মুহাম্মাদ(ছাঃ) কিসের তৈরি ? রাসূল সাঃ মাটির তৈরি না নুরের তৈরি ?
রাসূল ছাঃ মাটির তৈরি না নুরের তৈরিঃ
প্রশ্ন: নবী ﷺ কি নূরের তৈরি ছিলেন, না - মানুষ ছিলেন। এ কথা কি সত্য যে, তার কোনো ছায়া হত না, যদিও তিনি রৌদ্রে থাকতেন?
.
উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ!
.
আমাদের নবী মুহাম্মদ ﷺ সকল আদম সন্তানের সরদার। সকল আদম সন্তানের ন্যায় তিনিও একজন মানুষ, পিতা-মাতার থেকেই তার জন্ম। তিনি খাবার গ্রহণ ও নারীদের বিয়ে করতেন, তিনি ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ হতেন, আনন্দিত ও চিন্তিত হতেন। আল্লাহ তা’আলা যেরূপ অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু দান করেন, তাকেও সেরূপ মৃত্যু দিয়েছেন, এটা তার মানুষ হওয়ার বড় প্রমাণ, তবে নবুওত, রিসালাত ও ওহী নবী ﷺ কে অন্যান্য আদম সন্তান থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছে।
.
মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
.
قُلۡ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ يُوحَىٰٓ إِلَيَّ أَنَّمَآ إِلَٰهُكُمۡ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۖ [الكهف: ١١٠
.
“বল, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার নিকট ওহী প্রেরণ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ।” [1]
.
অতএব অন্যান্য নবী ও রাসূলগণ যেরূপ মানুষ ছিলেন, তিনিও সেরূপ মানুষ ছিলেন। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
.
وَمَا جَعَلۡنَا لِبَشَرٖ مِّن قَبۡلِكَ ٱلۡخُلۡدَۖ أَفَإِيْن مِّتَّ فَهُمُ ٱلۡخَٰلِدُونَ [الانبياء: ٣٤
.
“আর আমি তোমার পূর্বে কোনো মানুষকে স্থায়ী জীবন দান করিনি, সুতরাং তোমার মৃত্যু হলে তারা কি অনন্ত জীবনসম্পন্ন হয়ে থাকবে।” [2]
.
নবী ﷺ এর মানুষ হওয়ার বিষয়টিকে যারা আশ্চর্যের দৃষ্টিতে দেখেছে, তাদের প্রতিবাদ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
.
وَقَالُواْ مَالِ هَٰذَا ٱلرَّسُولِ يَأۡكُلُ ٱلطَّعَامَ وَيَمۡشِي فِي ٱلۡأَسۡوَاقِ [الفرقان: ٧
.
“আর তারা বলে, ‘এ রাসূলের কী হল, সে আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে?" [3]
.
নবী ﷺ সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে যা এসেছে সেটাকে অতিক্রম করা কখনো বৈধ নয়। যেমন তার সম্পর্কে বলা বৈধ নয় যে, তিনি নূর অথবা তার কোনো ছায়া ছিল না, অথবা তিনি নূরের সৃষ্টি, বরং এরূপ বলা এক জাতীয় বাড়াবাড়ি, যা থেকে নবী ﷺ নিষেধ করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন,
.
»لاْ تُطْرُونِيْ كَمَا أُطرِيَ عِيْسَى ابْنُ مَرْيَمَ ، وَقُولُوْا عَبدُ اللهِ وَرَسُولُهُ « .
.
“তোমরা আমার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি কর না, যেমন ঈসা ইবনে মারইয়ামের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। তোমরা বল আল্লাহর বান্দা ও তার রাসূল।” [4]
.
প্রকৃতপক্ষে ফেরেশতা তথা মালায়েকাগণ নূরের তৈরি, [সৃষ্ট নূর] বনু আদমের কেউ নুরের তৈরি নয়। নবী ﷺ বলেছেন,
.
»خُلِقَت المَلائِكَةُ مِن نُورٍ ، وَخُلِقَ إِبلِيسُ مِن نَارِ السَّمومِ ، وَخُلِقَ آدَمُ عَلَيهِ السَّلامُ مِمَّا وُصِفَ لَكُم« .
.
“মালায়েকাদের সৃষ্টি করা হয়েছে নূর থেকে, ইবলিসকে সৃষ্টি করা হয়েছে উত্তপ্ত অগ্নিশিখা থেকে, আর আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে তা থেকে যা তোমাদের কাছে বিধৃত করা হয়েছে।” [5]
.
শায়খ আলবানি রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “এ হাদিস প্রমাণ করে যে, মানুষের মুখে প্রসিদ্ধ [হে জাবের, সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’আলা তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেছেন] হাদিসটি বাতিল। এ জাতীয় অর্থ প্রদানকারী অন্যান্য হাদিসও বাতিল, যেগুলো এ অর্থ দেয় যে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূর থেকে সৃষ্ট। কারণ, মুসলিমে বর্ণিত এ হাদিস স্পষ্ট বলছে যে, একমাত্র মালায়েকাগণ নূরের তৈরি, আদম ও তার সন্তান কেউ নূরের তৈরি নয়। অতএব ভালো করে স্মরণ রাখুন, গাফেল হবেন না।” [6]
.
সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড ‘লাজনায়ে দায়েমাহ’র নিকট এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আমরা নিম্নে তা উল্লেখ করছি,
.
প্রশ্ন: পাকিস্তানে ব্রেলভি ফেরকার আলেমগণ বিশ্বাস করেন, নবী ﷺ এর কোনো ছায়া ছিল না, যা তার মানুষ না হওয়ার দলিল। এ হাদিস কি সহিহ, সত্যিই কি নবী ﷺ এর কোনো ছায়া ছিল না?
.
উত্তর: এ কথা একেবারে বাতিল, কুরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট বিপরীত, কুরআন ও সুন্নাহ প্রমাণ করে নবী ﷺ মানুষ ছিলেন, তার মানুষ হওয়ার বিষয়টি অন্যান্য মানুষের মানুষ হওয়া থেকে আলাদা ছিল না। তারও ছায়া ছিল যেমন অন্যান্য মানুষের ছায়া রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা তাকে রিসালাত দ্বারা সম্মানিত করেছেন বলে তিনি মাতা-পিতা থেকে সৃষ্ট মানুষ হওয়ার গুণ থেকে বের হয়ে যান নি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
প্রশ্ন: নবী ﷺ কি নূরের তৈরি ছিলেন, না - মানুষ ছিলেন। এ কথা কি সত্য যে, তার কোনো ছায়া হত না, যদিও তিনি রৌদ্রে থাকতেন?
.
উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ!
.
আমাদের নবী মুহাম্মদ ﷺ সকল আদম সন্তানের সরদার। সকল আদম সন্তানের ন্যায় তিনিও একজন মানুষ, পিতা-মাতার থেকেই তার জন্ম। তিনি খাবার গ্রহণ ও নারীদের বিয়ে করতেন, তিনি ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ হতেন, আনন্দিত ও চিন্তিত হতেন। আল্লাহ তা’আলা যেরূপ অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু দান করেন, তাকেও সেরূপ মৃত্যু দিয়েছেন, এটা তার মানুষ হওয়ার বড় প্রমাণ, তবে নবুওত, রিসালাত ও ওহী নবী ﷺ কে অন্যান্য আদম সন্তান থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছে।
.
মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
.
قُلۡ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ يُوحَىٰٓ إِلَيَّ أَنَّمَآ إِلَٰهُكُمۡ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۖ [الكهف: ١١٠
.
“বল, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার নিকট ওহী প্রেরণ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ।” [1]
.
অতএব অন্যান্য নবী ও রাসূলগণ যেরূপ মানুষ ছিলেন, তিনিও সেরূপ মানুষ ছিলেন। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
.
وَمَا جَعَلۡنَا لِبَشَرٖ مِّن قَبۡلِكَ ٱلۡخُلۡدَۖ أَفَإِيْن مِّتَّ فَهُمُ ٱلۡخَٰلِدُونَ [الانبياء: ٣٤
.
“আর আমি তোমার পূর্বে কোনো মানুষকে স্থায়ী জীবন দান করিনি, সুতরাং তোমার মৃত্যু হলে তারা কি অনন্ত জীবনসম্পন্ন হয়ে থাকবে।” [2]
.
নবী ﷺ এর মানুষ হওয়ার বিষয়টিকে যারা আশ্চর্যের দৃষ্টিতে দেখেছে, তাদের প্রতিবাদ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
.
وَقَالُواْ مَالِ هَٰذَا ٱلرَّسُولِ يَأۡكُلُ ٱلطَّعَامَ وَيَمۡشِي فِي ٱلۡأَسۡوَاقِ [الفرقان: ٧
.
“আর তারা বলে, ‘এ রাসূলের কী হল, সে আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে?" [3]
.
নবী ﷺ সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে যা এসেছে সেটাকে অতিক্রম করা কখনো বৈধ নয়। যেমন তার সম্পর্কে বলা বৈধ নয় যে, তিনি নূর অথবা তার কোনো ছায়া ছিল না, অথবা তিনি নূরের সৃষ্টি, বরং এরূপ বলা এক জাতীয় বাড়াবাড়ি, যা থেকে নবী ﷺ নিষেধ করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন,
.
»لاْ تُطْرُونِيْ كَمَا أُطرِيَ عِيْسَى ابْنُ مَرْيَمَ ، وَقُولُوْا عَبدُ اللهِ وَرَسُولُهُ « .
.
“তোমরা আমার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি কর না, যেমন ঈসা ইবনে মারইয়ামের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। তোমরা বল আল্লাহর বান্দা ও তার রাসূল।” [4]
.
প্রকৃতপক্ষে ফেরেশতা তথা মালায়েকাগণ নূরের তৈরি, [সৃষ্ট নূর] বনু আদমের কেউ নুরের তৈরি নয়। নবী ﷺ বলেছেন,
.
»خُلِقَت المَلائِكَةُ مِن نُورٍ ، وَخُلِقَ إِبلِيسُ مِن نَارِ السَّمومِ ، وَخُلِقَ آدَمُ عَلَيهِ السَّلامُ مِمَّا وُصِفَ لَكُم« .
.
“মালায়েকাদের সৃষ্টি করা হয়েছে নূর থেকে, ইবলিসকে সৃষ্টি করা হয়েছে উত্তপ্ত অগ্নিশিখা থেকে, আর আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে তা থেকে যা তোমাদের কাছে বিধৃত করা হয়েছে।” [5]
.
শায়খ আলবানি রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “এ হাদিস প্রমাণ করে যে, মানুষের মুখে প্রসিদ্ধ [হে জাবের, সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’আলা তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেছেন] হাদিসটি বাতিল। এ জাতীয় অর্থ প্রদানকারী অন্যান্য হাদিসও বাতিল, যেগুলো এ অর্থ দেয় যে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূর থেকে সৃষ্ট। কারণ, মুসলিমে বর্ণিত এ হাদিস স্পষ্ট বলছে যে, একমাত্র মালায়েকাগণ নূরের তৈরি, আদম ও তার সন্তান কেউ নূরের তৈরি নয়। অতএব ভালো করে স্মরণ রাখুন, গাফেল হবেন না।” [6]
.
সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড ‘লাজনায়ে দায়েমাহ’র নিকট এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আমরা নিম্নে তা উল্লেখ করছি,
.
প্রশ্ন: পাকিস্তানে ব্রেলভি ফেরকার আলেমগণ বিশ্বাস করেন, নবী ﷺ এর কোনো ছায়া ছিল না, যা তার মানুষ না হওয়ার দলিল। এ হাদিস কি সহিহ, সত্যিই কি নবী ﷺ এর কোনো ছায়া ছিল না?
.
উত্তর: এ কথা একেবারে বাতিল, কুরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট বিপরীত, কুরআন ও সুন্নাহ প্রমাণ করে নবী ﷺ মানুষ ছিলেন, তার মানুষ হওয়ার বিষয়টি অন্যান্য মানুষের মানুষ হওয়া থেকে আলাদা ছিল না। তারও ছায়া ছিল যেমন অন্যান্য মানুষের ছায়া রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা তাকে রিসালাত দ্বারা সম্মানিত করেছেন বলে তিনি মাতা-পিতা থেকে সৃষ্ট মানুষ হওয়ার গুণ থেকে বের হয়ে যান নি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قُلۡ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ يُوحَىٰٓ إِلَيَّ [الكهف: ١١٠
.
“বল, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার নিকট ওহী প্রেরণ করা হয়।” [7]
.
অন্যত্র তিনি বলেন,
.
قَالَتۡ لَهُمۡ رُسُلُهُمۡ إِن نَّحۡنُ إِلَّا بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ [ابراهيم: ١١
.
“তাদেরকে তাদের রাসূলগণ বলল, ‘আমরা তো কেবল তোমাদের মতই মানুষ।” [8]
.
আর যেসব হাদিসে বলা হয়েছে তিনি আল্লাহর নূরের তৈরি, তার সবগুলো বানোয়াট ও মানুষের তৈরি হাদিস। [9]
.
.
❒ ফুটনোটঃ
___________
.
[1] সূরাহ কাহাফ, আয়াত : ১৮/১১০।
[2] সূরাহ আম্বিয়া, আয়াত : ২১/৩৪।
[3] সূরাহ ফুরকান, আয়াত : ২৫/৭।
[4] সহীহ বুখারি, হাদিস নং ৬৮৩০।
[5] সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ২৯৯৬।
[6] সিলসিলাতুস সাহিহাহ, হাদিস নং ৪৫৮।
[7] সূরাহ কাহাফ, আয়াত :১৮/ ১১০।
[8] সূরাহ ইবরাহিম, আয়াত : ১১/১১।
[9] দেখুন: ফতোয়াল লাজনায়ে দায়েমাহ, ১/৪৬৪।
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
.
“বল, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার নিকট ওহী প্রেরণ করা হয়।” [7]
.
অন্যত্র তিনি বলেন,
.
قَالَتۡ لَهُمۡ رُسُلُهُمۡ إِن نَّحۡنُ إِلَّا بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ [ابراهيم: ١١
.
“তাদেরকে তাদের রাসূলগণ বলল, ‘আমরা তো কেবল তোমাদের মতই মানুষ।” [8]
.
আর যেসব হাদিসে বলা হয়েছে তিনি আল্লাহর নূরের তৈরি, তার সবগুলো বানোয়াট ও মানুষের তৈরি হাদিস। [9]
.
.
❒ ফুটনোটঃ
___________
.
[1] সূরাহ কাহাফ, আয়াত : ১৮/১১০।
[2] সূরাহ আম্বিয়া, আয়াত : ২১/৩৪।
[3] সূরাহ ফুরকান, আয়াত : ২৫/৭।
[4] সহীহ বুখারি, হাদিস নং ৬৮৩০।
[5] সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ২৯৯৬।
[6] সিলসিলাতুস সাহিহাহ, হাদিস নং ৪৫৮।
[7] সূরাহ কাহাফ, আয়াত :১৮/ ১১০।
[8] সূরাহ ইবরাহিম, আয়াত : ১১/১১।
[9] দেখুন: ফতোয়াল লাজনায়ে দায়েমাহ, ১/৪৬৪।
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
রাসূল ছাঃ মাটির তৈরি, |