ রাত্রে দুই ব্যক্তি আমার নিকট আসল এবং তারা উভয়ে আমার হাত ধরে একটি পবিত্র ভূমির দিকে (সম্ভবত তা শাম বা সিরিয়ার দিকে) নিয়ে গেল। দেখলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে আর অপর এক ব্যক্তি লোহার সাঁড়াশি হাতে দাঁড়ানো। সে তা উক্ত বসা ব্যক্তির গালের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয় এবং তা দ্বারা চিরে গর্দানের পিছন পর্যন্ত নিয়ে যায়। অতঃপর তার দ্বিতীয় গালের সাথে অনুরূপ ব্যবহার করে। ইত্যবসরে প্রথম গালটি ভাল হয়ে যায়। আবার সে (প্রথমে যেভাবে চিরেছিল) পুনরায় তাই করে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন। সন্মুখের দিকে চললাম। অবশেষে আমরা এমন এক ব্যক্তির কাছে এসে পৌঁছলাম, যে ঘাড়ের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে রয়েছে, আর অপর এক ব্যক্তি একখানা ভারী পাথর নিয়ে তার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। সে তার আঘাতে শায়িত ব্যক্তির মাথা চুর্ণ-বিচুর্ণ করছে। যখনই সে পাথরটি নিক্ষেপ করে (মাথা চুর্ণ-বিচুর্ণ করে) তা গড়িয়ে দূরে চলে যায়, তখনই সে লোকটি পুনরায় পাথরটি তুলে আনতে যায় সে ফিরে আসার পূর্বে ঐ ব্যক্তির মাথাটি পূর্বের ন্যায় ঠিক হয়ে যায় এবং পুনরায় সে তা দ্বারা তাকে আঘাত করে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হলাম। অবশেষে একটি গর্তের নিকট এসে পৌঁছলাম, যা তন্দুরের মত ছিল। তার উপর অংশ ছিল সংকীর্ণ এবং ভিতরের অংশটি ছিল প্রশস্ত। তার তলদেশে আগুন প্রজ্জ্বলিত ছিল। আগুনের লেলিহান শিখা যখন উপরের দিকে উঠত, তখন তার ভিতরে যারা রয়েছে তারাও উপরে উঠে আসত এবং উক্ত গর্ত হ’তে বাহিরে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হ’ত আর যখন অগ্নিশিখা কিছুটা শিথিল হ’ত, তখন তারাও পুনরায় ভিতরের দিকে চলে যেত। তার মধ্যে রয়েছে কতিপয় উলঙ্গ নারী ও পুরুষ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন, সুতরাং সম্মুখের দিকে অগ্রসর হ’লাম এবং একটি রক্তের নহরের নিকট এসে পৌঁছলাম। দেখলাম, তার মধ্যস্থলে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং নহরের তীরে একজন লোক দন্ডায়মান। আর তার সম্মুখে রয়েছে প্রস্তরখন্ড। নহরের ভিতরের লোকটি যখন তা থেকে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে কিনারার দিকে অগ্রসর হ’তে চায়, তখন তীরে দাঁড়ানো লোকটি ঐ লোকটির মুখের উপর লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে এবং সে লোকটিকে ঐ স্থানে ফিরিয়ে দেয় যেখানে সে ছিল। মোটকথা, লোকটি যখনই বাহিরে আসার চেষ্টা করে, তখনই তার মুখের উপর পাথর মেরে ,যেখানে ছিল পুনরায় সেখানে ফিরিয়ে দেয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? সঙ্গীদ্বয় বলল, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখে অগ্রসর হয়ে শ্যামল সুশোভিত একটি বাগানে পৌঁছলাম। বাগানে ছিল একটি বিরাট বৃক্ষ। আর উক্ত বৃক্ষটির গোড়ায় উপবিষ্ট ছিলেন, একজন বৃদ্ধ লোক এবং বিপুল সংখ্যক বালক। এ বৃক্ষটির সন্নিকটে আরেক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম, যার সম্মুখে রয়েছে আগুন, যাকে সে প্রজ্জ্বলিত করছে। এরপর আমার সঙ্গীদ্বয় আমাকে ঐ বৃক্ষের উপরে আরোহণ করালো এবং সেখানে তারা আমাকে বৃক্ষরাজির মাঝখানে এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করালো যে, এরূপ সুন্দর ও মনোরম ঘর আমি আর কখনো দেখিনি। তার মধ্যে ছিল কতিপয় বৃদ্ধ, যুবক, নারী ও বালক। অনন্তর তারা উভয়ে আমাকে সে ঘর হ’তে বের করে বৃক্ষের আরও উপরে চড়ালো এবং এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করালো যা প্রথমটি হ’তে সমধিক সুন্দর ও উত্তম। তাতেও দেখলাম, কতিপয় বৃদ্ধ ও যুবক। অনন্তর আমি উক্ত সঙ্গীদ্বয়কে বললাম, আপনারা উভয়েই তো আমাকে আজ সারা রাতে অনেক কিছু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখালেন। এখন বলেন, আমি যা কিছু দেখেছি তার তাৎপর্য কি? তারা উভয়ে বলল, হ্যাঁ, (আমরা তা জানাবো)। ঐ যে এক ব্যক্তিকে দেখেছেন সাঁড়াশি দ্বারা যার গাল চিরা হচ্ছে, সে মিথ্যাবাদী, সে মিথ্যা বলত এবং তার নিকট হ’তে মিথ্যা রটানো হ’ত। এমন কি তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ত। অতএব, তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণ করা হবে, যা আপনি দেখেছেন। আর যে ব্যক্তির মস্তক পাথর মেরে ঘায়েল করতে দেখেছেন, সে ঐ ব্যক্তি, আল্লাহ তা‘আলা যাকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু সে কুরআন হ’তে গাফেল হয়ে রাত্রে ঘুমাতো এবং দিনেও তার নির্দেশ মোতাবেক আমল করত না। সুতরাং তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণই করা হবে, যা আপনি দেখেছেন। আর (আগুনের) তন্দুরে যাদেরকে দেখেছেন, তারা হ’ল যেনাকারী (নারী-পুরুষ)। আর ঐ ব্যক্তি যাকে (রক্তের) নহরে দেখেছেন, সে হ’ল সুদখোর। আর ঐ বৃদ্ধ ব্যক্তি যাকে একটি বৃক্ষের গোড়ায় উপবিষ্ট দেখেছেন, তিনি হলেন হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাঁর চতুস্পার্শ্বে শিশুরা হ’ল মানুষের সন্তানাদি। আর যে লোকটিকে অগ্নিকুন্ড প্রজ্জ্বলিত করতে দেখেছেন, সে হ’ল দোযখের দারোগা মালেক। আর প্রথম যে ঘরটিতে আপনি প্রবেশ করেছিলেন, তা (জান্নাতের মধ্যে) সর্বসাধারণ মুমিনদের গৃহ। আর যে ঘর যে পরে দেখেছেন, তা শহীদদের ঘর। আর আমি হলাম, জিব্রাঈল এবং ইনি হলেন, মীকাঈল। এবার আপনি মাথাটি উপরের দিকে তুলে দেখুন। তখন আমি মাথাটি তুলে দেখলাম, যেন আমার মাথার উপরে মেঘের মত কোন একটি জিনিস রয়েছে। অপর এক বর্ণনায় আছে, একের পর এক স্তরবিশিষ্ট সাদা মেঘের মত কোন জিনিস দেখলাম। তাঁরা বললেন, তা আপনারই বাসস্থান। আমি বললাম, আমাকে সুযোগ দিন আমি আমার ঘরে প্রবেশ করি। তারা বললেন, এখনও আপনার হায়াত বাকী আছে, যা আপনি এখনো পূর্ণ করেননি। আপনার যখন নির্দিষ্ট হায়াত পূর্ণ হবে, তখন আপনি আপনার বাসস্থানে প্রবেশ করবেন (বুখারী, বাংলা মিশকাত হা/৪৪১৬)।<br />
<br />
অত্র হাদীছে যে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে, তা মরণের পরে কবরের শাস্তির কথা বলা হয়েছে। একমাত্র আল্লাহর ভয় মানুষের অন্তরে থাকলে মানুষ কবরের শাস্তি হ’তে রক্ষা পেতে পারে।<br />
<br />
عَنْ اَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتْبَعُ الْمَيّتَ ثَلَاثَةُ فَيَرْجِعُ اِثْنَانِ وَيَبْقَى مَعَهُ وَاحِدٌ يَتْبَعُهُ اَهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ فَيَرْجِعُ اَهْلُهُ وَمَالُهُ وَيَبْقى عَمَلُهُ.<br />
<br />
আনাস (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, মৃত ব্যক্তি যখন কবর স্থানে যায় তার সাথে তিনটি জিনিস যায়। দু’টি জিনিস ফিরে আসে আর একটি জিনিস তার সাথে থেকে যায়। তার সাথে যায় তার পরিবারের সদস্য, সম্পদ ও তার আমল। তার পরিবারের সদস্য ও তার সম্পদ ফিরে আসে, আর তার আমল তার সাথে থেকে যায় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৬৭)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মানুষ যেদিন নিরুপায় হবে, সে দিন মানুষের কোন সহযোগী থাকবে না, সে দিন তার সহযোগী হবে একমাত্র তার আমল।<br />
<br />
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ جَاءَتْ يَهُوْدِيَّةٌ فَاسْتَطْعَمَتْ عَلى بَابِىْ فقَالَتْ اَطْعِمُوْنِىْ اَعَاذَكُمُ اللهُ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجّالِ وَمِنْ فِتْنَةِ عَذَابِ الْقَبْرِ فَلَمْ اَزَلْ اَحبِسُها حَتَّى اَتَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ يَارسولَ اللهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ! مَا تَقُوْلُ هَذِه الْيَهُوْدِيَّةُ؟ قَالَ وَمَا تَقُوْلُ قُلْتُ تَقُوْلُ اَعَاذَكُمُ اللهُ مِنْ فِتْنَةِ الدّجَّالِ ومِنْ فِتْنَةِ عَذَابِ القَبْرِ فَقَامَ رَسولُ اللهِ فَرَفَعَ يَدَيْهِ مَدًا يَسْتَعِيْذُ بِاللهِ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ وَمِنْ فِتْنَةِ عَذَابِ القَبْرِ.<br />
<br />
আয়েশা (রাঃ) বলেন, একজন ইহুদী মহিলা আমার দরজায় এসে খেতে চাইল, সে বলল, আমাকে খেতে দিন, আল্লহ আপনাদেরকে দাজ্জালের ফিতনা ও কবরের আযাবের ফেতনা হ’তে পরিত্রাণ দিবেন। তখন আমি রাসূল (সা.) বাড়ী আসা পর্যন্ত তাকে ধরে রাখলাম। রাসূল (সা.) যখন আসলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) ! এ ইহুদী মহিলা কি বলে? নবী করীম (সা.) বলেন, সে কি বলছে? আমি বললাম, সে বলছে আল্লাহ আপনাদেরকে দাজ্জালের ফেতনা ও কবরের আযাবের ফেতনা হ’তে রক্ষা করুন। তখন রাসূল(সা.) দাঁড়ালেন এবং হাত তুলে দে‘াআ করলেন, এ সময় তিনি দাজ্জালের ফিতনা এবং কবরের আযাবের ফেতনা হ’তে পরিত্রাণ চাচ্ছিলেন (আহমাদ হা/২৪৯৭০; তাফসীর দুররুল মানছূর ৫/৩৪ পৃঃ, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, পূর্বের লোকেরাও কবরের আযাবকে ভয় করত এবং পরিত্রাণ চাইত। নবী করীম (সা.) কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাওয়ার সময় হাত তুলে প্রার্থনা করেন এবং প্রার্থনায় কবরের আযাব হ’তে পরিত্রাণ চাইলেন। পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে অত্র বিষয়টি পাঠ করার পর কবরের আযাবকে বিশ্বাস করে আল্লাহর ভয়-ভীতি মনে নিয়ে কবরের আযাব হ’তে হাত তুলে প্রার্থনা করে পরিত্রাণ চাইবেন। আল্লাহ সকল মুসলিম নারী-পুরুষকে কবরের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।<br />
<br />
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh2Y4tCbfmq7cdVpjEqpKKjTnNT9tB_0xs8rq0zK-h-Ze02Vn0FQ9dqthUsUw7S1rjd44EfD-BPoSaGAUPUYnQKD0rYHkmY6T283vfxb6v__tojoKbAZZEDpTsM1AhLlAvX5aZxBvvZyl4/s1600/%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AC%252C+koborer+ajab.png" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="কবরের ভয়াবহ আযাব, koborer ajab," border="0" data-original-height="200" data-original-width="300" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh2Y4tCbfmq7cdVpjEqpKKjTnNT9tB_0xs8rq0zK-h-Ze02Vn0FQ9dqthUsUw7S1rjd44EfD-BPoSaGAUPUYnQKD0rYHkmY6T283vfxb6v__tojoKbAZZEDpTsM1AhLlAvX5aZxBvvZyl4/s1600/%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AC%252C+koborer+ajab.png" title="কবরের শাস্তি," /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">কবরের আযাব, koborer ajab,</td></tr>
</tbody></table>
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
</div>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-65062363351569962362018-12-15T18:44:00.000+06:002018-12-15T18:45:07.528+06:00মৃত ব্যক্তির জন্য কুরআন খতম দেওয়া জায়েজ কি,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div dir="ltr">
আমাদের দেশের অতি প্রচলিত কর্ম কারো মৃত্যু হলে তার জন্য কুরআন খতম করা। এ কর্মটি কোনো হাদীস ভিত্তিক কর্ম নয়। কোনো মৃত মানুষের জন্য রাসূলুল্লাহ (<b>ﷺ</b>) ও সাহাবীগণ কখনো কুরআন খতম করেন নি। এছাড়া কারো জন্য কুরআন খতম করলে তিনি সাওয়াব পাবেন এরূপ কোনো কথাও কোনো সহীহ বা গ্রহণযোগ্য হাদীসে বর্ণিত হয় নি।</div>
<div dir="ltr">
আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, কুরআন ও হাদীসে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সন্তানগণকে মৃত পিতামাতার জন্য দান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ, সিয়াম পালন, হজ্জ ও উমরা পালনের কথাও হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে। মৃত ব্যক্তির জন্য কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন খতম, তাসবীহ তাহলীল পাঠ ইত্যাদি ইবাদতের কোনো নির্দেশনা হাদীসে বর্ণিত হয় নি। তবে অধিকাংশ আলিম বলেছেন যে, যেহেতু দান, সিয়াম, হজ্জ, উমরা ও দোয়ার দ্বারা মৃত ব্যক্তি উপকৃত হবেন বলে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, সেহেতু আশা করা যায় যে, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ তাহলীল ইত্যাদি ইবাদত দ্বারাও তারা উপকৃত হবেন। তবে এজন্য আনুষ্ঠানিকতা, খতম ইত্যাদি সবই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।</div>
<div dir="ltr">
<br /></div>
<br />
আসসালামু আলাইকুম, আমরা আমাদের অবস্থান সম্পর্কে অবগত নই ৷ আমরা জানিনা আমরা কোন অবস্থানে আছি, আমরা সামনে এগোতে পারছি, না স্থির আছি, না পিছিয়ে যাচ্ছি ৷ আমরা ভালো কিছু করছি, না ভুল কিছু করছি ৷ আপনাদের মন্তব্যই আমাদেরকে সামনে এগোতে এবং আমাদের লক্ষার্জনে সাহায্য করবে ৷ আপনাদের মন্তব্যই আমাদেরকে দ্বীনের প্রচারে আরো আগ্রহী করে তুলবে ইনশাআল্লাহ ৷</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988tag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-20564719115514372672018-12-12T23:42:00.000+06:002018-12-12T23:42:10.756+06:00ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="clear: both; text-align: left;">
ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাঃ</h3>
<div>
মানুষ প্রকৃতিগতভাবে সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করতে অভ্যস্ত। একাকী বাস তার সবভাব-সিদ্ধ নয়। তাই প্রয়োজন পড়ে সঙ্গিনীর ও কিছু সাথীর; যারা হবে একান্ত আপন। বিবাহ মানুষকে এমন সাথী দান করে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
মানুষ সংসারে সবয়ংসম্পূর্ণ নয়। বিবাহ মানুষকে দান করে বহু আত্মীয়-সবজন, বহু সহায় ও সহচর।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
মানুষের প্রকৃতিতে যে যৌন-ক্ষুধা আছে, তা দূর করার বৈধ ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা হল বিবাহ।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
বিবাহ মানুষকে সুন্দর চরিত্র দান করে, অবৈধ দৃষ্টি থেকে চক্ষুকে সংযত রাখে, লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
বিবাহের মাধ্যমে আবির্ভাব হয় মুসলিম প্রজন্মের। এতে হয় বংশ বৃদ্ধি, রসূল (সাঃ) এর উম্মত বৃদ্ধি।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
পৃথিবী আবাদ রাখার সঠিক ও সুশৃঙ্খল বৈধ ব্যবস্থা বিবাহ। বিবাহ আনে মনে শান্তি, হৃদয়ে স্থিরতা, চরিত্রে পবিত্রতা, জীবনে পরম সুখ। বংশে আনে আভিজাত্য, অনাবিলতা। নারী-পুরুষকে করে চিরপ্রেমে আবদ্ধ। দান করে এমন সুখময় দাম্পত্য, যাতে থাকে ত্যাগ ও তিতিক্ষা, শ্রদ্ধা, প্রেম, স্নেহ ও উৎসর্গ।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তাআলা বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
﴿وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجاً لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآياتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ﴾</div>
<div>
<br /></div>
<div>
অর্থাৎ, তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে আর একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে সৃষ্টি করেছেন; যাতে তোমরা ওদের নিকট শান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও স্নেহ সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।[1]</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ইসলামে বৈরাগ্যের কোন স্থান নেই।</div>
<div>
‘‘বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি সে আমার নয়,</div>
<div>
অসংখ্য বন্ধন মাঝে মহানন্দময়</div>
<div>
লভিব মুক্তির স্বাদ----।’’</div>
<div>
<br /></div>
<div>
এই হল মুসলিমের জীবন। তাই তো বিবাহ করা প্রত্যেক নবীর সুন্নত ও তরীকা। বিবাহ করা এক ইবাদত। স্ত্রী-সঙ্গম করা সদকাহ্তুল্য।[2] যেহেতু এই পরিণয়ে মুসলিমের বিশেষ উদ্দেশ্য থাকে নিজেকে ব্যভিচার থেকে রক্ষা করা, স্ত্রীর অধিকার আদায় করা এবং তাকেও ব্যভিচারের হাত হতে রক্ষা করা, নেক সন্তান আশা করা, অবৈধ দৃষ্টি, চিন্তা প্রভৃতি থেকে নিজেকে দূরে রাখা। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
إذَا تَزَوَّجَ العَبدُ فَقَد استَكمَلَ نِصْفَ الدِّين فَلْيَتَّقِ اللهَ في النِّصف البَاقي.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘‘(মুসলিম) বান্দা যখন বিবাহ করে, তখন সে তার অর্ধেক ঈমান (দ্বীন) পূর্ণ করে, অতএব বাকী অর্ধেকাংশে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে।’’[3]</div>
<div>
<br /></div>
<div>
ব্যভিচার থেকে বাঁচার জন্য ও পবিত্র জীবন গঠনের উদ্দেশ্যে বিবাহ করলে দাম্পত্যে আল্লাহর সাহায্য আসে।[4]</div>
<div>
<br /></div>
<div>
আল্লাহ তাআলা বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
﴿وَأَنْكِحُوا الأَيَامَى مِنْكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِنْ يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهِ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ﴾</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত তাদের বিবাহ সম্পাদন কর এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ তো প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।[5]</div>
<div>
<br /></div>
<div>
জগদ্গুরু মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنْ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘‘হে যুবকদল! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি (বিবাহের অর্থাৎ স্ত্রীর ভরণপোষণ ও রতিক্রিয়ার) সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। কারণ, বিবাহ চক্ষুকে দস্ত্তরমত সংযত করে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে। আর যে ব্যক্তি ঐ সামর্থ্য রাখে না, সে যেন রোযা রাখে। কারণ, তা যৌনেন্দ্রিয় দমনকারী।’’[6]</div>
<div>
<br /></div>
<div>
তিনি আরো বলেন,</div>
<div>
<br /></div>
<div>
النِّكَاحُ من سُنَّتي . فَمَن لَم يَعمَل بسُنَّتي فَلَيسَ مني.</div>
<div>
<br /></div>
<div>
‘‘বিবাহ করা আমার সুন্নত (তরীকা)। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার সুন্নত (তরীকা) অনুযায়ী আমল করে না, সে আমার দলভুক্ত নয়।’’[7]</div>
<div>
<br /></div>
<div>
সুতরাং বিয়ের বয়স হলে, যৌন-পিপাসায় অতিষ্ঠ হলে এবং নিজের উপর ব্যভিচারের অথবা গুপ্ত অভ্যাসে স্বাস্থ্য ভাঙ্গার আশঙ্কা হলে বিলম্ব না করে যুবকের বিবাহ করা ওয়াজেব। বাড়ির লোকের উচিৎ, এতে তাকে সহায়তা করা এবং ‘ছোট’ বা ‘পড়ছে’ বলে বিবাহে বাধা না দেওয়া। যেমন পূর্বে আরো অবিবাহিত ভাই বা বোন থাকলে এবং তাদের বিয়ের ব্যবস্থা বা ইচ্ছা না হলে এই যুবককে বিবাহে বাধা দেওয়ার অধিকার পিতা-মাতার বা আর কারো নেই। আল্লাহর আনুগত্যে গুরুজনের আনুগত্য ওয়াজেব। যেখানে আল্লাহর অবাধ্যতার ভয় ও আশঙ্কা হবে, সেখানে আর কারো আনুগত্য নেই। বরং এই সব ক্ষেত্রে বিশেষ করে ‘মনমত পণ’ না পাওয়ার জন্য বিয়ে না দিলে মা-বাপের আনুগত্য হারাম। সুতরাং যুবকের উচিৎ, যথাসময়ে বিনা পণে মা-বাপ রাজী না হলেও রাজী করতে চেষ্টা করে বিবাহ করা। নচেৎ তার অভিভাবক আল্লাহ।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
অনেক সময় দ্বীনদার-পরহেজগার পরিবেশের পুণ্যময়ী সুশীলা তরুণীর সাথে বিবাহে মা-বাপ নিজস্ব কোন স্বার্থে রাজী হয় না। অথবা এমন পাত্রী দিতে চায়; যে দ্বীনদার নয়। দ্বীনদার যুবকের এ ক্ষেত্রেও মা-বাপের কথা না মানা দ্বীনদারী।[8]</div>
<div>
<br /></div>
<div>
বৈবাহিক জীবন দু-একদিনের সফর নয়; যাতে দু-একদিন পর সহজভাবে সঙ্গী পরিবর্তন করা যাবে। সুতরাং এখানে ছেলে-মেয়ে সকলেরই বুঝাপড়া ও পছন্দের অধিকার আছে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
পক্ষান্তরে দ্বীন ছাড়া অন্য স্বার্থে ছেলে যদি মা-বাপের কথা না মেনে তাদেরকে নারাজ করে বিবাহ করে, তবে এমন ছেলে নিশ্চয়ই অবাধ্য। অবাধ্য মাতা-পিতার এবং অবাধ্য আল্লাহ ও তাঁর রসূলের। এ বিষয়ে আরো কিছু আলোচনা আসবে ‘বিবাহ প্রস্তাব ও তার শর্তাবলী’তে।</div>
<div>
<br /></div>
<div>
<br /></div>
<div>
[1] (সূরা আর-রূম (৩০) : ২১) [2] (মুসলিম ১০০৬নং) [3] (সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৬১৪৮নং) [4] (সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৩০৫০নং, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩০৮৯নং) [5] (সূরা আন-নূর (২৪) : ৩২) [6] (বুখারী, মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩০৮০নং) [7] (ইবনে মাজাহ ১৮৪৬নং) [8] (আল-লিকাউশ শাহরী ৩/৪২পৃঃ, ফাতাওয়াল মারআহ ৫৬পৃঃ)</div>
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgndVDf3OiAQ35PtmEJrjs8c-Tel5Bl0cyygAh7an9n78stLxoXEoEPg1LUe0w5Y4hJEDRkDHOhIc-BoBjTHkaAeUbALN4kftKUv-shZP7mu6jrZpfQvJYvyP_RSQXx5L2aWy4LwseUR20/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%259F%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2580%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BE.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="ইসলামে বিবাহের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা," border="0" data-original-height="497" data-original-width="617" height="257" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgndVDf3OiAQ35PtmEJrjs8c-Tel5Bl0cyygAh7an9n78stLxoXEoEPg1LUe0w5Y4hJEDRkDHOhIc-BoBjTHkaAeUbALN4kftKUv-shZP7mu6jrZpfQvJYvyP_RSQXx5L2aWy4LwseUR20/s320/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%259F%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2580%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BE.jpeg" title="ইসলামে বিবাহের নিয়ম কানুন," width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব,</td></tr>
</tbody></table>
<br /></div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-5839815786261973690.post-57986142973985624852018-12-12T23:14:00.000+06:002018-12-12T23:14:03.485+06:00ইসলামে নারীর পর্দা ও সাজসজ্জা, নারীদের পোশাক কেমন হওয়া চিত,<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="height: 0px; text-align: left;">
ইসলামে নারীরা কিভাবে পর্দা করবে, যাদের সাথে পর্দা করা জরুরিঃ</h3>
<div class="separator" style="clear: both;">
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কোন পর্দা নেই উভয়েই এক অপরের পোশাক।[1]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
উভয়েই উভয়ের সর্বাঙ্গ দেখতে পারে। তবে সর্বদা নগ্ন পোশাকে থাকা উচিৎ নয়।[2]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
মা-বেটার মাঝে পর্দা ও গোপনীয় কেবল নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
অন্যান্য নিকটাত্মীয়; যাদের সাথে চিরকালের জন্য বিবাহ হারাম তাদের সামনে পর্দা ও গোপনীয় হল গলা থেকে হাঁটু পর্যন্ত।[3]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
অবশ্য কোন চরিত্রহীন এগানা পুরুষের কথায় বা ভাবভঙ্গিতে অশ্লীলতা ও কামভাব বুঝলে, মহিলা তার নিকটেও যথাসম্ভব অন্যান্য অঙ্গও পর্দা করবে।[4]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
মহিলার সামনে মহিলার পর্দা নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। মহিলা কাফের হলে তার সামনে হাত ও চেহারা ছাড়া অন্যান্য অঙ্গ খোলা বৈধ নয়। যেমন, কোন নোংরা ব্যভিচারী মেয়ের সামনেও নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করা উচিৎ নয়। অনুরূপ এমন কোন মহিলার সামনেও দেহসৌষ্ঠব খোলা নিষিদ্ধ; যে তার কোন বন্ধু বা স্বামীর নিকট অন্য মহিলার রূপচর্চা করে বলে জানা যায় বা আশঙ্কা হয়। এমন মহিলার সাথে মুসলিম মহিলার সখীত্ব বা বন্ধুত্বও বৈধ নয়।[5]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
মা-বাপের চাচা ও মামা, মেয়ের চাচা ও মামা এবং মাহরাম। সুতরাং চাচাতো দাদো বা নানার সামনে পর্দা গলা থেকে হাঁটু পর্যন্ত।[6]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
তালাকের পর ইদ্দত পার হয়ে গেলে ঐ স্বামী এই স্ত্রীর জন্য বেগানা হয়ে যায়। সুতরাং তার নিকটে পর্দা ওয়াজেব। তার ছেলে দেখতে এলে কোন অঙ্গ ঐ পুরুষকে দেখাবে না।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পালিত পুত্র থেকে পালয়িত্রী মায়ের এবং পালয়িতা বাপ থেকে পালিতা কন্যার পর্দা ওয়াজেব। প্রকাশ যে, ইসলামে এ ধরনের প্রথার কোন অনুমতি নেই।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
অনুরূপ পাতানো ভাই-বোন, মা-বেটা, বাপ-বেটির মাঝে, পীর ভাই-বোন (?) বিয়াই-বিয়ান ও বন্ধুর স্বামী বা স্ত্রীর মাঝে পর্দা ওয়াজেব। যদিও তাদের চরিত্র ফিরিশ্তার মত হয়, তবুও দেখা দেওয়া হারাম। পর্দা হবে আল্লাহর ভয়ে তাঁর আনুগত্যের উদ্দেশে, মানুষের ভয়ে বা লোক প্রদর্শনের জন্য নয়। এতে মানুষের চরিত্র ও সম্মান বিচার্য নয়। সুতরাং লম্পট, নারীবাজ, পরহেযগার, মৌলবী সাহেব প্রভৃতি পর্দায় সকলেই সমান। আল্লাহর ফরয মানতে কোন প্রকারের লৌকিকতা ও সামাজিকতার খেয়াল অথবা কারো মনোরঞ্জনের খেয়াল নিশ্চয় বৈধ নয়।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
দৃষ্টিহীন অন্ধ পুরুষের সামনে পর্দা নেই। অবশ্য মহিলাকে ঐ পুরুষ থেকে দৃষ্টি সংযত করতে হবে।[7]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পৃথক মহিলা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান না থাকলে বেপর্দায় ছেলেদের সাথে পাশাপাশি বসে শিক্ষা গ্রহণ বৈধ নয়। স্বামী-সংসার উদ্দেশ্য হলে বাড়িতে বসে বিভিন্ন জ্ঞানগর্ভ বই-পুস্তক পড়া এবং দ্বীন-সংসার শিখার শিক্ষাই যথেষ্ট। অন্যান্য শিক্ষার প্রয়োজনে যথাসম্ভব পর্দার সাথে শিখতে হবে। পর্দার চেষ্টা না করে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিলে অবশ্যই মেয়ে-অভিভাবক সকলেই পাপী হবে।[8]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
চিকিৎসার প্রয়োজনে মহিলার জন্য ডাক্তার খোঁজা ওয়াজেব। লেডী ডাক্তার না পেলে অথবা যথাবিহিত চিকিৎসা তার নিকট না হলে বাধ্য হয়ে পুরুষ ডাক্তারের নিকট যেতে পারে। তবে শর্ত হল মহিলার সাথে তার স্বামী অথবা কোন মাহরাম থাকবে। একাকিনী ডাক্তার-রুমে যাবে না। পরন্তু ডাক্তারকে কেবল সেই অঙ্গ দেখাবে, যে অঙ্গ দেখানো প্রয়োজন। লজ্জাস্থান দেখলেও অন্যান্য অঙ্গ দেখানো অপ্রয়োজনে বৈধ হবে না।[9]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
মহান আল্লাহ বলেন,</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
﴿فَاتَّقُوا اللهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ﴾</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
‘‘তোমরা আল্লাহকে যথাসম্ভব ভয় কর।’’ (সাধ্যমত ভয় করার চেষ্টা কর।)[10]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
একাকিনী হলেও নামাযে আদবের লেবাস জরুরী। এই সময় কেবল চেহারা ও হাত খুলে রাখা যাবে। শাড়ি পরে বাহু-পেট-পিঠ-চুল বের হয়ে গেলে নামায হয় না। যেমন, সম্মুখে বেগানা পুরুষ থাকলে চেহারাও ঢাকতে হবে।[11]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
সেলোয়ার-কামিস বা ম্যাক্সিতে নামায পড়লে চাদর জরুরী। কুরআন শরীফ পড়তে গিয়ে মাথা খুলে গেলে ক্ষতি নেই। এতে ওযুও নষ্ট হয় না।[12]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
‘‘বৃদ্ধা নারী; যারা বিবাহের আশা রাখে না, তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে যদি বহির্বাস খুলে রাখে, তাহলে তা দোষের নয়। তবে পর্দায় থাকাটাই তাদের জন্য উত্তম।’’[13] যেহেতু কানা বেগুনের ডোগলা খদ্দেরও বর্তমান।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দায় থাকলে বাড়ির লোক ঠাট্টা করলে এবং কোন প্রকার অথবা সর্বপ্রকার সহায়তা না করলে মহিলার উচিৎ যথাসম্ভব নিজে নিজে পর্দা করা। এ ক্ষেত্রে হাল ছেড়ে বসা বৈধ নয়। কল-পায়খানা নেই বলে ওজর গ্রহণযোগ্য নয়। স্বামী পর্দায় থাকতে না দিলে চেষ্টার পরও যদি একান্ত নিরুপায় হয়ে বেপর্দা হতে হয়, তবুও যথাসাধ্য নিজেকে সংযত ও আবৃত করবে। আল্লাহ এ চেষ্টার অন্তর দেখবেন। যারা সহায়তা করে না বা বাধা দেয়, তাদের পাপ তাদের উপর।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পক্ষান্তরে বেগানা পুরুষ দেখে ঘর ঢুকলে বা মুখ ঢাকলে যারা হাসাহাসি করে, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে, কটাক্ষ হানে অথবা অসমীচীন মন্তব্য করে বা টিস্ মারে, শরয়ী পর্দা নিয়ে যারা উপহাস করে---তারা কাফের। এই পর্দানশীন মহিলারা কাল কিয়ামতে ঐ উপহাসকারীদেরকে দেখে হাসবে।[14]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
সুতরাং মুমিন নারীর দুঃখ করা উচিৎ নয়, একাকিনী হলেও মন ছোট করা সমীচীন নয়। সত্যের জয় অবধারিত, আজ অথবা কাল। মরতে সকলকেই হবে, প্রতিফল সকলেই পাবে।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
‘মরে না মরে না কভু সত্য যাহা, শত শতাব্দীর বিস্মৃতির তলে</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
নাহি মরে উপেক্ষায়, অপমানে হয় না চঞ্চল, আঘাতে না টলে।’</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দায় থাকার জন্য দেওর-ভরা সংসার থেকে পৃথক হয়ে আলাদা ঘর বাড়ি করার জন্য স্ত্রী যদি তার স্বামীকে তাকীদ করে, তবে তা স্বামীর মানা উচিৎ; বরং নিজে থেকেই হওয়া উচিৎ। বিশেষ করে তার ভাইরা যদি অসৎ প্রকৃতির হয়। ইসলামে এটা জরুরী নয় যে, চিরদিন ভাই-ভাই মিলে একই সংসারে থাকতে হবে। যা জরুরী তা হল, আল্লাহর দ্বীন নিজেদের জীবন ও পরিবেশে কায়েম করা, আপোষে ভ্রাতৃত্ব-বোধ ও সহায়তা-সহানুভূতি রাখা, সকলে মিলে পিতা-মাতার যথাসাধ্য সেবা করা। কিন্তু হায়রে! আল্লাহতে প্রেম ও বিদ্বেষ করতে গিয়ে মানুষের মাঝে মানুষকে দুশমন হতে হয়। হারাতে হয় একান্ত আপনকে। যেহেতু, আল্লাহর চেয়ে অধিক আপন আর কে?</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দা নিজের কাছে নয়। কোন ইঁদুর নিজের চোখ বন্ধ করে যদি মনে করে যে, সে সমস্ত বিড়াল থেকে নিরাপদ, তবে এ তার বোকামী নয় কি? তেঁতুল দেখে মুখে পানি আসা মানুষের এক প্রকৃতিগত দুর্দম সবভাব। অনুরূপ নারীর সৌন্দর্য দেখে বদ্খেয়াল ও কুচিন্তা আসাও মানুষের জন্য স্বাভাবিক। অতএব হাত, চোখ ও মুখের সামনে তেঁতুল থাকলে, তেঁতুলের টক গন্ধ নাকে এসে প্রবেশ করলে জিবে পানি আসাকে কেউ কি রুকতে পারবে? পর্দা না করে কি কামলোলুপতা ও ব্যভিচারের ছিদ্রপথ বন্ধ করা সম্ভব?</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
নারীর মোহনীয়তা, কমনীয়তা ও মনোহারিত্ব লুকিয়ে থাকে তার লজ্জাশীলতায়। নারীর লজ্জাশীলতা তার রূপ-লাবণ্য অপেক্ষা বেশী আকর্ষণীয়। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
مَا كَانَ الْفُحْشُ فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلَّا شَانَهُ وَلَا كَانَ الْحَيَاءُ فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلَّا زَانَهُ.</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
‘‘অশ্লীলতা বা নির্লজ্জতা যে বিষয়ে থাকে, সে বিষয়কে তা সৌন্দর্যহীন করে ফেলে; পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা যে বিষয়ে থাকে, সে বিষয়কে তা সৌন্দর্যময় ও মনোহর করে তোলে।’’[15]</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
সভ্য লেবাসের পর্দা থেকে বের হওয়া নারী-সবাধীনতার যুগে পর্দা বড় বিরল। এর মূল কারণ হল লজ্জাহীনতা। কেননা, লজ্জাশীলতা নারীর ভূষণ। ভূষণ হারিয়ে নারী তার বসনও হারিয়েছে। দ্বীনী সংযম নেই নারী ও তার অভিভাবকের মনে। পরন্তু সংযমের বন্ধন একবার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে উদ্দাম-উচ্ছৃঙ্খলতা বন্যার মত প্রবাহিত হয়। তাতে সংস্কার, শিক্ষা, চরিত্র, সবই অনায়াসে ভেসে যায়। শেষে লজ্জাও আর থাকে না। বরং এই লজ্জাহীনতাই এক নতুন ‘ফ্যাশন’ রূপে ‘সভ্য’ ও ‘আলোক প্রাপ্ত’ নামে সুপরিচিতি লাভ করে। সত্যই তো, বগল-কাটা ব্লাউজ ও ছাঁটা চুল না হলে কি সভ্য নারী হওয়া যায়? আধা বক্ষঃস্থল, ভুঁড়ির ভাঁজ ও জাং প্রভৃতি গোপন অঙ্গে দিনের আলো না পেলে কি ‘আলোক প্রাপ্তা’ হওয়া যায়?!</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
বলাই বাহুল্য যে, মুসলিম নারী-শিক্ষার ‘সুবেহ সাদেক’ চায়, নারী-দেহের নয়। মুসলিম নারী-বিদ্বেষী নয়, নারী-শিক্ষার দুশমনও নয়। মুসলিম বেপর্দা তথা অশ্লীলতা ও ব্যভিচারের দুশমন। শিক্ষা, প্রগতি, নৈতিকতা তথা পর্দা সবই মুসলিমের কাম্য। আর পর্দা প্রগতির পথ অবরোধ করতে চায় না; চায় বেলেল্লাপনা ও নগ্নতার পথ রুদ্ধ করতে।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পক্ষান্তরে পর্দাহীনতা; আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অবাধ্যতা।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দাহীনতা; নগ্নতা, অসভ্যতা, অশ্লীলতা, লজ্জাহীনতা, ঈর্ষাহীনতা ও ধৃষ্টতা।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দাহীনতা; সাংসারিক অশান্তি, ধর্ষণ, অপহরণ, ব্যভিচার প্রভৃতির ছিদ্রপথ।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দাহীনতা; যৌন উত্তেজনার সহায়ক। মানবরূপী শয়তানদের চক্ষুশীতলকারী।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দাহীনতা; দুষ্কৃতীদের নয়নাভিরাম।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দাহীনতা; কেবল ধর্মীয় শৃঙ্খল থেকে নারী-সবাধীনতা নয়, বরং সভ্য পরিচ্ছদের ঘেরাটোপ থেকে নারীর সৌন্দর্য প্রকাশ ও দেহমুক্তির নামান্তর।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দাহীনতা; কিয়ামতের কালিমা ও অন্ধকার।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
পর্দাহীনতা; বিজাতীয় ইবলীসী ও জাহেলিয়াতি প্রথা। বরং সভ্য যুগের এই নগ্নতা দেখে জাহেলিয়াতের পর্দাহীনারাও লজ্জা পাবে।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
বেপর্দার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে কোন পর্দা নেই।</div>
<div class="separator" style="clear: both;">
<br /></div>
<div class="separator" style="clear: both;">
[1] (সূরা আল-বাক্বারা (২) : ১৮৭) [2] (ফাতাওয়াল মারআহ, ইবনে উসাইমীন, আব্দুল্লাহ বিন আল-জিবরীন ৫৪ পৃঃ, আল মারআতুল মুসলিমাহ, ওয়াহ্বী সুলাইমান আল-আলবানী ২৩৯পৃঃ) [3] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৭৭৪) [4] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৮৫০) [5] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৮৪১) [6] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৭৭১) [7] (ফাতাওয়াল মারআহ ৭২পৃঃ) [8] (ফাতাওয়াল মারআহ ৮৪পৃঃ) [9] (ইলা রাববাতিল খুদূর ১০৫-১০৬পৃঃ) [10] (সূরা আত্-তাগাবুন (৬৪) : ১৬) [11] (কিতাবুদ দাওয়াহ, ইবনে বায২/৯৪) [12] (ফাতাওয়াল মারআহ ৩৭, মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ১৫/২৮৪) [13] (আল কুরআন কারীম ২৪/৬০) [14] (আর-রাসাইলু অল ফাতাওয়ান নিসায়্যিাহ, ইবনে বায ৬০পৃঃ, ফাতাওয়াল মারআহ ৭৬পৃঃ) [15] (সহীহ তিরমিযী ১৬০৭নং, ইবনে মাজাহ)</div>
<table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg-0-FbYtf5pHyDhSW9Flg8LHJ-7tQugLIJIrFh7EjRrKXjYslWHlgjUFM2zpepC9jAOLA29V0oDOOOszfmRgeMrdvHlg2pUlnlcHY6v0UJ1OSrJ4RP3Aooac5_CnTmI6dAEqNVlYY-8tc/s1600/%25E0%25A6%2587%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25B6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595.jpeg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img alt="পর্দার বিধিবিধান," border="0" data-original-height="350" data-original-width="700" height="160" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg-0-FbYtf5pHyDhSW9Flg8LHJ-7tQugLIJIrFh7EjRrKXjYslWHlgjUFM2zpepC9jAOLA29V0oDOOOszfmRgeMrdvHlg2pUlnlcHY6v0UJ1OSrJ4RP3Aooac5_CnTmI6dAEqNVlYY-8tc/s320/%25E0%25A6%2587%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25B6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595.jpeg" title="নারীর পর্দা," width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;">ইসলামে নারীর পোশাক,</td></tr>
</tbody></table>
<h3 style="height: 0px; text-align: left;">
<br /></h3>
</div>
<div class="blogger-post-footer">রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না।
মুসলিম ২৬৭৪, তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাউদ ৪৬১৯, আহমাদ ৮৯১৫,</div>Islam k janunhttp://www.blogger.com/profile/08091346985753726059noreply@blogger.comRajshahi, Bangladesh24.3635886 88.6241350999999924.2478866 88.462773599999991 24.4792906 88.785496599999988